শনিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২০

চোখের ইশারায় ভালোবাসা

চোখের ইশারায় ভালবাসা 


ফারুক আহমেদ 


উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হচ্ছে শুক্রবার। তারপর থেকে অফুরন্ত সময় নাফিকের হাতে। রেজাল্ট বের হলে কলেজ জীবন ও ভালবাসার আকাশে জ্বলজ্বল করবে নাফিক। সে এসব ভাবতে থাকে। সে চায় প্রকৃত মানুষ হতে। সমাজের জন্য কিছু করতে। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই সমাজের কল্যাণে ছোট্ট ছোট্ট কাজ করে সে। রাস্তায় পড়ে-থাকা বিপদ সরিয়ে রাখে নিরাপদ জায়গায়। ইটের টুকরো, কলার খোসা বা ভাঙা কাচের টুকরো, ডাবের খোলা দেখলে সে সরিয়ে রাখে নিরাপদ আশ্রয়ে। আর সময় পেলেই নজরুল-সুকান্ত পাঠাগারে গিয়ে রফিকুল ইসলাম কাকুর সঙ্গে নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। ঘটকপুকুর হাই স্কুলে পড়তে পড়তেই পাঠাগারের লাইব্রেরিয়ান কাকুকে আপন করে নেয়। কত বইয়ের সম্ভারে সাজানো আছে পাঠাগারটি। লাইব্রেরিয়ান কাকুকে সে জ্ঞানের সমুদ্র মনে করে।

মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে নাফিক আহমেদ। সে ভালো রেজাল্ট করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কলারশিপের ফর্ম সংগ্রহ করে এবং সেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়ে আসে বিভিন্ন দফতরে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাঁর সাহায্যে স্কলারশিপ পেয়েও যায়। গরিব ছাত্র স্বপন ও নিজামের জন্য বইও কিনে দেয়, টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে। নাফিকের বন্ধু মহম্মদ গোরাচাঁদ আলি পরবর্তীতে ডাক্তার হয়ে বড়ালী গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে।  

একবার নাফিক স্কুল জীবনে বাড়ির বিনা অনুমতিতেই স্কুলের বন্ধু কুতুবউদ্দিন গাজীর সঙ্গে চৈতালি প্রেক্ষাগৃহে শাহরুখ খানের  "ডর" সিনেমা দেখতে যায়। সেই থেকে সে শাহরুখ খানের অভিনয়ের ভক্ত। জাদু তেরি নজর... গানটি বেশ মনে দাগ কাটে। 

মনে পড়ে আম বাগানের ফাঁক-দিয়ে-দেখা দুটো চোখ আজও তাকে বাঁচার আকাশ দেখায়।  

বেশ চলছিল স্কুল ও খেলাধুলা। সে শাহরুখ খানের জবরদস্ত ফ্যান হয়ে ওঠে। ঘটকপুকুর ও ভাঙড় হাই স্কুলের অনেকেই জানে নাফিক শাহরুখ খানের ভক্ত। টিউশানি থেকে খেলার মাঠের সমস্ত বন্ধুরাই জানে নাফিক শাহরুখ খান-এর সব থেকে বড় ফ্যান।

সানির সঙ্গে শাহরুখ খান নিয়ে আলোচনা চলে। সানি কলকাতার নামি স্কুলে পড়ে,কলকাতাতেই থাকে। বড় ছুটি পেলেই সে মা-বোনের সঙ্গে ঘটকপুকুরের বাড়িতে চলে আসে। আর তখন নাফিকের সঙ্গে সানির দেখা হয়। খেলার মাঠে। তখন কত গল্প করে দুজনে। শাহরুখ খানের নতুন চলচ্চিত্র নিয়ে তুমুল আলোচনা চলে। ভালো অভিনয় করার জন্য কী কী পুরস্কার পেয়েছে, কোন ছবি সব থেকে বেশি হিট হয়েছে– এইসব নিয়ে। 

একাবার সানিদের বাড়ির ছাদে চড়ুই ভাতির আয়োজন আজও ভুলতে পারেনি নাফিক। "দিল তো পাগল হে" সিনেমার গান শুনতে শুনতে চড়ুই ভাতের আয়োজন আজও মনে পড়ে। আর সেই গান, চাঁদনী কুছ কাহাঁ রাতনে কুছ শুনা....। সেদিন মাংসের কি দারুণ টেস্ট হয়েছিল। সানির মায়ের হাতের মাংস রান্নার তারিফ করেছিল নাফিক। 

অন্য দিকে শাহরুখ খান নিয়ে খেলার মাঠে, স্কুলে, কলেজে অন্য অনেকেই বেশ মজা করে নাফিককের সঙ্গে। 

একবার "সংবাদ প্রতিদিন" পত্রিকার শারদীয় সংখ্যায় শাহরুখ খানের জীবনী প্রকাশিত হয়। জীবনী পড়ে অনুপ্রেরণা পায় নাফিক। শাহরুখ খান স্কুল জীবন থেকেই খেলাধুলা ও পড়াশোনায় খুব ভালো। নাফিক ভালো পড়াশোনা করে না। সে ভালো খেলাধুলাও করে না।

সেবার নাফিক তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নাম দিয়ে সব খেলায় শেষের দিক থেকে প্রথম হয়। ঘটকপুকুর হাই স্কুল ও গার্লস স্কুল পাশাপাশি হওয়ায় খেলার একটাই মাঠ। নাফিক দৌড়ে সবার পিছনে পড়ে যায়, এতে অনেকেই হাসাহাসি করে। দৌড়ে সবার পিছনে পড়ে যাওয়ার জন্য সে লজ্জাও পায়।

সে শাহরুখ খানের এতো বড় ফ্যান। আর সে সবার সামনে হেরে যাবে তা হতে পারে না। 

বাড়ি ফিরে সে মাকে সব বললো। তার মায়ের পরামর্শ মতো নিয়মিত সারা বছর সে দৌড় অনুশীলন করলো। কবিতা আবৃত্তি, বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিজেকে তৈরি করলো।  পরের বছর নাফিক দৌড়ে প্রথম হলো। আবৃত্তি, বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রাইজও পেল। মনে মনে ঠিক করল সে চেষ্টা করলে পড়াশোনাতেও ভালো করতে পারবে। একটা জেদ চেপেছিল তার ভালো রেজাল্ট করতেই হবে। 

ক্লাস নাইনে উঠে সে শপথ নিল নিজের মনে, প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে। তাদের স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়ে বোদরা হাইস্কুলে। সেবার তার দাদা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। নাফিক তা দেখতে একদিন বোদরা হাইস্কুলে উপস্থিত হলো।

আম বাগানের ফাঁক দিয়ে দেখা সেই মায়াবী চোখের ভালবাসার চাউনি আবারও দেখতে পেল। 

সে যেন স্বপ্ন দেখছে...
তোমার বিনুনী করা চুলের প্রতিটি খাঁজে খাঁজে অফুরন্ত প্রেম যা ডাকে আমায়। আমার ভালবাসার মেঘ জমে ওঠে... খুঁজে ফিরি প্রতিনিয়ত তোমার ভালবাসা চোখের ইশারা। তোমার শরীর ও মনের মধ্যে কত জমেছে শিশিরের টুপটাপ ফোঁটা। এক ফোঁটা বৃষ্টিও পড়েনি কত বছর কত মাস কত দিন তা জানি না। জানি মুখোমুখি হতে পারলে এ জীবন ধন্য। তোমার হৃদয় আকাশ প্রেমিক।

নাফিক তখন ক্লাস নাইনে পড়ে। একটা ভাঙা-চোরা সাইকেল। গায়ে ঘটকপুকুর চৌমাথার ফুটপাত থেকে কেনা সবুজ রঙের গোলগলা গেঞ্জি। স্কুল যাওয়ার জন্য একটিমাত্র প্যান্ট। তাতে ধুলো লেগে থাকে সবসময়। সেই প্যান্ট আর গেঞ্জি পরেই ছুটে এসেছে বোদরা হাইস্কুল। 

আম বাগানের ফাঁক দিয়ে দেখা সেই চোখ। স্বপ্নের পরীর মতো অপূর্ব সুন্দরী রাজকন্যা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসছে। গেটের মুখে দাঁড়িয়ে-থাকা নাফিক তা দেখে চমকে ওঠে। নাফিকের চোখ পড়লো যখন তার চোখে, তখন সে দেখল তার হাতে মোমবাতি পিজবোর্ড কলম রাখার জন্য পেন্সিল বাক্স। বাবরি কাট চুল আর ভুবন জয়ের হাসিতে সে যে কি জাদু, তা শুধু নাফিকই জানে। 
 
এদিকে নাফিকের ভাঙা টালির ছাউনি দিয়ে বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর। ভিজে যায় বিছানার চাদর। মা-আব্বার আশা জাগায় নাফিক। সে নতুন আকাশ দেখার সাহস জোগায়। 

অন্য দিকে ভালবাসার জন্য কিছু করে দেখানোর জেদ। বই কলম খাতা নিয়ে সেই যে পড়তে বসা, আজও সে লিখছে, পড়ছে। প্রকৃত মানুষ হতে। 

একদিন সে তার ভালবাসার সামনা সামনি হয়ে সব মনের কথা খুলে বলবে। 

ভালবাসার যোগ্য হতে সে স্কুল জীবনে দু'টো পরীক্ষাতেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়।

কলেজ জীবন শেষ করে ভালবাসাকে পাওয়ার জন্য ‌সে একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিস সেক্রেটারি পদে কাজ জোগাড় করেছে। সে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার দৌড়ে ছুটে চলেছে। শিক্ষামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে নাফিক রাত দিন সোসাইটির কাজে আত্মনিয়োগ করে। 

জীবনে চলার পথে জুটেছে কত তাচ্ছিল্যের শেল, কত যন্ত্রণা, তা কেউ বোঝে না। অবজ্ঞার পাহাড় মাথায় নিয়ে পবিত্র ভালবাসার অপেক্ষায় প্রহর গুনে গুনে রাত কাটে নাফিকের। 

অবচেতন মনে বলে চলে নাফিক ফিরে এসো প্রেসিডেন্সি। মনে পড়ে কলেজ জীবনের ফেলে আসা সেই সব দিন। আর তোমার অফুরন্ত দোয়ায় প্রথম চাকরি পাওয়া। তবুও তোমাকে না পাওয়ার সকাল আসে। সূর্য উঠে। খাদহীন প্রেম টলমল করে এ বুকে।

সে স্বপ্নের মধ্যে বিড় বিড় করে কত কথা বলে--- এই নাও তোমার জন্য উদার বিস্তীর্ণ খোলা আকাশ। ভাবনার আসমান জুড়ে ভেসে ওঠে এ কার ছবি? কোন ছবি? বেলা অবেলায় এ কোন আত্মশুদ্ধি?  

নাফিকের লেখা না পাঠানো খামে ভালবাসার চিঠি। কত সুপ্ত প্রতিভার স্ফূরণ দেখি তোমার অণুপ্রেরণায়। মনে পড়ে ফেলে আসা দিন। মুষ্টিবদ্ধ হাত জেগে ওঠার আহ্বান। ভালবাসা প্রেমের গান। আইএসএসএন নম্বরের জন্য উৎসাহ দিলে। আবেদন মঞ্জুর ২৩২০-৩৪৯৮।.....

বসন্তপুরে চাকরি করতে করতে দূর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্য ও ইতিহাস বিভাগে এমএ পাশ করে নাফিক। নিষ্ঠার সঙ্গে বসন্তপুর এডুকেশন সোসাইটির সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সমৃদ্ধ করার কাজে মন দেয়। নাফিকের উদ্যোগেই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফুলে ফেঁপে উঠে। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে মডেল স্কুল ও এডুকেশন কলেজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। সে সব অতীত ইতিহাস।

কচি কলাপাতার মতো নরম হাতে হাত, চোখে চোখ রেখে আবারও নাফিকের অগ্নিশপথ। নতুন করে বাঁচার লড়াই। এবার নাফিক তাঁর প্রিয় নায়ক শাহরুখ খানের উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করতে ভর্তি হয়েছে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

ভুলতে না পারা পাপ-কথন। আকাশ কাড়ার মিছিলে ওরা কারা? ওরা ছুটছে... ওদের বিরামহীন ছুটে-চলা দেখে গর্জে ওঠে নাফিকের বিবেক। রুখে দেওয়ার মিছিলে পথ হাঁটে। বিভেদকামী শক্তিকে প্রতিহত করতে লিখে ফেলে মহান সহিষ্ণু উদার ভারতকথা।

খোলা জানালায় কত মুখ আর মুখের মিছিল।

মার্বেল শীতল টেবিল আর প্রকৃতির মধ্যে আজও সে খুঁজে ফিরছে আম বাগানের ফাঁক দিয়ে দেখা সেই অপরূপা চোখের ইশারায় ভালবাসা। সে চোখে মুখে আনন্দের অনুভূতি ভালবাসা সাত রঙের আবির। বাঁচার আকাশ। এ দেখা কখনও শেষ হয় না নাফিকের। সে স্বপ্ন দেখে। ছবি আঁকে। হঠাৎ করে তার মনের ক্যানভাস জুড়ে ভেসে ওঠে এ কোন ছবি? কার ছবি? বেলা অবেলায় এ কোন আত্মশুদ্ধি? 

শেষ চিঠি আজও পোস্ট করতে পারেনি নাফিক। হে আকাশ-চারিণী, মূল্যবান তারা জানো কি? তোমার জন্য এ বুকে আজও আকাশ রাখা। ভালবাসা চোখবৃষ্টি।

ভোরের নিস্তব্ধতায়, পিউকাঁহা পাখির ডাকে আজও ঘুম ভাঙে।

তখন তুমি দখিনা হাওয়ায় বিছানা ছেড়ে, শীতের চাদর জড়িয়ে আসো, লাল রঙের সোয়েটার আর কালো শালে শরীর মুড়ে। পরির মতো রাজকন্যা হয়ে। তখনও আধো ঘুমে, ভাঙা স্বপ্নে লীন হতে হতে হাতড়াতে থাকে মাটি। আলতোভাবে হাত রাখো কপালে।

লিচু ফুলে মৌমাছি তখনও খুঁজে ফিরছে মধু। অস্থির চোখে দেখা ঘড়ির চঞ্চল কাঁটা ঘুরে ঘুরে কখন হয়েছে সময়ের নদী। রাজকন্যা তুমি যেন নদীর গুঞ্জরণে প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আপন মনে গাইছো প্রেমের গান, কল্যাণপুর ষ্টেশনে। 

একবার একগুচ্ছ লাল গোলাপ ছাড়াই জানিয়ে ছিলাম 'একুশের বাংলা ভাষায়', ভালবাসি তোমায়।

পরীর মতো রাজকন্যা তখন তুমি ঠায় দাঁড়িয়ে, নির্বাক! আকাশের দিকে তাকিয়ে খুঁজছো শিমুল পলাশের মাঝে ভালবাসার রঙ। 

নতুন হাতে ড্রাইভিং, কাঁপা কাঁপা হাতে স্টিয়ারিং.....

ভালবাসার আসমান জুড়ে এ কোন ছবি? কার ছবি? বেলা অবেলায় এ কোন আত্মশুদ্ধি?

নাফিক আবারও সে স্বপ্নের মধ্যে বিড়বিড় করে--তোমার জন্য বিস্তীর্ণ আকাশ।
দিগন্তব্যাপী খোলা মাঠ। হাতে হাত রেখে প্রাণের বাংলা ভাষাতেই জানাই... ভালবাসি তোমায়। 

প্রিয়া, মনে পড়ে ২৯ জুলাই! তোমার জন্য, বাঁচার জন্য, এ বুকে আজও ভালবাসার আকাশ রাখা। ভালবাসার জন্য বাঁচো, বাঁচার মতো বাঁচো। অনন্ত ভালবাসা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছি। আম বাগানের ফাঁক দিয়ে দেখা সেই ভালবাসা চোখের ইশারায় ডাকছো আমায়।
আমাদের ভালবাসার একটা চুম্বন অপেক্ষায় অপেক্ষায় প্রহর গুনতে গুনতে কখন অপেক্ষালয় হয়েছে জানা হয়নি। এই চোখের দিকে তাকাও। অফুরন্ত সৃষ্টি খেলা করে চোখে। মেরো না, বাঁচতে দাও।
চেয়ে নাও...মিত্রতা-ভালোবাসা-মনুষ্যত্ব-মানুষ। অবাঞ্ছিত ভেবে ঘৃণা করো না। জেনো অবাঞ্ছিত শুঁয়োপোকা আজও প্রজাপতি হয়।

জানো প্রিয়া, অনেক বছর পেরিয়ে গেল, মানুষ স্বাধীন হয়েছে। আজও আমরা সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ভুবন গড়ে তুলতে পারিনি। বিশ্ব জুড়ে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, সম্প্রীতির বন্ধন অগ্রাহ্য করে বেড়ে চলেছে হানাহানি। মানুষ কবে আর মানুষ হবে? প্রকৃতি বুমেরাং মোকাবিলার বিজ্ঞান কই?

স্বপ্নের রেশ না কাটতেই ফোনের রিংটোন শুনে বিছানায় থেকে উঠে পড়ে নাফিক।

আউশগ্রামের বেলেমাঠ এলাকার যুবকদের মহতি উদ্যোগ

সেখ নিজাম আলম
  

25.04.2020 তারিখে আউশগ্রাম ২ নং ব্লকের অমরপুর অঞ্চলে,
বেলেমাঠ গ্রামের কয়েক জন যুবক ছেলেদের উদ্যগে বিভিন্ন গ্রামে করোনা ভাইরাসের জন্য, 300 জন অসহায় গরীব পরিবারকে চাল,আলু, পিঁয়াজ,ডাল ও লবন বিতরন করল। এই খাদ্যদ্রব্য পেয়ে অসহায় মানুষরা খুব খুশী।

ক্যানিং এলাকায় অভুক্তদের খাদ্য সামগ্রী বিলিতে এক সমাজসেবী সংগঠন

চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায়
 
 ক্যানিং : বাড়িতে বাড়িতে শুকনো খাবার পৌঁছে দিলেন ক্যানিং এর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। করোনা ভাইরাস যেভাবে সারা পৃথিবীতে থাবা বসিয়েছে ও লকডাউনের জেরে  দুঃস্থ মানুষজন পড়ে গেছে অতিসংকটে। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ জনের খাদ্যের ভাঁড়ারে পড়েছে টান। আর এমন মহামারী বিপর্যয় থেকে সাধারণ দরিদ্র মানুষজন যাতে করে অনাহারে না থাকেন তাঁর জন্য মঠেরদিঘী পল্লী সেবা সদনের সম্পাদক খোকন মন্ডল, অর্পন দাস ও তাপস দাস শুকনো খাদ্য সামগ্রী কিনে  বেরিয়ে পড়েছে ক্যানিং ব্লকের বিভিন্ন আদিবাসী অধুষ্যিত ও দরিদ্র এলাকায়। ক্যানিং ১ ব্লকের দুমকি,জয়রামখালি,নলিয়াখালি,হেড়োভাঙ্গা,ডাবু সহ অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে প্রায় ১৫০ টি পরিবারের হাতে এই শুকনো খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন তাঁরা।ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল  মুড়ি, দুই ধরনের বিস্কুট, ডাল, সোয়াবিন, সাবান।এছাড়া ৩০ জন বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বেবিফুড। বেবিফুড টা এই সময় বাচ্চা দের বিশেষ প্রয়োজন আছে।বাসন্তী ব্লকের কুলতলি আদিবাসী পাড়া ও ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ও দেওয়া হয়েছে এই সব সামগ্রী।এই সংস্থা শুধু এ সময় নয় সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের সমাজ সেবা মূলক কাজ করে থাকেন।

জয়নগরে পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছে বেশ কয়েকজন যুবক

চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায়
 
কুলতলি : লকডাউনে অসহায় মানুষদের সেবায় নিরলস কাজ করে চলেছে বহু সংস্থা থেকে শুরু করে বহু মানুষ। শুক্রবার কুলতলির দেউলবাড়ি ও চুপড়িঝাড়া এবং মৈপীঠ এলাকার ২৫০ জন গরীব মানুষ দের হাতে  চাল, ডাল, আলু,পিঁয়াজ, সরিষার তেল, সোয়াবিন, বিস্কুট, সাবান ও মাক্স তুলে দিলেন নিমপীঠ লোকমাতা রাণী রাসমনি মিশনের সদস্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। অন্যদিকে, জয়নগরের দক্ষিন বারাশতের সৌমেন দাস নামে জনৈক এক যুবক তাঁর কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে অসহায় মানুষদের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়ার পাশাপাশি এলাকার পথ কুকুরদের মুখে তুলে দিচ্ছেন ভাত ও তরকারি।                
                      

আশাতীত প্রত্যাশা - স্বপ্না ব্যানার্জি

আশাতীত প্রত্যাশা
           স্বপ্না ব্যানার্জি 
 
নীল আকাশকে সাক্ষী রেখে,
সূর্যের সাথে নিবিড় করে ভালবেসে ছিলাম,
আটোসাটো বাঁধন আমার নেই 
যা দিয়ে তোমাকে কাছে বেঁধে রাখবো,
বয়সটা এখন বাড়ছে,সকালের সূর্যকে দেখার ইচ্ছা
চাদরে মুড়ে ফেলি নিজের পুরনো চাওয়া পাওয়া,
আমার পুরানো সত্তাগুলো ছিল শুধু তোমার,
তোমার হাতের ব্যস্ততা জানান দিয়েছিল কয়েক দিন আগেই
নিস্পৃহ চাহনিতে চেয়েছিলাম তোমার দিকে,
আর ক্ষত-বিক্ষত করেছিলাম নিজের প্রত্যাশার নিরাপত্তা,
মনে পড়ে শোলে সিনেমার বিরু আর অমিতকে,
আর ওই হেড-টেল এর কয়েনটাকে,
যতবারই টস করেছি হেড পড়েছে, ভাবিনি
আমিও সেই হেড, আমার জীবনে টেল নেই,
যখন আমি হিমশীতল শরীরে ঘুমিয়ে যাব তখন দেখো আমারও দুপিঠেই হেড আছে !
তাইতো আমি আজ বাজিগর,
তোমাকে জেতাতে চেয়েছি আর তোমার 
জেতার আনন্দ উপভোগ করেছি,
অনেক তো আমি জিতলাম আর ফল পেলাম শুধু শূন্য,
তাই হেরে জেতার মজাটাও অনেক সুন্দর,
হিমালয়ের মত আশাতীত প্রত্যাশা যখন
পুরোনো পথে আবার হয়তো দেখা হবে,
হৃদপিন্ডের কাছাকাছি স্পষ্ট শুষ্ক শ্যাওলা জমা স্মৃতি,
অহেতুক অচেতন মনে নেই কোন বিস্ময়ের স্মৃতি,
এক আকাশ দুঃখের সিঁড়ি বেয়ে
শিশির সিক্ত ভোর হয়তো আর কোনদিনও আসবে না!

লকডাউনে দোকান মালিকরা এখন সবজি বিক্রেতা

শ্যামল রায়
 
কালনা কাটোয়া রাস্তার ধারের খাবারের দোকান বন্ধ, পেটে খিদে থাকলেও নেই রোজগার চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।

পেটে খিদে থাকলেও বন্ধ কালনা কাটোয়া রাস্তার ধারের খাবারের দোকান। নেই রোজগার চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কালনা থেকে কাটোয়া পর্যন্ত কয়েকশো দোকানদার।শনিবার ওই রাস্তার দোকানদাররা জানিয়েছেন যে এতদিন রাস্তার ধারে খাবার বেঁচে বাড়ির সকলের সংসার চলত। লকডাউন এর কারণে দোকানপাট সব বন্ধ রোজগার নেই। কোন উপার্জন না থাকায় কি করব ভেবে উঠতে পারছি না জানালেন ওই রাস্তার ধারের দোকানদাররা। ওই রাস্তার ধারের কেউ হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন, কেউ রেস্টুডেন্ট খুলে বসে ছিলেন কেউ চায়ের দোকান খুলে বসে ছিলেন এছাড়াও নানান ধরনের ব্যবসা করে সংসার চালাতেন বর্তমানে তাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে।অনেকেই জানালেন যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই সমস্ত ব্যবসা করে আমরা সংসারের খরচ যোগাড় করতাম কিন্তু বর্তমানে লকডাউন এর কারণে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছি।
আরো জানা গিয়েছে যে লকডাউন এর আগে কালনা কাটোয়া রাস্তা সম্প্রসারণ হবার কারণে বহু দোকান ভাঙা পড়েছে সেক্ষেত্রেও ব্যবসায়ীরা চরম সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন। তারপর শুরু হয়েছে লকডাউন। ফাস্টফুড দোকান থেকে শুরু করে চপ ভাজা বুঝি রুটি সমস্ত দোকান বন্ধ থাকায় চরম বিপদের মধ্যে পড়তে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। নিজেদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দুবেলা পেট ভরা তেই হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের জানালেন ব্যবসায়ীরা। জমানো টাকা থেকে খরচ করে বর্তমান সংসার চালাতে হচ্ছে। সরকার থেকে জন্য যা চালা টা পাচ্ছি তা কিঞ্চিৎ অতএব এই পরিস্থিতিতে আগামী দিন আরো কি সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে ভাবতে হচ্ছে আমাদের। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যা করোনাভাইরাস নিয়ে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কবে নাগাদ লকডাউন উঠবে আর কবেই বা দোকান খুলে ব্যবসা করে সংসার চালাবো? পেটে  খিদে থাকলেও রোজগার নেই মাঝেমধ্যে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতে হচ্ছে জানিয়ে দিলেন বিমল দেবনাথ গৌড় বিশ্বাস সঞ্জয় রাজবংশী সহ একাধিক রাস্তার ধারের ব্যবসায়ীরা।

৫২ টি পরিবার কে নিয়মিত খাদ্য সামগ্রী দিয়ে যাচ্ছে সুসম্পর্ক

সামাজিক সংগঠন সুসম্পর্ক এর তরফে    14 এপ্রিল থেকে যে 52 টি অসহায় শিশু ও তাদের পরিবারকে দৈনন্দিন -  3কেজি চাল, 2কেজি আলু, 500 গ্রাম ডাল, 500 গ্রাম মুড়ি, সাবান ছাড়াও বেবি ফুড (হরলিক্স) এবং আজ মহিলাদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বিশেষ প্রয়োজনীয় দ্রব্য (স্যানিটারি ন্যাপকিন) দেওয়া হোলো l 

বিদ্রঃ ছবি গুলি অন্যদের উৎসাহিত করার জন্য কাউকে মনে আঘাত বা ছোট করার জন্য না l

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER