রাতের অন্ধকারে দুস্কৃতিদের গুলিতে খুন হলেন কালনা ১ নং ব্লকের জনপ্রিয় তৃনমূল নেতা তথা সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক (৪৪)। শুক্রবার রাত নটার এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য দেখা গেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা এলাকায়। শনিবার দফায় দফায় ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পথ অবরোধ চলেছে কালনা কাটোয়া সড়করুটে । পুলিশি নিস্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শাসক দলের নিচুস্তরের কর্মীরা। কেননা খুনের ঘটনাস্থলে নিহত নেতার উপর মাস আটেক আগেও এইরুপ প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছিলো সশস্ত্র দুস্কৃতিরা। যদি পুরাতন ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত স্থানীয় কালনা থানার পুলিশ করতো, তাহলে শুক্রবার রাতে এইভাবে প্রাণ দিতে হত না ইনসান মল্লিক কে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের । যদিও শনিবার থেকে ইনসান মল্লিক খুনে দোষীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি সক্রিয়তা চোখে পড়েছে। অর্থাৎ ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহর ক্ষেত্রে । এলাকাসুত্রে প্রকাশ, শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে কালনার বেগমপুর অঞ্চলের নারায়নপুর এলাকায় দলীয় অফিস থেকে মোটরসাইকেল করে বাড়ী ফিরছিলেন কালনা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক। নারায়নপুর এলাকায় এক মিলের সামনে অপেক্ষারত কয়েকজন সশস্ত্র দুস্কৃতি ইনসান মল্লিক কে লক্ষ্য করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে,এরপরে মোটরসাইকেল চেপে তারা পালিয়ে যায়। যারমধ্যে একটি গুলি এফোড়ওফোড় হয়ে যায়, আরেকটি গুলি লাগে শরীরে। সেসময় আহত অবস্থায় আনা হয় কালনা মহকুমা হাসপাতালে।গুলিবিদ্ধ নেতার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা কলকাতা রেফার করে দেন। রাত্রি দশটা নাগাদ কালনা থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে হুগলির বৈচিতে মারা যান এই নেতা। পান্ডুয়া হাসপাতালে চিকিৎসকরা সরকারি ভাবে মৃত ঘোষণা করেন। পূর্ব বর্ধমানের মাধবডিহির তৃনমূল কর্মী খুনের পর কালনার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ খুনে তীব্র চাঞ্চল্য দেখা গেছে শাসক শিবিরের মধ্যে। দুটি ক্ষেত্রেই পুলিশি নিস্ক্রিয়তা নিয়ে সরব নিহতদের পরিবার। যদিও জেলা পুলিশের পক্ষে দাবি করা হয়েছে -অভিযুক্তরা দ্রুত গ্রেপ্তার হবে।কালনার নিহত তৃণমূল নেতা ইনসান মল্লিক ভোট করানো বিষয়ে অত্যন্ত সংগঠক ছিলেন বলে দলীয় সুত্রে প্রকাশ। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে কালনা পুরভোট সবেতেই শাসক দলের লিড আনাতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুপরিকল্পিতভাবে এই নেতা কে সরিয়ে ফেলা হল কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। আবার আরেক সুত্রে প্রকাশ, নিহত ইনসান মল্লিক ক্রমশ গোপনে বিজেপির ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। তাই দলীয় অন্তর্ঘাতে খুন হতে পারেন তিনি। কেননা এইরুপ কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পদাধিকারীদের গতিবিধি জানা সম্ভব ঘনিষ্ঠবলয়েই। শুক্রবার রাতে দলীয় অফিসে কারা ছিলেন? খুনের আগে নিহত নেতার ফোনে কললিস্ট ও লোকেশন ট্র্যাকিং করলে খুনে জড়িতদের বিষয়ে পুলিশ তথ্য ও সুত্র পেতে পারে বলে পুলিশের একাংশের মত। এখন দেখার পুলিশ তদন্তের অভিমুখ কোন দিকে নিয়ে যায়?