জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
বাঙালি মানেই খাদ্য রসিক বা ভোজন রসিক।তাইতো যেকোনো মেলাতে একাধিক ভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল থাকবেই। আবার সুযোগ পেলে বাড়িতেই ভিন্ন পদের খাবার তৈরি করতে সে ওস্তাদ। লকডাউনের জন্য গৃহবন্দি বাঙালির হাতে অফুরন্ত সময়। তাই সুযোগমত বিভিন্ন বাড়িতে ভিন্ন পদের খাবার তৈরি চলছে।
রসগোল্লার সঙ্গে বাঙালির একটা জন্মজন্মান্তর সম্পর্ক। 'সুগার'-এর আক্রমণেও সেই সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। মিষ্টির দোকানগুলিতে ভিড় দেখলেই সেটা টের পাওয়া যায়। এদিকে লকডাউনের জন্য মিষ্টির দোকান বন্ধ। সরকারি নির্দেশে আপাতত দোকান খুললেও খদ্দেরের অভাবে সেভাবে মিষ্টি তৈরি হচ্ছেনা। অতএব বাড়িতেই অনভ্যস্ত হাতে রসগোল্লা তৈরি করতে শুরু করলেন পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুরের প্রেমানন্দ মুখার্জ্জী।সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় স্ত্রী ও কন্যা।
প্রেমানন্দ বাবু বললেন - সুগার সমস্যা থাকলেও রসগোল্লার লোভ নিয়ন্ত্রণ করা বাঙালির পক্ষে কষ্টকর। ছানার দাম কম। তাই বাড়িতেই একটু চেষ্টা করলাম। ভোজ বাড়িতে মিষ্টির কারিগরদের দেখে যেটুকু শিখেছিলাম সেটাই একটু প্রয়োগ করলাম।দাদুর তৈরি মিষ্টি খেয়ে দুই নাতনি অনসূয়া,ইন্দুতো খুব খুশি।
ফুচকা ছাড়া মেয়েদের জীবন কল্পনা করা খুবই কষ্টকর। যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিয়ে বাড়ি, মেলায় ফুচকার স্টলের সামনে মেয়েদের ভিড় দেখলে সেটা বোঝা যায়।দিন দিন চাহিদা বাড়তে থাকায় প্রায় প্রতিটি গ্রামে ফুচকা বিক্রেতারা হাজির হয়ে যাচ্ছে।লকডাউনের জন্য ফুচকা বিক্রি বন্ধ।
সেই অভাব মেটাতে ও রসনা তৃপ্তি ঘটাতে শাশুড়ি ও ননদকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতেই ফুচকা তৈরি করে ফেললেন পশ্চিম মঙ্গলকোটের জালপাড়ার গৃহবধূ মল্লিকা পাল।
সলজ্জ কণ্ঠে মল্লিকা দেবী বললেন - অনেক দিন ফুচকা খাওয়া হয়নি। কথাটা বলতেই শাশুড়ি উৎসাহ দিলেন। ইউটিউব দেখে শেখা বিদ্যা কাজে লাগালাম। শাশুড়ি-ননদ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
ফুচকা খেয়ে বাড়ির একমাত্র জামাই পেশায় শিক্ষক বরুণ বাবুতো খুবই উচ্ছ্বসিত। তিনি বললেন- প্রথমবার হলেও ফুচকার স্বাদ খুবই ভাল হয়েছে। আসলে চেষ্টা করলে বাঙালি সবই পারে।