শ্যামল রায়
বামফ্রন্ট আমলে ধুঁকতে থাকা তাঁতশিল্প আজ সফলতার পথে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় উদ্যোগে তাঁত শিল্পীদের উৎপাদিত শাড়ি বিদেশ সহ দেশের মধ্যে বিক্রি করে শিল্পী রাজাতে সংসার চালাতে পারেন সেই দিকে নজর দিয়েছেন। রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সোমবার সাত সকালে তার মানসিক এবং শান্তি বিকাশ কেন্দ্রের দামোদর পাড়ার প্রাঙ্গণে বসে জানালেন যে তাঁত সাধারণত দু'ধরনের। প্রথমত হস্তচালিত তাঁত এবং পাওয়ারলুম।হস্ত চালিত তাঁতের শাড়ি বিক্রয় করবার জন্য প্রথমত রাজ্যজুড়ে তাঁত হাট তৈরি করা হয়েছে।হাট গুলি হল পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম, ধাত্রীগ্রাম, নবদ্দীপ ও হাওড়ার উদয়নারায়নপুর।
এছাড়াও তাঁত শিল্পকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য তন্তুজ ও তাদের কাছ থেকে শাড়ি কিনে নিচ্ছে।
স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে বাম আমলে ১৪৭ কোটি টাকা লোকসানে চলছিল। বর্তমানে অপারেটিং সাপোটিং পাওয়ারে লভ্যাংশ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। বাম আমলে বছরে টার্নওভার ছিল ৫৫কোটি টাকা। এই সরকারের আমলে টার্নওভার ২৫০ কোটি টাকা। শাড়ি লুঙ্গি বেড কভার হস্তচালিত তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে একাধিক ক্লাস্টার। ক্লাস্টার এর মধ্যে দিয়ে তাঁত শিল্পীরা তাদের সমস্ত রকম সরঞ্জাম পেয়ে থাকেন। পূর্ব বর্ধমানের ইতিমধ্যে সাতাশটি ক্লাস্টার তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বস্ত্র দফতরের উদ্যোগে রাজ্যে তৈরি হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা।শান্তিপুরের ফুলিয়া তে তৈরি হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র। এই সহয়তা কেন্দ্র থেকে তাঁতিদের শাড়ি বিদেশে কিভাবে রপ্তানি করা যেতে পারে তার সমস্ত রকম উদ্যোগ এখান থেকে নেয়া হয়। তাঁতিদের শাড়ি বিক্রির সমস্ত রকম কর্মপদ্ধতি চালু হয় এই সহায়তা কেন্দ্র থেকে। তিনি আরো জানিয়েছেন যে একটা সময়ে খাদির মসলিন তাঁত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা সরকারে আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বাংলার মসলিন তাঁত শাড়ি আজ নাম ছড়িয়েছে। কালনা মহকুমার কালনা শহরের কালিপুরে এখানকার মানুষ তাঁত বুনে কদর বাড়িয়েছে মসলিন তাঁত শাড়ির।কোচবিহারের গঙ্গারামপুর হ্যান্ডলুম উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে তরী এই উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র আজ ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ করে যাচ্ছে এবং তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে এখন এই সকল তাঁতীদের কাছ থেকে তন্তুজ ও তিন বছরের জন্য তাদের উৎপাদিত শাড়ি কিনে নিচ্ছে এর ফলে তাঁতিরা তিনটে বছর নিশ্চিত থাকতে পারবেন তাদের শাড়ি বিক্রির জন্য।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে শ্রীরামপুর গ্রামে তাঁত শ্রী হাট আজ এলাকার মানুষের কাছে রুজি রোজগারের দিশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালনা মহকুমার ৩০ হাজার তাঁতি আজ মনের আনন্দে কাজ করে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি প্রাণী সম্পদ সম্পর্কে জানিয়েছেন যে রাজ্যে ডিমের উৎপাদন বাড়িয়ে ডিমের চাহিদা পূরণের কাজে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে আমাদের দপ্তর। ডিমের চাহিদা পূরণের জন্য আমরা মুরগির বাচ্চা পূরণ করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে দিয়ে বিতরণ করছি। বর্তমান ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। টার্গেট এক কোটি ছিল। যা পূরণ করা হয়েছে। দু'কোটি ডিম দরকার। বাকি আছে ৪৫ লক্ষ্।।রাজ্যজুড়ে আমরা এক কোটি মুরগির বাচ্চা বিতরণ করেছি। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ কে বাঁচাতে ইতিমধ্যে যথেষ্ট উন্নত প্রযুক্তিগতভাবে পলি ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছে। কথায় বলা যেতে পারে প্রাণিসম্পদ সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল। বর্ধমান এবং নবদ্বীপে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও শালবনিতে প্রজনন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। ষাঁড়ের প্রজনন ক্ষমতাকে বাড়িয়ে কাজে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রাণিসম্পদ পালকরা উপকৃত হচ্ছেন।