মঙ্গলবার, মার্চ ২৪, ২০২০

দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরেছে হাজারের কাছাকাছি শ্রমজীবী , করোনা ভয় মঙ্গলকোটে

মোল্লা জসিমউদ্দিন
  
সারা বিশ্বে করোনা থাবায় প্রাণহানি অব্যাহত। এই রাজ্যেও  সোমবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা শুরু হয়ে গেছে। তাই করোনা নামক 'যমদূত' প্রতিটি মানুষকে চরম দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা  । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোট ব্লক এলাকার প্রায় হাজারের কাছাকাছি ভিনরাজ্যে কাজ করা শ্রমিকরা ফিরেছে নিজ নিজ বাড়িতে। বেশিরভাগই কেরালা  - চেন্নাই - মুম্বাই - পাঞ্চাব থেকে এসেছে গত সপ্তাহে  ।  এদের সিকিভাগ প্রতিনিধিদের কাছে ব্লক প্রশাসন পৌঁছাতে পারলেও বেশিরভাগই 'বিদেশ থেকে ফিরে এসে কার না ভালো লাগে' সূরে স্থানীয় ভ্রমণে ব্যস্ততায় কাটাচ্ছে। আর এতেই মঙ্গলকোটের বিশেষত লাখুরিয়া - গোতিস্টা - পালিগ্রাম - চাণক অঞ্চলগুলিতে এলাকাবাসীদের কাছে তৈরি করেছে করোনা নিয়ে চাপা আতঙ্কের পরিবেশ। ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে হোম কোয়ারেন্টাইন থাকবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভিনরাজ্যে কর্মরত থাকা আসা শ্রমিকদের কে। ওই পরামর্শটুকু দেওয়া ছাড়া আর কোন স্বাস্থ্য পরিক্ষার কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকে 'জনতা কারফিউ' এর কোন প্রভাব পড়েনি মঙ্গলকোটে। অন্যান্য দিনের মতনই বাজার - ঘাটে ব্যস্ত থেকেছে মঙ্গলকোট। তবে পুলিশের তরফে বারবার প্রচার শুরু হয়েছে লকডাইনের মুখ্য উদ্দেশ্য নিয়ে।  ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের বড় অংশ মোটরবাইক  কিংবা সাইকেলে বিভিন্ন গ্রামের  মেঠোপথ গুলিতে 'স্বদেশী' হাওয়া লাগাতেই ব্যস্ত!  তাই প্রশ্ন উঠা শুরু করেছে - এইভাবেই যদি হোম কোয়ারেন্টাইন চলে, তাহলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা দেখা যাবে বেশি মঙ্গলকোটের বুকে। ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের কেউ কেউ বাড়ী ফেরার রেলপথে আসবার সময় থার্মাল গানে  সম্মুখিন হওয়ার ছবি দেখিয়েছে। তবে সেটি হাতেগোনা কয়েকজনের। হাজারের কাছাকাছি ভিনরাজ্যে কাজ করা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরিক্ষায় ঠিকমতো নজর না দিলে করোনা ভাইরাস অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে মঙ্গলকোট দ্রুত চলে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে  করছেন। যদিও কাটোয়া মহকুমাশাসক জানিয়েছেন - "এত সংখ্যক ব্যক্তিদের হাসপাতালে পর্যবেক্ষণ করে রাখার মত পরিকাঠামো আমাদের নেই " । অপরদিকে মঙ্গলকোট ওসি মিথুন ঘোষ জানিয়েছেন - " স্থানীয় সিভিক / ভিলেজ পুলিশের মাধ্যমে আমরা ভিনরাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের উপর নজরদারি চালাচ্ছি, সেই সাথে দফায় দফায় প্রচার গাড়ি যাচ্ছে প্রায় গ্রামে। এত কিছুর পর যদি কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন এড়িয়ে যান, তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে    "  ।                                                                                          

করোনা তুমি যতই শক্তিশালী হওনা, তবে অপারেজয় নও

গৌতম তালুকদার
  

করোনা: অমিত শক্তিশালী, কিন্তু অপরাজেয় নয়
     কথাটা একদমই সত্যি যে করোনা ভাইরাস যতই ক্ষমতাবান হোক, তাকে পরাজিত করা সম্ভব। এই শত্রুকে সমূলে ধ্বংস করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অমোঘ অবিনশ্বর সেই অস্ত্রের প্রয়োগ করতে হবে, যার নাম অসহযোগিতা। হ‍্যাঁ, করোনার সঙ্গে কোনোরকম সহযোগিতা করা চলবে না। *মনে রাখতে হবে, সে একাই একশো হলেও শেষপর্যন্ত কিন্তু একা। আর তাই অসহায়,দুর্বল। তাকে যদি নির্দিষ্ট সময় পযর্ন্ত একা রাখা যায়, তবে সে নিজের মৃত্যু নিজেই ডেকে আনে। এমনই করোনার জীবনের সংজ্ঞা। কিন্তু যদি সে একবার কোনো মনুষ্য শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং এক দেহ থেকে অন্য দেহে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়, তাহলে তার মারণক্ষমতা যে কত গুণ বেড়ে যেতে পারে তা আমাদের কল্পনাতীত। এই মুহূর্তে আমরা কিছুটা হলেও সেই ক্ষমতা প্রত‍্যক্ষ করেছি বা করছি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। *নিয়ম মেনে করোনা আক্রান্ত ব‍্যক্তিকে যদি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো আলাদা রাখা যায় (যা এমন কিছু শক্ত কাজ নয়), তবে করোনার জারিজুরি একেবারেই শেষ হয়ে যাবে। সে হয়ে যাবে নখদন্তহীন। এই জন‍্য আমাদের সবাইকে কিছুদিনের জন‍্য হলেও নিজঘরে স্বেচ্ছাবন্দী হয়ে থাকতে হবেই। অকারণে ঘোরাঘুরি করা চলবে না*। নিয়ম মেনে নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হবে। এটা করলেই হবে করোনার সঙ্গে চরম অসহযোগিতা। আর এই অসহযোগিতাই হল করোনার মারণাস্ত্র।
      *ভারতবাসী এই লড়াইয়ে হারবে না। হারতে পারে না। কারণ অসহযোগিতার যে কী প্রবল শক্তি, তা সারা বিশ্বকে একদিন শিখিয়েছে এই দেশ। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের একদিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল অগণিত ভারতবাসী। সেই লড়াইয়ের বীজ প্রত‍্যেক ভারতবাসীর প্রতিটি রক্তবিন্দুতে নিহিত রয়েছে যুগ যুগ ধরে।* তাই আমরা আজ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ-- অতি প্রয়োজন না থাকলে আগামী কয়েকটি দিন আমরা ঘর থেকে বেরোব না। ব‍্যস। এটুকু করতে পারলেই করোনা আমাদের দেশ ছেড়ে পালাবার পথ পাবে না।
      *বিধান শিশু উদ‍্যানের আমরা সবাই-- ছোটো থেকে বড়ো-- এই অসহযোগ লড়াইয়ে সামিল। প্রতিদিন কয়েকশ কচিকাঁচার কলকাকলিতে উদ‍্যানের সুইমিং পুল, খেলার মাঠ থেকে দোলনা, চরকি মুখরিত হয়ে থাকে। বিধান সরোবরের জল ঝলমলিয়ে হাসতে থাকে। প্রয়াসের অফিস ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ কর্মীদের কর্মব‍্যস্ততায় চঞ্চল হয়ে থাকে। আজ সেখানে 'সেই বুড়োটা' একা পাহারা দিচ্ছেন তাঁর সাধের উদ‍্যানকে। সেই শুরুর সময় থেকেই তিনি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন উদ‍্যানের প্রতিটি ধুলিকণার সঙ্গে। তাই তো বলি-- দাদু, তোমার ভাবনায় আমাদের পথচলা।*
       আর একটা কথা। *আসুন আমরা সমস্ত ভারতবাসী সেই দেবতার কাছে সর্বান্তকরণে আত্মসমর্পণ করি, যাঁর নাম বিজ্ঞান*। যিনি সত‍্যি সত্যিই এই মানবজাতিকে রক্ষা করতে পারবেন। এবং কায়মনোবাক‍্যে প্রার্থনা করি-- বিজ্ঞানদেবতার সেইসব একনিষ্ঠ সাধক, সেইসব বিজ্ঞানী, যাঁরা রাতদিন জীবনের ঝুঁকির তোয়াক্কা না করে গবেষণা করে চলেছেন এই মারণ ভাইরাস COVID-19 ওরফে করোনার প্রতিষেধক তৈরি করতে,তাঁরা যেন অচিরেই সাফল‍্য অর্জন করতে পারেন।
       *সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শত্রু বদলেছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, জাতির বিপদে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বারবার লড়াই করেছি এবং জয়ী হয়েছি। এবারও আমরা হারবো না।*

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER