বুধবার, মে ০১, ২০১৯

তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিবাদে রাস্তায় আদিবাসী সমাজ


মোল্লা জসিমউদ্দিন,

চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে যে আটটি আসনে ভোটপর্ব মিটেছে। তার মধ্যে বোলপুর লোকসভার অধীনে মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা রয়েছে। মঙ্গলকোটের তিনশোর কাছাকাছি বুথের মধ্যে দুশোর অধিক বুথে শাসকদল তৃনমূল একতরফাভাবে ভোটপর্ব চালালেও পঞ্চাশের অধিক বুথে অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোটদান হয়। এই অবাধ নির্বাচনের বুথগুলির মধ্যে মঙ্গলকোটের চাণক এলাকার প্রায় বুথ অন্যতম । আর এতেই ক্ষিপ্ত অনুব্রত মন্ডলের মঙ্গলকোটের অনুগামীরা। জানা গেছে, ভোটগ্রহণের দিন ২৯ এপ্রিল অর্থাৎ গতকাল চাণকে বিজেপির বুথ এজেন্টগুলির পরিবারের উপর চড়াও হয় শাসকদলের সশস্ত্র বাহিনী। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের রুপ নেয় পশ্চিম মঙ্গলকোটের চারটি অঞ্চল এলাকায়৷ হাজার হাজার আদিবাসী নুতনহাট গুসকারা সড়ক রুট অবরোধ করে সশস্ত্র প্রতিবাদ জানায়। ঘটনাস্থলে মঙ্গলকোট থানার মেজ বাবু বিবেক মুদি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষুব্ধ আদিবাসীরা এখনো অবরোধ চালাচ্ছে বলে প্রকাশ। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে উত্তাল হয়ে উঠল পশ্চিম মঙ্গলকোটের  জালপাড়া বাসস্ট্যাণ্ড। স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে গতকাল ভোট চলাকালীন বিজেপির এজেন্টদের পরিবার সহ  চারজন বিজেপি সমর্থক রমেশ মু্র্মু, প্রদীপ হাঁসদা , সুখরাম হাঁসদা  ও সোম মাড্ডি মোটরবাইকে চড়ে চাণক অঞ্চলের ইরসন্দা গ্রামের মধ্যে দিয়ে আসছিল ।সেই সময় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাদের ব্যাপক মারধর করে ।খবর পেয়ে আদিবাসীরা তাদের উদ্ধার করতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাদের ভয়ে ছেড়ে দেয়।গতকাল পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও আজ সকাল ১০ টা থেকেই আদিবাসীরা জালপাড়ায় নতুনহাট-গুসকরা রাস্তা অবরোধ করে। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিলেও অবরোধ ওঠেনি ।স্থানীয় বিজেপি সূত্রে জানা গেছে,  ১৬ নং বুথের তাদের এজেন্ট রণজিৎ রাণার মা মাধবী রাণার কে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা  হুমকি দেয় ।রণজিৎ রাণা বুথ ত্যাগ না করলে তাকে খুন করে দেওয়া হবে ।স্হানীয় বিজেপি নেতা সোম মাড্ডির জানালেন - তৃণমূল আশ্রিত এইসব দুষ্কৃতিদের জন্যই তাদের শান্ত এলাকা বারবার অশান্ত হয়ে উঠছে।স্হানীয় থানার পুলিশ সব জেনেও নীরব থাকছে।আবার মঙ্গলকোট লাগোয়া আউশগ্রামেও গন্ডগোল এর খবর মিলেছে।   ভোটের পরের দিনও উত্তপ্ত হলো আউসগ্রাম। ব্যাপক উত্তেজনা আউসগ্রাম এর বিভিন্ন এলাকায় । বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে ।আউসগ্রামের ছোড়া তে আজ সকাল থেকেই শুরু হয়েছে তৃনমূল বিজেপি সংর্ঘষ। ব্যাপক উত্তেজনা ছোড়া গ্রামে।রামনগড় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি ভাংচুর হয়েছে। আক্রান্ত বিজেপির লোকেরা পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ।পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।পুলিশ সূত্রে খবর,আটক করা হয়েছে ৮ জন কে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে।  

কর্মবিরতির মাঝে কেন অনুব্রত মন্ডলের হয়ে মামলা? শোকজ আইনজীবী কে


মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

যতদিন যাচ্ছে ততই যেন হাওড়া আদালতে আইনজীবী আক্রান্ত ঘটনায় পরিধি ক্রমশ বাড়ছে। গত ২৪ এপ্রিল হাওড়া আদালত চত্বরে গাড়ি পার্কিং ঘিরে যে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাতে  রাজ্যের সবকটি আদালত এজলাসে আইনজীবীহীন অবস্থায় বিচারপ্রক্রিয়া শিকেয় উঠেছে। এক সপ্তাহ কর্মবিরতিতেও কোন সমাধান সুত্র বের হয়ে আসেনি। উল্টে সমস্যা আরও দীর্ঘায়িত হয়েছে। ইতিমধ্যেই  কলকাতা হাইকোর্টের সুয়োমুটো মামলায় বাদী বিবাদী পক্ষ কে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার হাওড়া জেলা আদালতে জেলাজাজের কাছে রিপোর্ট গ্রহণ করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এমনকি গত ২৯ এপ্রিল অর্থাৎ সোমবার  হাইকোর্টের পাঁচজন বিচারপতির এক প্রতিনিধিদল হাওড়া জেলা আদালত পর্যবেক্ষণে যান। তাঁরা আক্রান্ত আইনজীবিদের পাশাপাশি জেলাজাজের কাছে আদালত স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগও নেন। কিন্তু হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার সহ চার আইপিএসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ ছাড়া আইনজীবীরা  কর্মবিরতি আন্দ্রোলনের রাশ ছাড়তে অপারগ।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের বার এসোসিয়েশন হাওড়া আদালতে আইনজীবী আক্রান্ত ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এরফলে ঘটনাটি আর এইরাজ্যে নয়, সমগ্র দেশের কাছে বিশেষত আইনজীবি মহলে আলোচিত  বিষয় হিসাবে  পরিচিত লাভ করলো।পুলিশি সন্ত্রাস নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যেখানে হাওড়া জেলা আদালতের সিংহভাগ সরকারি আইনজীবী ( পিপি)  তাঁদের ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গোটা রাজ্যের সমস্ত আইনজীবী যেখানে কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। সেখানে বীরভূম জেলা তৃনমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের হয়ে কলকাতা হাইকোর্টে  মামলা লড়তে গিয়ে আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টপাধ্যায় আইনজীবীমহলে একপ্রকার একঘরে হয়ে গেছেন। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে শোকজ করেছে 'বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল '। যদিও বেশিরভাগ আইনজীবীদের রণংদেহী মেজাজে বাধ্য হয়ে শোকজ টি করেছে বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত গত ২৮ এপ্রিল চতুর্থ দফার নির্বাচন অবাধ করার জন্য বীরভূম জেলা তৃনমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে বারোঘন্টার 'নজরবন্দি' রাখার নির্দেশিকা জারী করে থাকে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এই নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গতকাল অর্থাৎ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দেবাংশু বসাকের এজলাসে মামলা দাখিল করেন বিশিষ্ট তৃনমূল নেতা তথা বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর সদস্য বৈশ্বানর চট্টপাধ্যায় মহাশয়। যেখানে সারা রাজ্য জুড়ে আইনজীবীরা পেশাগত বৃত্তিকে জলাঞ্জলি দিয়ে কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। সেখানে উনি কেন অনুব্রত মন্ডলের হয়ে মামলা লড়তে গেলেন?  তা নিয়ে তীব্র জটলা কলকাতা হাইকোর্ট সহ সিটি সিভিল কোর্টের অন্দরে আইনজীবিরা শুরু করে দেন। সিটি সিভিল কোর্টের ষষ্ঠতলায় বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর অফিসে একপ্রকার বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে দেন শয়ে শয়ে ক্ষুব্ধ আইনজীবী।গতকাল  সন্ধে সাড়ে সাতটায় - মামলা কেন করলেন এই কর্মবিরতির মাঝে, তা নিয়ে শোকজ করা হয় ওই বর্ষীয়ান আইনজীবী কে। যদিও বীরভূম জেলা তৃনমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলায় বিচারপতি দেবাংশু বসাক কমিশনের আদেশনামা কে বৈধ বলে উল্লেখ করেন। অপরদিকে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সাথে বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর প্রতিনিধিদের আলোচনা হলেও কোন সমাধান সুত্র বের হয়নি। আগামী ২ মে ফের আলোচনার দিনক্ষণ হয়েছে বলে প্রকাশ।উল্লেখ্য গত ২৪ এপ্রিল থেকে যে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে, তা আগামী ২ রা মে পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আইনজীবীদের সম্মিলিত মঞ্চ। একাধারে সুপ্রিম কোর্টের বার এসোসিয়েশনের হাওড়া কান্ডে নিন্দা প্রস্তাব, অপরদিকে কর্মবিরতির মাঝেই স্বতন্ত্রভাবে অনুব্রত মন্ডলের হয়ে মামলা দাখিল বিষয় দুটি পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাচ্ছে - হাওড়া জেলা আদালতে আইনজীবী আক্রান্ত ঘটনায় জল অনেকদূর গড়াতে চলেছে। পুলিশ বনাম আইনজীবীদের এহেন লড়াইয়ে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ক্রমশ বাড়ছে ' নিরপরাধ' বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে ।  কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল বলেন - আক্রান্ত আইনজীবীদের সুবিচার দিয়ে  আমরা চেস্টা চালাচ্ছি সমস্ত আদালত সচল রাখার  ।                                                                                                                                                                                                                                                                            

     

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER