হে ঊর্ণনাভ
অপূর্ব চক্রবর্তী
হে ঊর্ণনাভ, কি অত্যাশ্চর্য প্রকৌশলী তুমি!
দিনের সূর্য প্রচন্ড অহংকারী হলেও
একটা অজানা ইতিহাসকে
কিছুতেই আলোকিত করতে পারে না
কোনো ফোটন কণা।
আমি এক অন্য রকমের স্বপ্ন দেখতে চাই, শব্দের ভিড়ে সে স্বপ্ন ভূমিষ্ঠ হতে ভয় পায়।
আসন্ন প্রসবা লেখনী প্রসব করে
অন্য ইতিহাস।
তবুও আমরা বেঁচে আছি,
এক আপাত কর্কশ শব্দ ভূমিতে
গজলের সুর গাইবার চেষ্টায় হাঁফিয়ে উঠছেন
বড়ে গুলাম আলী খাঁ সাহেব।
জাকির হোসেনের আঙ্গুল ব্যর্থ হয়ে যায়
আগাছার ভিড়ে পারিজাত ফোটাতে।
বিঠোফেন, মোৎসার্ট অথবা মহীনের সেই ঘোড়াগুলি
দৌড়াতে ভুলে যাচ্ছে।
হাসির মন্ত্র ভুলে চার্লি কোথায় যেন মুখ লুকিয়েছেন।
তবুও আমরা বেঁচে আছি
আশ্চর্য এক ইতিহাসের অধ্যায়ের
আংশিক উত্তরাধিকার নিয়ে।
গর্ভবতীর অপূর্ণ প্রসব চিৎকারে বধির জীবনানন্দ দাশ,
শান্তি খোঁজেন সঞ্চয়িতার পাতায়...
বোলপুরে হারিয়ে যাওয়া নোবেলটা
এক সূর্য ডোবার ছবি এঁকে যায়,
ছবি এঁকে যায় এক আসন্ন অন্ধ রাতের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে শান্তিতে শুয়ে থাকা মানুষটি
হয়তো এতদিনে ভুলে গেছেন !
তার আগুনভরা লাইনটি-
'আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হবো শান্ত'
তবুও আমরা ইতিহাস লিখছি
হ্যাঁ, আমরা নিয়ত একটা ভুল সময়ের ইতিহাস লিখতে ব্যস্ত।
হে ঊর্ননাভ, তোমার বিতংস বিতানে
আমরা সবাই এক বিন্দুতে অবস্থান করছি।
বাদশা শাজাহান আর হরিপদ কেরানি সব একদরে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।