মোল্লা জসিমউদ্দিন,
এবার মঙ্গলকোটের ত্রয়ী মনিষীরা সম্মান পেতে চলেছেন মঙ্গলকোটের জেলা গ্রন্থাগার মেলায়। সুফি সাধক হামিদ বাঙালি, বৈষ্ণব কবি লোচনদাস, পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকদের সম্মান জানাতে আসন্ন জেলা গ্রন্থাগার মেলায় তোরণ হবে।সুফিসাধক হামিদ বাঙালির নাম শোনেননি এমন কেউ নেই ভু ভারতে। যিনি মঙ্গলকোটের আঠারো অলির টানে সুদূর পারস্য থেকে হাজার কিমি পথ পায়ে হেঁটে এই মঙ্গলকোটে এসেছিলেন। যার সংপর্শে শাহজাদা খুরম পরবর্তীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান বাদশাও এসেছিলেন এই মঙ্গলকোটের হামিদ বাঙালির কাছে। শাহজাহান বাদশা এই সুফি সাধকের কাছে দীক্ষা ও শিক্ষাগুরু হিসাবে মানেন। মুঘল দরবারেও এই বিভিন্ন ভাষায় সুপন্ডিত আব্দুল দানেশখান্দ হামিদ ( বাঙালি) কে উপাধি দেওয়া হয়। তৎকালীন মুঘলদের বাৎসরিক আয় ৯৪ হাজার স্বর্ণমুদ্রা মঙ্গলকোটে মসজিদ সহ আবাসিক শিক্ষাপ্রতিস্টানে ব্যয় করা হয়ন।যার ভগ্নদশা এখনও জ্বলজ্বল করে মঙ্গলকোটে। আব্দুল দানেশখান্দ হামিদ বাংলা এবং বাঙালি কে ছেড়ে পারস্যে আর ফিরে যাননি। তাঁর সমাধি রয়েছে এই মঙ্গলকোটেই। হ্যা এই মহান সুফি সাধক হামিদ বাঙালির নামে তোরণ হচ্ছে মঙ্গলকোটের জেলা গ্রন্থাগার মেলায়। বহু প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ৭ দিনের গ্রন্থাগার মেলাটি হচ্ছে নুতনহাট বিএড কলেজের সামনে মাঠে। প্রায় একশোর মত স্টল থাকছে। এই নিয়ে গত রবিবার দুপুরে মঙ্গলকোট ব্লক অফিসে উচ্চপর্যায়ের প্রশাসনিক সভা হয়। সেখানে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ছাড়াও কাটোয়া মহকুমাশাসক সৌমেন পাল, মঙ্গলকোটের বিডিও মুস্তাক আহমেদ, ওসি প্রসেনজিত দত্ত প্রমুখ ছিলেন। পূর্ব বর্ধমানের ৩০ টি পাঠাগার কর্তৃপক্ষ ছিল এই বৈঠকে। জেলা গ্রন্থাগার মেলায় তিনটি তোরণ হচ্ছে। সুফি সাধক হামিদ বাঙালির পাশাপাশি ভূমিপুত্র বৈষ্ণব কবি লোচনদাস, পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের নামেও তোরণ থাকছে বলে জানান মঙ্গলকোটের নুতনহাট মিলন পাঠাগারের সম্পাদক নূর আনসারী। টানা ৭ দিনের গ্রন্থাগার মেলায় প্রতিদিনই বাংলার বিভিন্ন মনিষীদের নামে সভা মঞ্চ হবে। গতবারে মঙ্গলকোটে জেলা গ্রন্থাগার মেলা হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। এবছর তা হচ্ছে, তাতে খুশিতে টগবগ এলাকার সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা। 'কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটি'র পক্ষে জেলা গ্রন্থাগার মেলা হওয়ার জন্য এলাকার বিধায়ক কে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।