শুক্রবার, এপ্রিল ২০, ২০১৮

সিদ্দিকুল্লাহের 'গুরুত্ব' অনুভাব করে অনুব্রতের নিরঙ্কুশ প্রভাব কমালো তৃনমূল



মোল্লা জসিমউদ্দিন






 বিরোধী শুন্য ভোট গড়ার এই মুহুত্যে রাজ্যের 'ফাস্ট বয়' অনুব্রত মন্ডলের দলীয় ক্ষমতার নিরঙ্কুশ প্রভাব কমাতে উদ্যোগী হলেন দলনেত্রী।গত পঞ্চায়েত ভোটে 'নির্দলদের বোমা মারুন' কান্ডে এক খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সমালোচনা থাকা সত্বেও অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেষ্ট কে চটায়নি দল।তবে অসাধারণ পারফরমেন্স (বিরোধীহীন ভোট)  থাকাতেও কেষ্টর ডানা ছাঁটলো দল।পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না পাওয়া মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে ৩৪ টি আসনে টিকিট দেবে দল যদি মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়ে।অর্থাৎ মঙ্গলকোটের অনুব্রত অনুগামীরা ওই আসন গুলি থেকে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।আর সিদ্দিকুল্লাহ তাঁর অনুগামীদের সেখানে দাঁড় করাবেন। সবটাই নির্ভর করছে আদালতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের রায়দানের উপর।প্রাথমিকভাবে ৩৪ টি আসনে মঙ্গলকোটে অনুব্রত অনুগামীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করাটা সিদ্দিকুল্লাহের নৈতিক জয় বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।তবে এই জয়েও অনুব্রত একটি মোক্ষম চাল রেখেছেন, সেটি হল সিদ্দিকুল্লাহের ১৬ জন অনুগামী নাকি নির্দল প্রার্থী হিসাবে ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেশ করে ফেলেছেন। ওই ১৬ জন একদা বিধায়ক অনুগামী হলেও,  শেষ মুহুত্যে অনুব্রত অনুগামী ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর অফিসে গিয়ে/মোবাইলে ফোন করে দলীয় আত্মসমর্পণ করে মনোনয়ন দিয়েছিলেন বলে প্রকাশ।যেখানে গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলকোটের পদিমপুরে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মনোনয়ন করানোর জন্য গেলে তাঁকে পুলিশের জেলা কর্তারা হানাহানির সম্ভাবনার কথা বলে ভাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। এমনকি যে ভাড়া বাড়িতে দীর্ঘ ২ বছর বিধায়ক পরিষেবা কেন্দ্রের অফিস করেছিলেন সিদ্দিকুল্লাহ।সেই ঘরের মালিক সেদিন মন্ত্রী কে অফিসে ঢুকতে দেননি অশান্তির অপেক্ষায়।তাই মন্ত্রী যেখানে পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসের জন্য মঙ্গলকোটে থাকতে পারেননি।সেখানে ওই ১৬ জন তথাকথিত নির্দল কিভাবে ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিধায়ক শিবির।যাইহোক মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়ালে অনুব্রত মন্ডলের ৩৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিবেন এবং সেইজায়গায় সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর অনুগামীরা মনোনয়ন জমা দেবেন বলে দলনেত্রী ঠিক করে দিয়েছেন বলে প্রকাশ।ইতিপূর্বে যারা অনুব্রত মন্ডলের রাজনৈতিক কেরিয়ারে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন,  তাদের অনেকেই জব্দ।সেই বাসাপাড়ার সোনা চৌধুরী, মঙ্গলকোটের আজাদ মুন্সি, কেতুগ্রামের জাহির সেখ প্রমুখরা অনুব্রত অনুগামীদের হাতে খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য এইসব খুনের মামলায় আদালতে অনুব্রত অনুগামীরাই অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছে।সর্বশেষ নানুরের কাজল সেখও অনুব্রতের সাথে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে রয়েছেন বলে প্রকাশ।তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মঙ্গলকোট বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে অনুব্রত কে কড়া চ্যালেঞ্জ দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।তবে অনেকেই মনে করছেনা রাজ্যে সাম্প্রতিককালে বিজেপির বাড়বাড়ন্তর জন্য সংখ্যালঘু নেতা সিদ্দিকুল্লাহ এই নৈতিক জয় পেলেন।ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি কে সামনে রেখে সিদ্দিকুল্লাহ কে চাপে রাখার কৌশলও নেওয়া হয়েছিল,কিন্তু উভয়ই তৃনমূলের এহেন রণনীতি সম্পকে ওয়াকিবহাল থাকায়, তা বাস্তবায়ন ঘটেনি।তবে টিপু সুলতানের ইমাম বরকতির গাড়ীতে লালবাতি কান্ডে তৃনমূলের হয়ে ময়দানে নামাটা ঠিক হয়নি বলে বিধায়ক নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে দিন দশ পূর্বে পঞ্চায়েতে দলীক প্রতীক থেকে বঞ্চিত সিদ্দিকুল্লাহ সরকারি গাড়ী,দেহরক্ষী ছেড়ে দেওয়া।সেইসাথে রাজভবন, দপ্তর না যাওয়া সর্বোপরি রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে গড়হাজির হয়ে যে রাজনৈতিক হুশিয়ারী শীর্ষ তৃনমূল কে দিয়েছিলেন সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতা, তাতে আগামী ২০১৯ এর লোকসভা ( বিধানসভা ভোটও হতে পারে একই সাথে)  নির্বাচনে এই রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক শাসকদলের পক্ষে নাও যেতে পারে।কেননা যেভাবে বিজেপির সাথে পাল্লা দিয়ে রামনবমী / হনুমান জয়ন্তী পালনে তৃনমূল রাস্তায় নেমেছে।তাতে সিদ্দিকুল্লাহ কে সন্তুষ্ট করা ছাড়া কোন পথ ছিলনা তৃনমূলের।তাই রাজ্যের বিরোধী শুন্য ভোট করানোর 'ফাস্ট বয়' অনুব্রত কেও দলীয় নিরঙ্কুশ প্রভাব কমিয়ে সিদ্দিকুল্লাহ কে মান্যতা দিল শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে তথাকথিত ওই মনোনয়ন পেশ করা ১৬ জন নির্দল প্রার্থী নিয়ে 'আমরা ওরা' লড়াইতে নামছে মঙ্গলকোটের শাসকদলের  যুযুধান দুপক্ষ।তাই আসনরফার সমস্যা থেকেই গেল মঙ্গলকোটের বুকে।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER