মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে হাওড়া কান্ডে স্বতঃস্ফূর্ত মামলার দ্বিতীয় শুনানি ছিল। তবে প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিত থাকার কারণে এই মামলার শুনানি হয়নি। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে ফের শুনানি হবে বলে হাইকোর্ট সুত্রে প্রকাশ। মঙ্গলবারই ' বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল' এর দ্বিতীয় দফার কর্মবিরতি পর্ব শেষ হচ্ছে। তাই তৃতীয় পর্যায়ে সারা রাজ্য জুড়ে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলবে কিনা, সেই বিষয়ে কর্মসমিতির বৈঠক হচ্ছে সিটি সিভিল কোর্টের ষষ্ঠ তলায় বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এর অফিসে। বর্তমান সদস্য তথা কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল বলেন - "দ্বিতীয় শুনানিতে অংশগ্রহণ পরবর্তী বৈঠকে আমরা ঘোষণা করবো কর্মবিরতি নিয়ে কি করা যায়? সেই বিষয়ে "। অপরদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তরে সোমবার দুপুরে কলকাতার আলিপুর আদালতে আইনজীবীরা যান স্মারকলিপি দিতে।ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে হাওড়া জেলা আদালতে আইনজীবীদের উপর পুলিশি সন্ত্রাস করা পুলিশ আধিকারিকদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখার। উল্লেখ্য লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে নুতন সরকার গঠন অবধি দেশের সমস্ত পুলিশ - প্রশাসনের আধিকারিকরা নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকেন। তাই নির্বাচনী বিধি চালুর মাঝে এই স্বতন্ত্র দপ্তর যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণও করতে পারে। ভারতীয় সংবিধান এই ক্ষমতা নির্বাচন কমিশন কে দিয়েছে। তাই আইনজীবীরা কলকাতা হাইকোর্টের স্বতঃস্ফূর্ত মামলায় যেমন অংশগ্রহণ করেছেন। ঠিক তেমনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান রাজ্যপালের কাছেও দারস্থ হয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে হাওড়া কান্ডের গুরত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিলেন আইনজীবীরা বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।একাধারে কলকাতা হাইকোর্টে হাওড়া কান্ডে স্বতঃস্ফূর্ত মামলাগ্রহণ যেমন সেদিনের অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। ঠিক তেমনি নির্বাচন কমিশনেও লিখিত অভিযোগ জানিয়ে সেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ কে আরও বেশি ঘনীভূত করা হল। ইতিমধ্যেই সারারাজ্য জুড়ে আইনজীবীদের কর্মবিরতির সময়সীমা কুড়িদিনে পৌছেছে। সেখানে বিভিন্ন মহকুমা / জেলা সংশোধনগারে বিচারধীন বন্দি রাখার বিষয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। হাওড়া জেলা সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই ধারণ ক্ষমতার বেশি বিচারধীন বন্দি রয়েছে। বিভিন্ন আদালতে জামিন প্রক্রিয়া চালু না হলে এই সমস্যা রাজ্যের প্রায় সংশোধনাগারে তৈরি হবে বলে প্রশাসনিক কর্তারা অনুমান করছেন। বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল সারারাজ্যে আইনজীবীদের কর্মবিরতির মেয়াদ অন্তত ২২ মে অবধি বাড়াবার ঘোষণা করতেও পারে বলে বিশেষ সুত্রে জানা গেছে। তাহলে টানা কুড়িদিনের সাথে আরও আটদিন যুক্ত হতে চলেছে। অর্থাৎ পুরোপুরি রাজ্যস্তরের আদালত গুলিতে কর্মবিরতি একমাস হতে চলেছে। যা ২০০২ সালে স্ট্যাম্প ফি বিষয়ে আইনজীবীদের বাইশ দিনের কর্মবিরতির রেকর্ড ভাঙতে পারে।