শনিবার, আগস্ট ০৩, ২০১৯

বেকার হোস্টেলে বসলো বঙ্গবন্ধুর নব মূর্তি


মোল্লা জসিমউদ্দিন(প্রাক্তন আবাসিক - বেকার হোস্টেল) 

পরাধীন ভারতে  এক বৃটিশ সাহেবের নামে  কলকাতার ৮ স্মিথ লেন ( তালতলা )  এলাকায় সংখ্যালঘু মূলত মুসলিম পড়ুয়াদের জন্য আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছিল। ওয়াকফ স্টেটের জায়গায় উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের ২০০ ঘর বিশিষ্ট তিনতলার হোস্টেল টি 'বাকের' সাহেবের নামাঙ্কিত হলেও এটি সর্বাধিক পরিচিত বেকার হোস্টেল হিসাবে। সেসময় ইসলামিয়া কলেজ অধুনা মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্রদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় থাকবার জন্য। বর্তমানে শুধুমাত্র স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের হোস্টেল হিসাবে রয়েছে এই হোস্টেল। আগে প্রতি রুমে একজন থাকত, এখন দুজন  অর্থাৎ চারশো জন পড়ুয়ার আবাসিক হোস্টেল এটি। বাঙ্গালী মুসলিম জগতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী, পুলিশ অফিসার প্রভৃতি পেশায় যুক্তদের অধিকাংশের ছাত্রজীবন কেটেছে এই হোস্টেলে।   বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে( মৌলানা আজাদ কলেজ) পড়ুয়া থাকাকালীন ১৯৪৫ এবং ১৯৪৬ সালে বেকার হোস্টেলের তিন তলায় ২৩ এবং ২৪ নং রুমে দুবছর কাটিয়েছেন আবাসিক হিসাবে।  পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে তথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই এই হোস্টেলের দুটি ঘর পরিদর্শনে আসেন। যেখানে এখনও বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের  ব্যবহৃত আলমারি, চেয়ার, টেবিল রাখা আছে। সেসময় বাংলার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা  উভয়ই  বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ্য মূর্তি উন্মোচন করেন। তবে মূর্তির সাথে বঙ্গবন্ধুর চেহারার অমিল থাকার জন্য তৎকালীন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান এই মূর্তি নিয়ে বেকার ও ইলিয়ট হোস্টেলের পড়ুয়াদের নিয়ে টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলেন।কেটে গেছে অনেকগুলি বছর। 

শনিবার সকালে এই বেকার গভঃ হোস্টেলে বাংলাদেশের পল্লীমন্ত্রী তাজুল  ইসলাম, প:ব: সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান, বাংলাদেশ দুতাবাসের আধিকারিক, মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যাপকবর্গ সহ বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের নুতন আবক্ষ্য মূর্তি উদঘাটনে। এদিন তাঁরা বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার করা ঘর ঘুরে দেখেন। ছবিতে মাল্যদান করে থাকেন। তবে এবারের আবক্ষ মূর্তিটি এপারের কোন শিল্পী করেন নি। করেছেন ওপার বাংলার অর্থাৎ বাংলাদেশের বিখ্যাত  ভাস্কর শিল্পী লিটল পাল রণী । এই হোস্টেলের প্রাক্তন আবাসিক মোল্লা জসিমউদ্দিন জানান -  বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ঘর সংলগ্ন ২০ নং ঘরে (তিনতলায়) বেশ কয়েকবছর ছাত্রজীবন কাটাতে পেরে আমরা গর্বিত।                 

ভোটগুরুর দাওয়াইতে কি দুই শহীদ দিবসে বেপাত্তা কেস্ট!

মোল্লা জসিমউদ্দিন,       

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য ভিক্তিক বৃহত্তর রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসাবে পরিচিত 'একুশে জুলাই',  সেইসাথে দক্ষিণবঙ্গের বড় সমাবেশ বলতে বোঝায় 'সাতাশে জুলাই'। দুটিই কিন্তু শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত রাজ্যবাসীর কাছে।আর এই দুটিতেই বড় ভূমিকায় দেখা যায় রাজনীতির মঞ্চে পিঞ্চ হিটার বক্তা   অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেস্ট মোড়ল কে। গত জুলাই মাসের শেষে এই দুটি মেগা রাজনৈতিক সমাবেশে দেখা মিলেনি অনুব্রতের। যদিও একুশে জুলাইয়ের দিন কয়েক আগে কলকাতার পিজি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। অর্শ সহ শ্বাসজনিত শারীরিক সমস্যা তাঁর দীর্ঘদিনের। তবে বিরোধী শিবিরের দাবি - 'আসলে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের প্রেসক্রিপশন ফলো করছেন মমতা'।  লোকসভার ভোটে রাজ্যজুড়ে অভাবনীয় বিপর্যয় নেমে এসেছে তৃনমূলের কাছে। ভোটের আগে বিয়াল্লিশের  বিয়াল্লিশ স্লোগান ফলপ্রকাশে সব অংক গুলিয়ে দেয় তৃনমূলের কাছে। এমনকি মঙ্গলকোটের ক্ষীরোগ্রামে যোগাদ্যা মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকারে অনুব্রত মন্ডল জানিয়েছিলেন - " মায়ের সাথে কথা হয়েছে,  ৪২ টি আসন আমরা পাচ্ছি তা জানিয়েছেন মা"। এইরুপ মন্তব্য রাজ্যবাসী কে অবাক করে দিয়েছিল সেসময়। তবে লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণায় বঙ্গ রাজনীতিতে আমদানি হল পেশাদার পরামর্শদাতার। যদিও তৃনমূল কংগ্রেসের তরফে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের সাথে কোন বাণিজ্যিক চুক্তি হয়নি বলে দাবি করেছে। ফলাফল ঘোষণার মাসেই অর্থাৎ জুন মাসের শেষের দিকে নবান্ন তে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ভোটগুরুর বৈঠক হয় বলে প্রকাশ। এর কিছুদিন পরেই দক্ষিণবঙ্গের আটজন গুরত্বপূর্ণ নেতা / মন্ত্রী দের কালোতালিকায় আনার পরামর্শ দেন ভোটগুরু। আর এই আটজনের মধ্যে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল অন্যতম। এইরুপ দাবি সংবাদমাধ্যমে।দলনেত্রীর কাছে ভোটগুরুর প্রেসক্রিপশন মানা সহজ ব্যাপার ছিল না। তবে আগামী বিধানসভার ভোটে  রাজনৈতিক মাটি আগেকার মত জায়গায় আনতে গেলে   অনেক কিছুই মানতে হবে তাঁকে। 

দেখা গেল একুশে জুলাইয়ের দিন কয়েক আগে অনুব্রত মন্ডল চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলেন কলকাতার পিজি হসপিটালে। তাঁর শারীরিক সুস্থতা কোনদিনেই ভালো ছিল না। বিশেষত শ্বাসজনিত বিষয়ে। তবে এমন গুরতর অসুস্থ নন যে তিন - চার কিমি দূরে কিছুক্ষণের জন্য মঞ্চে আসতে পারবেন না। যদিও হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাইরে যাওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে অনেকেই সম্প্রতি ব্রিগেডে সিপিএমের সমাবেশে অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর উদাহরণ টেনেছেন। যিনি গাড়ীতে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে  নাকে নল  দেওয়া অবস্থায় এসেছিলেন। এমনকি প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন জীবিত থাকাকালীন ব্রেণ স্টোকে প্রায় পারালাইসিস হওয়া স্বতেও হুইলচেয়ার করে সিপিএমের দলীয় সভায় উপস্থিত হয়ে উজ্জীবিত করেছেন কর্মী সমর্থকদের কে। যদিও অনুব্রত মন্ডল রাজনৈতিকভাবে সিপিএমের এই দুই নেতার সমকক্ষ নন। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে তিনি যেভাবে তৃনমূলের কাছ থেকে বড় বড় দায়িত্ব পেয়ে আসছিলেন, সেখানে কলকাতার বাইরে নেতাদের মধ্যে অনুব্রত মন্ডল অন্যতম তা বলা যায়। সমগ্র বীরভূম জেলার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের বড় অংশে দলীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে উঠে এসেছিলেন। যদিও লোকসভা  ভোটের পর দলনেত্রী বেশ কিছু জেলার ( লোকসভা আসনে)  দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন তাঁকে। পুলিশ কে বোমা মারার নিদান থেকে বিরোধী শুন্য পঞ্চায়েত ভোট করবার কারিগর অনুব্রত মন্ডল  কে সর্বদা আগলেছেন দলনেত্রী।এমনকি লোকসভা নির্বাচনের সময় অনুব্রত কে 'বাঘের বাচ্ছার মত লড়াই করার ' টোটকা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সব হিসেব পাল্টে গেছে গত ২৩ শে জুন। বিজেপি এই রাজ্যে ২ টি আসন থেকে ১৮ তে দাঁড়িয়েছে। ভোটের শতকরা হিসাবে তৃনমূলের ধারেকাছে বিজেপি চলে আসে।  এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্য রাজনীতিতে পেশাদার ভোটগুরু হিসাবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরের আবির্ভাব ঘটে। ভোটগুরুর টিম পর্যবেক্ষণ করা আভ্যন্তরীণ রিপোর্টে  আটজন নেতা মন্ত্রীদের বসিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেয়। জনমানসে এঁদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি দলের ক্ষতির কারণ বলে দাবি উঠে বিভিন্ন স্তরে। এইসবের মাঝেই তৃনমূলের বড় সমাবেশ একুশে জুলাই চলে আসে। গতবারের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে অনুব্রত মন্ডল উন্নয়নের বার্তা দিয়েছিলেন। দক্ষিণবঙ্গ থেকে জনসমাগম ঘটানোতে অনুব্রতের জুড়ি মেলা ভার।তবে এবারে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দেখা মিললো না কেস্টর। এমনকি তাঁর জেলায় বাসাপাড়ায় সুচপুরের গনহত্যা নিয়ে সাতাশে জুলাইয়ের শহীদ দিবসেও তাঁর দেখা মিলেনি। আগে কোন নির্ধারিত রাজনৈতিক সভায় যেতে না পারলে মঞ্চের মাইকে পরিচিতর মোবাইলে 'লাইভ' বক্তব্য পেশ করতেনা। সেটাও এবার হয়নি একুশে জুলাইয়ের কলকাতার মঞ্চে কিংবা নিজের জেলার সাতাশে জুলাইয়ের বাসাপাড়ার মঞ্চে। এখান থেকেই শুরু গুঞ্জন, তাহলে কি আগামী বিধানসভার ভোটের কথা ভেবে ভোটগুরুর পরামর্শে অনুব্রত মন্ডল কে জনমানস থেকে ধীরে ধীরে সরাচ্ছেন দলনেত্রী? এই প্রশ্ন সব মহলেই।                                                                                                                                                                                                                        

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER