বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৫, ২০১৮

মুখ্যমন্ত্রী এত সাংস্কৃতিক প্রেমী, তবুও মঙ্গলকোটে অধরা জেলা গ্রন্থাগার মেলা

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

আগামী ২২ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর অবধি বাংলার প্রতিটি জেলায় জেলায় গ্রন্থাগার মেলা হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে চলতি মাসে কেন্দ্রীয় রাজ্য পাঠাগারে গ্রন্থাগার মন্ত্রী  সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মেলার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশাসনিক সভাও সেরে ফেলেছেন। গতবছর মন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী বিধানসভা কেন্দ্র মঙ্গলকোটে চেয়েছিলেন, তবে প্রশাসনের একাংশের রিপোর্টে তা হয়নি। জেলা গ্রন্থাগার মেলাটি হয়েছিল মঙ্গলকোট লাগোয়া মন্তেশ্বরে। নিজ বিধানসভা কেন্দ্র বলে নয়, মঙ্গলকোটে রয়েছে বিশ্বখ্যাত মনিষীদের নানান স্মৃতি।কেউ কেউ আবার ভূমিপুত্র।  সে মুঘল সম্রাট শাহজাহান বাদশার শিক্ষা ও দীক্ষাগুরু হামিদ বাঙালি বলুন কিংবা বৈষ্ণব কবি লোচনদাস। পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক,  কিংবা বিদ্রোহী কবি কাঁজি নজরুল ইসলাম কে চিনেন না এমন কোন বাঙালি ভূ-ভারতে  নেই বললেই চলে। এঁদের প্রত্যেকেরই স্মৃতি রয়েছে এই মঙ্গলকোটে। এহেন মঙ্গলকোটে স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তাঁর মন্ত্রিত্বে থাকা গ্রন্থাগার দপ্তরের পরিচালনায় জেলা গ্রন্থাগার মেলাটি করতে চাইছেন। গতবছর চেয়েছিলেন, আপ্রাণ চেস্টা করেও তা হয়নি। হয়েছিল মন্তেশ্বরে। এবছরও মনেপ্রাণে চাইছেন মঙ্গলকোটে হোক। এবারেও সেই পথে কাঁটা হচ্ছেন অনেকেই। লোচনদাস - হামিদ বাঙালি - কুমুদরঞ্জন মল্লিক - কাঁজি নজরুল ইসলামের লালনভূমি মঙ্গলকোটে জেলা গ্রন্থাগার মেলা না হওয়াটা খুবই বেদনাদায়ক বলে জেলা সাহিত্যিক  মহলে প্রকাশ।  সাড়ে তিন লক্ষ অনুদানে শতাধিক স্টলের ব্যবস্থাপনায় রাজ্য গ্রন্থাগার দপ্তর জেলায় জেলায় এই সাংস্কৃতিকমূলক বইমেলার আয়োজন করে থাকে। যেখানে স্টলে থাকা গড়ে দুজন করে অর্থাৎ দুশোজনের দুবেলা খাবারও দিয়ে থাকে রাজ্য গ্রন্থাগার দপ্তর । গত ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগারে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী  সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী  কাটোয়া মহকুমার ৩০ জন লাইব্রেরীয়ানদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে পাঠাগারের উন্নয়ন কর্মসূচির পাশাপাশি মঙ্গলকোটে 'জেলা গ্রন্থাগার মেলা ' করার প্রস্তাবনা চুড়ান্ত পর্বে  উঠে। গতবারে ব্লক প্রশাসন মেলা নিয়ে সন্তোষজনক রিপোর্ট দেয়নি জেলা প্রশাসন কে। তাই জেলা গ্রন্থাগার মেলাটি হয়েছিল মন্তেশ্বরে। এবারেও কি হয়, তা নিয়ে জোর চর্চা মঙ্গলকোটের বুকে। গ্রন্থাগারমন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন - "যাতে মঙ্গলকোটে গ্রন্থাগার মেলাটি হয়, সেই বিষয়ে সবরকম চেস্টা চালাচ্ছি।"     তবে যতই চেস্টা চলুক না কেন এবারেও না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রথমত গ্রন্থাগার মেলা করার জায়গা পাওয়া যাচ্ছেনা মঙ্গলকোটের বুকে। বিধায়ক বিরোধী শিবির এই মুহুর্তে পঞ্চায়েত সমিতি,  সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন রয়েছে। ব্লক প্রশাসন সর্বপরি স্থানীয় থানাও ব্লক তৃনমূলের নেতাদের বাইরে যাওয়ার সাহস নেই বললেই চলে। এইরুপ দাবি বিধায়ক শিবিরে। যে মঙ্গলকোটে প্রতিটি কোনায় কোনায় মাঠের ধান উঠলে জুয়া খেলা সহ লেটো নাচ (অশ্লীল নাচ )  ভালো কথায় 'বুগি উগি ড্যান্স' এর মেলা প্রতি রাতে হয়। এমনকি মঙ্গলকোট থানা,  ব্লক অফিসের পাঁচশো মিটারের মধ্যে চলে। সেই মঙ্গলকোটের ইতিহাসে 'জেলা গ্রন্থাগার মেলা ' করার সুযোগ দু দুবার এলেও রাজনীতির বেড়াজালে সেই সৌভাগ্য লোচনদাস - হামিদ বাঙালি - কুমুদরঞ্জন মল্লিক - কাঁজি নজরুল ইসলাম স্মৃতি ধন্য মঙ্গলকোটে হচ্ছেনা। অথচ ব্লক তৃনমূলের নানান কর্মকাণ্ড মঞ্চ বেঁধে 'রাতারাতি' অনুমতির অনুমোদন পাওয়া যায়। মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগারের সামনে জায়গায় করার চেস্টা করলেও,  সেই জায়গার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দলীয় অফিসে ডেকে চকমকানি দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ। অভিযোগ, বিধায়ক অনুগামীদের মত গাঁজার মামলায় ফাসিয়ে জেলে বছরের পর বছর থাকার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। দলীয় ও পুলিশি সন্ত্রাসের ভয়ে কেউ 'জেলা  গ্রন্থাগার মেলা' করার নো অবজেকশন তে সই করতে চাইছেনা। জানা গেছে,  এইসব কলকাঠি দিচ্ছেন বাম আমলের টপ ঠিকেদারের গাড়ীতে চাপা এক ব্লক তৃনমূল নেতা। যার সাথে বিধায়কের আদায় কাঁচকলা সম্পক। বিধায়ক বিরোধী শিবিরের আশংকা,  জেলাস্তরের এই বইমেলা ঘিরে সিদ্দিকুল্লাহ স্থানীয় রাজনীতিতে মাইলেজ পেতে পারে। তাই কোনমতেই গতবারের মত এবারেও জেলা  গ্রন্থাগার মেলা করতে দেওয়া চলবেনা। যদিও অভিযুক্ত পক্ষ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এত সাংস্কৃতিকপ্রেমী,  সেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্ত্রিসভার এক বর্ষীয়ান সদস্য বিশ্বখ্যাত মনিষীদের চারণভূমি মঙ্গলকোটে বইমেলা করতে চাইছেন। অথচ পারছেননা, তা নিয়েও উঠছে একরাশ প্রশ্নচিহ্ন।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER