বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১২, ২০১৮

পঞ্চায়েত টিকিট নিয়ে জীবনের কঠিন দু:খ পেয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ


মোল্লা জসিমউদ্দিন

গত দুবছরে জমিয়ত নেতা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তৃনমূলে যোগদান করে যেমন মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন,  ঠিক তেমনি দলীয়ভাবে অনেক অপমান, বঞ্চনার শিকারও হয়েছেন।পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিলি নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বর কাছ থেকে 'প্রতারিত' হয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন তিনি।পরিস্থিতি এমন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি ও ওসির বিরুদ্ধে চিঠি লিখতে চলেছেন।রাজনীতিগতভাবে এমন 'আঘাত' কোনদিন কোথাও পাননি তিনি।সুত্রের খবর মন্ত্রিত্ব এবং দল ছেড়ে দিয়ে পুনরায় স্বমহিমায় জমিয়তের আন্দ্রোলনে থাকতে চান সিদ্দিকুল্লাহ।কি এমন পরিস্থিতি যে তৃনমূলে  থাকতে চাননা তিনি?  পঞ্চায়েতে দলীয় প্রতীক বিলিতে শুন্য করে রাখাটা মুখ্য কারণ হলেও গত দুবছরে মঙ্গলকোটের রাজনীতিতে যেভাবে দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তাঁকে বয়কট করার পাশাপাশি পুলিশি সন্ত্রাস চালিয়েছে।তাতে তিনি ক্ষুব্ধ।এমনকি মহিলাদের দিয়ে ঝাঁটা জুতো দেখিয়ে অশ্রাব্য গালিগালাজ খেতে হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েও।কালো পতাকা দেখানো থেকে বিধায়ক অফিসে বারবার সশস্ত্র হামলা।অনুগামীদের একের পর এক গাঁজা - অস্ত্র মামলায় ফাসিয়ে তটরস্থ করা।উল্টো দিকে ব্লক সভাপতি কে জামাই আদর করে প্রতিদিন থানায় আপ্যায়ন করা, পুলিশি রক্ষীর ব্যবস্থা স্থানীয় থানার পুলিশের দলবাজি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে।পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে শাসকদলের বিধায়ক রাজ্যের সব জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকায় থাকলেও, মঙ্গলকোটে প্রথম থেকেই ব্রাত্য করে রাখা হয় সিদ্দিকুল্লাহ কে।কখনও অরুপ বিশ্বাস ( বর্ধমান জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক),  আবার কখনও সুব্রত বকসী (রাজ্য সভাপতি) দের সাথে মঙ্গলকোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে সিদ্দিকুল্লাহের কথা চললেও কেউ 'পাকা' কথা দেননি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেও কথা চলে।চলতি সপ্তাহে তৃনমূল ভবনে শীর্ষ নেতৃত্বর উপস্থিতিতে ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী জানিয়ে দেওয়া হয় - গতবারে যারা যেখানে জিতেছিল, তারা এবারও দলীয় প্রতীক পাবে।হেরে যাওয়া ৩৮ টি আসনের মধ্যে ২০ টি বিধায়ক এবং ১৮ টিতে ব্লক সভাপতি পাবে।এটি গত ৭ এপ্রিল তৃনমূল ভবনে ফয়শালা হলেও গত ২ এপ্রিল থেকে ব্লক সভাপতির বিপুল বাহিনীর সামনে বিধায়ক অনুগামীরা মঙ্গলকোট ব্লক অফিসে ভয়ে যেতে পারেনি।এমনকি শেষপর্য্যায়ে কাটোয়া মহকুমাশাসক অফিসে গেলেও বিধায়কের অনুগামী  পঞ্চায়েত পদপ্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র তুলতে পুলিশ বাধা দেয়।বেশ কয়েকজন কে আটক করে।পুলিশের এহেন অতি সক্রিয়তার কাছে হার মানে বিধায়ক শিবির।বিধায়ক নিজ বিধানসভা কেন্দ্র মঙ্গলকোটের পদিমপুরে ৮ এপ্রিল নিজে এসে পরের দিন মনোনয়ন তুলতে যাবেন বলে আসেন।এক্ষেত্রেও মন্ত্রীর পাইলট কার, কনভয়, পুলিশি নিরাপত্তা থাকলেও, জেলা পুলিশের এক কর্তা মন্ত্রী কে জানান - ব্লক সভাপতি তার সশস্ত্র বাহিনী কে নাকি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, আপনি কলকাতা চলে যান।পক্ষান্তরে খুন হয়ে যাবার সাবধানী বাণী দেন বলে বিধায়কের অভিযোগ। রাজ্যের মন্ত্রী এত পুলিশের মাঝেও নিরাপদ নন, তাহলে একজন সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা কোথায়? মন্ত্রী অশান্তি এড়াতে কলকাতা চলে আসেন। যদিও পুলিশের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।তৃনমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে আসন ভাগাভাগির ফর্মুলা দিয়েছিল।সেই রফায় মনোনয়ন পেশ পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি বিধায়ক অনুগামীদের কে।দশ থেকে বারোজন বিধায়ক অনুগামী রয়েছেন যারা গতবারে জিতে ছিলেন।উদাহরণ হিসাবে পদিমপুরের লিপিকা সুলতানা, সদর মঙ্গলকোটের অঞ্জন মুন্সি, মাঝীগ্রামের বিকাশ চৌধুরী প্রমুখ।২০ আসনে যাদের কে প্রার্থী করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছিল, তাদের প্রত্যেক কে স্থানীয় থানার পুলিশ ও ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বাহিনী মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া এবং প্রাননাশের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ। কেউ কেউ মারও খেয়েছে।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সমস্ত বিষয়গুলি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কে চিঠি দিচ্ছেন।পরবর্তীতে সুবিচার না পেলে ইস্তফা দিতে পারেন।ওয়াকিবহালমহল মনে করছে গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃনমূলের প্রতীকে না দাঁড়িয়ে সমর্থিত  নির্দল প্রার্থী হয়ে দাড়ালে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ভালো করতেন।টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম বরকতির লালবাতি কান্ডে তৃনমূলের হয়ে লড়তে গিয়ে ধর্মীয় বিভাজনের শিকার হয়েছেন।সর্বশেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিধায়ক অনুগামীদের টিকিট না দিয়ে তৃনমূল সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে রাজনৈতিক সন্ন্যাস করে রাখার ব্যবস্থা করে দিল বলে মনে করছেন অনেকেই।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER