মানস দাস, মালদা
‘ব্যাংক মানুষের ভরসার জায়গা ৷ নিজের ভবিষ্যতের জন্য মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখেন ৷ আর এখন সেই ব্যাংকই লুঠ হচ্ছে ৷’ পিএনবি ইশ্যুতে আজ এই ভাষাতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি আরও বলেন, ঋণ শোধ না করতে পেরে গোটা দেশে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন ৷ আর একজনই তার থেকে বেশি টাকা ব্যাংক লুঠ করে পালিয়েছে ৷ বলা হচ্ছে গোরুর আধার কার্ড হবে ৷ আর সেই আধার কার্ডেই জনগণের টাকা লুঠ হয়ে যাচ্ছে ৷ টাকা তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন কৌশল নিয়েছে ৷ ব্যাংকে, প্রভিডেন্ড ফাণ্ডে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ এসব কৌশল তাঁর জানা আছে ৷গৌড়বঙ্গ সফরে এদিন মালদায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দানে ৪৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস ও ৪২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি ৷ ২৮টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার উপভোক্তার মধ্যে কয়েকজনের হাতে পরিষেবাও তুলে দেন তিনি ৷ তারপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য সরকারের নানাবিধ প্রকল্পের কথা উত্থাপন করেন ৷ বলেন, একাধিক সংরক্ষণের জন্য সাধারণ শ্রেণির সুযোগ কম ৷ তাই এই রাজ্যে ওবিসি তালিকায় আরও অনেক শ্রেণিকে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ ১৭ শতাংশ ওবিসি’র মধ্যে ৯৭ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ এদিন কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজ সাথী সহ নানাবিধ প্রকল্পের সুফল তিনি ব্যাখ্যা করেন ৷ জানান, কেন্দ্রীয় সরকার আশা প্রকল্প বন্ধ করে দিলেও তাঁরা এই রাজ্যে তা চালু রেখেছেন ৷ উপরন্তু আশা কর্মীদের সাম্মানিকও বাড়িয়ে ২০০০ টাকা করা হয়েছে ৷ আইসিডিএস প্রকল্পে কেন্দ্র এখন মাত্র ১০ শতাংশ টাকা দেয় ৷ প্রকল্পটি তুলে দিতেই কেন্দ্রের এই কৌশল ৷ কিন্তু তাঁরা তা হতে দেননি ৷ বরং আইসিডিএস কর্মীদের মাসিক সম্মানভাতা ৫০০ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই রাজ্যে যে কোনও চাকরির ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৬০ বছর করে দেওয়া হয়েছে ৷ কৃষিজমিতে খাজনা ও মিউটেশন ফি মকুব করে দেওয়া হয়েছে ৷ এরপরেই পিএনবি ইশ্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা লুঠের ঘটনায় সার্বিক ব্যবস্থা নিলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে ৷ তাই তারা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ৷ কিন্তু তাঁরা এই দাবি থেকে তাঁরা সরবেন না ৷ কেউ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিলে তার বিরুদ্ধে প্রতিদিন নতুন নতুন সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয় ৷ তাহলে এক্ষেত্রে কেন্দ্র চুপ কেন ৷ সবার জানা উচিত, বাংলাই লড়াই করে ৷ আগামীতেও সেই লড়াই চলবে ৷