শুক্রবার, মার্চ ২৩, ২০১৮

মুখ্যমন্ত্রীর সবাইকে নিয়ে চলতে হবে বার্তায় উজ্জীবিত পূর্ব বর্ধমানের বিক্ষুব্ধরা

মোল্লা জসিমউদ্দিন

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে গত মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী যে বার্তা দিয়েছেন, তাতে উজ্জীবিত বিভিন্ন ব্লকের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর বড় অংশ।দুজন বিধায়ক কে এবং একজন ওসি কে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সবাই কে নিয়ে চলতে হবে রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন, তাতে আপাতত দলীয়ক্ষোভ অনেকেরই কমেছে।মনে করা হচ্ছে দলের গোষ্ঠীকোন্দল কমাতে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর এহেন অবস্থান।সেদিন ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মন্ডল কে বলেছিলেন " বনমালী দা কে মাথায় রেখে সব কাজ করো"।বনমালী হাঁজরা ২০১১ সালে ভাতারে তৃনমূল প্রতীকে জিতেন এবং বিধানসভার কৃষির স্ট্যান্ডিং কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।তবে জেতা বিধায়ক ২০১৬ এর নির্বাচনে টিকিট পাননি, আর এতেই ভাতারের বড় অংশ এই বর্ষীয়ান নেতার এহেন বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হয়।আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় বঞ্চনার হিসাব নিত দলের একাংশ।এই আশংকা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী আউশগ্রামে ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মন্ডল কে বনমালী দা কে মাথায় রেখে সব কাজ করার নির্দেশ দেন।অপরদিকে মেমারির বিধায়িকা নার্গিস বেগম কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন - আবদুল্লাহ সাহেব উন্নয়নের সব কাজে রাখতে হবে।ভাতারের প্রাত্তন বিধায়ক বনমালী হাঁজরার মত মেমারির প্রাত্তন বিধায়ক হচ্ছেন আবদুল্লাহ। একই দলীয় বঞ্চনা তার শিবিরেও।মেমারির বিধায়িকার ওদ্ধত্য,  মেমারি পুর চেয়ারম্যানের একনায়কতন্ত্র এই প্রাত্তন বিধায়ক কোণঠাসা করে রেখেছে গত বিধানসভার পর থেকেই।অনুরুপভাবে মুখ্যমন্ত্রী মেমারির এই আদি নেতা কে গুরত্ব দিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় অন্তর্ঘাত আটকাতে চেষ্টা করলেন।বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরুপ দত্ত কে মুখ্যমন্ত্রী পথবাতি এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভৎসনা করলেন।খাতাকলমে স্বরুপ দত্ত বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান হলেও এক কাউন্সিলার পুরসভা থেকে দামোদরের বালি কারবার সবই চালান।যিনি মুকুল ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই ভৎসনার অন্তরালে একপ্রকার হুশিয়ারী রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।কেতুগ্রাম আইসি কে ঘনঘন এলাকায় ভিজিট করতে বলার পাশাপাশি আর কোন ঘটনা না ঘটে বলে সর্তক করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেতুগ্রাম বিধায়ক সেখ শাহনওয়াজের সাথে দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মন্ডলের সম্পক তিক্ত ছিল।২০১১ সালের পর ২০১৬ তেও কেতুগ্রামে প্রার্থীপদ পান শাহনওয়াজ।কেতুগ্রাম ঘেঁষা বীরভূমের নানুরে কাজল সেখের সৌজন্যে মৃতপ্রায় সিপিএম এখানে জয়লাভ পায়।তাতেও আরও সম্পক খারাপ হয় কাজল সেখের ভাই তথা কেতুগ্রাম বিধায়ক সেখ শাহনওয়াজের সাথে অনুব্রত মন্ডলের।উল্লেখ্য সারারাজ্যে দাপুটে নেতা হলেও তাঁর হোম বিধানসভা নানুরের বিধায়ক হচ্ছেন সিপিএমের।সম্প্রতি কেতুগ্রাম বিধায়কের ডানহাত ও সেইসাথে কেতুগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহির সেখ খুন হয় অনুব্রত অনুগামীদের হাতে।তাই এই খুনের বদলা নিতে আর যাতে কোন খুন না হয়, সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী কেতুগ্রাম আইসি কে সর্তক করলেন বলে মনে করা হচ্ছে।এতে তৃনমূলের একাংশ খুশি।রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র মঙ্গলকোটে বরাবরই উপেক্ষিত। দপ্তরের পরিচালনায় জেলা গ্রন্থাগার মেলা করতে পারেন নি মঙ্গলকোটে।বিধায়ক তহবিলে উন্নয়নকাজে মঙ্গলকোট ব্লক, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে 'বয়কট' বলা যায়।সর্বোপরি মঙ্গলকোট পুলিশের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ বিধায়ক শিবিরের পক্ষে।গাঁজা - অস্ত্র সহ নানান মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া, থানায় যখনতখন ডেকে পুলিশি সন্ত্রাস করা এমনকি বিপক্ষ গোষ্ঠীর সাথে সুপরিকল্পিতভাবে মার খাওয়ানো অভিযোগ আছে।বিধায়কের পদিমপুর অফিসে তিন থেকে চারবার সশস্ত্র হামলা পর্যন্ত হয়েছে।সেখানে কাটোয়া মহকুমাশাসক এর নামে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।সেইসাথে মঙ্গলকোটের আটঘড়ার মহিলাদের জুতো ঝাঁটা কান্ডে মঙ্গলকোট ওসি প্রসেনজিত দত্ত কে দায়ী করে পুলিশসুপার কে স্মারকলিপি দিয়েছে সিদ্দিকুল্লাহের জমিয়ত উলেমা হিন্দের  জেলা কমিটি।তাই মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলকোট ওসি কে 'সবাই কে নিয়ে চলতে হবে'  নির্দেশ টি পক্ষান্তরে সিদ্দিকুল্লাহর জয় বলে মনে করা হচ্ছে।তবে যে ওসি গত দেড়বছরে বিধায়কের রুগী কল্যান সমিতির সরকারী বৈঠকে কোন বার আসেননি। তিনি কতটা 'পাত্তা' দিবেন মঙ্গলকোট বিধায়ক কে।তা নিয়েও উঠছে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। সামগ্রিকভাবে গত মঙ্গলবার আউশগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভায় দলীয় বিধায়ক,পুরপিতা, ওসিদের কড়া বার্তা দিলেন দলের গোষ্ঠী বিবাদ নিরসনে,তাতে খুশি পূর্ব বর্ধমান জেলার বিক্ষুব্ধদের বড় অংশ।তবে সেটা সাময়িক, চুড়ান্ত দেখতে অপেক্ষা করতে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বণ্টন অবধি।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER