সোমবার, জুলাই ০১, ২০১৯

কাটমানি দাওয়াই দিতে গিয়ে নিচুস্তরের কর্মী দের প্রাণ বাজি রেখেছেন মমতা ?



মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা পরবর্তী সময়ে বঙ্গ রাজনীতিতে  সবথেকে বড় আলোচিত ইস্যু হচ্ছে কাটিমানি। যার রেশ এখনও দাপটের সাথে রয়েছে।যা পরিস্থিতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে, তাতে বলা যায় বিক্ষোভের আঁচের আগুন আরও বাড়বে। ইতিমধ্যেই শখানেক শাসক দলের কর্মীসমর্থকদের বাড়ীতে অভিযোগকারী সরকারি প্রকল্পে  উপভোক্তারা চড়াও হয়েছে। সেইসাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ীতে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চলেছে। যতদিন যাচ্ছে ততই শাসকদলের নেতা কর্মীরা এলাকাছাড়া হচ্ছেন। মঙ্গলকোটের চারটি অঞ্চলের দাপুটে নেতা প্রদীপ মুখার্জি ইতিমধ্যেই তার 'উপপ্রধান' স্ত্রী, 'যুব নেতা' ছেলে কে নিয়ে জনরোষ আতঙ্কে পগারপার।কালনা ১ নং ব্লকের অকালপৌষ এক সুপারভাইজার বিক্ষোভকারীদের ভয়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেস্টা করেছেন। চিকিৎসাধীন এই কর্মী দেখতে কালনা হাসপাতালে গিয়েছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। আবার কোথাও কোথাও শাসকদলের স্থানীয় নেতা - জনপ্রতিনিধিরা কাটমানি আদায়ে স্বীকোরক্তি পত্র দিয়ে টাকা ফেরতের সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছেন। সবথেকে বেশি আতঙ্ক গ্রাস করছে পঞ্চায়েতের  প্রধান / উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি / সহ সভাপতি সহ বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে। বুথ কমিটির নেতাদের জ্বালাও কম না। তারা এইসব নেতাদের কালেকশান এজেন্ট হওয়ায় তারা ছুটে বেড়াচ্ছে প্রাণ বাঁচাতে। দলের নিচুস্তরের কর্মী সমর্থক বলতে এরাই মূলধন। তাই বিরোধী দলের টার্গেট হিসাবে এরাই হিটলিস্টে রয়েছেন।এখন আবার বিরোধী বলতে বিজেপি নয় কাটমানি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে বামেরাও।      যেকোনো ভোটের সময় নিচুস্তরের কর্মীসমর্থকদের   ভূমিকাটায় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এখন তারা ই সবথেকে বেশি বিপদে। কাটমানি নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, হাতেপায়ে পড়েও নিস্তার মিলছে না। ঠিক এইরকম পেক্ষাপটে কাটমানি দাওয়াই নিয়ে তৃনমূলের অন্দরে চাপানউতোর চলছে। তাদের প্রশ্ন একটায় - সততা দেখাতে গিয়ে নিচুতলার কর্মী সমর্থকদের রীতিমতো 'ফায়ারিং স্কোয়াডে'র সামনে ফেলে দিয়েছেন তৃনমূল নেত্রী। হাজার হাজার কর্মী সমর্থকদের একপ্রকার প্রাণ  কে বাজি রেখে আগামী বিধানসভা ভোটে জিততে চাইছেন নেত্রী। লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণায় পরিস্কার শহরের পাশাপাশি গ্রামে আর শাসকদলের একছত্র অধিপত্য নেই। বিজেপি ১৮ টি লোকসভার আসন দখল করে  কাটমানি ইস্যুতে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে। তারা দলগত রণনীতিতে একাধারে অভিযোগকারী উপভোক্তাদের পাশে যেমন লোকবল দিচ্ছে। আবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে আদালতগুলিতে গেরুয়া আইনজীবীদের বিনামূল্যে সার্ভিস দিচ্ছে মামলা লড়তে। আবার জেল কিংবা পুলিশি হেফাজতে থাকা সেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আর্থিকভাবে সাংসারিক খরচও বহন করতে দেখা যাচ্ছে। আবার পুলিশের বড় অংশে লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল দেখে পরিবর্তন এসেছে। তারাও কোন কোন ক্ষেত্রে বিক্ষোভ বা হামলা হওয়ার পর যাচ্ছে। কিংবা সাময়িক আটক করে পরে বিক্ষোভকারীদের ছেড়ে দিচ্ছে। এইসব দেখে তৃনমূলের নিচুস্তর থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর প্রতি চরম ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। কেন তাদের 'বলির পাঁঠা'    করা হচ্ছে কাটমানি ইস্যুতে?  এই প্রশ্ন তাদের অন্দরে ঘুরছে। বীরভূমের তিনবারের সাংসদ শতাব্দী রায় কাটমানি কান্ডে দলের চেন সিস্টেম তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা বুথ কমিটি ভায়া ব্লক কমিটি হয়ে জেলা ও রাজ্যস্তরের নেতাদের পকেটে যায়। সেটায় হয়তো তিনি বোঝাতে চেয়েছেন। তাহলে এটা পরিস্কার কাটমানি আদায়ে বুথ কমিটির ভূমিকা সর্বাপেক্ষা গুরত্বপূর্ণ হলেও সেই অর্থের সিকিভাগ তাদের মিলে না। দলের সেজো, মেজ, বড় নেতারাও সেই অর্থ হজম করে বসে আছে। তাই বুথ কমিটির নেতাদের প্রশ্ন - দলের স্বচ্ছ ইমেজ আনতে শুধুমাত্র তাদের কেই কেন বিক্ষুব্ধদের সামনে ফেলা হচ্ছে?  শুধু তারা নয়, তাদের সাথে নিরীহ পরিবারকেও প্রাণভয়ে থাকতে হচ্ছে। অপরদিকে প্রশ্ন উঠছে শীর্ষ তৃনমূলের বড় অংশ এবং রাজ্য মন্ত্রীসভার বেশ কয়েকজন সদস্য যেখানে সারদা - রোজভ্যালি - আইকোর - নারদা প্রভৃতি দূর্নীতিতে সরাসরি অভিযুক্ত। তাও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত এমনকি বিচারধীন বন্দিও রয়েছেন তালিকায়। তাহলে সেখানে দলের স্বচ্ছতা বাড়াতে গেলে এইসব প্রভাবশালী নেতাদেরও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ঠগ বাছতে গাঁ উজারের মত পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কাটমানি দাওয়াই শুধুমাত্র দলের চুনোপুঁটি ধরলে আদৌও কোন কাজ হবে?  এই প্রশ্ন উঠছে গোটা রাজ্য জুড়ে। আর যারা ভোট পরিচালনায় থাকেন বুথস্তরে, তাদের কে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে রাখলে আগামী বিধানসভায় শাসক দল কি এদের পাবে তখন।? এইবিধ নানান প্রশ্নচিহ্ন শাসকদলের অন্দরমহলে।                                                                                                                                                                                                                                                            

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER