মোল্লা জসিমউদ্দিন ;
মুখ্যমন্ত্রী কে পুলিশের তোলাবাজি নিয়ে অভিযোগ জানানো জের , প্রাণ সংশয়ে পূর্বস্থলীর এক সংখ্যালঘু যুবক।গতকাল অর্থাৎ ১০ নভেম্বর পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশসুপারের অফিসে প্রাণভয়ে পুলিশি নিরাপত্তা চাইলো পূর্বস্থলীর সেই প্রতিবাদী যুবক। যার পাঠানো অভিযোগে পূর্বস্থলী থানার ডাকমাস্টার ( এএসআই) কবীরুদ্দিন খান সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে এবং সেইসাথে ওই থানার আইসি সোমনাথ দাস কে উত্তরবঙ্গে শাস্তিমূলক বদলীর প্রাপ্তিযোগ ঘটেছে। উল্লেখ্য পূর্বস্থলীর খড়দত্তপাড়ার এক সংখ্যালঘু যুবক থানার বেশকিছু পুলিশ আধিকারিকদের কাছে মিথ্যা মামলায় ফেসে যাওয়ার ভয়ে কালিপুজোর চাঁদা হিসাবে ৫ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হয়েছিল। গত ২ নভেম্বর পূর্বস্থলী থানার আরজি পার্টির বিলবইতে পুলিশ অফিসারের সাক্ষর করা রশিদটি পুলিশের বিভিন্ন মহলে পাঠিয়েছেন। তার জেরেই এক এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার সাসপেন্ড এবং ইনস্পেক্টর লেভেলের পুলিশ অফিসার কে কম গুরত্বপূর্ণ পদে পাঠানো হয়। অভিযোগকারীর বাড়ীতে উকিল নিয়ে পূর্বস্থলী থানার এক সাব ইনস্পেক্টর অভিযোগ প্রত্যাহার করতে যায় বলে এলাকাসুত্রে প্রকাশ । সেইসাথে এক শাসকদলের চট্টপাধ্যায় নেতা মোবাইলে বারংবার প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিল। প্রতিবাদী যুবকের পাড়ায় অচেনা সশস্ত্র ম্যাসলম্যানদের আনাগোনা ক্রমশ বাড়ছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে প্রাণভয়ে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে জেলা পুলিশসুপারের অফিসে লিখিত আবেদন জানালো সে। পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী কে অভিযোগ জানানো যুবকের আবেদন খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য এই পূর্বস্থলী থানার কাজকর্ম নিয়ে বিভিন্ন মহলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। কখনও আন্তর্জাতিক নরকঙ্কাল কিংবা গাঁজা পাচারের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সেভাবে ব্যবস্থা না নেওয়া। আবার কখনও বা হামিদপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র কারবারীদের মূল হোতাদের না গ্রেপ্তার করা।শাসকদলের বিক্ষুব্ধ সহ বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের গাঁজা সহ নানান মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া। এমনকি থানার লকআপে নাবালককে মারধোর করার অভিযোগ উঠেছে। সেইসাথে 'না পসন্দ' এক ওয়েব পোর্টাল নিউজ কে এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে মামলার নোটিশ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই পোর্টাল কর্তৃপক্ষ সাথেসাথেই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো সহ রাজ্যপাল, পিআইবি প্রভৃতি জায়গায় লিখিতভাবে দরবারও করেছে। সোমনাথ দাস আইসি পদে থাকাকালীন তাঁর এক পোষা কুকুর নিয়ে সিভিক পুলিশদের ডিউটি ছেড়ে সেবাযত্নে ব্যস্ত থাকতে হত বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ কর্মীরা জানিয়েছেন। ঠিক এইরকম নানান অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু পূর্বস্থলী থানার কালিপুজোর চাঁদার নামে কোটির কাছাকাছি তোলা আদায় নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে প্রাণভয়ে 'আন্ডারগ্রাউন্ড' হয়ে গেছে পূর্বস্থলীর ওই অভিযোগকারী। সশস্ত্র পুলিশি নিরাপত্তার দাবি রেখে লিখিত আবেদন জানিয়েছে সে। এখন দেখার জেলা পুলিশ এহেন আবেদনে কতটা সাড়া দেয় এবং অভিযুক্ত আইসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তে রিপোর্টে কি উঠে আসে?