মানস দাস, মালদা
পড়ুয়াদের পঠনপাঠন সংক্রান্ত স্বার্থরক্ষা করাই প্রাধান্য পাবে তাঁর কাছে। ছ'মাসের জন্য গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এই দাবি করলেন অধ্যাপক স্বাগত সেন। পয়লা
ডিসেম্বর শুক্রবার গৌড়বঙ্গের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নেন তিনি। এদিন সকালে গৌড় এক্সপ্রেসে মালদা টাউন স্টেশনে এসে পৌঁছান তিনি। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা । সকাল এগারোটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্বাগতবাবু।বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অচলাবস্থা কাটিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য বলে জানান তিনি । বিগত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ সংক্রান্ত যে সমস্ত সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলার লক্ষ্যে তিনি কাজ করবেন বলে জানান। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিষয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলির তদন্ত বাধাপ্রাপ্ত হবে না বলে তিনি দাবি করেন । একইসঙ্গে নতুন উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা সমূহের স্থায়ী নিয়ামক, রেজিস্ট্রার সমেত গুরুত্বপূর্ণ শূণ্য পদগুলি উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পূরণ করা হবে। বেহাল প্রশাসনিক অবস্থারও দ্রুত পরিবর্তন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। যদিও সবকিছুর ওপরে পড়ুয়াদের স্বার্থই গুরুত্ব পাবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি । এদিকে শুক্রবার উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা ও বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা দফায় দফায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ আয়োজিত একটি রক্তদান শিবিরেরও উদ্বোধন করেন নতুন উপাচার্য । সেখানে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গণিত বিভাগের প্রধান ডঃ সনাতন দাস, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ বিকাশ রায় সমেত অন্যান্যরা। তবে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের নিয়ে কোনও বৈঠক তিনি করেননি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতে থাকা লাগাতার বিক্ষোভ ও অচলাবস্থার জেরে উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন অধ্যাপক গোপাল চন্দ্র মিশ্র। এরপরই কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক স্বাগত সেনাকে গৌড়বঙ্গের অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দেয় রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর। ইতিমধ্যেই কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে স্বাগতবাবুর।
২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা বিশ্যবিদ্যালয়ের বানিজ্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন| এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এম.ফিল কো-অর্ডিনেটর ছিলেন ২০০৩-২০০৭ সাল পর্যন্ত| কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন ফিনান্স এম.বি.এ, আ্যডভান্স স্টাডিজ বিভাগে| কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরই কমার্স ও ম্যানেজমেন্ট ফ্যাকাল্টির ডিন ছিলেন ২০১৩ সাল পর্যন্ত| এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য(শিক্ষা) হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন ২০১৫ সাল অব্দি| বহু গবেষনা পত্রের পাশাপাশি অনেক গ্রন্হও আছে তাঁর | এমন একজন বিদগ্ধ শিক্ষাবিদকে উপাচার্য হিসেবে পেয়ে এখন আশায় বুক বাঁধছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।
posted from Bloggeroid