রবিবার, আগস্ট ২৫, ২০১৯

দুই বাংলা কে সম্মান জানালো জিরো পয়েন্ট পত্রিকার নজরুল উৎসব

সেখ সামসুদ্দিনঃ জিরো পয়েন্ট নজরুল উৎসব ২০১৯  উদযাপিত হয় মেমারি ১ বিডিও অডিটোরিয়াম হলে। এখানে নজরুল ইসলামের ও জিরো পয়েন্টের প্রয়াত সম্পাদক সেখ আনসার আলির ছবিতে মাল্যদান করেন নজরুল ইসলামের ভাইপো কাজী রেজাউল করিম। এদিন নজরুল অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ প্রদান করা হয় বাংলাদেশ ঢাকার নজরুল গবেষক ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ডঃ তপন কুমার বাগচী পশ্চিম বর্ধমানের চুরুলিয়ার কবির ভ্রাতুষ্পৌত্রী সোনালী কাজীকে। জিরো পয়েন্ট অ্যাওয়ার্ড প্রাপকরা হলেন হুগলীর সিঙ্গুরের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষক ও জনকল্লোল পত্রিকার সম্পাদক দিলীপ সাঁতরা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডাঃ অভয় সামন্ত, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও নাট্যকার অমিয় মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী বৈদ্যনাথ রায়, রাণীগঞ্জের বিশিষ্ট সাহিত্যিক, সমালোচক, বাচিকশিল্পী অমিতাভ দত্ত, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী মনোময় ঘোষ, বোলপুরের বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও শিক্ষক গোলাম মর্তুজা, মেমারির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা টিম আঁচল এবং আনসার অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, সংগঠক ও ম্যাসেঞ্জার পত্রিকার পত্রিকার সম্পাদক বৈদ্যনাথ কোঙার। এছাড়াও জিরো পয়েন্ট শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হয় রসুলপুরের কনিকা মুদি ও বড়শুলের অরিন্দম মান্ডিকে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিডিও বিপুল কুমার মন্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বসন্ত রুইদাস, সহ সভাপতি সেখ মোয়াজ্জেম, সদস্য মধুসূদন ভট্টাচার্য, বিজ্ঞানী মনোময় ঘোষ, পুর কাউন্সিলার বিদ্যুৎ দে, কাজী রেজাউল করিম, সোনালী কাজী, আন্জু মানোয়ারা আনসারী, প্রমুখ। প্রয়াত আনসার আলীর স্ত্রী আজ জিরো পয়েন্টের দায়িত্বভার তুলে দেন একমাত্র পুত্র আনোয়ার আলী আনসারীর হাতে। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন শিক্ষক কমলেশ মন্ডল, পুত্রবধূ ব্রততী আলী ঘোষ ও সন্দীপ রায়।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচের মিডিয়া নিয়ে কলকাতা প্রেসক্লাবে সেমিনার


মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

শনিবার দুপুর কলকাতা প্রেসক্লাবে 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়ার্চ' এর পরিচালনায় 'গণতন্ত্রে মিডিয়ার ভূমিকা কি হওয়া উচিত' শীর্ষক আলোচনা চলে। এই আলোচনায় প্রাক্তন চিফ জাস্টিস, প্রাক্তন পুলিশ কর্তা, থেকে অধ্যাপক, মানবাধিকার কর্মী,   সমাজসেবী সহ বাংলা সংবাদমাধ্যমে একঝাঁক বর্ষীয়ান সাংবাদিক ছিলেন। ভারতীয় সংবিধানে গণতন্ত্রের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্কের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে। এই আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা মুম্বাই হাইকোর্টের প্রাক্তন চিফ জাস্টিস চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়, রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত, অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক সত্যব্রত চৌধুরী, বর্ষীয়ান সাংবাদিক হিসাবে স্নেহাশিস সূর, রজত রায়, সুদীপ্ত সেনগুপ্ত প্রমুখ ছিলেন। আলোচনা সভার মূল উদ্যোক্তা তথা আয়োজক সংগঠনের 'স্ট্রেট কো অডিনেটর' উজ্বয়নী হালিম সভা সঞ্চালনায় সাংবাদিক স্নেহাশিস সূরের পাশাপাশি ছিলেন।

শনিবার দুপুরে কলকাতা প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভা শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের  প্রাক্তন বিচারপতি তথা মুম্বাই হাইকোর্টের চিফ জাস্টিস চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের উদ্বোধনী বক্তব্য পেশের মাধ্যমে। যিনি এই সংগঠনের অর্থাৎ 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়ার্চ' এর সভাপতি পদে আসীন। তিনি বলেন -" বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থী সম্পকে ঠিকঠাক অবগত করানোর দায়িত্ব মিডিয়ার। প্রার্থীর সম্পত্তির খতিয়ান, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত কিনা তা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে হবে সাংবাদিকদের। তাহলে জনমানসে সেই প্রার্থী কতটা উপযুক্ত তা বোঝা যাবে । সেইসাথে ভোটাররা ইভিএম না ব্যালটে ভোট চাইছেন তার জনমত খতিয়ে দেখা উচিত মিডিয়ার "।  এরপর বর্ষীয়ান সাংবাদিক রজত রায় তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে বক্তব্য তুলে বলেন - " দেশে গণতন্ত্রে এক সংকটময় পরিস্থিতি চলছে। সেটা কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে। সংবিধানের অধিকার প্রাপ্ত স্বতন্ত্র সংস্থাগুলি আজ আজ্ঞাবহ রুপে ব্যবহার হচ্ছে"।  এই প্রসঙ্গে তিনি গত লোকসভা নির্বাচনে বারাণসি কেন্দ্রের পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির উদাহরণ টেনেছেন। যেদিন ভোট চলছে সেদিন প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার নরেন্দ্র মোদী কেদারনাথের মন্দিরে ধ্যান করছেন!  যা নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী বেআইনী।বিরোধী দলের নেতাদের অবশ্য সর্তকীকরণ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তবে নরেন্দ্র মোদির বেলায় কোন কিছুই নয়। রজত বাবু লোকসভা ভোটের আগে 'নমো' টিভির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। লাইসেন্স বিহীন চ্যানেল কিভাবে ভোটের প্রচারে ব্যবহার হল। তা খতিয়ে কেন দেখলো না কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন?  এই প্রশ্ন তুলবার পাশাপাশি সংসদে সাংসদদের খাবারে বিপুল ভর্তুকি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির অর্থ না নেওয়ার জন্য আর্থিকভাবে স্বচ্ছলদের কাছে আবেদন করছেন প্রধানমন্ত্রী, অথচ কম পয়সায় সংসদে বহুমূল্যের খাবারদাবার খাচ্ছেন সাংসদরা।এই নিয়ে কটাক্ষ উঠে আসে এই আলোচনায়।  গনতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ বিচারবিভাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সাংবাদিক রজত রায়। তিনি বলেন - জম্মু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর কাশ্মিরীদের বন্দিদশা শুরু হয়েছে। সেখানে এই ধারা বিলোপে আইনী অবস্থানের জন্য পিটিশন দাখিল হলেও বিচারপতিরা পিটিশন শোনা কেন জরুরি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এই প্রসঙ্গে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের  প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায় বিচারপতিদেরও ভুলভ্রান্তি হয় এর পক্ষে সওয়াল করেছেন।বেশিরভাগ মিডিয়া আজ দলদাসে পরিণত হয়েছে। এইরূপ মন্তব্য উঠে আসে বিভিন্ন বক্তাদের গলায়। জরুরি অবস্থা জারীর সময় হাতেগোনা কয়েকটি মিডিয়া ছাড়া বাকিরা মাথানত করেছিল বলে বিভিন্ন দাবি শোনা যায় এই আলোচনা সভায়। বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে পরিচিত সমালোচক তথা অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন " নির্বাচনী গণতন্ত্র অপেক্ষা বৃহত্তর গণতন্ত্র প্রতিস্টা করা জরুরি। শাসকদল সর্বদা ভোট কে জিনিস কেনবার 'সামগ্রী' ভাবে। বিরোধী দল দুর্বল হলেও শাসক দলের বাড়বাড়ন্ত বেশি দেখা যায়। স্থানীয় সরকার অর্থাৎ পঞ্চায়েত / পুরভোটের আইন আগে সংস্কার জরুরি। তা নাহলে বৃহত্তর গণতন্ত্র প্রতিস্টা করা যাবেনা"। বামেদের রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পঞ্চায়েত ভোটের ৪২ নং ধারা এবং পুরভোটের ৩৬ নং ধারা কেন সংশোধন করছেনা বর্তমান সরকার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন এই অধ্যাপক। মহারাষ্ট্র হরিয়ানার মত রাজ্যে পঞ্চায়েত / পুর ভোট আইন গণতন্ত্রের পক্ষে সুখকর।কোন নিদিষ্ট আইন না থাকার জন্য বিদেশিরা পার পেয়ে যান বলে অভিযোগ তুলেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলাদেশের অভিনেতা ফিরদৌসের প্রসঙ্গ টানেন। অল ইন্ডিয়া ইলেকশন সার্ভিস চালুর দাবিতে সরব হতে দেখা যায় তাঁকে। সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্ত বলেন - "কোন দল ভোটে হেরে গেলে তখন ইভিএম খারাপ আর ব্যালট ভালো হয়। অথচ তারাই ইভিএমে একসময় জিতে এসেছে! "  পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত বাংলার সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত দুর্বল চরিত্রের বলে অভিযোগ তোলেন। এই আলোচনাসভায় জরুরি অবস্থা জারীর সময় গ্রেপ্তার হওয়া  সাংবাদিক কমল ভট্টাচার্য কে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন কেউ কেউ।এই আলোচনা সভার উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে উজ্বয়নী হালিম বলেন - " আমরা প্রতিটি নির্বাচনেই অবাধ ও নিরপেক্ষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই চালিয়ে আসছি, আমাদের এই সার্বিক জনহিতকর লড়াইতে সংবাদমাধ্যম কে বন্ধুর মত পেতে চাই "।                                                                                                                                                                                                                                                                                                 

সোমবার, আগস্ট ১৯, ২০১৯

কাটমানিতে কেনা মঙ্গলকোটের বিপুল সম্পত্তির ইডি তদন্ত দাবি

মঙ্গলকোটের নুতনহাটে এক জমি দালালের মাধ্যমে  কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি কিনে রেখেছেন শাসকদলের বেশকিছু নেতা। মঙ্গলকোটের বক্সিনগর, পদিমপুর বাইপাস, নুতনহাট, বড়বাজার প্রভৃতি এলাকায় রাস্তার ধারে ও মাঠে জমি জায়গা এমনকি কবরস্থান পরিচিত জায়গা পর্যন্ত কেনা হয়েছে বলে বিশস্ত সুত্রে প্রকাশ।  বীরভূম লাগোয়া নানুরের বাসাপাড়ায়, সিউড়ি সংলগ্ন পাথরচাপড়ী এমনকি কলকাতার নিউটাউন - রাজারহাটে ফ্লাট/ জায়গা কেনা হয়েছে বলে বিশেষ সুত্রে প্রকাশ । ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল অবধি মঙ্গলকোটের নুতনহাট সাব রেজেস্ট্রি অফিস, কাটোয়া মহকুমা সাব রেজেস্ট্রি অফিস, বর্ধমান সদর রেজেস্ট্রি অফিস, সিউড়ি সদর রেজেস্ট্রি অফিসগুলিতে সার্চিং করলে এর প্রমাণ মিলবে বলে জানা গেছে৷ সেইসাথে এইসব এলাকায় সরকারী /বেসরকারী ব্যাংকগুলিতে বিগত কয়েক বছরের আর্থিক লেনদেনের তথ্য নিলে বিপুল বে আইনি অর্থ যোগানের সুত্র মিলতে পারে,কৃষি ঋণের নামে ব্যাংক থেকে প্রচুর অর্থ তোলা হয়েছে । ওই জমি দালালের হাত ধরে সদর মঙ্গলকোট সহ অন্যান্য এলাকার শাসকদলের নেতারা বিপুল সম্পত্তি বেনামে কিনে রেখেছেন বলে অভিযোগ। এইবিধ নেতারা আবার ঝা ঝকঝকে চারচাকা গাড়ী ব্যবহার করেন,কুড়ি পঁচিশ টা মোটরসাইকেল সাথে থাকে আবার । অপরদিকে রাজ্য বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জীর অভিযোগ - "মঙ্গলকোটে যারা প্রধান /উপপ্রধান পদে রয়েছে তাদের আগে বাড়ী গাড়ী বিষয় সম্পত্তি কি ছিল?  আর এখন কি হয়েছে তা খোঁজখবর নিলেই বোঝা যাবে এরা কত কামিয়েছে দল কে সামনে রেখে"। মঙ্গলকোটে ওসি পদে একদা থাকা এক প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন - "টানা আট বছর মঙ্গলকোটে যে কয়েকজন ব্লক কমিটি এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের সম্পত্তি গুলির সুত্র দিতে পারে মঙ্গলকোটের নুতনহাটে থাকা ওই জমির দালাল। যার নামে / বেনামে বিভিন্ন সম্পত্তি কেনা হয়েছে। ব্যাংক সহ রেজেস্ট্রি অফিস এমনকি ভূমি সংস্কার দপ্তরে সুনিদিস্ট তথ্য প্রমাণ মিলতে পারে"।  এই বিষয়ে অনেকেই ইডি তদন্ত  দাবি  করেছেন । শাসক দলের  মদতপুস্ট নেতাদের আর্থিক  কেলেংকারী উদঘাটনে  ইডি তদন্তই সেরা বলে অনেকে  মনে করছেন

শনিবার, আগস্ট ০৩, ২০১৯

বেকার হোস্টেলে বসলো বঙ্গবন্ধুর নব মূর্তি


মোল্লা জসিমউদ্দিন(প্রাক্তন আবাসিক - বেকার হোস্টেল) 

পরাধীন ভারতে  এক বৃটিশ সাহেবের নামে  কলকাতার ৮ স্মিথ লেন ( তালতলা )  এলাকায় সংখ্যালঘু মূলত মুসলিম পড়ুয়াদের জন্য আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছিল। ওয়াকফ স্টেটের জায়গায় উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের ২০০ ঘর বিশিষ্ট তিনতলার হোস্টেল টি 'বাকের' সাহেবের নামাঙ্কিত হলেও এটি সর্বাধিক পরিচিত বেকার হোস্টেল হিসাবে। সেসময় ইসলামিয়া কলেজ অধুনা মৌলানা আজাদ কলেজের ছাত্রদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় থাকবার জন্য। বর্তমানে শুধুমাত্র স্নাতকস্তরের পড়ুয়াদের হোস্টেল হিসাবে রয়েছে এই হোস্টেল। আগে প্রতি রুমে একজন থাকত, এখন দুজন  অর্থাৎ চারশো জন পড়ুয়ার আবাসিক হোস্টেল এটি। বাঙ্গালী মুসলিম জগতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, আইনজীবী, পুলিশ অফিসার প্রভৃতি পেশায় যুক্তদের অধিকাংশের ছাত্রজীবন কেটেছে এই হোস্টেলে।   বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে( মৌলানা আজাদ কলেজ) পড়ুয়া থাকাকালীন ১৯৪৫ এবং ১৯৪৬ সালে বেকার হোস্টেলের তিন তলায় ২৩ এবং ২৪ নং রুমে দুবছর কাটিয়েছেন আবাসিক হিসাবে।  পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর মেয়ে তথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই এই হোস্টেলের দুটি ঘর পরিদর্শনে আসেন। যেখানে এখনও বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের  ব্যবহৃত আলমারি, চেয়ার, টেবিল রাখা আছে। সেসময় বাংলার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা  উভয়ই  বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ্য মূর্তি উন্মোচন করেন। তবে মূর্তির সাথে বঙ্গবন্ধুর চেহারার অমিল থাকার জন্য তৎকালীন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান এই মূর্তি নিয়ে বেকার ও ইলিয়ট হোস্টেলের পড়ুয়াদের নিয়ে টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলেন।কেটে গেছে অনেকগুলি বছর। 

শনিবার সকালে এই বেকার গভঃ হোস্টেলে বাংলাদেশের পল্লীমন্ত্রী তাজুল  ইসলাম, প:ব: সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান, বাংলাদেশ দুতাবাসের আধিকারিক, মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যাপকবর্গ সহ বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের নুতন আবক্ষ্য মূর্তি উদঘাটনে। এদিন তাঁরা বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার করা ঘর ঘুরে দেখেন। ছবিতে মাল্যদান করে থাকেন। তবে এবারের আবক্ষ মূর্তিটি এপারের কোন শিল্পী করেন নি। করেছেন ওপার বাংলার অর্থাৎ বাংলাদেশের বিখ্যাত  ভাস্কর শিল্পী লিটল পাল রণী । এই হোস্টেলের প্রাক্তন আবাসিক মোল্লা জসিমউদ্দিন জানান -  বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের ঘর সংলগ্ন ২০ নং ঘরে (তিনতলায়) বেশ কয়েকবছর ছাত্রজীবন কাটাতে পেরে আমরা গর্বিত।                 

ভোটগুরুর দাওয়াইতে কি দুই শহীদ দিবসে বেপাত্তা কেস্ট!

মোল্লা জসিমউদ্দিন,       

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য ভিক্তিক বৃহত্তর রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসাবে পরিচিত 'একুশে জুলাই',  সেইসাথে দক্ষিণবঙ্গের বড় সমাবেশ বলতে বোঝায় 'সাতাশে জুলাই'। দুটিই কিন্তু শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত রাজ্যবাসীর কাছে।আর এই দুটিতেই বড় ভূমিকায় দেখা যায় রাজনীতির মঞ্চে পিঞ্চ হিটার বক্তা   অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেস্ট মোড়ল কে। গত জুলাই মাসের শেষে এই দুটি মেগা রাজনৈতিক সমাবেশে দেখা মিলেনি অনুব্রতের। যদিও একুশে জুলাইয়ের দিন কয়েক আগে কলকাতার পিজি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। অর্শ সহ শ্বাসজনিত শারীরিক সমস্যা তাঁর দীর্ঘদিনের। তবে বিরোধী শিবিরের দাবি - 'আসলে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের প্রেসক্রিপশন ফলো করছেন মমতা'।  লোকসভার ভোটে রাজ্যজুড়ে অভাবনীয় বিপর্যয় নেমে এসেছে তৃনমূলের কাছে। ভোটের আগে বিয়াল্লিশের  বিয়াল্লিশ স্লোগান ফলপ্রকাশে সব অংক গুলিয়ে দেয় তৃনমূলের কাছে। এমনকি মঙ্গলকোটের ক্ষীরোগ্রামে যোগাদ্যা মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকারে অনুব্রত মন্ডল জানিয়েছিলেন - " মায়ের সাথে কথা হয়েছে,  ৪২ টি আসন আমরা পাচ্ছি তা জানিয়েছেন মা"। এইরুপ মন্তব্য রাজ্যবাসী কে অবাক করে দিয়েছিল সেসময়। তবে লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণায় বঙ্গ রাজনীতিতে আমদানি হল পেশাদার পরামর্শদাতার। যদিও তৃনমূল কংগ্রেসের তরফে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের সাথে কোন বাণিজ্যিক চুক্তি হয়নি বলে দাবি করেছে। ফলাফল ঘোষণার মাসেই অর্থাৎ জুন মাসের শেষের দিকে নবান্ন তে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ভোটগুরুর বৈঠক হয় বলে প্রকাশ। এর কিছুদিন পরেই দক্ষিণবঙ্গের আটজন গুরত্বপূর্ণ নেতা / মন্ত্রী দের কালোতালিকায় আনার পরামর্শ দেন ভোটগুরু। আর এই আটজনের মধ্যে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল অন্যতম। এইরুপ দাবি সংবাদমাধ্যমে।দলনেত্রীর কাছে ভোটগুরুর প্রেসক্রিপশন মানা সহজ ব্যাপার ছিল না। তবে আগামী বিধানসভার ভোটে  রাজনৈতিক মাটি আগেকার মত জায়গায় আনতে গেলে   অনেক কিছুই মানতে হবে তাঁকে। 

দেখা গেল একুশে জুলাইয়ের দিন কয়েক আগে অনুব্রত মন্ডল চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলেন কলকাতার পিজি হসপিটালে। তাঁর শারীরিক সুস্থতা কোনদিনেই ভালো ছিল না। বিশেষত শ্বাসজনিত বিষয়ে। তবে এমন গুরতর অসুস্থ নন যে তিন - চার কিমি দূরে কিছুক্ষণের জন্য মঞ্চে আসতে পারবেন না। যদিও হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাইরে যাওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে অনেকেই সম্প্রতি ব্রিগেডে সিপিএমের সমাবেশে অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর উদাহরণ টেনেছেন। যিনি গাড়ীতে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে  নাকে নল  দেওয়া অবস্থায় এসেছিলেন। এমনকি প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন জীবিত থাকাকালীন ব্রেণ স্টোকে প্রায় পারালাইসিস হওয়া স্বতেও হুইলচেয়ার করে সিপিএমের দলীয় সভায় উপস্থিত হয়ে উজ্জীবিত করেছেন কর্মী সমর্থকদের কে। যদিও অনুব্রত মন্ডল রাজনৈতিকভাবে সিপিএমের এই দুই নেতার সমকক্ষ নন। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে তিনি যেভাবে তৃনমূলের কাছ থেকে বড় বড় দায়িত্ব পেয়ে আসছিলেন, সেখানে কলকাতার বাইরে নেতাদের মধ্যে অনুব্রত মন্ডল অন্যতম তা বলা যায়। সমগ্র বীরভূম জেলার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের বড় অংশে দলীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে উঠে এসেছিলেন। যদিও লোকসভা  ভোটের পর দলনেত্রী বেশ কিছু জেলার ( লোকসভা আসনে)  দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন তাঁকে। পুলিশ কে বোমা মারার নিদান থেকে বিরোধী শুন্য পঞ্চায়েত ভোট করবার কারিগর অনুব্রত মন্ডল  কে সর্বদা আগলেছেন দলনেত্রী।এমনকি লোকসভা নির্বাচনের সময় অনুব্রত কে 'বাঘের বাচ্ছার মত লড়াই করার ' টোটকা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সব হিসেব পাল্টে গেছে গত ২৩ শে জুন। বিজেপি এই রাজ্যে ২ টি আসন থেকে ১৮ তে দাঁড়িয়েছে। ভোটের শতকরা হিসাবে তৃনমূলের ধারেকাছে বিজেপি চলে আসে।  এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্য রাজনীতিতে পেশাদার ভোটগুরু হিসাবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরের আবির্ভাব ঘটে। ভোটগুরুর টিম পর্যবেক্ষণ করা আভ্যন্তরীণ রিপোর্টে  আটজন নেতা মন্ত্রীদের বসিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেয়। জনমানসে এঁদের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি দলের ক্ষতির কারণ বলে দাবি উঠে বিভিন্ন স্তরে। এইসবের মাঝেই তৃনমূলের বড় সমাবেশ একুশে জুলাই চলে আসে। গতবারের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে অনুব্রত মন্ডল উন্নয়নের বার্তা দিয়েছিলেন। দক্ষিণবঙ্গ থেকে জনসমাগম ঘটানোতে অনুব্রতের জুড়ি মেলা ভার।তবে এবারে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দেখা মিললো না কেস্টর। এমনকি তাঁর জেলায় বাসাপাড়ায় সুচপুরের গনহত্যা নিয়ে সাতাশে জুলাইয়ের শহীদ দিবসেও তাঁর দেখা মিলেনি। আগে কোন নির্ধারিত রাজনৈতিক সভায় যেতে না পারলে মঞ্চের মাইকে পরিচিতর মোবাইলে 'লাইভ' বক্তব্য পেশ করতেনা। সেটাও এবার হয়নি একুশে জুলাইয়ের কলকাতার মঞ্চে কিংবা নিজের জেলার সাতাশে জুলাইয়ের বাসাপাড়ার মঞ্চে। এখান থেকেই শুরু গুঞ্জন, তাহলে কি আগামী বিধানসভার ভোটের কথা ভেবে ভোটগুরুর পরামর্শে অনুব্রত মন্ডল কে জনমানস থেকে ধীরে ধীরে সরাচ্ছেন দলনেত্রী? এই প্রশ্ন সব মহলেই।                                                                                                                                                                                                                        

রবিবার, জুলাই ২৮, ২০১৯

মঙ্গলকোটে বিপুল সম্পত্তির মালিক কারা?

আর্থিক কেলেংকারীর খবর নুতন নয় মঙ্গলকোটবাসীদের কাছে। বামজামানায় সিপিএমের কুখ্যাত নেতা ডাবলু আনসারীর বিপুল আর্থিক উথান ঘটেছিল। অনুরুপভাবে তৃনমূল আমলেও 'দ্বিতীয় ডাবলু আনসারী' খ্যাত নেতা সহ পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েকজন নেতা, প্রধান /উপপ্রধানদের অলৌকিক আর্থিক বিকাশ ঘটেছে ।       মঙ্গলকোটে কাটমানি খেয়ে কোটিপতি নেতাদের সম্পকে জানার আগে মঙ্গলকোটের রাজনৈতিক পেক্ষাপট জানা জরুরি। কেননা রাজনৈতিক পেক্ষাপটের সাথেই লুকিয়ে রয়েছে কাটমানি খাওয়ার নিত্য অভ্যাসগত আয়। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে মঙ্গলকোটে নিরঙ্কুস প্রভাব শাসক দল তৃনমূলের, বলা ভালো, অনুব্রত মন্ডল অনুগামীদের। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের পর ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে হাতেগনা কয়েকজন জনপ্রতিনিধি পাশ করে থাকে। তাও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে, পঞ্চায়েত সমিতি কিংবা জেলাপরিষদ নয়। যারা জিতেছিলেন বিরোধী হিসাবে, তারাও রাজ্যের উন্নয়নে সামিল হতে দলবদল করেন। ২০১৪ সালে লোকসভায় তৃনমূল লিড পায় ২৪ হাজারের মত। ২০১৬ সালে তৃনমূল প্রার্থী জিতেন ১২ হাজার ভোটে। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীশুন্য হয় গোটা ব্লক এলাকা তথা সংশ্লিস্ট মহকুমা।২০১৯ সালে লোকসভায় তৃনমূল লিড পায় ২৯ হাজার মত। তাহলে দেখা যাচ্ছে ২০১১ সাল থেকে এখনও অবধি অর্থ্যাৎ ৮ বছর ক্ষমতায় রয়েছে শাসক শিবির। মূলত অনুব্রত মন্ডল অনুগামী হিসাবে পরিচিতরাই গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলাপরিষদ,লোকসভা সর্বপরি সাংগঠনিক নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন। মাঝখানে ২০১৬ সালে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এখান থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম পর্যায়ে  এক বছর অনুব্রত মন্ডলের বিরোধিতায় ছিলেন৷ শত চেস্টা করেও গত পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন ফর্ম তুলতে পারেননি অনুগামীদের জন্য। ২০১৪ সালে লোকসভার সেসময়কার সাংসদ অনুপম হাজরাও সিদ্দিকুল্লাহের মত লড়াই করতে গেলে বেলাইন হয়ে যান। বর্তমানে অসিত মাল এই কেন্দ্রের সাংসদ৷ যিনি অনুব্রত মন্ডলের অত্যন্ত আস্থাভাজন। 

সাম্প্রতিক সময়ে কাটমানি ইস্যু নিয়ে বিজেপি সেভাবে রাজনৈতিক মাটি শক্ত করতে পারেনি মঙ্গলকোটে। তবে তৃনমূলের বিক্ষুব্দরা বিজেপির পতাকা ব্যবহার করে ক্ষমতাসীন নেতাদের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে বলে খবর। যেখানে এক ব্লকস্তরের দাপুটে নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী তার উপপ্রধান স্ত্রী কে নিয়ে গ্রামছাড়া হয়েছেন। অঞ্চল তৃনমূল সভাপতি খোকন সেখ লাঠির ঘায়ে জখম হয়েছেন৷ কৈচর ২ নং পঞ্চায়েত উপ প্রধানের বাড়ী ভাঙচুর হয়েছে। ঝিলু ২ নং অঞ্চলে এক গ্রাম কমিটির নেতার বাড়ীতে বোমা পড়েছে। পুলিশও এইসব ঘটনায় অতি সক্রিয়তা দেখাতে গিয়ে উলটে 'জনরোষ' বাড়িয়েছে শাসক দলের তাবিদারী করার জন্য৷ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সুত্র মারফত প্রকাশ পেয়েছে বেশ কিছু ব্লক নেতার অলৌকিক ভাবে সম্পত্তি বাড়িয়ে নেওয়ার তথ্য। অনেকেই বেনামে প্রচুর সম্পত্তি করেছেন বলে অভিযোগ৷ এমনকি অজয় নদের বালি, ব্লক /পঞ্চায়েতে টেন্ডারে কাটমানি, থানায় ফৌজদারী মামলায় দালালি করে লাখপতি এমনকি কোটিপতি হয়েছেন। বিশেষ সুত্রে দাবি, এইবিধ নেতারা আবার মঙ্গলকোটের লটারির প্রাইজ বিজেতাদের টিকিট অপেক্ষাকৃত কম দামে কিনে নেন। এলাকায় ম্যাসলম্যান খ্যাত নেতাদের কথা না শুনলে আবার মঙ্গলকোট থানার এক নামজাদা বাবু কে দিয়ে থানায় চমকানি দেন। উল্লেখ্য প্রতিদিন মঙ্গলকোটে কয়েক লক্ষ টাকার লটারির টিকিট লেনদেন হয়। সেইসাথে সাপ্তাহিক প্রাইজ হিসাবে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকার প্রাইজ পড়ে মঙ্গলকোটে ৷ এইসব টিকিট নিয়ে মঙ্গলকোটের নেতারা তাদের ব্লাকমানি কে হোয়াইট মানি করে নেয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলকোটের নুতনহাটে এক জমি দালালের মাধ্যমে  কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি কিনে রেখেছেন শাসকদলের বেশকিছু নেতা। মঙ্গলকোটের বক্সিনগর, পদিমপুর বাইপাস, নুতনহাট, বড়বাজার প্রভৃতি এলাকায় রাস্তার ধারে ও মাঠে জমি জায়গা কেনা হয়েছে বলে বিশস্ত সুত্রে প্রকাশ।  বীরভূম লাগোয়া নানুরের বাসাপাড়ায়, সিউড়ি সংলগ্ন পাথরচাপড়ী এমনকি কলকাতার নিউটাউন - রাজারহাটে ফ্লাট/ জায়গা কেনা হয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল অবধি মঙ্গলকোটের নুতনহাট সাব রেজেস্ট্রি অফিস, বর্ধমান সদর রেজেস্ট্রি অফিস, সিউড়ি সদর রেজেস্ট্রি অফিসগুলিতে সার্চিং করলে এর প্রমাণ মিলবে বলে জানা গেছে৷ সেইসাথে এইসব এলাকায় সরকারী /বেসরকারী ব্যাংকগুলিতে বিগত কয়েক বছরের আর্থিক লেনদেনের তথ্য নিলে বিপুল বে আইনি অর্থ যোগানের সুত্র মিলতেে পারে। ওই জমি দালালের হাত ধরে সদর মঙ্গলকোট সহ অন্যান্য এলাকার শাসকদলের নেতারা বিপুল সম্পত্তি বেনামে কিনে রেখেছেন বলে অভিযোগ। এইবিধ নেতারা আবার ঝা ঝকঝকে চারচাকা গাড়ী ব্যবহার করেন। স্থানীয় থানার পুলিশ আবার মিথ্যা মামলা সাজিয়ে পুলিশি নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করে দিয়েছে বলেে অভিিযো গ। কেননা ওই মামলাগুলিতে এফআইআর থেকে চার্জশিটে পুলিশের অতি সক্রিয়তা সামনে এসেছে। যদিও পুলিশের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। 
অপরদিকে রাজ্য বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জীর অভিযোগ - "মঙ্গলকোটে যারা প্রধান /উপপ্রধান পদে রয়েছে তাদের আগে বাড়ী গাড়ী বিষয় সম্পত্তি কি ছিল?  আর এখন কি হয়েছে তা খোঁজখবর নিলেই বোঝা যাবে এরা কত কামিয়েছে দল কে সামনে রেখে"। জানা গেছে, মাছের আরত চালানো, সাইকেল করে রুটি বিক্রি করা ফেরিওয়ালা, বাড়ীতে রাখালগিরি করা,  মাঠে মুনিশ খাটা ব্যক্তিরা আজ  মঙ্গলকোটের কোটিপতি নেতা। মঙ্গলকোটে ওসি পদে একদা থাকা এক প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন - "টানা আট বছর মঙ্গলকোটে যে কয়েকজন ব্লক কমিটি এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের সম্পত্তি গুলির সুত্র দিতে পারে মঙ্গলকোটের নুতনহাটে থাকা ওই জমির দালাল। যার নামে / বেনামে বিভিন্ন সম্পত্তি কেনা হয়েছে। ব্যাংক সহ রেজেস্ট্রি অফিস এমনকি ভূমি সংস্কার দপ্তরে সুনিদিস্ট তথ্য প্রমাণ মিলতে পারে"।এখন দেখার মঙ্গলকোটের কাটমানি খেয়ে কোটিপতি নেতাদের বিরুদ্ধে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব কিংবা পুলিশ প্রশাসন আদৌও কোন ব্যবস্থা নেয় কিনা?           

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER