মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
প্রত্যেক বছর শারদীয়ার সময় জমজমাট থাকে মঙ্গলকোটের শোলা শিল্পীদের গ্রাম বাজার বনকাপাসি। হাতের কাজের জন্য এই গ্রামের বেশ কয়েকজন রাস্ট্রপ্রতি পুরস্কারও পেয়েছেন। শুধু ভিন্ন জেলা কিংবা ভিন্ন রাজ্য নয় , প্রত্যেক বছর শারদীয়ার কাজের বরাত আসে আমেরিকা - বৃটেন প্রভৃতি দেশ থেকেও। মঙ্গলকোটের বাজার বনকাপাসি গ্রামে হাজারের বেশি মানুষ যুক্ত এই শোলা শিল্পের সাথে। রাজ্য সরকার ২০১৩ সালে প্রায় ২ কোটি অনুদানে এখানে 'শোলা হাব' গড়ে দিয়েছে। তবে সড়ক যোগাযোগের উপর শোলা বাণিজ্য চলছে মূলত। বৃটিশ আমলে গড়া কাটোয়া বর্ধমান ন্যারোগেজ গত বছরে আধুনিকরণে বড়রেলে পরিণত হলেও, ট্রেন সংখ্যা মাত্র ১ টি। তাই যাত্রী পরিবহনে বিপুল প্রত্যাশা যেমন সময়ের তালে হারিয়েছে। ঠিক তেমনি এই রেলরুটের মধ্যে থাকা শোলা শিল্প নিয়ে রেল যোগাযোগের সম্ভাবনা ক্রমশ হারিয়ে গেছে। ট্রেন সংখ্যা বাড়ালে শারদীয়ার সময় শোলা শিল্পীদের নানান কারুকাজ অল্প খরচে রেলের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় - রাজ্যে পৌছে যেত। যার বাণিজ্যিক লাভ আসতো শোলা শিল্পীদের ঘরে ঘরে। বিদ্যুৎ মালাকার নামে এক স্থানীয় শোলা শিল্পী জানান - "কাটোয়া বর্ধমান রেল নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটু বেশি, ট্রেনসংখ্যা মাত্র ১ টি থাকায় আমাদের বেশি খরচে সড়কে শোলার জিনিশপত্র পাঠাতে বা আনতে হয় "। জানা গেছে এই রেলপথের মধ্যে থাকা কাটোয়া, মঙ্গলকোট, ভাতার, সদর বর্ধমান থানা এলাকার নিত্যযাত্রীরা অবস্থান বিক্ষোভ সহ ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষর কাছে। শুধু কাটোয়া থেকে বর্ধমান ৫২ কিমি রেলপথের জন্য নয়, আহমেদপুর থেকে কাটোয়া ৫৬ কিমি রেলপথেও ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলকোটের বাজার বনকাপাসি গ্রামে শুধু শোলা শিল্প নয়, এখানকার কুইন্ট্যাল কুইন্ট্যাল ছানা প্রত্যেকদিন ভোরে বর্ধমান স্টেশন থেকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় যায়। বনকাপাসি থেকে সড়কে বর্ধমান আসতে ঘন্টা খানেক লাগে। তাই কাটোয়া থেকে বর্ধমানগামী ট্রেন বাড়লে শোলা শিল্পীরা যেমন লাভবান হবে, ঠিক তেমনি এই এলাকার কয়েকশো ঘোষ পরিবার ছানা ব্যবসায় উপকৃত হবে বলে আশা করা যায়।