শুক্রবার, নভেম্বর ৩০, ২০১৮

আজ মুখ্যমন্ত্রীর রোষানলে পড়তে পারেন পুলিশের বেশ কিছু আধিকারিক

  

মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

আজ অর্থাৎ শুক্রবার দুপুর দুটোয় পূর্ব বর্ধমানের কালনার অঘোরনাথ স্টেডিয়ামে জনসভা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী কি বার্তা দিতে চলেছেন,  তার দিকে তাকিয়ে জেলা রাজনৈতিক মহল। একগুচ্ছ প্রশাসনিক উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরার পাশাপাশি পুলিশ নিয়ে কড়া হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এইরুপ আশংকায় কাঁপছে   জেলা পুলিশের বেশকিছু আধিকারিক। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ব বর্ধমানের চারটি থানায় দশের বেশি ঘটনায় বিব্রত জেলা পুলিশমহল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী কে  হস্তক্ষেপ   পর্যন্ত করতে হয়েছে। পুলিশসুপার এক সাব ইনস্পেক্টর, দুই এসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেকটর,  এক কনস্টেবল কে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ পর্যন্ত দিয়েছেন। নবান্নের নির্দেশে আইসির শাস্তিমূলক বদলী হয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন - পুলিশি অনুশাসনে কড়া বার্তা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই সম্ভাবনার জন্য জেলা পুলিশের অনেক কর্তায় তটস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে। সর্বশেষ সংযোজন বিষমদের বলি ১২ জনের ঘটনায়। জানা গেছে,  বিষমদের মূল কেন্দ্র রয়েছে ঘটনাস্থলের ওপারে থাকা কালনা থানা এলাকা। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ব বর্ধমানের খন্ডঘোষ থানার ভুমিকা নিয়ে রাজ্য তোলপাড় হয়। এক ইভটিজিং মূলক অভিযোগের ভিক্তিতে চার অভিযুক্ত যুবক কে উলঙ্গ করে বিচুটি পাতা ঘষে ছবি তুলে ফেসবুকে ভাইরাল করবার হুমকি দিয়েছিলেন খোদ ওসি। এইরুপ অভিযোগ উঠার পরবর্তীতে এক যুবক বিষ খেয়ে এবং আরেক যুবক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হবার চেস্টা করে থাকে। জেলা পুলিশ অবশ্য এই ঘটনায় সেভাবে কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে প্রকাশ। এরপরে কাটোয়ার ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠে। গোটা শহর জনরোষে ফেটে পড়ে,  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টপাধ্যায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীদের বোঝান। গাড়ীর কাগজপত্র দেখার নামে কাটোয়া ট্রাফিক শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তোলা তুলে বলে অভিযোগ। অভিযোগকারী প্রাত্তন সেনা কর্মী  কে অবশ্য সরকারি কাজে বাধাদান মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। কালনা আদালতে অফিস টাইমে জিআরও বিভাগে এক হাজতবাবু ( এএসআই)  আরেক কনস্টেবল কে নিয়ে ডিউটির সময় মদ্যপান করছিলেন বলে অভিযোগ। আদালতে পেশ করা অভিযুক্তদের পরিবারদের সাথে মাতলামি এবং হুমকির ঘটনা নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য পড়ে সেদিন। যে ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল, সেই পূর্বস্থলী থানার কালিপুজোর নামে কোটি টাকার তোলাবাজি ঘটনায় ডাকমাস্টার ( এএসআই )  কবিরুদ্দিন খান কে সাসপেন্ড করা হয়। আইসি সোমনাথ দাস কে শাস্তিমূলক বদলী তে কালিম্পং জিআরও তে    পাঠানো হয়। এই থানাতে চোর সন্দেহে ধৃত এক ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ায় ডিউটি অফিসার ( এএসআই)  এবং সেন্ট্রিম্যান ( কনস্টেবল)  সাসপেন্ড হয়। আবার এক পরোপকারী ব্যক্তিকে থানার লকআপে ঢুকিয়ে মারধরের ঘটনায় ডিউটি অফিসার (এসআই )  সাসপেন্ড হয়। গত ৬ নভেম্বর মঙ্গলকোটের ব্লক মোড়ের সামনে জিয়ারুল হক নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে বছর তেরোর এক নাবালক মিসিং হয়। ৭ নভেম্বর মঙ্গলকোট থানায় গেলেও অভিযোগপত্র গ্রহণ কিংবা মিসিং ডাইরী দেয়নি বলে দাবি। নাবালক নিখোজ ঘটনায় মঙ্গলকোট থানার চরম নিস্ক্রিয়তা জেলা পুলিশের কানে গেছে বলে বিশেষ সুত্রে প্রকাশ। এইরুপ নানান ঘটনায় পুলিশ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পূর্ব বর্ধমানে।তাই আজ অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে কালনার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ নিয়ে কড়া বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।   পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ ঘনিস্ট বেশকিছু নেতা কে নিশানা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে একের পর এক ঘটনায় পূর্বস্থলী থানা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির এক পদাধিকারীর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। মূলত তাঁর জন্যই পুলিশের ভাবমূর্তি জনমানসে কু প্রভাব পড়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানাচ্ছেন। রক্তদান শিবিরে তোলা না দেওয়া এক পরিবারের নাবালক কে থানার লকআপে   মারধরের ঘটনায় গত বছর রাজ্য মানবাধিকার কমিশন হস্তক্ষেপ করেছিল। এবারেও থানার আরজি পার্টির নামে তোলাবাজির শিকার এক সংখ্যালঘু যুবক কে তার বাড়ীর সামনে গুন্ডাদের পাঠিয়ে এবং মোবাইলে অভিযোগ প্রত্যাহার করানোর দাবিতে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিল ওই নেতা। মুখ্যমন্ত্রী কে তোলাবাজির অভিযোগ জানানো এই যুবক অবশ্য  পুলিশসুপারের কাছে প্রাণভয়ে  সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মী পাবার লিখিত আবেদন রেখেছেন। তাই পূর্বস্থলী থানার ঘনিষ্ঠ এই দাপুটে নেতা কে হুশিয়ারি দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে এই তৃনমূল প্রার্থী  হেরেছেন সিপিএম প্রার্থীর কাছে। তাই তুমুল তৃনমূল হাওয়া মধ্যে হেরে যাওয়া এই বিতর্কিত নেতা কালনা জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় থাকাটায় স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত কালনা বিধানসভার পাশেই রয়েছে এই পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র। অন্যদিকে বালির সিন্ডিকেট নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসন কে নিরপেক্ষ এবং সক্রিয় অবস্থান নেওয়ার আহবান দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, গত তিনমাস আগে নবান্ন থেকে ভূমি সংস্কার দপ্তর কে 'ফ্রি   হ্যান্ড' দেওয়া হয়েছে। সেখানে শাসকদলের কেউ জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলকোটে কয়েকজন এইরুপ নেতা কেও চলতি মাসে কাটোয়া মহকুমা ভূমি সংস্কার দপ্তরে তলব করা হয়েছিল। তাই আজকের কালনা জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে  প্রমোদ গুনছেন অনেকে....                                                                                                                                                                

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER