বৃহস্পতিবার, মে ১৭, ২০১৮

সিদ্দিকুল্লাহ কে জব্দ করতেই কি বিজেপির পথে বরকতি

মোল্লা জসিমউদ্দিন

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পূর্বাভাষ যে, টিপু সুলতান মসজিদের একদা ইমাম বরকতি সাহেব বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন।পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রস্তাবিত বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কলকাতা সফরে এহেন যোগদান নির্ধারিত ছিল।তবে অমিত শাহ না আসায়, তা ঘটেনি।যাইহোক এই হিন্দিভাষী সংখ্যালঘু নেতা বিজেপিতে ঢুকবেন, এটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।ইতিপূর্বে জমিয়ত উলেমা হিন্দের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী এই ইমামসাহেবের গাড়ীতে লালবাতি লাগানো কান্ডে প্রায়শ বলতেন " বরকতি আরএসএসের লোক"। এখন দেখার বরকতি সাহেবের বিজেপির আনুষ্ঠানিক যোগ কখন? তবে যাইহোক তিনি যে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে রাজনৈতিকভাবে জব্ধ করতে রাজনীতির মাঠে নামছেন।এটা মানছেন রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।একদা মুখ্যমন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ঠ এই ইমামসাহেব বিভিন্ন পরবের নামাজ শেষে তৃনমূল নেত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করতেন।কিছু মন্তব্য আবার সারাদেশব্যপী বিতর্ক এনে দিত।দেশের ইতিহাসে টিপু সুলতান একজন আত্মত্যাগী বৃটিশ বিরোধী রাজা,  তাই তাঁর নামাঙ্কিত মসজিদের ইমাম পদে থেকে মিডিয়ায় প্রচার পেতেন ভালোই।সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে গাড়ীতে লালবাতি লাগানো নির্দেশিকায় জেদের জন্য দুরত্ব বাড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে।অনড় বরকতি কে তৃনমূলের কলকাতা কেন্দ্রিক নেতা - মন্ত্রীরা বোঝাতে গেলেও বিফল হন তাঁরা।এর পরেই আসরে নামেন জমিয়ত উলেমা হিন্দের রাজ্যসভাপতি সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী।  মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই নাকি সিদ্দিকুল্লাহ হাজার খানেক সমর্থকদের নিয়ে টিপু সুলতান মসজিদের সামনে রণংদেহী সভা চালান।এরপরেই ইমাম পদ যায় বরকতির।সেইসাথে গাড়ীতে থাকা লালবাতিও।আর এখান থেকেই সিদ্দিকুল্লাহের সাথে শত্রুতা বাড়ে বরকতির।এখন প্রশ্ন তিনি কিভাবে জব্ধ করবেন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে?  বাংলার রাজনীতিতে তৃনমূলের অন্যতম প্রতিপক্ষ হিসাবে চলতি পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পেশে বিজেপি তাদের অস্তিত্ব দিয়েছে।সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃনমূল অপেক্ষা বিজেপির প্লাটফর্ম বহুগুণ বড়।ত্রিশভাগ সংখ্যালঘু ভোট বাংলার ভোটের রাজনীতিতে ক্ষমতাবদলের নির্ণায়ক ভুমিকা নেয়।ইতিমধ্যে হাজারের কাছে সংখ্যালঘু প্রার্থী করে বিজেপি বাংলা দখলের রণনীতি গড়ছে।এক্ষেত্রে বরকতি কে বিজেপির যেমন লাভ রয়েছে, অপরদিকে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করে সিদ্দিকুল্লাহ কে জব্ধ করার পথ সুগম হবে বরকতির।এই মুহুত্যে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তৃনমূলের রাজনীতির অন্দরে জায়গা নড়বড়ে। মন্ত্রিত্ব পেলেও পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর অনুগামী যেমন নন্দীগ্রাম - মঙ্গলকোটে তৃনমূলের প্রতীক তো দূর অস্ত, মনোনয়নের ফর্ম তুলতে পারেনি।তৃনমূল এবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেও সিদ্দিকুল্লাহ কে ব্রাত্য করে রেখেছে।এছাড়া ভোটের আগে কাটোয়ায় পঞ্চায়েতি সম্মেলনে সিদ্দিকুল্লাহের দেখা মেলেনি।বাংলায় কলকাতার দু তিনটি বিধানসভা এলাকা বরাবরই হিন্দিভাষী মুসলিম অধ্যুষিত। তবে পশ্চিম বর্ধমান সহ উত্তরবঙ্গের নানান সীমান্ত এলাকা ( বিহার - ঝাড়খণ্ড) জুড়ে হিন্দিভাষী মুসলিমদের প্রভাব বাড়ছে।তাই বরকতির মত একজন চেনাজানা ধর্মীয় নেতা কে পেলে বিজেপির সংখ্যালঘু মুখ পরিচিতি থাকবেই।আসন্ন লোকসভা ভোটে একদা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ  বরকতির বিজেপির অন্দরে কদর যে বাড়বে, সেটা অনেকেই নিশ্চিত। এক্ষেত্রে তৃনমূলের মূল রাজনীতিতে গুরুত্বহীন সিদ্দিকুল্লাহ কে জব্দ করতে সুবিধা হবে বরকতির।টিপু সুলতান মসজিদের দীর্ঘদিন ধরে ইমাম পদে থেকে যে পরিচিতি পেয়েছেন বরকতি এবং বিভিন্ন পরবে নামাজপাঠ শেষে যে বক্তব্য পেশ করতেন তৃনমূলের পক্ষে।তাতে এহেন একদা তৃনমূল ঘনিষ্ঠ ইমাম সাহেব বিজেপিতে যোগদান করলে বাংলার সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতিতে পারদ ক্রমশ বাড়বে। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও বরকতি সাহেব বিজেপিতে যাননি।তবে মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা রাজ্য জমিয়ত উলেমা হিন্দের সভাপতি সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন - তৃনমূলের ফাঁদে পড়ে গাড়ীতে লালবাতি লাগানো নিয়ে বরকতির বিরুদ্ধে সামনাসামনি আন্দ্রোলন চালানো ঠিক হয়নি।উল্লেখ্য সিদ্দিকুল্লাহ বরকতির লালবাতি নিয়ে সরব হলেও তিনি নিজেও লালবাতি লাগাতেন।পরে অবশ্য খুলে দেন লালবাতি গাড়ী থেকে।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER