বুধবার, এপ্রিল ২২, ২০২০

মন্তেশ্বরের শুভশ্রী ছবি আঁকছে লকডাউনে

জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি, 
   
        করোনা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষিত হয়েছে।  সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হচ্ছে।সব কিছু থমকে গেছে।মানুষ আজ গৃহবন্দী। কোলাহল মুখর পৃথিবীতে বিরাজ করছে শ্মশানের নিস্তব্ধতা।সেলেবল থেকে সাধারণ মানুষ -প্রত্যেকেই পরিচিত জগত ত্যাগ করে অন্য জগতের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছে বাচ্চারা। কিছুতেই ঘরে তাদের মন বসছেনা।
        পূর্ব বর্ধমানের মন্তেস্বর থানার পুটশুড়ী গ্রামের শুভশ্রী চৌধুরী। মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। বাবা শুভেন্দু একজন ব্যবসায়ী।বর্তমানে তিনিও গৃহবন্দী।মা তনুশ্রী একজন আটপৌরে গৃহবধূ। লকডাউনের জন্য  অনভ্যস্ত জীবন কাটাতে হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির এই মেয়েটিকে। স্কুল বন্ধ।ফলে বন্ধুদের সঙ্গে মজা করা যাচ্ছেনা। ঘুরে ঘুরে কচি আম কুড়াবে এবং বিকেলে নুন-লঙ্কা মাখিয়ে খাবে তারও উপায় নাই। ঘরের মধ্যে সবসময় থাকতেও বিরক্ত লাগছে।মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নাই ।কিন্তু শুভশ্রী একটু অন্যভাবে জীবনটা উপভোগ করতে শুরু করল।
        চার বছর বয়স থেকে ছবি আঁকা শিখতে শুরু করলেও কেবলমাত্র আঁকার স্যারের কাছেই ছবি আঁকত শুভশ্রী। এখন একঘেয়েমি কাটানোর জন্য মনের আনন্দে নিজেই ছবি এঁকে চলেছে। শুধু তাই নয় নিজের কাঁচের চুড়ি ও সুতো দিয়ে দৃষ্টিনন্দন একটি 'গৃহশোভা' বৃদ্ধির জিনিস  তৈরি করে ফেলেছে। এই সময় সে বেশ কিছু কবিতাও লিখেছে যা ইতিমধ্যেই মঙ্গলকোট.কম এ প্রকাশিত।মাঝে মাঝে মায়ের শাড়ি পড়ে সাজতেও বসে পড়ছে।
কর্মব্যস্ততার জন্য ব্যবসায়ী বাবাকে খুব একটা কাছে পেতনা শুভশ্রী। ব্যবসা বন্ধ থাকায় বাবা-মাকে একসাথে পেয়ে তাদের সঙ্গে খুনসুটি করে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে ফেলছে। সব মিলিয়ে নিজের জীবনটাকে আনন্দে ভরিয়ে ফেলেছে সে।
     ছোট্ট শুভশ্রী বলল- প্রথম প্রথম খুব বিরক্ত লাগছিল।তারপর যেই ছবি আঁকা, কবিতা লেখা  বা হাতের কাজ করতে শুরু করলাম সব বিরক্ত দূর হয়ে গেল। বাবাকেও কাছে পাচ্ছি। প্রতিমাসে একদিন করে লকডাউন হলে কি মজাটাই নাহবে!
       তনুশ্রী দেবী বললেন- বাবাকে কাছে পেলেও মেয়েটা মনমরা হয়ে যাচ্ছিল। কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। নিজেই মনের আনন্দে কাজ করছে দেখে খুব ভাল লাগছে। তবে আমরাও ওর কাছে বসছি। সব মা-বাবার উচিত এখন ছেলেমেয়েদের সময় দেওয়া।
      ক্লিনিক্যাল মনোবিদ্যার চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী এবং কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শক তানেয়া মুখার্জ্জী বললেন - হঠাৎ পরিবর্তিত পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া খুব কষ্টের। বিশেষ করে বাচ্চাদের। এই সময় তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। ঘরের চারদেওয়ালের মধ্যে তাদের যেটা ভাল লাগে সেটাই তারা করবে।এই সময় পড়াশোনায় চাপ না দিয়ে তাদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করা সবচেয়ে ভাল।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER