মোল্লা জসিমউদ্দিন
গত ২০ মার্চ পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে ( শিবদায়) প্রশাসনিক সভা করে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি জেলাপুলিশ কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সতর্ক করে যান।মূলত কেতুগ্রাম আইসি কে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছিলেন - "আর কোন ঘটনা ( জাহির সেখ খুন) যেন না ঘটে"। সেইসাথে মেমারির ওসি কে স্থানীয় সমস্যাগুলি মেটানো এবং মঙ্গলকোট ওসি কে সবাই কে নিয়ে চলতে হবে বলে নির্দেশ দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। উদ্দেশ্য একটাই, যাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কোন খুন - রাহাজানি না ঘটে।পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশ পালনে চরম ব্যর্থ হল।তাও প্রশাসনিক সভার চারদিনের মাথায়।এবার কোন দলীয় কর্মী বা সমর্থক নয়।খুন হলেন কালনা ১ ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েত প্রধান শুকুর আলী সেখ (৩৬) এবং প্রধানের ছায়াসঙ্গী বাপন সেখ (৩২)। এই খুনের অভিযোগের তীর কালনা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ সাদেক সেখের দলবলের বিরুদ্ধে।নিহতর পরিবারের তরফে কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে রবিবার দুপুরে।এদিন সন্ধে অবধি কালনা থানার পুলিশ খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জন কে আটক করেছে।এলাকাসুত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধেবেলায় সুলতানপুর পঞ্চায়েত অফিস থেকে মোটরবাইক করে বাড়ী ফিরছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান শুকুর আলী সেখ এবং বাপন সেখ।কালনার হরিশংকরপুর মোড়ে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতি চলন্ত অবস্থায় থাকা শুকুরের দিকে ইট পাথর ছোড়ে, তারপর লাঠিপেটা করে।সেইসাথে দশ থেকে বারো রাউন্ড গুলি মারে।প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে এই তাণ্ডবলীলা চলার পর স্থানীয়রা ছুটে এলে দুষ্কৃতিরা অন্ধকারের সূযোগ নিয়ে পালিয়ে যায়।গুরতর আহত অবস্থায় দুজন কে কালনা মহকুমা হাসপাতালে আনা হলে বুকে গুলিবিদ্ধ বাপন সেখের মৃত্যু ঘটে।সেইসাথে পঞ্চায়েত প্রধান শুকুর আলী সেখ কে চিকিৎসার জন্য কলকাতা নিয়ে যাবার পথে মারা পরে সে।দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তীর দলেরই নেতা তথা কালনা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ সাদেক সেখের দলবলের বিরুদ্ধে।শুকুর আলী সেখের বিপক্ষ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে সাদেক - বাদল সেখ রয়েছে।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয়ভাবে এক গোষ্ঠী নিরঙ্কুশ প্রভাব পেতে অন্য গোষ্ঠীর নেতাদের খুন করলো।পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর অসন্তোষ তৈরি হয়েছে কালনার সুলতানপুর এলাকায়।চারদিন আগে এই জেলাতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলাপুলিশের তিনজন ওসি কে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য সর্তক করে গেলেন।সেখানে এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রকাশ্যে ভরসন্ধায় কালনা শহর ঘেঁষা এলাকায় খুন হয়ে গেলেন। তাতে কালনা থানার পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে।
ছবি শোকার্ত পরিবার