ওয়াসিম বারি,
রজত জয়ন্তী পালিত হল হাড়োয়ার গোপালপুর বালিকা বিদ্যালয়ে।স্বাধীনতাত্তর ভারতে নারীশক্তির অগ্রগতির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে মাতোয়ারা রাজ্য তথা গোটা দেশ। তারই মধ্যে গুটিগুটি পায়ে পঞ্চাশতম বর্ষে পদার্পণ করল বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া ব্লকের গোপালপুর গার্লস হাইস্কুল। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, নারীশিক্ষা উন্নয়নের বীজ বহুদিন আগেই বপন হয়েছিল প্রাচীন ঐতিহ্য বহনকারী এলাকা গোপালপুরে। গোপালপুরে ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গোপালপুর পপুলার অ্যাকাডেমিতে ছাত্র ও ছাত্রী নির্বিশেষে পড়াশুনা করত। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রের প্রভূত উন্নতি দেখে ওই এলাকার বিদ্যানুরাগীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন এই যে, ওই এলাকায় একটি শুধুমাত্র ছাত্রীদের জন্য একটি বিদ্যালয় হোক। বর্তমান ওই এলাকায় যে স্থানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত, সেই জমিটি ছিল জলপাইগুড়ি নিবাসী দুর্গাচরণ সাহা ওরফে দুখিরাম সাহার। তিনি ওই এলাকায় আসলে ওই এলাকার বিদ্যানুরগীরা তার কাছে দরবার করলে তিনি এককথায় সম্মতি দেন। তারপর ১৯৬২ সাল নাগাদ তিনি বিহারীলাল সাহার মাধ্যমে ওই জমি বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। তারপর ১৯৬৮ সালে ৩রা জানুয়ারি এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারীশিক্ষার অগ্রগতিতে আরও একধাপ এগোয় বসিরহাট মহকুমা। প্রতিষ্ঠার সময় যে বিদ্যালয় ছিল এক বিঘার, বর্তমানে তা দেড় বিঘার উপরে দাঁড়িয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৮৫০ জন ছাত্রী পঠন পাঠনের সাথে যুক্ত। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এই বিদ্যালয় কলা বিভাগে ঊত্তীর্ণ হয়েছে, সেই বিভাগে ছাত্রীরা পড়াশুনা করছে। ৫০তম বর্ষে পদার্পণ করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ডেসডিমনা মল্লিকের তত্ত্বাবধানে প্রভাত ফেরির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূত্রপাত হয় এবং তারপর নৃত্য, সঙ্গীত, নাটক সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুদিন ব্যাপী তাদের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দিবস পালন করছে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সহ ছাত্রী ও অভিভাবকরা। এই ৫০তম বর্ষে পদার্পণ করে পুরোনো স্মৃতিকে স্মরণ করে নারীশিক্ষার উন্নয়নের শপথ নিয়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী সহ ছাত্রী ও অভিভাবকরা সহ সমগ্র এলাকাবাসী।