মানস দাস, মালদা
খুব শিগগিরই রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করতে পারে কেন্দ্রের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন । ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত খসড়া তৈরির কাজে কমিশন হাত দিয়েছে বলে খবর। রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকদের বর্ধিত বেতনের পুরোটাই আগামীতে বহন করতে হবে রাজ্যকে। এমনকি শিক্ষকদের বেতন মেটাতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিজে থেকেই 30 শতাংশ ফান্ড তৈরি রাখতে হবে। এমনই বেশকিছু সম্ভাব্য নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার দাবি নিয়ে বুধবার দিল্লিতে ইউ জি সি চেয়ারম্যান বি ডি সিং-এর সঙ্গে দেখা করলেন দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুজয় ঘোষ। বুধবার দুপুরে প্রায় আধঘন্টা ধরে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের চেয়ারম্যান । উপস্থিত ছিলেন কমিশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি অর্চনা ঠাকুরও। বৈঠকের পর কৃষ্ণকলি বসু জানান, "কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বর্ধিত বেতন নিয়ে যে নয়া নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আনতে চলেছে তাতে শিক্ষাব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণ ও বানিজ্যিকিকরণে রূপান্তরিত করার প্রয়াস লক্ষ্যণীয় । এতদিন পে রিভিশনের পর শিক্ষকদের বর্ধিত বেতনের আশি শতাংশ কেন্দ্র ও কুড়ি শতাংশ রাজ্য প্রথম চার বছরের জন্য বহন করত। বাকি প্রায় ছ'বছর বর্ধিত বেতনের পুরোটাই রাজ্য সরকারকে বহন করতে হত। কিন্তু নতুন নির্দেশিকা জারি হলে পে রিভিশনের পর বর্ধিত বেতনের মাত্র 50 শতাংশ প্রথম চার বছর বহন করবে কেন্দ্র। অর্থাৎ এক্ষেত্রে রাজ্যের ওপর বাড়তি বোঝা চাপতে পারে । আমরা এমনই নানা বিষয়ে কথা বলেছি। ওরা গুরুত্ব দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন ।" একইসঙ্গে তিনি জানান, নতুন নির্দেশিকা য় রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষকদের বেতন বাবদ তিরিশ শতাংশ ফান্ড তৈরি রাখার কথা বলা হয়েছে । অর্থাৎ এক্ষেত্রে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের উন্নয়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হবে বলে অভিযোগ করেন কৃষ্ণকলি বসু। এমনকি যে সব কলেজে পড়ুয়া কম তাদের পক্ষে এই অর্থ যোগার করা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি । ওয়েবকুপার সভাপতি জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যান তথা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে । তার অনুমতি সাপেক্ষেই দিল্লিতে আসা বলে জানান তিনি। এদিকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে ইউ জি সি-এর নতুন নিয়মের সমালোচনা করে কৃষ্ণকলি বসু বলেন," প্রমোশনের নামে প্রহসন চালাচ্ছে ইউ জি সি। পদোন্নতির আবেদন করা এখন রীতিমতো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষকদের কাছে।" ইউ জি সি সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দিল্লি ও অন্যান্য রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠন কমিশনের কাছে একই দাবি রেখেছে। এখন দেখার কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়।