মোল্লা জসিমউদ্দিন
বাংলার রাজনীতিতে বরাবরই সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এক আন্দ্রোলনমুখী প্রতিবাদী নেতার নাম।সে সিঙ্গুর - নন্দীগ্রাম - মাখড়া - খাগড়াগড় হোক কিংবা অতি সম্প্রতি হওয়া পঞ্চায়েত ভোট। বিভিন্ন মন্তব্য করে রাজ্যরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসা একদা সিদ্দিকুল্লাহ বর্তমানে মৌনীবাবার মতনই অবস্থা।সৌজন্যে তৃনমূল কংগ্রেস।২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্ব। যেই থেকে তৃনমূলের অনুগত সৈনিক হিসাবে নাম লিখিয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ।সেই থেকে তৃনমূলের বাঁধনে আবদ্ধ তিনি।বিশেষত পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দলের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের স্পষ্ট অবস্থান জানাতে গিয়ে 'দলবিরোধী' কার্যকালাপে অভিযুক্ত সিদ্দিকুল্লাহ।তাই রাজনীতির নিয়ে খোলামেলা বক্তব্যেও পড়েছে তৃনমূলের বেড়ী। হ্যা রবিবার মঙ্গলকোটের পদিমপুরে জমিয়ত উলেমা হিন্দের ব্লক সম্পাদক তথা ইমাম সংগঠনের জেলা নেতা হাফেজ সাবির আলীর মেয়ের বিবাহতে এসেছিলেন তিনি।শুধু আসা কিংবা আশীর্বাদ করা নয়।এই বিবাহে 'মৌলবি'র ভূমিকায় পাওয়া যায় এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে।এদিন কলকাতা থেকে দুপুর একটার মধ্যেই মঙ্গলকোটের পদিমপুরে চলে আসেন। এরপরে নুতনহাটে এক অনুষ্ঠান বাড়ীতে বিবাহের যাবতীয় কাজ তদারকি সহ মুসলিম রীতিতে নিকাহ পালনে দেখা যায় তাঁকে।বিয়ে পরবর্তীতে মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগার পর্যবেক্ষণে যান তিনি।মডেল পাঠাগার হিসাবে স্বীকৃত এই পাঠাগারের সম্পাদক নুর আনসারী কে নিয়ে পাঠাগারের উন্নয়নকাজ দেখেন।এই পাঠাগার কে নবীভবন পঁচিশ লক্ষ অনুদান দিয়েছিল রাজ্য গ্রন্থাগার দপ্তর।সেই ভবন সহ ডিজিটাল লাইব্রেরী হিসাবে কেমন কাজ চলছে তা খতিয়ে দেখেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। উল্লেখ্য শাসকদলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্যে কোণঠাসা সিদ্দিকুল্লাহ সশরীরে ঈদের বস্ত্রবিলি কর্মসূচি করতে না পারলেও এই পাঠাগারেই ফ্লেক্স টাঙ্গিয়ে বিধায়ক কোটায় বস্ত্রবিলি করান সিদ্দিকুল্লাহ।আজ বিয়ের আসরে দীর্ঘ পাঁচমাস এলাকাছাড়া স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ কে স্থানীয় রাজনীতি বিশেষত পঞ্চায়েত ভোটে তৃনমূলের বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সিদ্দিকুল্লাহ বলেন - " দলনেত্রী যা সিদ্ধান্ত নিবেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।এর বাইরে কিছু বলতে পারবনা "।গত দুবছর ধরে যে ব্যক্তিগত কারিশমা দেখা গেছে মঙ্গলকোটের বুকে, আজ তার ছিটেফোঁটা দেখা যায়নি।শরীরি ভাষায় বোঝা গেল, তিনি মন্ত্রিত্ব নিয়েই থাকতে চান মঙ্গলকোটের রাজনীতি নিয়ে তার কোন আগ্রহ নেই।প্রায় পাঁচ মাস আগে মাসে চার থেকে পাঁচবার দেখা মিলতো স্থানীয় বিধায়কের।তখন হাজার হাজার অনুগামী বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আসতেন।আজ বিয়ের মজলিশে বরপক্ষ এবং কনেপক্ষ ছাড়া কাউকেই দেখা গেলনা! এমনকি গতকাল বিকেলে বিধায়ক অনুগামী হিসাবে পরিচিত তিন অনুগামী কে পুরানো ফৌজদারি মামলায় আটক করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।শোনা যাচ্ছে অতীতে কুড়ির বেশি ব্যক্তিদের মত এদের কপালেও জুটতে পারে গাঁজার কেস।যাইহোক মঙ্গলকোটে রাজনীতিতে স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে সিদ্দিকুল্লাহের ভুমিকা গৌণ করেছে শীর্ষ তৃনমূল নেতৃত্ব। এটা বিগত পাঁচমাসের কোন বিধায়ক তহবিলের উন্নয়নমুখী কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচি তে গড়হাজির অবস্থানেই বোঝা যায়।আজ তার পুনরায় প্রমাণ মিললো এটা বলায় যায়।