বুধবার, মার্চ ২১, ২০১৮

'সবাইকে নিয়ে চলতে হবে' মঙ্গলকোট ওসি কে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর


মোল্লা জসিমউদ্দিন

হুগলীর গুড়াপে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে পৌনে তিনটেয় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের শিবদায় পৌছান মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে একাধারে যেমন বিভিন্ন উন্নয়নকাজের পর্যালোচনা চলে, ঠিক তেমনি জেলাপুলিশ কে নরমে - গরমে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসাথে শাসকদলের গোষ্ঠীবিবাদ অধ্যুষিত বিধায়কদের বিপক্ষ গ্রুপের নেতাদের মাথায় রেখে একসাথে উন্নয়নের বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর আজকের বৈঠকে প্রশাসনিক বিষয় হিসাবে উঠে আসে একগুচ্ছ উন্নয়ন কর্মসূচী। ৩০০০ হাজার কোটি অনুদানে দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ যাবার শর্টকাট সড়ক রুট হচ্ছে।এটি।দাসপুর - মেছেদা থেকে আরামবাগ হয়ে মঙ্গলকোটের নুতনহাটের উপর দিয়ে মোরগ্রাম যাবে।যারফলে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের ৯০ কিমি রাস্তা কমে যাচ্ছে।এছাড়াও হলদিয়া বন্দর ঘিরে বাণিজ্যপথ তৈরি হবে এই রুটে।ইতিমধ্যেই টালিগঞ্জের এক বেসরকারি সংস্থা এই রুটের সমীক্ষা শুরু করে ফেলেছে গত সপ্তাহে।কালনা থেকে ভাগীরথী নদীর উপর নদীয়া জেলার শান্তিপুর যাওয়ার ব্রিজ গড়ার প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার।এতে দুই জেলার ঘুরপথে সড়কপথ অনেকটাই কমে যাবে।ব্রিজ গড়তে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে তাড়াতাড়ি। ২৭০০ কোটি অনুদানে দক্ষিনবঙ্গের চারটি জেলায় নদনদীর বন্যা ও ভাঙ্গন প্রতিরোধে কর্মসূচী গ্রহন হয়েছে।এইবিধ প্রশাসনিক উন্নয়নকাজ পর্যালোচনার মাঝেই পূর্ব বর্ধমানের সদর বর্ধমান, মেমারি, কালনা,কাটোয়া, দাঁইহাট,গুশকরা পুর চেয়ারম্যানদের একে একে খবরাখবর নেওয়া শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তায় পথবাতি খারাপ থাকা, নোংরা আবর্জনা ঠিকমত পরিষ্কার করা নিয়ে সদর বর্ধমান পুর চেয়ারম্যান স্বরুপ দত্ত একপ্রকার ভৎসনার মুখে পড়েন।মুখ্যমন্ত্রী বলেন " গাড়ীতে যখন যান,তখন কি খেয়াল রাখেন না? ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে গাড়ীতে যান।" এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনি নিজে গাড়ীতে থাকার সময় রাস্তার দুধারে সব খেয়াল করেন।কলকাতায় কোন লাইট খারাপ চোখে  পড়লে মেয়র কে মেরামতি করতেও বলেন।প্রশাসনিক পর্ব শেষ হবার পুলিশ পর্বে মুখ্যমন্ত্রী কে যথেষ্ট কড়া ভূমিকায় দেখা যায়।পুলিশসুপার এর পাশাপাশি কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট,কাটোয়া,কালনা,মেমারি,জামালপুর  প্রভৃতি থানার আইসি / ওসিদের সাথে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি কথা বলেন।কেতুগ্রাম আইসি তাঁর এলাকায় ঘনঘন ভিজিট করতে বলেন। সেইসাথে আর কোন ঘটনা ( জাহির সেখ খুন)  না ঘটে সেই ব্যাপারে সদাসর্তক থাকতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মেমারি ওসি কে মাঝে মাঝে প্রবলেম হচ্ছে তা মিটিয়ে দিন বলে জানান তিনি।জামালপুর ওসি কে বেআইনি বালি খাদান নিয়ে খবরাখবর নেন। সেইসাথে আমরাও নজর রাখছি মন্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।  মঙ্গলকোট ওসি কে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন - সবাই কে নিয়ে চলতে হবে।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে,  স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার,  গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর বিপরীত মেরুকরণে থাকা ওসি কে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন - শাসকদলের দুপক্ষকেই যেন সমান চোখে দেখেন মঙ্গলকোট ওসি।অপরদিকে জেলা পুলিশসুপার কে পথদুর্ঘটনা সম্পকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য - প্রতিটি মানুষের জীবন খুবই দামি, পানাগড় সহ এনএইচ ২ রাস্তায় ওয়াচ টাওয়ারে নজরদারি বাড়াতে হবে।সেইসাথে ছোটখাটো গর্তগুলি দ্রুত মেরামতি করতে হবে।যদিও মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে পুলিশসুপার জানান - ২৫% দুর্ঘটনা কমেছে, প্রাণহানিও কমছে।এছাড়া এই রাস্তায় পুলিশি টহলদানকারী ভ্যান সর্বদা ঘোরে।জেলার দুই মন্ত্রীর মধ্যে স্বপন দেবনাথ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁতশ্রী প্রকল্পের অভাবনীয় সাফল্য তুলে ধরেন।পূর্বস্থলীর খালবিল সংস্কারে রাজ্যসরকারের প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান স্বপন বাবু।এরপরে মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী কে জানান "মঙ্গলকোট কে আপনি নজরে রেখেছেন এবং কাজের যে সূযোগ দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ "।মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্যেই দলীয় গোষ্ঠী বিবাদ নিরসনে যেভাবে বিধায়কদের নির্দেশ দেন, তাতে শাসকদলের বিপক্ষ গ্রুপের নেতারা খুবই খুশি।এদিন ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মন্ডল কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন - বনমালী দা ( প্রাত্তন বিধায়ক)  কে মাথায় রেখে কাজ করো।অনুরুপভাবে মেমারি বিধায়িকা নার্গিস বেগম কে ওই এলাকার প্রাত্তন বিধায়ক আবদুল্লাহ সাহেব কে সাথে নিয়ে উন্নয়নের প্রসঙ্গ টানেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ ব্লকে ব্লকে শাসকদলের মধ্যে যে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন দুপক্ষই এলাকার উন্নয়নে হাত লাগাক।আউশগ্রামে ডোকরা শিল্প, শক্তিগড়ের মিষ্টিহাব প্রভৃতি প্রকল্পের খুঁটিনাটি তথ্য নেন।সেইসাথে বর্ধমান জেলার সাংবাদিকদের জন্য দ্রুত প্রেসকর্নার গড়ার নির্দেশ জেলাপ্রশাসন কে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রশাসনিক বৈঠকে আউশগ্রাম বিধানসভার সংশ্লিষ্ট সাংসদ অনুপম হাঁজরা কে দেখা যায়নি।তাই প্রশ্ন উঠছে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা করলেন, সেখানে স্থানীয় সাংসদ (তাও দলীয়)  কে বাদ দিয়ে প্রকৃত উন্নয়ন কতটা সম্ভব?  উঠছে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন, কেননা সাংসদ তহবিলের বরাদ্দকৃত অনুদান বারবার ফিরে গেছে মুখ্যমন্ত্রীর সদ্য প্রশাসনিক সভা করা আউশগ্রাম থেকেই।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER