; এনআরসি এবং ক্যাব আইন ঘিরে সারা বাংলায় যখন অশান্তির বাতাবরণ বইছে। যেখানে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্যন্ত রাজ্যের কাছে আইনশৃঙ্খলার রিপোর্ট তলব করে নেয় । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে 'এমএসডিপি' ব্লক পরিচিত পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাড়াতে উদ্যোগী হলেন স্বয়ং ওসি।এখনও তাঁর মঙ্গলকোটে ওসি পদে দায়িত্ব নেওয়া একমাস হয়নি। তার মধ্যেই তিনি এলাকার সমস্ত মসজিদ - মাদ্রাসার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি বৈঠক সারেন। চলতি সপ্তাহে এই বৈঠকে শতাধিক ইমাম - মোয়েজ্জেন এবং পঞ্চাশের কাছাকাছি জনপ্রতিনিধি আসেন এই সভায়।সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এনআরসি এবং ক্যাব নিয়ে যাতে এলাকায় অশান্তি না ঘটে সেই ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চান নবাগত মঙ্গলকোট ওসি মিঠুন ঘোষ। সর্বভারতীয় এক সংখ্যালঘু সংগঠনের ব্লক সম্পাদক হাফেজ সাবির আলি বলেন - "ওসি সাহেবের বিনয়ী আবেদনে আমরা সাড়া দিয়েছি, কোথাও হিংস্বাত্মক প্ররোচনায় পা দিতে বারণ করেছি কর্মী সমর্থক সর্বপরি সাধারণ মানুষদের কে" । মঙ্গলকোট কে অশান্ত করতে বরাবরই তৎপর এক শ্রেণির কুমতলবি।মঙ্গলকোটের সদর শহর নুতনহাটে এক পুজো কমিটির বিসর্জন ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ঘটেছিল একসময়। এমনকি বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছিলেন বিসর্জন ঘিরে । আবার বর্ধমান শহরে খাগড়াগড় বিস্ফোরণে যোগসুত্র পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ার। হাতেগোনা কিছু মানুষদের সামনে রেখে বিভেদ সৃষ্টি করার প্রয়াস নেওয়া হলেও বারবার তা নিস্তেজ হয়েছে মঙ্গলকোটের বুকে। এখনও পল্লিবাংলায় হিন্দু বাড়িতে নবান খেতে যায় প্রতিবেশী মুসলিমরা। আবার মঙ্গলকোটে প্রায় মসজিদে সন্ধেবেলায় ইমাম সাহেবদের কাছে 'ইশ্বরের করুণা' পেতে মাদুলিতাবিজ নিতে আসেন হিন্দু মানুষরা।একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আরও বাড়াতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাঁধন কে আরও মজবুত করতে উদ্যোগী হলেন ওসি মিঠুন ঘোষ মহাশয়। মঙ্গলকোটের ইতিহাস বলছে - এই মঙ্গলকোটেই মুঘল সম্রাট শাহজাহানের শিক্ষা ও দীক্ষাগুরু আব্দুল দানেশখান্দ হামিদ ( হামিদ বাঙ্গালী) সম্প্রীতির অটুট নিদর্শন রেখেছেন সুদুর পারস্য থেকে পায়ে হেঁটে এসেও । আবার "মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান " কবিতার সৃষ্টিকর্তা বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের মামারবাড়ি এই মঙ্গলকোট। এহেন মঙ্গলকোটে এনআরসি নিয়ে যাতে কোন বিভ্রান্তি না হয় সেজন্য এইধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি মিঠুন ঘোষ মহাশয়।
শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
হাবড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিলেন সিয়ামত আলি
আশ্রমে সাংস্কৃতিক মঞ্চে মানবপ্রেমের আহ্বান জানানো হল।উত্তর 24 পরগনা হাবরা বানিপুর আশ্রমে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত গুণীজনদের মধ্যে প্রগ্রেসিভ ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের রাজ্য সভাপতি সিয়ামত আলী বলেন - "মানবপ্রেমের মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এদেশ এমনই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, এটাই আমাদের সম্পদ। এই সম্পদ আমরা মানুষের স্বার্থে দেশের স্বার্থে কখনোই আমরা নষ্ট হতে দেব না"। পীরজাদা মোহেব্বুল্লাহ হোসাইনী বলেন -"নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান। সেটাই হলো আমাদের এই মহান ভারত বর্ষ। দেশের অখন্ডতা রক্ষা করা আমাদের উচিত"। স্বামী সত্যরূপ আনন্দ মহারাজ বলেন - "মানুষের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব। এটাই তো আমাদের সম্প্রীতির বাংলা সম্প্রীতির দেশ"। প্রগ্রেসিভ ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের রাজ্য কোষাধক্ষ্য কাজী তৈয়ে বুললা বলেন - "স্বামীজীর ভাষায় জীবে প্রেম করে যেজন সেজন সেবিছে ঈশ্বর। এভাবেই সমাজ তথা দেশকে এগিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব"।এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা টি সমসাময়িক সময়ে খুবই দরকার বলে মনে করেন অনেকেই।
আজ ক্যাবের হিংস্বা নিয়ে মামলার শুনানি কলকাতা হাইকোর্টে
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাব পরবর্তী হিংস্বা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করার কথা ছিল রাজ্যের। তবে গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশনের বর্ষীয়ান মেম্বার গীতানাথ গাঙ্গুলির প্রয়াণে বুধবার হাইকোর্টে কোন মামলার শুনানি হলনা। তবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বেলা দুটো নাগাদ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।" কলকাতার সিটি সিভিল আদালতের প্রবীণ আইনজীবী গীতানাথ গাঙ্গুলি গত মঙ্গলবার মারা যান। তিনি দূষণ মামলাগুলির প্রখ্যাত আইনজীবী ছিলেন। সেইসাথে রাজ্যে লোক আদালত প্রসারে এক ভূমিকা নিয়ে গেছেন" বলে জানান বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল। গীতানাথ গাঙ্গুলি সিটি সিভিল আদালতের পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টেও প্রাকটিস করতেন। তাই বুধবার এই দুটি আদালতে আইনজীবী স্মরণে এজলাস খোলা থাকলেও কোন বিচার প্রক্রিয়ায় সেভাবে শুনানি হয়নি। গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাব পরবর্তী হিংস্বা নিয়ে বুধবার রিপোর্ট পেশের নির্দেশ ছিল।ইতিমধ্যেই রাজ্যের তরফে ক্যাব বিরোধী আন্দ্রোলনে হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারশোর বেশি ব্যক্তি ধরা পড়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ কলকাতার একাংশে ক্যাব বিরোধী আন্দ্রোলনকারীদের হাতে একের পর এক হিংস্বাত্মক ঘটনা ঘটে। এইসব আন্দ্রোলনকারীদের নিদিষ্ট কোন সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দলের পতাকা সেসময় ছিলনা বলে প্রকাশ। ইতিমধ্যেই ৩৮ টি সরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টি সরকারি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুরুপভাবে ৬০ টির মত বেসরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এবং পূর্ব রেলের প্রায় ১০০ কোটি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ক্যাব আন্দ্রোলন ঘিরে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে,গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এক বিজেপি কর্মী সুরজিত সাহার পক্ষে আইনজীবী সুরজিত রায় চৌধুরী দ্রুত শুনানির আর্জি নিয়ে এক জনস্বার্থ মামলা দাখিল করেন।পিটিশনের শুনানি গ্রহণ করে সেদিন বেলা দুটো নাগাদ মামলাকারী এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব চলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীর দাবি - পশ্চিমবাংলা সরকারের লোগো ব্যবহার করে রাজ্যের প্রধান অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় আইন মানবেন না বলে বিজ্ঞাপন চালাছেন, তা অসাংবিধানিক। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করছেন। তাও বেআইনী।মুখ্যমন্ত্রীর এই কেন্দ্র বিরোধী অবস্থানের জন্যই রাজ্যজুড়ে হিংস্বাত্মক ঘটনাগুলি ঘটছে"।প্রসঙ্গত বিজেপির এহেন সূর পাওয়া গেছে রাজ্যপালের গলাতেও! গত সোমবার এই মামলার শুনানি শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আইনজীবী কে বুধবারের মধ্যেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিল। এখনও অবধি কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল এই নির্দেশে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশনের প্রবীণ সদস্য আইনজীবী গীতানাথ গাঙ্গুলির প্রয়াণের জন্য শুনানি মুলতবি ছিল। তবে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বেলা দুটো নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলায় শুনানি রয়েছে। ক্যাব পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে রাজ্য আরও একটি দিন বেশি সময় পাওয়ায়, প্রস্তাবিত রিপোর্ট টি আরও তথ্যসমৃদ্ধ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
মৌলালীর মামলায় বেকসুর খালাস বঙ্গ সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার ব্যাংকশাল আদালতে ২০ নং মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে এক পুলিশি মামলায় অব্যাহতি পেলেন বঙ্গ সিপিএমের হেভিওয়েট নেতৃত্ব। এদিন তালতলা থানার স্বতঃস্ফূর্ত করা মামলায় ব্যাংকশাল আদালতে সশরীরের হাজির ছিলেন এই রাজ্যের বামেদের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব, অনাদি সাহু, মানব মুখোপাধ্যায়, শ্যামল চক্রবর্তী প্রমুখ ছিলেন ব্যাংকশাল আদালতের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মায়া চক্রবর্তীর এজলাসে। এই মামলায় অভিযুক্ত ক্ষিতি গোস্বামী সম্প্রতি মারা গেছেন।এদিন এগারোজন অভিযুক্তদের খালাসদানে ম্যাজিস্ট্রেটের পর্যবেক্ষণ - " এই মামলায় দোষী প্রমাণে উপযুক্ত তথ্য ও প্রমাণ কলকাতা পুলিশ দেখাতে পারেনি, যে তথ্য প্রমাণ পেশ হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় অভিযুক্তদের বিপক্ষে"। এই মামলায় ১১ জন পুলিশ কর্মী সাক্ষ্যদান করেছেন। যারা অভিযোগকারী তারা কিভাবে সাক্ষী হয় অভিযুক্তদের দোষী প্রমাণে? এহেন প্রশ্ন উঠেছে এই মামলায়। আদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৮ সালে মে মাসে শিয়ালদহ সংলগ্ন মৌলালী মোড়ে বামেদের এক প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে সংশ্লিষ্ট থানা অর্থাৎ তালতলা থানা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মামলা দাখিল করে। বিভিন্ন সড়কমোড়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং এগারোজন পুলিশ কর্মীর সাক্ষ্যে রাস্তা আটকে বেআইনী জমায়েত, আইনশৃঙ্খলা অবনতি বিষয়ক তথ্য উঠে আসে চার্জশিট দাখিলে। প্রায় দেড় বছর পর ব্যাংকশাল আদালতে এই মামলায় দশজন শীর্ষ বাম নেতৃত্ব এই মামলায় খালাস পেলেন।
খুনের মামলায় রক্ষাকবচ পেলেও মুকুলের বীরভূমে যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞা
মোল্লা জসিমউদ্দিন
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চে লাভপুরের খুনের মামলায় মুকুলের আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে শুনানি চলে। সেখানে ডিভিশন বেঞ্চ তদন্তে সহযোগিতার শর্তে বিজেপি নেতা মুকুল রায় কে ৮ ফেব্রুয়ারি অবধি আইনী রক্ষাকবচ দিললো। তবে বীরভূম জেলায় লাভপুর বোলপুর এবং শান্তিনিকেতন থানায় যাওয়ার ব্যাপারে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে। কলকাতা হাইকোর্টের শীতকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৪ ডিসেম্বর লাভপুরের তিন ভাই খুনে বীরভূম জেলা পুলিশের সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট দাখিলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম উঠে আসে। খুনের প্ররোচনায় ধারায় চার্জশিটটি পেশ হয়েছে। ৩০২ এর মত খুনের ধারায় চার্জশিট দাখিল বিষয়টি গুরত্ব অনুভব করেই তড়িঘড়ি কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিনের পিটিশন টি করেন মুকুল রায়। প্রথমে ত্রুটিপূর্ণ আবেদনের জন্য আগাম জামিনের আবেদন বাতিল হয়।দ্বিতীয় পযার্য়ের শুনানি হয় আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে। মুকুল শিবিরের দাবি - "২০১০ সালে বীরভূমের লাভপুরের খুনের সময় মূল অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন। তখন মুকুল রায় তৃণমূলের দু নাম্বার ব্যক্তি। রাজ্যসরকারে শাসক দল হিসাবে ছিল বামেরা। তৃনমূল তখন মূল প্রতিপক্ষ। তাই তৎকালীন বাম বিধায়ক কে তৃনমূল নেতা মুকুল রায়ের প্ররোচিত করার কোন ভূমিকা থাকতে পারেনা"? লাভপুরের খুনের মামলায় একদা তৃনমূল বিধায়ক তথা অধুনা গেরুয়া নেতা মনিরুল ইসলামের নাম চার্জশিটে আসাটা স্বাভাবিক হলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম আসবে তা রাজনৈতিক মহলে অপ্রত্যাশিত ছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল হইচই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুরে এলাকার খুনের এক মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন। তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশসুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষন চাপে পড়ে যান লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনি মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি 'ঘরপোড়া গরু'র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে অচ্ছুৎ অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃনমূল বিধায়ক কে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনীতিমহলে। আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে লাভপুরে একই পরিবারে ৩ ভাই খুন হয়েছিলেন।নিহতেরা হল ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ। এই খুনে অভিযোগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মামলার প্রথম পয্যায়ে পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন কে তাদের বিরুদ্ধে উঠা খুনের অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন। সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় নিহতের পরিবার। এরপর, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় - ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশসুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবার কে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের লাভপুর হত্যা মামলার চার্জশিট জমা পড়ল। আর সেই চার্জশিটে স্বাভাবিক ভাবেই নাম উঠে এল বিজেপি নেতা মণিরুল ইসলামের নাম। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এল দ্বিতীয় পয্যায়ের চার্জশিটে । প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর নাম উঠে এল । প্ররোচনার দায়ে তাঁর নাম জড়িয়েছে বীরভূম জেলা পুলিশ। চলতি ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে ২০১০ সালের ঘটনার পুনর্তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিট গৃহীত হয় আদালতের তরফে ।জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন - "হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিট গৃহীত হয়েছে ।" বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে ২০১০ সালের ৪ জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলে সেসময়কার দাপুটে নেতা মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । মণিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । ঘটনার পরে পরে আইনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তৃণমূলে যোগ দান করেন তিনি বলে অভিযোগ । পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ীও হন । ২০১১ সালে সাঁইথিয়ার একটি জনসভা থেকে "তিনজনকে পা দিয়ে পিষে মেরে দিয়েছি" বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিরুল ইসলাম। ২০১৫ সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে ৩০ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । সেই চার্জশিটে নাম বাদ যায় এই মণিরুলের। তখন অবশ্য শাসক দলের বিধায়ক ছিলেন তিনি। নিহতের পরিবার তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন । এই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণিরুল। দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দান করেন মণিরুল।সেখানেও তাঁকে নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ে। তাই তাঁকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে বীরভূম পুলিশ ।গত ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । ২০১০ সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুল রায় । প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে স্থান পেয়েছে মুকুল রায়ের নাম।তবে মুকুল বাবু সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন - "বিগত বাম আমলে শেষের দিকে সিপিএম যেমন পুলিশ নির্ভর ছিল, এখন তৃনমূল সেই ভূমিকাটা নিয়েছে। এহেন মিথ্যা মামলার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আদালতেই সুবিচার পাব"।মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট এর ডিভিশন বেঞ্চে মুকুল রায়ের আগাম জামিনের মামলায় শুনানিতে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশ কোন কড়া পদক্ষেপ ( গ্রেপ্তার) করতে পারবেনা বলে নির্দেশিকাজারী হয়। তবে তদন্তের পূর্ন সহযোগিতার শর্তে এবং বীরভূমের তিনটি থানা এলাকায় যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞাজারীও হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের তর।
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জরুরি রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাব পরবর্তী বাংলায় হিংস্বার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে রাজ্যের কাছ থেকে। আগামী বুধবার সবিস্তারে তা হলফনামা আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশিকা জারী করা হয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে। উল্লেখ্য, গত চারদিনে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ কলকাতার একাংশে ক্যাব বিরোধী আন্দ্রোলনকারীদের হাতে একের পর এক হিংস্বাত্মক ঘটনা ঘটে। এইসব আন্দ্রোলনকারীদের নিদিষ্ট কোন সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দলের পতাকা সেসময় ছিলনা বলে প্রকাশ। ইতিমধ্যেই ৩৮ টি সরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ টি সরকারি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুরুপভাবে ৬০ টির মত বেসরকারি বাস ভাঙচুর হয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এবং পূর্ব রেলের প্রায় ১০০ কোটি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ক্যাব আন্দ্রোলন ঘিরে। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা এবং হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন এফআইআর দায়ের করা হয়নি বলে জানা গেছে।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে, সোমবার সকাল দশটা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এক বিজেপি কর্মী সুরজিত সাহার পক্ষে আইনজীবী সুরজিত রায় চৌধুরী দ্রুত শুনানির আর্জি নিয়ে এক জনস্বার্থ মামলা দাখিল করেন।পিটিশনের শুনানি গ্রহণ করে এদিন বেলা দুটো নাগাদ মামলাকারী এবং সরকার পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব চলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাকারীর দাবি - পশ্চিমবাংলা সরকারের লোগো ব্যবহার করে রাজ্যের প্রধান অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় আইন মানবেন না বলে বিজ্ঞাপন চালাছেন, তা অসাংবিধানিক। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করছেন। তাও বেআইনী।মুখ্যমন্ত্রীর এই কেন্দ্র বিরোধী অবস্থানের জন্যই রাজ্যজুড়ে হিংস্বাত্মক ঘটনাগুলি ঘটছে"।প্রসঙ্গত বিজেপির এহেন সূর পাওয়া গেছে রাজ্যপালের গলাতেও! সোমবার এই মামলার শুনানি শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আইনজীবী কে আগামী বুধবারের মধ্যেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রিপোর্ট তলব করে। এখনও অবধি কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাও জানতে চাওয়া হয়েছে এই নির্দেশে। অপরদিকে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সাম্প্রতিক সময়ে সোশাল মিডিয়ায় এক বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দাখিল করা হয়েছে। সুমন ভট্টাচার্য নামে এক মামলাকারীর পক্ষে আইনজীবী তরুনজ্যোতি তেওয়ারী এই মামলাটি করেছেন। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা গ্রহণ করলেও আজ অবশ্য কোন শুনানি হয়নি। চলতি সপ্তাহে শুনানি হতে পারে। ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্যর পরিপেক্ষিতে এই মামলা।
সোমবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
ডের্থ সার্টিফিকেট পেতে অচল রেশন কার্ড চায়, আজব ফরমান মঙ্গলকোটে
মোল্লা জসিমউদ্দিন
সাধারণ মানুষের প্রশাসনিক হয়রানি কমাতে রাজ্য সরকার বিভিন্ন জনহিতকর উদ্যোগ নিয়েছে। কখনো রাতে প্রত্যন্ত গ্রামে নিশিযাপন করছেন জেলাপ্রশাসনের আধিকারিকরা। আবার কখনো বা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সংযোগ পেতে অভাব-অভিযোগ শুনতে 'দিদি কে বলো' কর্মসূচি চলছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে চরম প্রশাসনিক হয়রানির অভিযোগ উঠলো মঙ্গলকোটে।গত ১১ ডিসেম্বর মঙ্গলকোট বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে এই প্রশাসনিক হয়রানি নিয়ে। সেইসাথে মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে অচল রেশন কার্ড এর আবশ্যিকতা কিনা সেই বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা আছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। অচল রেশন কার্ড এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে সদুত্তর মেলেনি, এমনকি কলকাতা আইনজীবীদের একাংশের কাছে যেটা বেআইনী বলে দাবি করা হয়েছে। হ্যাঁ, কখনো শুনেছেন কোন সরকারি পরিষেবা পেতে গেলে অচল রেশন কার্ড এর আবশ্যিক প্রয়োজনীতা আছে? কেননা সচল রেশন কার্ডই তো কোন কিছু সরকারি ক্ষেত্রে দরকার পড়ে। সবথেকে বড় ব্যাপার, অচল রেশন কার্ড না দিলে চালু (সচল) রেশন কার্ড মেলেনা। পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনের অদ্ভুত নিয়মাবলি নিয়ে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন দেখা গেছে মঙ্গলকোটে। তবে মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে কোন সরকারি গাইডলাইন (অচল রেশনকার্ড এর আবশ্যিকতা) আছে কিনা, সেই প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছ থেকে। স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ, গত ১০ নভেম্বর মঙ্গলকোটের গোতিস্টা গ্রামে নিজ বাসভবনে বয়সজনিত কারণে মারা যান পার্বতীচরণ ঘোষ মহাশয়। মৃত্যুর সাতদিন পর অর্থাৎ ১৮ নভেম্বর মৃতের পুত্র সুকান্ত ঘোষ প্রয়াত বাবার মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে লিখিত আবেদনপত্র নিয়ে যান সংশ্লিষ্ট গোতিস্টা পঞ্চায়েতের অফিসে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ শংসাপত্র পেতে নিদিষ্ট ফর্ম দেয় আবেদনকারী কে।যেখানে রেশন কার্ড জমা দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। এতটা অবধি সব ঠিকঠাক ছিল।আবেদনকারীর অভিযোগ - "প্রয়াত বাবার পুরাতন রেশন কার্ড না দিলে মৃত্যুর শংসাপত্র মিলবেনা বলে জানিয়ে দেন গ্রাম প্রধান"। এরপরে এই আবেদনকারী স্থানীয় রেশন ডিলারের কাছে যান এইরুপ রেশন কার্ডের নিয়মাবলি জানতে। ওই রেশন ডিলার জানিয়েছেন - " সরকারি রেশন ভর্তুকিতে দূর্নীতি রুখতে সচল অর্থাৎ বর্তমান রেশন কার্ড টি জমা দিতে হয় আবেদনকারী কে, এর বাইরে কিছুই জানিনা "। গত ৯ ডিসেম্বর ওই আবেদনকারী মঙ্গলকোট ব্লক প্রশাসনের ফুড ইন্সপেক্টরের কাছে যান মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে অচল রেশন কার্ড লাগে কিনা, তা জানতে। মঙ্গলকোট ফুড ইন্সপেক্টর সরকারি কোন আদেশনামা দেখাতে না পারলেও বলে দেন - লাগবেই লাগবে পুরাতন রেশন কার্ড টি,সেইসাথে পুরাতন রেশন কার্ড হারিয়ে গেছে বলে স্থানীয় থানায় জেনারেল ডাইরি করার পরামর্শ দেন । রাজ্য খাদ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানান - " আমরা যখন নুতন রেশন কার্ড দিই গ্রাহকদের, তখন পুরাতন রেশন কার্ডটি বাজেয়াপ্ত করে নেয় স্থানীয় খাদ্য দপ্তরের লোকজন। তাছাড়া মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে সচল রেশন কার্ডই লাগে, পুরাতন টি নয় "। মঙ্গলকোট বিডিও মুস্তাক আহমেদ বলেন - " এই বিষয়ে আমার জানা নেই, স্থানীয় খাদ্য দপ্তর বলতে পারবে বিষয়টি "। অনুরূপভাবে কাটোয়া মহকুমাশাসক সৌমেন পাল জানান - " মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে অচল রেশন কার্ড লাগে কি লাগেনা সেটা ফুড ডিপার্টমেন্ট ভালো বলতে পারবে "। বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল জানান - " মৃত্যু ব্যক্তির রেশন সামগ্রী কেউ নিতে না পারে, সেজন্য নুতন রেশন কার্ড লাগে। বাতিল রেশন কার্ড চাওয়া টা একপর্যায়ে প্রশাসনিক হয়রানি "। গত ১১ ডিসেম্বর পঞ্চায়েত প্রধান থেকে রেশন ডিলার। আবার ব্লক খাদ্য দপ্তর থেকে বিডিও অফিস অবধি প্রশাসনিক হয়রানি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন মঙ্গলকোটের গোতিস্টা গ্রামে সুকান্ত ঘোষ নামে এক বাসিন্দা। জানা গেছে, অভিযোগকারী পেশায় স্থানীয় এক পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদক, তাঁর প্রকাশিত খবরে রুস্ট স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনের একাংশ। তাই এইরুপ হয়রানি বলে এলাকাবাসীদের অভিযোগ।মঙ্গলকোট ব্লক অফিসের মূল গেটে হেল্ফ ডেস্কে জ্বলজ্বল করছে - জন্ম এবং মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে সপ্তাহের প্রতি সোমবার এবং বুধবার আবেদন জানান!
রবিবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
সম্প্রতি সৌহার্দ্য বাড়াতে একতার বার্তা সিয়ামত আলির
গাইঘাটায় বিশ্ব নবী দিবসে সর্ব ধর্ম সম্মেলনে সম্প্রীতির আহ্বান জানানো হল ।উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা ব্লকের শিমুলিয়া দক্ষিণ পাড়ায় জলসা কমিটির উদ্যোগে এক সর্বধর্ম সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।দুদিন দিনব্যাপী বিভিন্ন ইসলামিক সাংস্কৃতিক মূলক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সম্মেলন সম্পন্ন হয়। উপস্থিত 'প্রগ্রেসিভ ইয়ুথ ফাউন্ডেশনে'র রাজ্য সভাপতি সিয়ামত আলী বলেন - "বর্তমান এদেশের এই সর্ব ধর্ম সম্মেলন এর বিশেষ প্রয়োজন। সারা ভারতবর্ষ ব্যাপী যেভাবে ক্যাব ও এনআরসির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের গণআন্দোলন পরিস্ফুটিত হচ্ছে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে আজ দেশের অবস্থা কোন জায়গায় অবস্থান করছে, সংবিধানবিরোধী মানবতাবিরোধী যে অপকর্ম চলছে ।তার বিরুদ্ধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলা তথা ভারত বর্ষ সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়ে থাকে। যারা এটাকে কলুষিত করার চেষ্টা করবে তাদের উদ্দেশ্য কোন মতেই সফল হবে না"। জোয়েফ কর্ণধর পীরজাদা মোহেব্বুল্লাহ হোসাইনী বলেন "সাম্প্রতিক ভারতবর্ষের এক অস্থিরতা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দেশের শান্তিকামী মানুষ গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে সমস্ত কার্যাবলী সম্পন্ন করতে হবে"। স্বামী সত্যরূপনন্দ মহারাজ বলেন - " মানবপ্রেমের মধ্য দিয়েই সমস্ত কল্যাণ সম্পন্ন হয়ে থাকে। এটা কি শেষ করার অপচেষ্টা যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে সোচ্চার হতে হবে। মানবতাবিরোধী ও সংবিধান বিরোধী এমন কোন কার্যাবলি আমরা এই ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে কখনোই সেটা সমর্থন করতে পারি না"। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী আব্দুল কাদির, পি ওয়াই এফ এর রাজ্য কমিটির কোষাধ্যক্ষ কাজী তৈয়ে বললা, পি ওয়াই এফ দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা সভাপতি জাকির হোসেন, ডি ওয়াই এফ এর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব মাওলানা আবুল কালাম, বিশিষ্ট শিক্ষিকা তনুজা কাদরিয়া প্রমুুখ। পুরো অনুষ্ঠানটির আয়োজক জহির উদ্দিন মন্ডল ছিলেন ।
শনিবার, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
মুকুলের গলার স্বর নথিভুক্তিকরণ নির্দেশ বহাল রাখলো কলকাতা হাইকোর্ট
বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে বড়বাজার আর্থিক দুর্নীতির মামলায় মুকুল রায়ের গলার স্বর নথিভুক্তিকরণের নির্দেশিকাজারী হয়। আগামী ১০ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট আদালতে অর্থাৎ ব্যাংকশাল আদালতের আডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এই গলার স্বর নথিভুক্তিকরণ ( ফরেন্সিক) টি হওয়ার আদেশনামা রয়েছে। তবে এই গলার স্বর রেকর্ড টি মুখবন্ধ খামে থাকবে। তা মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারও দেখতে পাবেন না হাইকোর্টের নির্দেশ ছাড়া। যদিও আজ এই মামলার পরবর্তী শুনানি টি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। প্রধান বিচারপতিই ঠিক করবেন পরবর্তী শুনানি কোন বেঞ্চে হবে তা নিয়ে । কেননা মুকুল রায়ের আইনজীবী শুভাশিস দাশগুপ্ত এদিন এজলাসে প্রশ্ন তুলেছেন - বড়বাজার আর্থিক দুর্নীতি মামলায় মুকুল রায় একজন সাক্ষী মাত্র, অভিযুক্ত নন। তাই একজন সাক্ষী কিভাবে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদান করবেন? " উল্লেখ্য, ব্যাংকশাল আদালতে আডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুকুল রায়ের গলার স্বর নথিভুক্তিকরণ এর নির্দেশ দিয়েছিল। এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করেন। আজ এই মামলার শুনানিতে নিম্ন আদালতের নির্দেশ কে বহাল রাখলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। তবে সেইসাথে মামলাটি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ৩১ জুলাই কলকাতা পুলিশ বড়বাজার এলাকায় কল্যাণ রায় বর্মন নামে এক সরকারি কর্মীর কাছে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে থাকে। ধৃত কে জেরা করে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম পায় বলে কলকাতা পুলিশের দাবি। এই টাকা উদ্ধারের আগে নাকি মুকুল রায়ের সাথে কথপোকথন হয় ধৃতের। ২০১৮ সালে ডিসেম্বর মাসে ১৬০ ধারায় মুকুল রায় কে সাক্ষী হিসাবে তলব করেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। এরপর বেশ কয়েকটি নোটিশ অগ্রাহ্য করায় মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারী হয় ব্যাংকশাল আদালতে। এমনকি ব্যাংকশাল আদালতের সংশ্লিষ্ট এজলাসের বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য একমাস সময়সীমাও বেঁধে দেন। মুকুলের আইনজীবী দিল্লীর ভোটার কার্ড কে সামনে রেখে ওয়ারেন্ট এর বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দাখিল করেন দিল্লির হাইকোর্টে।দিল্লি হাইকোর্ট ব্যাংকশাল আদালতের ওয়ারেন্ট খারিজ করে দশদিনের মধ্যে মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কে দিল্লীর ঠিকানায় জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের এক প্রতিনিধিদল দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাসভবনে জিজ্ঞাসাবাদ চালায়। এরপর চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকশাল আদালতে 'সাক্ষী' মুকুল রায়ের গলার স্বর নথিভুক্তিকরণ এর আদেশনামা জারী করে থাকে। এই আদেশনামার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন বঙ্গ বিজেপির হেভিওয়েট নেতা মুকুল রায়।বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার নিম্ন আদালতের রায় কে বহাল রেখে আগামী ১০ জানুয়ারী মুকুল রায়ের গলার স্বর ফরেনসিক টিমের উপস্থিতিতে রেকর্ড সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন। তবে এই গলার স্বর রেকর্ডটি মুখবন্ধ খামে আদালতের হেফাজতে থাকবে। তা দেখার এক্তিয়ার তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরও থাকবেনা বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসাথে মামলায় আইনী জটিলতার কারণে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়েদেন এই বিচারপতি।
একশো ক্ষুদে পড়ুয়াদের কুমুদ সাহিত্য মেলায় উপহার দেবে 'সুসম্পর্ক'
এবার কুমুদ সাহিত্য মেলায় 'মনন' এর পাশাপাশি পাশে থাকছে 'সুসম্পর্ক'
আগামী ৩ রা মার্চ মঙ্গলকোটের কোগ্রামে পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের বাসভবনে কুমুদ সাহিত্য মেলায় কলকাতার সুবিখ্যাত সাহিত্য সংগঠন 'মনন' ১২৫ জন দুস্থদের বস্ত্রবিলি করবে। সেইসাথে কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটানো সামাজিক সংগঠন 'সুসম্পর্ক' ১০০ জন দুস্থ ক্ষুদে পড়ুয়াদের শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেবে। দুটি সংগঠনই আমাকে লিখিত প্রস্তাবনাটি দিয়েছে। ওইদিন বাংলার সাহিত্য জগতে নক্ষত্রদের সমাবেশ ঘটবে। আপনাদের সপরিবারে আসবার আমন্ত্রণ জানাই। কোন ডেলিকেট ফি লাগেনা।
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
নির্ভয়ার দেখানো পথে কলকাতা হাইকোর্টে বিচার চায় কামদুনি
হায়দ্রাবাদে পশুচিকিৎসক ধর্ষণ করে খুন কান্ডে পুলিশি এনকাউন্টারের উত্তাল গোটা দেশ। এরপরে 'নির্ভয়া' কান্ডে ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়ার প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বাংলায় ধর্ষণের ঘটনায় কুখ্যাত 'কামদুনি' দ্রুত বিচার চাইছে। বুধবার দুপুরে কামদুনি গণধর্ষণ মামলার দ্রুত শুনানির দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল মৃতার পরিবার।নির্ভয়াকাণ্ডে দ্রুত শুনানি এবং দোষীদের শাস্তি ঘোষণা হলে, সমসাময়িক কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় বিচার পেতে কেন এত বিলম্ব হচ্ছে ? এই প্রশ্ন তুলে দ্রুত বিচার চেয়ে এবার আদালতের দ্বারস্থ হলেন কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার। বুধবার মৃতার পরিবারের লোকেরা দেখা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেলের সঙ্গে। জানা গেছে, তাঁদের প্রথাগতভাবে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্টের রেজিস্টার জেনারেল। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে কলকাতার ব্যাংকশাল আদালত ৮ জন দোষীদের মধ্যে ৩ জনের ফাঁসি , ৩ জনের যাবজ্জীবন এবং ২ জনকে বেকসুর খালাসের রায় দেয়। এরপর সাজাপ্রাপ্তরা নিম্ন আদলতের দেওয়া সাজা মকুবের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেছিল। সেই সময় রাজ্য সরকার এই ফাঁসির রায়দানের সপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল ।এরপর থেকেই এই মামলা একাধিক বিচারপতিদের এজলাসে ঘুরতে থাকে। বর্তমানে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি অমিমাংসিত ভাবেই রয়েছে। এদিন মৃতার পরিবারের পক্ষে স্থানীয় স্কুলের শিক্ষক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় রেজিস্টার জেনারেল সাহেবের সঙ্গে দেখা করেন।নির্ভয়াকাণ্ডের পরই ২০১৩ সালের ৭ জুন কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধেবেলায় ওই কলেজছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ এবং তথ্য লোপাট করতে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এই ঘটনায় পর রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে ওঠে। ঘটনায় অভিযুক্ত মোট নয় জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । বিচার চলাকালীন একজন অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। বাকি ৮ জনের মধ্যে ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে তিন জনকে ফাঁসি, তিনজনকে যাবজ্জীবন এবং দুজনকে তথ্যপ্রমানের অভাবে বেকসুর খালাস করে কলকাতার ব্যাংকশাল আদালত।এই রায়ের বিরুদ্ধে সাজাপ্রাপ্তরা ব্যাংকশাল আদালতের রায় কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল করে থাকে।সেই মামলার দীর্ঘায়িত নিয়ে বিস্তর অভিযোগ মৃতার পরিবারের। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে হায়দ্রাবাদে পুলিশি এককাউন্টার এবং নির্ভয়াকান্ডে দোষীদের ফাঁসির প্রস্তুতি সুবিচারের আশা দেখিয়েছে কামদুনি কে। বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসে মৃতার পরিবার দ্রুত শুনানির আবেদন জানালে, রেজিস্ট্রার জেনারেল সাহেব প্রথাগত পিটিশনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে প্রকাশ।
পোস্টার রিলিজ হল 'একদিনের স্বাধীনতা' নামে শর্টফিল্মের
রাজকুমার দাস পরিচালিত ছোট্ট ছবি "এক দিনের স্বাধীনতা"-র পোস্টার রিলিজ হলো
নিজস্ব প্রতিনিধি:
গুটি গুটি করে প্রায় তিরিশ টির উপর শর্ট ফিল্ম ও তথ্যচিত্র পরিচালনা করেছেন টলিউডের পরিচালক রাজকুমার দাস। তিনি সু অভিনেতা ও সাংবাদিক হিসাবে ও পরিচিত।তার নতুন শিশুদের জন্য নির্মিত শর্ট ফিল্ম "এক দিনের স্বাধীনতা"র পোস্টার সম্প্রতি রিলিজ হয়ে গেল শহরে।
এক অনাথ শিশুর বেঁচে থাকার লড়াই এবং দেশ প্রেম কে নিয়ে ছবির গল্প এগিয়েছে।প্রায় পনেরো মিনিটের ফিল্মে সুচারু অভিনয় করেছে মাস্টার পুষ্পেন্দু মন্ডল,মাস্টার ঋক দাস,ও নীল আকাশ।
"চিত্রসাথী ফিল্মস "-এর ব্যানারে নির্মিত ছবির প্রযোজনায় শ্রীমতী মৌসুমী দাস।পরিচালক রাজকুমার দাস বরাবরই স্বতন্ত্র নির্ভেজাল ছবি করে চলেছে,এবং সেই ছবি শুধু সোশ্যাল মিডিয়া তে রিলিজ নয় পাশাপাশি দেশ বিদেশের বহু ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ দেখানো হচ্ছে।এই ছবিটিও ব্যাতিক্রম নয়।অনিতেশ অধিকারী র সম্পাদনায় ছবিটি ইতিমধ্যেই যাদবপুর শহীদ স্মৃতি সংঘের শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবছর অংশগ্রহণ করছে বলে জানালেন পরিচালক রাজকুমার দাস।
নেপাল নাকি বিদেশ নয়, কলকাতা হাইকোর্টে বললেন বিমল গুরঙ্গের আইনজীবী
'নেপাল বিদেশ নয়, কেননা ওই দেশে যেতে গেলে নাগরিক ভিসার প্রয়োজন পড়েনা'। এহেন বিতর্কিত যুক্তি আদালতের এজলাসে দেখালেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিমল গুরঙ্গের আইনজীবী। ঘটনার সুত্রপাত, মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং মনোজিত মন্ডলের ডিভিশন বেঞ্চে আগাম জামিনের মামলায় এজলাসে শুনানিতে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান - "এইবিধ মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা বিমল গুরঙ্গের মোবাইল ফোন লোকেশন ট্র্যাকিং করে গুগল ম্যাপে নেপালের উপস্থিতি পেয়েছেন। এছাড়া মামলাগুলির এক।সাক্ষী তথা একদা বিমল গুরঙ্গের সহযোগী তার জবানবন্দিতে নেপালে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরঙ্গের নেপালে থাকবার কথা জানিয়েছেন "। রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের এহেন সওয়ালের পরেই বিমল গুরঙ্গের আইনজীবী এজলাসে তখন জানিয়েছে - " নেপাল বিদেশ নয়, কেননা ওই দেশে যেতে গেলে অন্যান্য দেশে যাওয়ার মত নাগরিক ভিসার প্রয়োজন পড়েনা। তাছাড়া বিমল গুরঙ্গ এদেশেই আছেন"। মামলার কাজে সুপ্রিম কোর্টে যাতায়াতও করেন বলে দাবি বিমলের আইনজীবী। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে দুপক্ষকেই অতিরিক্ত হলফনামা পেশের নির্দেশ দেয়। একাধারে এডভোকেট জেনারেল কে অভিযুক্ত বিমল গুরঙ্গ - রোশন গিরিদের নেপালে থাকবার প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে হলফনামায়। অপরদিকে মামলাকারীর আইনজীবী কে অভিযুক্তেরা নেপালে নেই, তার প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে হলফনামায়। কলকাতা হাইকোর্টের শীতকালীন ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে বলে ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে।উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে জুন মাসে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি মহকুমা এলাকা বিশেষত দার্জিলিং জেলার সিংহভাগ নিয়ে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন চলে। টানা ১০৫ দিন চলে এই হিংস্বাত্মক আন্দ্রোলন। বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এমনকি এক পুলিশ অফিসার পর্যন্ত খুন হয়েছিলেন সেসময় । শতাধিক গাড়ী - বাড়ী ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ,লুটপাট চলে। ১৫০ এর বেশি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা। বিশেষত বিমল গুরঙ্গ ও রোশন গিরি প্রতিটি জামিন অযোগ্য ধারায় চার্জশিট প্রাপ্ত হন। মাস কয়েক পূর্বে সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানাতে গেলে বিমলদের সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দেয় সংশ্লিষ্ট আদালতের দারস্থ হতে। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে কয়েকদফা শুনানি চলে। সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি এই 'হেভিওয়েট' মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে 'রেফার' করে দেন। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচিএবং মনোজিৎ মন্ডলের এজলাসে এই মামলায় শুনানি চলে। মূলত বিমলদের নেপালে থাকা - না থাকা নিয়ে সওয়াল-জবাব চলে। তখনি বিমলের আইনজীবী দাবি করেন - "নেপাল বিদেশ নয় কেননা ওইদেশে যেতে গেলে নাগরিক ভিসা লাগেনা"। ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য দু-পক্ষকেই নেপালে থাকা ও না থাকা নিয়ে প্রমাণ সহ হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলায় পরবর্তী শুনানি কলকাতা হাইকোর্টের শীতকালীন ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের পর।
বুধবার, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
বীরভূমে খুনের মামলায় সাপ্লিমেন্ট চার্জশিটপ্রাপ্ত মুকুল রায়ের আগাম জামিন খারিজ
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের তিন খুনে সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট প্রাপ্ত অভিযুক্ত বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের আগাম জামিনের আবেদন বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ মুকুল রায়ের দাখিল করা পিটিশন টি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় আগাম জামিনের আবেদন টি খারিজ করে দেয়। তবে আবেদনকারী পুনরায় আগাম জামিনের আবেদন জানাতে পারে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একাধারে সরশুনা প্রতারণা মামলায় তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের জরুরি তলব অপরদিকে লাভপুরের খুনের মামলায় আগাম জামিনের আবেদন খারিজ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায় কে আরও আইনী জটে ফেলে দিল বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। গত রবিবার (৪ ডিসেম্বর) লাভপুরের তিন ভাই খুনে বীরভূম জেলা পুলিশের সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট দাখিলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম উঠে আসে। খুনের প্ররোচনায় ধারায় চার্জশিটটি পেশ হয়েছে। ৩০২ এর মত খুনের ধারায় চার্জশিট দাখিল বিষয়টি গুরত্ব অনুভব করেই তড়িঘড়ি অর্থাৎ গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে চার্জশিটে নাম বাতিলের পিটিশন টি করেছিলেন মুকুল রায়। মঙ্গলবার দুপুরে এই পিটিশনের শুনানিতে আবেদন টি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় আগাম জামিন টি স্বভাবতই খারিজ হয়। তবে এই এজলাসেই পুনরায় আগাম জামিনের আবেদন জানাতে পারে আবেদনকারী, তাও স্পষ্ট করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।লাভপুরের খুনের মামলায় একদা তৃনমূল বিধায়ক তথা অধুনা গেরুয়া নেতা মনিরুল ইসলামের নাম চার্জশিটে আসাটা স্বাভাবিক হলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম আসবে তা রাজনৈতিক মহলে অপ্রত্যাশিত ছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল হইচই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুরে এলাকার তিনভাই খুনের মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করে থাকে । ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন। তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশসুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে হাইকোর্টের আদেশনামায় উল্লেখ ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষন চাপে পড়ে যান লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনিই মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি 'ঘরপোড়া গরু'র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে 'অচ্ছুৎ' অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃনমূল বিধায়ক কে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনীতিমহলে। আদালত সুত্রে জানা প্রকাশ, ২০১০ সালে লাভপুরে একই পরিবারে ৩ ভাই খুন হয়েছিলেন।নিহতেরা হল ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ। এই খুনে অভিযোগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় থানায় ।মামলার প্রথম পয্যায়ে পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন কে তাদের বিরুদ্ধে উঠা খুনের অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন। সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় নিহতের পরিবার। এরপর, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় - ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশসুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের 'সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প 'আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবার কে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের লাভপুর হত্যা মামলার চার্জশিট জমা পড়ল। আর সেই চার্জশিটে স্বাভাবিক ভাবেই নাম উঠে এল বিজেপি নেতা মণিরুল ইসলামের নাম। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এল দ্বিতীয় পয্যায়ের চার্জশিটে । প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর নাম উঠে এল । খুনের প্ররোচনার দায়ে তাঁর নাম জড়িয়েছে । চলতি ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে ২০১০ সালের ঘটনার পুনর্তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয় জেলাপুলিশ। গত রবিবার চার্জশিট গৃহীত হয় আদালতের তরফে ।জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন - "হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিট গৃহীত হয়েছে ।" বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে ২০১০ সালের ৪ জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলে সেসময়কার দাপুটে নেতা মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । মণিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় নিহতের পরিবারের পক্ষে । ঘটনার পরে পরে আইনের হাত থেকে রক্ষা পেতে মনিরুল ইসলাম সদবলে তৃণমূলে যোগ দান করেন বলে অভিযোগ । পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ীও হন । ২০১১ সালে সাঁইথিয়ার একটি জনসভা থেকে "তিনজনকে পা দিয়ে পিষে মেরে দিয়েছি" বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিরুল ইসলাম। ২০১৫ সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে ৩০ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । সেই চার্জশিটে নাম বাদ যায় এই মণিরুলের, সাথে আরও ২২ জনের। তখন অবশ্য শাসকদলের বিধায়ক ছিলেন তিনি। নিহতের পরিবার তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন । এই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণিরুল। দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দান করেন মণিরুল।সেখানেও তাঁকে নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ে। তাই তাঁকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে বীরভূম পুলিশ ।গত ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । ২০১০ সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুল রায় । প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে স্থান পেয়েছে মুকুল রায়ের নাম।তবে মুকুল বাবু সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন - "বিগত বাম আমলে শেষের দিকে সিপিএম যেমন পুলিশ নির্ভর ছিল, এখন তৃনমূল সেই ভূমিকাটা নিয়েছে। এহেন মিথ্যা মামলার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আদালতেই সুবিচার পাব"। বীরভূমের এই খুনের মামলায় এফআইআর কপিতে নাম ছিল না মুকুল রায়ের। এমনকি চার্জশিট দাখিলেও ছিলনা মুকুল রায়ের না।সাপ্লিমেন্ট চার্জশিটে খুনের প্ররোচিত করার (৩০২) মত জামিন অযোগ্য ধারা আনা হয়। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জেলা আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু হয়েছে বলে প্রকাশ । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টে মঙ্গলবার দুপুরে মুকুল রায়ের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ায় আরও আইনীভাবে কোনঠাসা হলেন মুকুল রায়। তবে আগাম জামিনের আবেদনটি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার জন্য হয়েছে, মামলার মেরিট হিসাবে নয়। যদিও আগাম জামিনের আবেদনকারী পুনরায় পিটিশন করতে পারে তাও জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
পার্ক স্ট্রিট মামলায় নিম্ন আদালতের কাজে হস্তক্ষেপ নয়, জানালো কলকাতা হাইকোর্ট
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে পার্ক স্ট্রিট গনধর্ষন মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় দ্রুত শুনানি চাওয়া এক পিটিশনের শুনানি চলে। সেখানে দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয় - 'নিম্ন আদালত অর্থাৎ সিটি সেশন কোর্টে যেমন বিচার প্রক্রিয়া চলছে, ঠিক তেমনিই চলবে। নিম্ন আদালতে শুনানিতে কোন অনিয়ম নেই '। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ মার্চ কলকাতা হাইকোর্ট পার্ক স্ট্রিট গনধর্ষন মামলায় নিম্ন আদালত কে তিন মাসের মধ্যে মামলা নিস্পত্তি করার অনুরোধ জানিয়েছিল। তিন মাস তো বটেই আটমাস কেটে যাওয়ায় এখনো এই মামলার নিস্পত্তি ঘটেনি। তাই অভিযুক্তদের পক্ষে দ্রুত শুনানির আবেদন চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন মামলাকারীর আইনজীবী। সোমবার দুপুরে এই পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি পার্ক স্ট্রিট গনধর্ষন মামলায় নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় কোন হস্তক্ষেপ করতে রাজী নয় বলে জানিয়ে দেন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ৯ ফেব্রুয়ারির পার্ক স্ট্রিট গনধর্ষন মামলায় প্রথম পয্যায়ে দুজনের দশ বছরের কারাবাসের রায়দান ঘটে। দ্বিতীয় পয্যায়ে বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার হয়। গনধর্ষন কান্ডে নির্যাতিতা ২০১৫ সালে ১৩ মার্চ মশাবাহিত রোগে মারা যান। ২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে ঘটে যাওয়া এক সন্ধ্যায় পার্কস্ট্রিটে একটি মারুতি ভ্যান এর মধ্যে গণধর্ষণ করা হয় এক মহিলাকে। সেই গণধর্ষণ মামলায় নিম্ন আদালতে দুজন অভিযুক্ত কে দশবছরেের সাজা দিলেও পরবর্তী পর্যায়ে আরো দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও তাদের মামলা এখনো পর্যন্ত নিম্নআদালতে ঝুলে রয়েছে। শাস্তি কবে পাবে সে বিষয়ে নিয়ে দীর্ঘ প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে।মামলার আবেদনকারির পক্ষের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানিয়েছেন - " ২০১২ সালে ৯ ফেব্রুয়ারিতে একটি মারুতি ভ্যান এর মধ্যে এক মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে দীর্ঘ শুনানির পর অভিযুক্তদের সাজা ঘোষণা করে কলকাতা নগর দায়রা আদালত। এই পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় আরো দুই অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ফেরার ছিল।২০১৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আজাহার আলী সহ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ শে নভেম্বর ২০১৬ সালে গণধর্ষণ মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট দেয় পুলিশ। ১৭ ই ডিসেম্বর ২০১৬ সালে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে শুরু হয় এই মামলার শুনানি। ২০ এপ্রিল ২০১৮ সালে পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলার দ্বিতীয় পর্বের সার্চ ফ্রেম হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। এই দুই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সংবিধানের ফৌজদারি ধারা ৩৭৬( ২) জি,১২০ বি,৫০৬,৩৪ নম্বর ধারায় মামলার শুনানি শুরু হয়।২০১৯ সালে ৩ রা মার্চ কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ৩ মাসের মধ্যে মামলার শুনানি শেষ করতে হবে। দীর্ঘ আট মাস কেটে গেলেও মামলা শুনানি দূর অস্ত এখন পর্যন্ত সাক্ষীদের বয়ান সম্পূর্ণ করে উঠতে পারেনি পুলিশ। মামলার শুনানি শেষ কবে হবে সেইটাও পরিষ্কার নয়। চলতি বছরের ২২ শে ডিসেম্বর কলকাতা নগর দায়রা আদালতের এই পাক স্টিট গণধর্ষণ মামলার বিচারক অবসর নেবেন, স্বাভাবিকভাবেই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।এই অনিশ্চয়তা কাটাতে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় অভিযুক্ত আজাহার আলী ওরফে আলী খান। আইনজীবীর মাধ্যমে দ্রুত শুনানির আবেদন চেয়ে মামলা দাখিল হয়। সোমবার দুপুরে এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি নিম্ন আদালতে এই মামলার সমস্ত কাগজপত্র দেখে জানিয়ে দেন - নিম্ন আদালতে শুনানিতে কোন অনিয়ম নেই, যেমন ভাবে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে তেমনই চলবে। মামলার বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করতে রাজী নয় তা জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
বীরভূমের তিনভাই খুনের মামলায় আজ কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি
আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে লাভপুরের খুনের মামলায় সাপ্লিমেন্ট চার্জশিটে মুকুল রায়ের নাম বাতিলের পিটিশনে শুনানি হতে পারে। গত রবিবার লাভপুরের তিন ভাই খুনে বীরভূম জেলা পুলিশের সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট দাখিলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম উঠে আসে। খুনের প্ররোচনায় ধারায় চার্জশিটটি পেশ হয়েছে। ৩০২ এর মত খুনের ধারায় চার্জশিট দাখিল বিষয়টি গুরত্ব অনুভব করেই তড়িঘড়ি অর্থাৎ সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে চার্জশিটে নাম বাতিলের পিটিশন টি করেন মুকুল রায়। মুকুল শিবিরের দাবি - "২০১০ সালে বীরভূমের লাভপুরের খুনের সময় মূল অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম তখন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন। তখন মুকুল রায় তৃণমূলের দু নাম্বার ব্যক্তি। রাজ্যসরকারে শাসক দল হিসাবে ছিল বামেরা। তৃনমূল তখন মূল প্রতিপক্ষ। তাই তৎকালীন বাম বিধায়ক কে তৃনমূল নেতা মুকুল রায়ের প্ররোচিত করার কোন ভূমিকা থাকতে পারে"? লাভপুরের খুনের মামলায় একদা তৃনমূল বিধায়ক তথা অধুনা গেরুয়া নেতা মনিরুল ইসলামের নাম চার্জশিটে আসাটা স্বাভাবিক হলেও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম আসবে তা রাজনৈতিক মহলে অপ্রত্যাশিত ছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল হইচই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুরে এলাকার খুনের এক মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন। তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশসুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষন চাপে পড়ে যান লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনি মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি 'ঘরপোড়া গরু'র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে অচ্ছুৎ অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃনমূল বিধায়ক কে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনীতিমহলে। আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে লাভপুরে একই পরিবারে ৩ ভাই খুন হয়েছিলেন।নিহতেরা হল ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ। এই খুনে অভিযোগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মামলার প্রথম পয্যায়ে পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন কে তাদের বিরুদ্ধে উঠা খুনের অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন। সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় নিহতের পরিবার। এরপর, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় - ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশসুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবার কে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের লাভপুর হত্যা মামলার চার্জশিট জমা পড়ল। আর সেই চার্জশিটে স্বাভাবিক ভাবেই নাম উঠে এল বিজেপি নেতা মণিরুল ইসলামের নাম। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এল দ্বিতীয় পয্যায়ের চার্জশিটে । প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর নাম উঠে এল । প্ররোচনার দায়ে তাঁর নাম জড়িয়েছে বীরভূম জেলা পুলিশ। চলতি ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে ২০১০ সালের ঘটনার পুনর্তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। রবিবার চার্জশিট গৃহীত হয় আদাালতের তরফে ।জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন - "হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিট গৃহীত হয়েছে ।" বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে ২০১০ সালের ৪ জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলে সেসময়কার দাপুটে নেতা মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । মণিরুল ইসলাম সহ ৫২ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । ঘটনার পরে পরে আইনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তৃণমূলে যোগ দান করেন তিনি বলে অভিযোগ । পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ীও হন । ২০১১ সালে সাঁইথিয়ার একটি জনসভা থেকে "তিনজনকে পা দিয়ে পিষে মেরে দিয়েছি" বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিরুল ইসলাম। ২০১৫ সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে ৩০ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । সেই চার্জশিটে নাম বাদ যায় এই মণিরুলের। তখন অবশ্য শাসক দলের বিধায়ক ছিলেন তিনি।
নিহতের পরিবার তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন । এই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণিরুল। দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দান করেন মণিরুল।সেখানেও তাঁকে নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ে। তাই তাঁকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে বীরভূম পুলিশ ।গত ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । ২০১০ সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুল রায় । প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে স্থান পেয়েছে মুকুল রায়ের নাম।তবে মুকুল বাবু সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন - বিগত বাম আমলে শেষের দিকে সিপিএম যেমন পুলিশ নির্ভর ছিল, এখন তৃনমূল সেই ভূমিকাটা নিয়েছে। এহেন মিথ্যা মামলার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আদালতেই সুবিচার পাব।
সোমবার, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯
রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলায় জটিলতা, পুনরায় শুনানি ৮ জানুয়ারি
সোমবার দুপুরে বিধাননগরে স্টেট এডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনালে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি চলে। কোন নির্দেশজারী না হলেও স্যাটের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় - একাধারে গত ২৬ জুলাইয়ের এই বেঞ্চের রায়ের উপর রাজ্যের পূন বিবেচনার আবেদন (আপিল) চলবে। ঠিক তেমনি স্যাটের রায় কার্যকর না করার জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননারও শুনানি চলবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ জানুয়ারি রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই স্যাটের ডিএ মামলার রায়দানে একমাসের মধ্যে রাজ্য কে পদক্ষেপ নিতে বলেছিল স্যাটের এই বেঞ্চ। তা কার্যকর করেনি রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে মামলা করে মামলাকারী রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন।২০১১ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা থেকে বঞ্চিত এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। রাজ্যে পালাবদল হলেও সেই বঞ্চনা যেন দিন কে দিন বেড়েই চলছিল। ২০১৭ সালে রাজ্য সরকারের কর্মী সংগঠনের তরফে ডিএ নিয়ে মামলা দাখিল হয়। স্টেট এডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনাল আদালত থেকে কলকাতা হাইকোর্ট, আবার কলকাতা হাইকোর্ট থেকে স্টেট এডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনাল আদালত। এইসবের মাঝেই এগারো মাসের শুনানির পর গত ২৬ জুলাই বিধাননগরে অবস্থিত স্যাট ( স্টেট এডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনাল আদালত) ডিএ মামলার নিস্পত্তি ঘটেছিল। সেই রায়ে পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল - কেন্দ্রীয় হারে এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন। আগামী তিনমাসের মধ্যে ডিএ এর বর্ধিত অর্থ পাওয়া নিয়ে আইন করতে হবে এবং সেটা আগামী ছয়মাসের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। সেইসাথে কর্মীদের নগদে কিংবা পিএফ একাউন্টে জমা করতে হবে বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা। ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট আগে হলে সেটা আগে কার্যকর করতে হবে। রিপোর্ট না এলে আগামী একবছরের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে। সর্বভারতীয় ক্রেতা মূল্য মেনে এই নির্দেশ। এইমুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা ডিএ পান বেশি আর এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা পান কম। অর্থাৎ ফারাক রয়েছে বেতন পরিকাঠামোয়। বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা এক বছরের মধ্যেই মিটিয়ে দিতে বলেছিলেন স্যাটের বিচারবিষয়ক বিচারক রঞ্জীত বাগ এবং প্রশাসনিক বিষয়ক বিচারক সুবেশ কুমার দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও স্যাটের রায় ঘোষণা পরবর্তী মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন - সব দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি এই রাজ্যের বিভিন্ন পরিষেবামূলক কর বৃদ্ধি না করার সাথে ডিএ এর বর্ধিত অর্থ না বাড়ানোর যুক্তি দেখিয়েছেন। রাজ্যের পক্ষে সরকারি আইনজীবীদের মধ্যে বিশ্বপ্রিয় রায় বলেন - "সরকারের বকেয়া মহার্ঘভাতা দেওয়া সদিচ্ছা আছে, তবে অর্থাভাবে সবটা দেওয়া সম্ভব নয় "। উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল অবধি বিগত বাম সরকার রাজ্য সরকারের কর্মীদের মহার্ঘ্য ভাতা মুদ্রাস্ফীতি হারে সামঞ্জস্য রেখে বাড়িয়ে ছিল। এর পরে তৃণমূল জমানায় রাজ্য সরকারের কর্মীদের মহার্ঘ্য ভাতা কেন্দ্রীয় হারে বাড়েনি তবে দিল্লী - চেন্নাইতে কর্মরত সরকারি কর্মীদের ডিএ কেন্দ্রীয় অনুপাতে বাড়ছিল। একাধারে সর্বভারতীয় ক্রেতা মূল্য মেনে সরকারি কর্মীদের বেতনের মহার্ঘ্য ভাতা যেমন বাড়েনি, ঠিক তেমনি দিল্লি - চেন্নাইতে কর্মরত সরকারি কর্মীদের বেতন পরিকাঠামোয় এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন বৈষম্য কেন? কেননা রাজ্য সরকার তো একটায় উভয় সরকারি কর্মীদের। কংগ্রেস প্রভাবিত রাজ্য সরকারের কর্মী সংগঠনের তরফে ডিএ নিয়ে মামলা দাখিল করেন মলয় মুখোপাধ্যায়। মামলাকারীর আইনজীবী হিসাবে অন্যতম আইনজীবী রয়েছেন সর্দার আমজাদ আলী। স্যাটে মামলা গ্রহণের প্রথম পর্যায়ে জানিয়ে দেওয়া হয় - কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা রাজ্যের সরকারি কর্মীদের অধিকার নয়, রাজ্যের দয়ার দান হল মহার্ঘভাতা। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যান মামলাকারীরা। তখন ডিভিশন বেঞ্চ জানায় - বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা পাওয়া রাজ্য সরকারের কর্মীদের আইনসিদ্ধ অধিকার। তাই পুনরায় বিবেচনার জন্য স্টেট এডমিনিস্ট্রেট ট্রাইবুনাল আদালতে মূল মামলাটি পাঠায়। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন আদেশনামার বিরুদ্ধে রাজ্যের পক্ষে সরকারি আইনজীবীরা স্থগিতাদেশ চাইলে তা খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গত ২৬ জুলাই স্যাট জানিয়েছিল - কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা পাবেন এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। আগামী এক বছরের মধ্যেই মিটিয়ে দিতে হবে।তবে এর আগে ষষ্ঠ পে কমিশন লাগু হলে সেটায় গ্রাহ্য হবে। যদি পে কমিশন লাগু না হয় তাহলে প্রথম তিনমাসের মধ্যে ডিএ নিয়ে আইন গঠন,পরের তিন মাসে তা কার্যকর করা। বকেয়া মহার্ঘ্যভাতাটি নগদে কিংবা পিএফ একাউন্টে জমা করতে হবে। মামলায় আবেদনকারীর দের বক্তব্য - "অল ইন্ডিয়া কনজুমার প্রাইস ইন্ডেক্স মেনে স্যাটের এই নির্দেশজারী হয়েছিল । রাজ্য সরকার তাদের একই কর্মীদের দু ধরনের বেতন বৈষম্য রেখেছে। যারা ভিন রাজ্যে কর্মরত তাদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা আর এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য নেই কোন মহার্ঘভাতা, এটা তো বেআইনি। " । উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অধীনে থাকা কর্মীদের জন্য বছরে দুবার মহার্ঘভাতা দেয়। এইমুমুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা বেশি পান মহার্ঘভাতা। সেখানে এই রাজ্যের সরকারি কর্মীরা পান কম। বেতন পরিকাঠামোয় তা কম। এখন দেখার রাজ্য সরকার স্যাটের নির্দেশ অনুযায়ী একবছরের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা দেয় কিনা। নাকি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে যায়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্যের তরফে স্যাটের ডিএ মামলার রায় আপিল করার আবেদন জমা পড়েছিল। তা আদালত গ্রহণ করে থাকে। আবার তিনমাসের মধ্যে এই রায় কার্যকর না করার জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলাও গ্রহণ করা হয়। আগামী ৮ জানুয়ারি এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
লাভপুরে তিনভাই খুনে সাপ্লিমেন্ট চার্জশিট দাখিলে এল মুকুল রায়ের নাম
লাভপুরের খুনের মামলায় একদা তৃনমূল বিধায়ক তথা অধুনা গেরুয়া নেতা মনিরুল ইসলামের নাম চার্জশিটে আসাটা স্বাভাবিক হলেও বিজেপর কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের নাম আসবে তা অপ্রত্যাশিত ছিল। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে হইচই। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুরে এলাকার খুনের এক মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন। তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশসুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষন চাপে পড়ে যান লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনি মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি 'ঘরপোড়া গরু'র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে অচ্ছুৎ অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃনমূল বিধায়ক কে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনীতিমহলে। আদালত সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে লাভপুরে ৩ জন খুন হয়েছিলেন।নিহতেরা হল ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ। এই খুনে অভিযোগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।মামলার প্রথম পয্যায়ে পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জন কে তাদের বিরুদ্ধে উঠা খুনের অভিযোগ থেকে নিস্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপোর্টে অসন্তুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন। সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় নিহতের পরিবার। এরপর, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় - ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশসুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবার কে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের লাভপুর হত্যা মামলার চার্জশিট জমা পড়ল। আর সেই চার্জশিটে স্বাভাবিক ভাবেই নাম উঠে এল বিজেপি নেতা মণিরুল ইসলামের নাম। এছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নাম উঠে এল দ্বিতীয় পয্যায়ের চার্জশিটে । প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় এর নাম উঠে এল । প্ররোচনার দায়ে তাঁর নাম জড়িয়েছে বীরভূম জেলা পুলিশ। চলতি ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে ২০১০ সালের ঘটনার পুনর্তদন্ত করে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। আজ সেই চার্জশিট গৃহীত হয় আদাালতের তরফে ।জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন - "হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সেই চার্জশিট গৃহীত হয়েছে ।" বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে ২০১০ সালের ৪ জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলে সেসময়কার দাপুটে নেতা মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । মণিরুল ইসলাম সহ ৫৫ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় । ঘটনার পরে পরে আইনের হাত থেকে রক্ষা পেতে তৃণমূলে যোগ দান করেন তিনি বলে অভিযোগ । পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ীও হন । ২০১১ সালে সাঁইথিয়ার একটি জনসভা থেকে "তিনজনকে পা দিয়ে পিষে মেরে দিয়েছি" বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মণিরুল ইসলাম। ২০১৫ সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে ৩০ জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । সেই চার্জশিটে নাম বাদ যায় এই মণিরুলের। তখন অবশ্য শাসক দলের বিধায়ক ছিলেন তিনি।
নিহতের পরিবার তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন । এই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণিরুল। দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দান করেন মণিরুল।সেখানেও তাঁকে নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়ে। তাই তাঁকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ফের তদন্ত শুরু করে বীরভূম পুলিশ ।গত ৪ ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গিয়েছে, এই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । ২০১০ সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুল রায় । প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে স্থান পেয়েছে মুকুল রায়ের নাম।তবে মুকুল বাবু সংবাদমাধ্যম কে জানিয়েছেন - রাজ্য সরকারের এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে খুব তাড়াতাড়ি কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হবেন।
মাথায় হেলমেট থাকলে মিলবে এক কেজি পেঁয়াজ
সানি প্রসাদ
হেলমেট পড়লেই হাতে এক কেজি পেঁয়াজ। অগ্নিমূল্যের বাজারে মহার্ঘ পেঁয়াজ।
ট্রাফিক নিয়ম মেনে হেলমেট পড়ে গেলেই ১ কেজি পেঁয়াজ উপহার বাইক চালকদের। রবিবাসরীয় সকালে পথ সচেতনতার অভিনব উদ্যোগ পূর্ব বর্ধমানের মেমারীতে।এদিন মেমারির পাল্লা পল্লিমঙ্গল সমিতি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাল্লা রোডে হেলমেট পড়ে যাওয়া বাইক চালকদের ১ কেজি করে পেঁয়াজ উপহার দেয়। এই দুর্মূল্যে বাজারে বাইক নিয়ে হেলমেট পড়ে রাস্তায় বেড়িয়ে সচেতনতার বিনিময়ে পেঁয়াজ পেয়ে খুশি বাইক চালকরাও। সেব ড্রাইভ সেভ লাইফ নিয়ে সরকারি বা বেসরকারী ভাবে এত প্রচার।তবু এদিন দুর্ভাগ্যের বিষয় মাত্র ৩২ জন হেলমেট পড়ে বাইক আরোহী মহার্ঘ পেঁয়াজ উপহার পান।ওই রাস্তায় দু'শোর উপরে বাইক চালক বিনা হেলমেট গিয়ে এদিন বড় আফসোস করছেন। উদ্যোক্তা রা বলেন হেলমেট ছাড়া রাস্তায় বেড়িয়ে আফশোসে কপাল চাপড়াচ্ছেন। পিয়াঁজ না পেয়ে কপাল চাপড়াচ্ছেন বটে কিন্তু হেলমেট না পড়লে আপনার জীবনের জন্য আপনার পরিবারকে কপাল চাপড়াতে হবে। তাই পেঁয়াজের জন্য নয়, নিজের জীবনের গ্যারেন্টির জন্য হেলমেটটা দয়া করে পড়ুন। এই রকম পথ সচেতনায় পেঁয়াজ বিলির সারপ্রাইস ইভেন্টে দুর্মূল্যের বাজারে বিনাপয়সায় পেঁয়াজ পেতে পথ নিরাপত্তা মেনে হেলমেট পড়ে বেড়ুলে ক্ষতি কি ! পিয়াঁজের সঙ্গে উপরি পাওনা নিজের জীবনের সুরক্ষার গ্যারান্টিও।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
OLD POSTED
আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER
-
বাকুঁড়ার কোতলপুর ব্লক তৃনমূল কমিটির পরিচালনায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদসভা হয়।উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শ্যামল সাতঁরা, সাংসদ সৌমিত্র খান, জেলা স...