সোমবার, মে ০৪, ২০২০

লকডাউনে আকাশটা যেন আগুনরঙা হয়ে গেছে - অদিতি তালুকদার

অদিতি তালুকদার
 
     বিকেল পাঁচটা কি সাড়ে পাঁচটা বাজে হয়তো। আমি এ ঘরে শুয়ে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। মেয়ে এসে ডাকলো - "মা, মা, তাড়াতাড়ি এসো। আকাশটা কেমন আগুনরঙা হয়ে গেছে।" আমিও ছুটে গেলাম আকাশ দেখবো বলে। সত‍্যিই তো! অদ্ভূত লাগছে আকাশটা। এতো সুন্দর রং তো আগে চোখে পড়েনি। ওর বাবাও সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল নিয়ে হাজির ছবি তুলবে বলে। অনেক চেষ্টা করে দু-তিনটে তুললো বটে, কিন্তু খুব সুবিধের হলো না। সামনের ফ্ল‍্যাটের জানলার ওপর দুটো পাখি খুব ছটফট করছিল। ওদের সজাগ দৃষ্টি আমাদের ওপর। কখনো কখনো লাফিয়ে আমাদের বারান্দার মধ‍্যেই ঢুকে আসতে চাইছিল। আসলে  বারান্দার ঝাড়লন্ঠনের মধ্যেই ওদের বাসা। তাতে হয়তো ওদের বাচ্চা রয়েছে। আর খেয়াল রাখছে কোনোভাবে যেন ওদের বাসার কাছে আমরা না যাই। তাই আমরাও তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে পড়ি। এমনিতেই লকডাউনের বাজার। হাতে এখন মস্ত সময়। রুটিনটা সব যেন এলোমেলো হয়ে গেছে। সকালের ঘুম ভাঙছে দেরি করে। তারপর চা-জলখাবারের পালা। মেয়ে নেটে বন্ধুদের তৈরি নানারকম খাবারের ছবি দেখে উৎসাহিত হয়ে নিজেও হরেকরকম খাবার বানাচ্ছে। মোটের ওপর মন্দ কাটছে না। তবে সবচাইতে পরিবর্তন দেখছি মেয়ের বাবার।ছাব্বিশ বছরের বিবাহিত জীবন। বাইরের জগৎ আর পড়াশোনা নিয়ে যাকে সবসময়ই ব‍্যস্ত থাকতে দেখেছি,খুব প্রয়োজন হলে যিনি নুন আনতে বললে অবধারিত চিনি নিয়ে আসতেন, সেই ভদ্রলোকই এখন কথায় কথায় ডেটল ফিনাইল সহযোগে ঘর মোছা বা বাসন মাজায় মেতে উঠেছেন। আবার নেট ঘেঁটে উৎসাহিত হয়ে মিষ্টিও বানিয়ে ফেলছেন। যাক। স্বাদের কথা না-ই বা বললাম। মাঝে মেয়ে একদিন বলে উঠলো-"মা বাবার ইসকুলে পড়ানো এবার লাটে উঠলো বলে। যা কাজের নেশা ধরেছে বাবাকে, তাতে মনে হচ্ছে টিফিনের মধ‍্যেই হয়তো ঘর মুছতে চলে আসবে বাড়িতে।" 
     এতোগুলো বছর ধরে সংসারের সব কাজ একাই সামলে চলেছি। মাঝে মাঝে দুঃখ হলে মা-বাবার কাছে জানাতাম সেই অভিযোগের কথা। বাবা বলতেন - " ধৈর্য্য রাখো। সব একদিন ঠিক হয়ে যাবে।" সত‍্যি, বাবা। ছাব্বিশ বছর পর তোমার কথাটা অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে। লকডাউন না-হলে তোমার জামাইয়ের এই বহুমুখী প্রতিভা আমার অজানাই থেকে যেত। এটা খুব সত‍্যি, এভাবে বাড়ির মধ্যে থেকে একে-অপরকে নতুন করে চিনতে পারলাম। এটা আমার ঘরের ভেতরের একটা ছবি। 
    কিন্তু লকডাউনে এই চারদেয়ালের বাইরে যে বৃহত্তর ঘর রয়েছে, তার চেহারাটা একেবারেই অন্যরকম। যেমন কালকের একটা ঘটনা আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়ে গেল। ওষুধ আনতে বেরিয়েছিলাম। দেখলাম দোকানের সামনে একটা ভ‍্যানে করে পনেরো-ষোলো বছরের একটি ছেলে কিছু ফুচকার প‍্যাকেট, বাদামের প‍্যাকেট,বিস্কুট আর কয়েকটা হ‍্যান্ড স‍্যানিটিইজার নিয়ে বসেছে। খুব আগ্রহ ভরে জিজ্ঞাসা করলো --- "কাকিমা। লাগবে কিছু?" হয়তো তেমন কিছুরই দরকার ছিল না। কিন্তু ছেলেটির মুখটি দেখে ভারী মায়া হলো। তাই কিছু জিনিস নিয়েও নিলাম। কথায় কথায় জানতে পারলাম, সে বারো ক্লাসে পড়ে। "ঘরে মা অসুস্থ। লকডাউনে বাবার কাজও বন্ধ। তাই কাকিমা, কিছু সামান্য জিনিস নিয়ে আস্তে আস্তে বসার চেষ্টা করছি। ঘরটাকে তো বাঁচাতে হবে।" নিজের অজান্তেই কখন চোখে জল চলে এলো। হাতে যা সামান্য টাকা ছিল, তাই দিয়ে বললাম- "তুমি রাখো।" ছেলেটি লজ্জায় কিছুতেই নিতে চাইলো না। আমি বললাম- "এতে তোমার বিরাট কিছু হবে না। কিন্তু তবুও তোমার পাশে থাকতে পারলে আমার ভালো লাগবে।" পিছন ঘুরে আসতে আসতে ভাবছি - এই লড়াই তো শুধু ওর একার নয়। সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেই মলিন মুখের মিছিল। হাজার হাজার মাইল হেঁটে যারা বাড়ি ফিরছে। খাবার নেই, জল নেই। শুধুমাত্র ঘরে ফেরার বাসনা। এরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষ। লকডাউনে এরা সবাই কাজ হারিয়েছে। কেউ বা পথেই প্রাণ হারিয়েছে। যারা ঘরে ফিরতে পেরেছে, তারা জানে না তাদের ভবিষ্যৎ কী। 
     তাই সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা - সবাই যেন তারা জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসতে পারে। এই লকডাউন হয়তো উঠে যাবে একদিন। আর তখনই আমরা হবো সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সম্মুখীন। তা হলো একে অপরের পাশে দাঁড়ানো। সর্বশক্তিমান হয়তো সেটাই দেখতে চাইছেন।

পাল্লারোডে চললো থার্মাল স্কিনিং

সেখ সামসুদ্দিন
 

আজ পল্লি সমিতির পক্ষ হতে পাল্লারোড এলাকায় রেশন নিতে আসা বা বাজার করতে বেরুনো মানুষ জনকে থার্মাল গান ও পালস অক্সোমিটার ব্যবহার করে স্ক্রিনিং করা হয়। আনুমানিক ৪৫০ জনকে স্ক্রিনিং করা হয় এদিন। কারুর স্ক্রিনিং-এই কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। এই স্ক্রিনিং এখন চলবে নিয়মিত ভাবেই বলে জানান পল্লীমঙ্গল সম্পাদক সন্দীপন সরকার।

কালনা হাসপাতাল সুপারের খাদ্য সামগ্রী বিলি

শ্যামল রায়
  

কালনার সাতগাছিয়া অঞ্চলে চিকিৎসকের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

কালনা মহকুমা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণ চন্দ্র বড়াই এর উদ্যোগে  গরিবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন । এদিন সাতগাছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রামসীতা মন্দির পাড়ায় এলাকার গরীব অসহায় দুস্থদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। চিকিৎসক কৃষ্ণচন্দ্র বড়াই জানিয়েছেন যে এই গ্রামেই ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা। আজ চিকিৎসক হয়ে তার নিজের এলাকায় কালনা হাসপাতালে সুপার। এদিন দুই শতাধিক গরীব পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন তিনি। বলেছেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে চলছে লকডাউন। লকডাউন চলাকালীন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় অভাবের মধ্যে পড়েছেন। সেই সকল গরীব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।

কাটোয়ার বিলেশ্বর অঞ্চলে খাদ্য সামগ্রী বিলি

শ্যামল রায়
  

করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চলছে লকডাউন। দীর্ঘদিন লকডাউন চলার ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে ।সেই সমস্ত সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছেন সমাজকর্মী মানবাধিকারকর্মী সহ অনেকে ।
রবিবার জানা গিয়েছে যে কাটোয়া থানার বিলেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের  অনাথদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
বিশিষ্ট কবি ও রক্তদাতা জয়দেব দত্ত জানালেন এলাকার "বারন্দা পরমানন্দ সেবা আশ্রম" এবং গোয়াই প্রেমানন্দ প্রতিবন্ধী স্কুলের অনাথ আশ্রমে আন্তরিকতার সাথে তুলে দেওয়া হয়েছে পাউরুটি-কলা-মিষ্টি এবং নগদ অর্থ। ৩২ জন অনাথ শিশু  খুশি ।
এলাকার আরও কয়েকটি আশ্রমে নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী দিয়ে পাশে দাড়িয়ে কাজ করে চলেছেন জয়দেব দত্ত। পরিস্থিতির শিকার মানুষদের অর্থ সাহায্য করেছেন সামর্থ অনুযায়ী। পথ কুকুর এবং রাস্তায় বিচরণ করা গরুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের হেমরাজ ব্লাডব্যাংকে রক্তসংকট দূর করতে রক্তদাতা নিয়ে এসে ব্লাডব্যাংকে রক্তদান করে মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ রক্ষার্থে নীরবে কাজ করে চলেছেন জয়দেব দত্ত। সারাজীবন বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে থেকে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন সমাজকর্মী মানবাধিকার কর্মী ও রক্তদাতা জয়দেব দত্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই মহতী কাজের জন্য এলাকাবাসী তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।  

নবদ্বীপের গৌড়গঙ্গায় স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে

শ্যামল রায়
 

নবদ্বীপ শহরে  গৌরগঙ্গায় স্পোটিং ক্লাবের তরফ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

নবদ্বীপে গৌর গঙ্গা স্পোটিং ক্লাবের তরফ থেকে এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। রবিবার শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পোড়া ঘাট রোডের অসহায় গরীব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন সম্পাদক অরবিন্দ রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী কৃষ্ণ সাহা ও গৌড় হরি সহ সহ অনেকে। সম্পাদক অরবিন্দ রায় জানিয়েছেন যে তৃতীয় দফায় লকডাউন শুরু হয়েছে তাই বহু গরিব মানুষ আছেন যারা খাবারের জোগাড়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। আমরা চাই কোন মানুষ যাতে অনাহারে অসুস্থ হয়ে পড়েন তার জন্য এদিন খাদ্য সামগ্রী তুলে দেয়া হয়েছে আড়াইশো লোকের হাতে।
এছাড়াও এদিন নবদ্বীপ শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে কাঁচামাল বিতরণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর মিতালী হালদার ও বাবু নাগ সহ অনেকে। স্থানীয় কাউন্সিলর মিতালী হালদার জানিয়েছেন যে লকডাউন চলাকালীন বহু গরিব মানুষ আছে যাদের মধ্যে অভাব শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিকে আবার এক হাজার পরিবারের হাতে কাঁচামাল সবজি তুলে দিয়েছি। খুশি এলাকার মানুষ।

করোনা মোকাবিলায় এপ্রিল মাসের বেতন দিলেন এই এএসআই

সুরজ প্রসাদ
 

চলতি লকডাউনের সময় রাজ্যে সরকারের ত্রান তহবিলে আর্থিক সাহায্য করলেন এক পুলিশ কর্মী। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের এই কর্মী অতিরিক্ত সাব-ইন্সপেক্টর বিনয় কুমার ঘোষ শক্তিগড় থানায় কর্মরত রয়েছেন ।  সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিনয় বাবু জেলা পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে এসে অতিরিক্ত পুলিশসুপারের হাতে  'ওয়েষ্ট বেঙ্গল এমারজেন্সি রিলিফফান্ড' ত্রান তহবিলের জন্য ৩৫,১০৮টাকার চেক তুলে দেন। এই কাজে খুশি জেলা পুলিশের কর্তারা।
অতিরিক্ত পুলিশসুপার কল্যান সিংহরায় জানান, -"নিজস্ব উদ্যোগে রাজ্যে সরকারে ত্রান তহবিলে ৩৫,১০৮টাকা দিয়েছেন বিনয় বাবু। এই অনুদান দেওয়ায় আমরা গর্বিত ।এই কাজ আমাদের সবাইকে অনুপ্রানিত করবে"। বিনয় বাবু বলেন, - "আমি আমার এপ্রিল মাসের সম্পূর্ণ বেতন রাজ্যে সরকারের ত্রান তহবিলে দান করেছি। আমার কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে সহকর্মীরা সরকারের ত্রান তহবিলে সাহায্য হাত বাড়িয়ে দেয় এটা আশা করি" ।



নন্দকুমারে মদের দোকানে ভীড় সামলাতে পুলিশের লাঠিচার্জ

জুলফিকার আলি
  

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার থানার অন্তর্গত বাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি মদের দোকান খোলায়, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ার মতো। মদ হাতে পেতে দেরি হয় ধৈর্য হারিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যাপক উত্তেজনা র সৃষ্টি হয়, এরপর  ইটপাটকেল ফোড়া দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা করে মানুষজন, এর ফলে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নন্দকুমার থানার পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি আনে। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নন্দকুমার থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়।

বাংলাদেশী নিরক্ষর রিকশা চালকের মানবিকতা শেখায় অনেককিছু

একজন নিরক্ষর রিক্সা চালক তারা মিয়া। করোনা যুদ্ধেও থেমে নেই তাঁর মানবিকতার কাজ।
বাবুল সাহা

 
করোনা যুদ্ধে একজন নিরক্ষর রিক্সাচালক তার মানবিকতার হাত প্রসারিত করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের দুর্গাপুর উপজেলার চকলেঙ্গুরা গ্ৰামের বাসিন্দা। এই রিক্সা চালক তারা মিয়া(৩৩)। তিনি ১মে শুক্রবার আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে জনসম্মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ হাজার ২০০ শত টাকা সংসদ সদস্য মানু মজুমদারের হাতে তুলে দেন। তারা মিয়া প্রতিনিধিকে ৩০ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোনে এ কাজটি যে তিনি করতে যাচ্ছেন তা জানিয়েছিলেন। তিনি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। এরকম পরিবারে জন্ম হওয়ায় তিনি লেখাপড়া করতে পারেননি। তার বাবা আব্দুল হেলিম ছিলেন একজন দিনমজুর। এই গরীব দিনমজুরের তিন সন্তানের মধ্যে তারা মিয়া সবার বড় সন্তান। ছোটবেলা থেকেই ঘাত, প্রতিঘাতের মধ্যেই তার বেড়ে ওঠা। তার বাড়ির অদূরে সোমেশ্বরী নদীতে সে এবং তার স্ত্রী নাজমা আক্তার (২৯) নদী থেকে কয়লা উত্তোলন করে বিক্রি করে সংসার চালাতো। তাদের দুটো সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে রিফাত মিয়া (১১) বাড়ির পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। ১ বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। এক পর্যায়ে তারা মিয়া কিছু অর্থ সঞ্চয় করে একটি রিক্সা করে চালানো শুরু করেন। তার স্ত্রী এখনও কয়লা শ্রমিক। তারা মিয়ার স্বপ্ন ছিল নিজে অর্থের অভাবে যেহেতু পড়ালেখা করতে পারেনি ,তারমত যেন কোন গরিবের সন্তান লেখাপড়া থেকে ঝড়ে না পরেন। সেই মানষিকতা নিয়ে দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে অন্ততঃ ১৫ টি প্রাইমারি স্কুলের অতি গরিব ছেলেমেয়েদের ও প্রতিবন্ধী শিশুদের খাতা ,কলম, পোশাক, টিফিন বক্স, খেলার বল দিয়ে তার সহযোগীতা অব্যাহত রেখেছেন। তার এই কাজের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সন্মানিত হয়েছেন  এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে এ যাবৎ যত অর্থ পেয়েছেন তাও তিনি হতদরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রতিদিন রিক্সা চালিয়ে যা আয় করেন তা থেকে প্রতিদিন ২০/২৫ টাকা করে নিয়মিত তার বাড়িতে নিজস্ব মাটির ব্যাংকে জমা করে , সেই টাকা দিয়েই তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ান। সংসদ সদস্য মানুষ মজুমদারের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনও ফারজানা খানম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ, আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলী আজগর, পৌরসভার মেয়র আব্দুস সালাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় সুসঙ্গ বার্তা পত্রিকার সম্পাদক জামাল তালুকদার সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। করোনার কারনে স্কুল বন্ধ থাকায় , রিক্সা চালক তারা মিয়া তার জমানো ১০ হাজার ২০০ শত টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তুলে দেন। তারা মিয়া বলেন, আমি নিজেও গরীব মানুষ । তবু আমি নিজে আয় করে পরিবার নিয়ে খেতে পারছি। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি গত কারনে আমার চেয়ে যারা আরো গরিব , তাঁদের জন্য আমার এই উদ্যোগ। ত্রাণ তহবিলে আমি টাকা জমা দিতে পেরে খুশি। সংসদ সদস্য মানু মজুমদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম বলেন, হতদরিদ্র এই মানুষটির মহানুভবতা দেখে সমাজের বিত্তবানদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER