মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০১৯

আদালতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলবে ২ মে পর্যন্ত


মোল্লা জসিমউদ্দিন - টিপু, 

সোমবার দুপুরে রাজ্য বার কাউন্সিল এর জরুরি বৈঠকে হাওড়া কান্ডে কর্মবিরতি নিয়ে জট কাটলো না। উল্টে আগামী ২ রা মে পর্যন্ত তা বহাল রাখার সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাশও হয়ে গেল। অর্থাৎ গত বুধবার অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল হাওড়া জেলা আদালতে গাড়ী রাখা নিয়ে যে সংঘর্ষ পুলিশ বনাম আইনজীবীদের মধ্যে হয়েছিল। তার রেশ কমছে না, উল্টে ক্রমশ বেড়েই চলেছে ভোগান্তি । ইতিমধ্যেই টানা ছয়দিন ধরে রাজ্যের সবকটি আদালতে আইনজীবীদের সার্বিকভাবে কর্মবিরতি চলেছে এবং সেইসাথে আরও তিনদিন চলবে উকিলবাবুদের এই কর্মসূচি। অর্থাৎ টানা নয়দিনের সময়সীমায় আদালত একপ্রকার বিচারপ্রার্থীদের কাছে বন্ধ রইলো। এতে চরম বিপাকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার বিচারপ্রার্থীরা। এমনতেই মামলার পাহাড় ক্রমশ বাড়ছে বিভিন্ন আদালতের বুকে। এক বিচারপ্রার্থী জানান - "কর্মবিরতি ছাড়াও অন্যভাবে প্রতিবাদ উকিলবাবুরা জানাতে পারতেন। এর ফলে আমরা মামলায় ডেটের পর ডেট  পাচ্ছি, যারফলে সমস্যা আরও বাড়ছে আমাদের  "। জানা গেছে,  গত ২৪ এপ্রিল হাওড়া জেলা আদালতে গাড়ী রাখা নিয়ে তুমুল মারপিট হয় পুলিশ বনাম আইনজীবীদের মধ্যে।ঘটনার দিনেই রাজ্যের সব আদালতের আইনজীবীরা ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি ঘোষণা করে দেন। সেদিনই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে হাওড়া জেলাজাজের কাছে রিপোর্ট তলব করে। বৃহস্পতিবার তা পাঠিয়ে দেন হাওড়া জেলাজাজ৷ শুক্রবার বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর প্রতিনিধিরা হাওড়া জেলা আদালতে যায়। বার এসোসিয়েশনের পাশাপাশি জেলাজাজের চেম্বারে বৈঠক হয়। বার কাউন্সিল এর পক্ষে আহত ছাব্বিশ জন আইনজীবীদের চিকিৎসার জন্য কুড়ি হাজার টাকা সাহায্য করে। তবে পরিস্কারভাবে হাওড়া জেলা বার এসোসিয়েশন জানিয়ে দেয় - হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের আওতায় চার আইপিএসের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করতে হবে, সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে। এছাড়া রাজ্য সরকারের কাছে আহত পিছু পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ অর্থাৎ এক কোটি ত্রিশ লাখ টাকা উকিলদের দিতে হবে। এইরূপ পরিস্থিতির মাঝে হাওড়া জেলা আদালতের পনেরোজন  সরকারি উকিল (পিপি) দের মধ্যে এগারোজন ইস্তফাপত্র দেয় গত বুধবারের পুলিশি সন্ত্রাস অভিযোগ তুলে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সাথে আলাপ আলোচনায় বসেন বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর প্রতিনিধিরা। সেখানে এখনও অবধি কোন সমাধান সুত্র বের হয়নি বলে প্রকাশ। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। কেননা ইতিমধ্যেই তাঁর দপ্তর ( রেজিস্ট্রার জেলারেল)  হাওড়া জেলা আদালতের জেলাজাজের কাছে রিপোর্ট নিয়েছে৷ সেইসাথে আইনজীবীদের সাথে দফায় দফায় তিনি বসেছেন।পুলিশ বনাম আইনজীবীদের এহেন গন্ডগোলে সবথেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিচারপ্রার্থীরা। এটি শুধু কোন নিদিষ্ট আদালতের কর্মবিরতি নয়। সমগ্র রাজ্য জুড়ে চলছে। এই কর্মবিরতিতে বিপাকে পড়েছে  কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনও। কেননা অবাধ নির্বাচনের লক্ষে পেন্ডিং ওয়ারেন্ট গুলি কার্যকর করার যে নির্দেশিকা দেয়। তার বাস্তব প্রতিফলন হচ্ছেনা আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকার জন্য। এই জটিল পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কে কোন সদর্থক ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। যেখানে গোটা রাজ্যের প্রায় মানুষ  আদালতে কর্মবিরতিতে কমবেশি বিপযস্ত হচ্ছেন সেখানে রাজ্য প্রশাসন চুপ কেন?  সে নিয়েও উঠেছে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। গত ২৪ এপ্রিল হাওড়া জেলা আদালতে গাড়ীর পার্কিং নিয়ে রণক্ষেত্র রুপ নিয়েছিল গোটা এলাকা। আদালত চত্বরে তো বটেই বিভিন্ন বিচারকের এজলাসেও তান্ডবলীলা দেখা যায় পুলিশের। এমনকি এক মহিলা আইনজীবী কে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা যায় এক সিভিক পুলিশ কে। ঘটনার প্রায় ভিডিওগ্রাপি দেখা যায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।সেইসাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এইসব ভিডিও। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন কেন অভিযুক্ত পুলিশঅফিসার দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কাটোয়া মহকুমা আদালতের আইনজীবী অনিন্দ চট্টরাজ বলেন - আমাদের সহকর্মীরা রাস্তায় মার খেয়ে রক্তাক্ত হবে, আর আমরা বসে থাকবো?                                                                                                                                                                                                                                             

    

অনুব্রতের খাস তালুক মঙ্গলকোটে ভোট হল ইভিএমে আতর রেখে




মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

চতুর্থ  দফা নির্বাচনে যে আটটি আসনে ভোটপর্ব মিটলো, তাদের মধ্যে বোলপুর লোকসভার অধীনে কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকা এবং বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের অধীনে থাকা কাটোয়া, কালনা, পূর্বস্থলী উত্তর, পূর্বস্থলী দক্ষীন বিধানসভা এলাকায় ভোট মোটামুটি শান্তিতেই মিটলো। সেইসাথে বর্ধমান পশ্চিম ( দুর্গাপুর)  কেন্দ্রের অধীনে মন্তেশ্বর বিধানসভা এলাকায় বড় ধরনের কোন গন্ডগোলের খবর মিলেনি। হানাহানি না ঘটায় শাসকদল সহ বিরোধীদলগুলিও একপ্রকার খুশি বলা যায়।তবে এই ভোটে নীরব সন্ত্রাস টি সুসংগঠিতভাবে ঘটেছে বলে অভিযোগ। কোন কোন ক্ষেত্রে ছাপ্পা, ইভিএম মেশিন খারাপের খবর মিলেছে। আবার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি প্রার্থী কে মারধর সহ গাড়ী ভাঙচুর করার। শাসক শিবিরের পক্ষে অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সোমবার সকালে  বোলপুর আসনের অধিনে থাকা   কেতুগ্রামের খাঁজি বিদ্যালয়ে ১০৪ এবং ১০৭ নং বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সামনেই ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠে প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠার সাথেসাথেই নির্বাচন কমিশন অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।   উক্ত দুটি বুথে নুতন প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ করে নির্বাচন কমিশন  । এদিন কালনা শহরে যোগীপাড়ায় বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাসের উপর হামলার অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গাড়ী ভাঙচুর এর পাশাপাশি প্রার্থী কেও মারধর করা হয়েছে। প্রার্থীর হাতে চোট লেগেছে বলে জানা গেছে   । কালনা থানায় এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। যদিও তৃনমূল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মঙ্গলকোটের চকগ্রামে, বনকাপাসিতে ইভিএম মেশিন বিকল হয় ভোটপর্বের সূচনাতেই। ভোট দিতে আসা ব্যক্তিরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ভাতারে দশের বেশি বুথে ইভিএম বিকল দেখা যায়। পূর্বস্থলীর পাটুলির (ছাব্বিশ নং বুথে)  তেও একই অবস্থা। ঘন্টা খানেক পরে অবশ্য সচল ইভিএম দেওয়া হয় বুথগুলিতে। অপরদিকে মঙ্গলকোটের মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার ১৩২ নং বুথে ইভিএমে তৃণমূল  প্রতীকে আতর দেওয়ার অভিযোগ উঠে ভোটকর্মীদের ম্যানেজ করে । এমনকি ভোট দেওয়ার পর বুথের দুশো মিটারের মধ্যে থাকা শতাধিক শাসকদলের  লোকজন সেই ভোটারের হাতের আঙুলের ঘ্রাণ নিয়ে ভোট তাদের পক্ষে দিয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা নীরিক্ষা চালায় বলে অভিযোগ। মঙ্গলকোটের কামালপুরে বাইশটি পরিবার কে ভোটগ্রহণের আগের দিন ভোট না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে মঙ্গলকোটের গোতিস্টা, চৈতন্যপুর  প্রভৃতি গ্রামের বুথগুলিতে স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের মহিলা ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে বিরোধী দলগুলির পক্ষে। তবে সমস্ত  অভিযোগ অস্বীকার করে তৃনমূলের ব্লক নেতৃত্ব জানিয়েছেন - "রক্তপাতহীন ভোট  হয়েছে,  বিরোধীরা শতকরা আশিভাগ বুথে এজেন্ট বসাতেই পারিনি। যদি বলতো তাহলে আমাদের লোক জোগাড় করে দিতাম!" গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মঙ্গলকোট বিরোধীশুন্য হয়েছিল। তাই এবার লোকসভায় মন খুলে ভোট দেবে বলে আশাও করেছিল বেশিরভাগ ভোটার। সেই আশাতেও জল ঢালে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা। ভোটের দশদিন আগে লোকদেখানো দুই থেকে তিনবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা রুটমার্চ করলেও, নির্ভয়ে ভোটদানের সেইরুপ আশা জোগাতে পারেনি। জানা গেছে, মঙ্গলকোটের চৈতন্যপুর, গোতিস্টা, পালিগ্রাম, মাঝীগ্রাম প্রভৃতি গ্রামের বুথে গত রবিবার দুপুরের মধ্যে ভোটকর্মী সহ দুই জন গড়ে জওয়ান ঢুকে যান। স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের হাতের তৈরি খাবার তৃণমূলের স্থানীয়  বুথ কর্মীরা ভোটকর্মীদের হাতে দেয়। সেইসব সিগারেট - খৈনি সহ নানান খাবার পৌঁছে দেয় বলে অভিযোগ। সেটিং ফিটিংস করে যতদুর ম্যানেজ করতে হয় করেছে তারা। যারা প্রতিবাদী ভোটকর্মী তাদের কে তাদের স্ত্রীর সিঁথির সিঁদুরের কথা তুলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটকর্মী জানিয়েছেন। তাই তো মঙ্গলকোটের মাঝীগ্রামে বকুলিয়ার ১৩২ নং বুথে ইভিএম মেশিনে তৃনমূল প্রতীকে আতর দেওয়া কিংবা মঙ্গলকোটে প্রায় বুথে খাবার সাপ্লাইকারী স্বনির্ভর গ্রুপের মহিলাদের শাসকদের হয়ে ভোট করানোর অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবার শাসকদলের সারাদিনের দায়িত্বে থাকা তিন বুথএজেন্টদের একসাথে ভোট লুটে বিশেষ সক্রিয়তা চোখে পড়েছে। জানা গেছে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ তুলে লিখিতভাবে জানিয়েছে বিজেপি শিবির।                                                                                                                                                                          

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER