বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯

মৌলালীর মামলায় বেকসুর খালাস বঙ্গ সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব

মোল্লা জসিমউদ্দিন  

মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার ব্যাংকশাল আদালতে ২০ নং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে এক পুলিশি মামলায় অব্যাহতি পেলেন বঙ্গ সিপিএমের হেভিওয়েট নেতৃত্ব। এদিন তালতলা থানার স্বতঃস্ফূর্ত করা মামলায় ব্যাংকশাল আদালতে সশরীরের হাজির ছিলেন এই রাজ্যের বামেদের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, অনাদি সাহু, মানব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী প্রমুখ ছিলেন ব্যাংকশাল আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মায়া চক্রবর্তীর এজলাসে। এই মামলায় অভিযুক্ত ক্ষিতি গোস্বামী সম্প্রতি মারা গেছেন।এদিন এগারোজন  অভিযুক্তদের খালাসদানে ম্যাজিস্ট্রেটের পর্যবেক্ষণ - " এই মামলায় দোষী প্রমাণে উপযুক্ত তথ্য ও প্রমাণ কলকাতা পুলিশ দেখাতে পারেনি, যে তথ্য প্রমাণ পেশ হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় অভিযুক্তদের বিপক্ষে"। এই মামলায় ১১ জন পুলিশ কর্মী সাক্ষ্যদান করেছেন। যারা অভিযোগকারী তারা কিভাবে সাক্ষী হয় অভিযুক্তদের দোষী প্রমাণে?  এহেন প্রশ্ন উঠেছে এই মামলায়। আদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৮ সালে মে মাসে শিয়ালদহ সংলগ্ন মৌলালী মোড়ে বামেদের এক প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে সংশ্লিষ্ট থানা  অর্থাৎ তালতলা থানা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মামলা দাখিল করে। বিভিন্ন সড়কমোড়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং এগারোজন পুলিশ কর্মীর সাক্ষ্যে রাস্তা আটকে বেআইনী জমায়েত, আইনশৃঙ্খলা অবনতি বিষয়ক তথ্য উঠে আসে চার্জশিট দাখিলে। প্রায় দেড় বছর পর ব্যাংকশাল আদালতে এই মামলায় দশজন শীর্ষ  বাম নেতৃত্ব  এই মামলায় খালাস পেলেন।                                                                                               

খুনের মামলায় রক্ষাকবচ পেলেও মুকুলের বীরভূমে যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞা


মোল্লা জসিমউদ্দিন
   
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে লাভপুরের খুনের মামলায় মুকুলের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি চলে। সেখানে ডিভিশন বেঞ্চ তদন্তে সহযোগিতার শর্তে বিজেপি নেতা মুকুল রায় কে ৮ ফেব্রুয়ারি অবধি আইনী রক্ষাকবচ দিললো। তবে বীরভূম জেলায় লাভপুর বোলপুর এবং শান্তিনিকেতন থানায় যাওয়ার ব্যাপারে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের শীতকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৪ ডিসেম্বর লাভপুরের তিন ভাই খুনে বীরভূম জেলা পুলিশের সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট দাখিলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম উঠে আসে। খুনের প্ররোচনায় ধারায় চার্জশিটটি পেশ হয়েছে। ৩০২ এর মত খুনের ধারায় চার্জশিট দাখিল বিষয়টি গুরত্ব অনুভব করেই তড়িঘড়ি কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিনের পিটিশন টি করেন মুকুল রায়। প্রথমে ত্রুটিপূর্ণ আবেদনের জন্য আগাম জামিনের আবেদন বাতিল হয়।দ্বিতীয় পযার্য়ের শুনানি হয় আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে। মুকুল শিবিরের দাবি - "২০১০ সালে বীরভূমের লাভপুরের খুনের সময় মূল অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন। তখন মুকুল রায় তৃণমূলের দু নাম্বার ব্যক্তি। রাজ্যসরকারে শাসক দল হিসাবে ছিল বামেরা। তৃনমূল তখন মূল প্রতিপক্ষ। তাই তৎকালীন বাম বিধায়ক কে তৃনমূল নেতা মুকুল রায়ের প্ররোচিত করার কোন ভূমিকা থাকতে পারেনা"? লাভপুরের খুনের মামলায় একদা তৃনমূল বিধায়ক তথা অধুনা গেরুয়া নেতা মনিরুল ইসলামের নাম চার্জশিটে আসাটা স্বাভাবিক হলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম আসবে তা রাজনৈতিক মহলে অপ্রত্যাশিত ছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল হইচই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুরে এলাকার খুনের এক মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন। তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশসুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষন চাপে পড়ে যান লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনি মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি 'ঘরপোড়া গরু'র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে অচ্ছুৎ অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃনমূল বিধায়ক কে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনীতিমহলে। আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে লাভপুরে একই পরিবারে ৩ ভাই খুন হয়েছিলেন।নিহতেরা হল ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ।  এই খুনে অভিযোগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মামলার প্রথম পয্যায়ে পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়,  বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন কে তাদের বিরুদ্ধে উঠা খুনের অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন। সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় নিহতের পরিবার। এরপর, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ    জানিয়ে দেয় - ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশসুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবার কে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।  ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা  উচ্চ আদালতের  নির্দেশে ফের লাভপুর হত্যা মামলার চার্জশিট জমা পড়ল। আর সেই চার্জশিটে স্বাভাবিক ভাবেই নাম উঠে এল বিজেপি নেতা মণিরুল ইসলামের নাম। এছাড়া আরেকটি  গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এল দ্বিতীয় পয্যায়ের চার্জশিটে । প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর নাম উঠে এল   ।  প্ররোচনার দায়ে তাঁর নাম জড়িয়েছে বীরভূম জেলা পুলিশ। চলতি ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে ২০১০ সালের ঘটনার পুনর্তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিট গৃহীত হয় আদালতের তরফে  ।জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন -  "হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিট গৃহীত হয়েছে ।" বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে ২০১০ সালের ৪ জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলে সেসময়কার দাপুটে  নেতা   মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । মণিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । ঘটনার পরে পরে আইনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তৃণমূলে যোগ দান করেন তিনি বলে অভিযোগ । পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ীও  হন । ২০১১ সালে সাঁইথিয়ার একটি জনসভা থেকে "তিনজনকে পা দিয়ে পিষে মেরে  দিয়েছি" বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিরুল ইসলাম। ২০১৫  সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে ৩০ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । সেই চার্জশিটে নাম বাদ যায় এই মণিরুলের। তখন অবশ্য শাসক দলের বিধায়ক  ছিলেন তিনি।  নিহতের পরিবার তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন । এই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ।  ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণিরুল।  দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দান করেন মণিরুল।সেখানেও তাঁকে নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ে। তাই  তাঁকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। হাইকোর্টের  নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে বীরভূম পুলিশ ।গত ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । ২০১০ সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুল রায় । প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে স্থান পেয়েছে মুকুল রায়ের নাম।তবে মুকুল বাবু সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন - "বিগত বাম আমলে শেষের দিকে সিপিএম যেমন পুলিশ নির্ভর ছিল, এখন তৃনমূল সেই ভূমিকাটা নিয়েছে। এহেন মিথ্যা মামলার  ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আদালতেই সুবিচার পাব"।মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট এর ডিভিশন বেঞ্চে মুকুল রায়ের আগাম জামিনের মামলায় শুনানিতে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশ কোন কড়া পদক্ষেপ ( গ্রেপ্তার) করতে পারবেনা বলে নির্দেশিকাজারী হয়। তবে তদন্তের পূর্ন সহযোগিতার শর্তে এবং বীরভূমের তিনটি থানা এলাকায় যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞাজারীও হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের তর।                  

ক্যাব নিয়ে রাজপথে নামলো তৃণমূল লিগ্যাল সেল

মোল্লা জসিমউদ্দিন  

মঙ্গলবার দুপুরে  কলকাতা হাইকোর্টের এফ গেট থেকে রাজভবন ভায়া সিটি সিভিল আদালতের গেট অবধি এনআরসি এবং ক্যাব  আইনের বিরুদ্ধে মিছিল করলো তৃনমূল লিগ্যাল সেল। লিগ্যাল সেলের চেয়ারম্যান ভাস্কর বৈশ্য জানান - "দলনেত্রীর নির্দেশে আজ আমরা প্রতিবাদ মিছিল করলাম "।                          

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER