মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বিজেপির বাড়বাড়ন্তে মুক্ত আকাশ পেল নানুরের কাজল সেখ। ২০১১ এর আগে রাজ্যে সিপিএম শাসনকালে লুকিয়েচুরিয়ে থাকতেন এই কাজল সেখ । রাজ্যে পালাবদল হলেও সেই একই ছবি দেখা যেত নানুরের মাটিতে । সূচপুরের গনহত্যা নিয়ে যে রাজনৈতিক মাইলেজ পেয়েছিলেন তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ক্ষমতায় এসে বেমালুম ভুলে যান নেত্রী। ২০০০ সালে নানুরের বাসাপাড়ায় শহীদ বেদীর সামনে 'আল্লার' নামে কসম খেয়ে মমতা বলেছিলেন - যতদিন বাঁচবো ততদিন ২৭ জুলাই শহীদ দিবস পালনে আসবো"। শহীদ পরিবারের কাজল সেখের মা কে নিজের মা বলে ডেকে ছিলেন মমতা।এমনকি কাজল সেখের ভাই সেখ শাহনওয়াজ কে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে দুবার দলীয় বিধায়ক বানান তৃনমূল নেত্রী। সেই মমতা শহীদ দিবস পালনের দিনে ২০১২ সালে বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। অথচ ২০ কিমি দূরে থাকা বাসাপাড়ায় আসার সূযোগ হয়নি তাঁর। অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেস্টর দাপটে সিপিএমের আমলের মতনই কাজল সেখ আত্মগোপন করে থাকতেন নানুরে । এরেই মাঝে শহীদ দিবস পালনে সবথেকে বড় সংগঠক সোনা চৌধুরী খুন হন দুস্কৃতিদের গুলিতে । খুন হন বাম আমলে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করা কেতুগ্রামের জাহির সেখ, মঙ্গলকোটের আজাদ মুন্সি। নিন্দুকেরা বলেন - মঙ্গলকোট - নানুর - কেতুগ্রামের রাজনৈতিক কাঁটা তুলতে বোলপুরের এক নেতা এইসব খুনের ষড়যন্ত্র ঘটিয়েছেন৷ সম্প্রতি লোকসভায় বিজেপির বাড়বাড়ন্তে মুসলিমদের কদর বেড়েছে তৃনমূলের কাছে। নানুরের কাজল সেখ অনুব্রত মন্ডলের ডাকে সাড়া দিয়ে বোলপুরে ঘরোয়া বৈঠকও সেরেছেন। যদিও গত দেড় বছর আগে থেকেই অনুব্রত মন্ডলের পাড়ায় বোলপুরে বাড়ি করার কাজ শুরু করে ছিলেন কাজল সেখ। নানুরের এক পুলিশ অফিসার এই মিডলম্যানের কাজ করেছিলেন বলে পুলিশ সুত্রে প্রকাশ। বিজেপির বাড়বাড়ন্তে মুক্ত আকাশ পেল নানুরের কাজল সেখ। কাজল সেখ এখন নানুরে প্রকাশ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলছেন। আগে নানুরের মাটিতে কাজলের প্রকাশ্য দেখা মিলতো না। এমনকি গ্রুপবাজির জন্য ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে জেতে সিপিএম। অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেস্টর পৈতৃকভিটা হচ্ছে এই নানুর। তাই এহেন বিধানসভায় তৃনমূল হারাটা পেস্টিজ ইস্যু ছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে। নানুরের রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন - কাজল সেখের জন্য তৃণমূলের এই পরাজয়। আবার গত পঞ্চায়েত ভোটে এমন পরিস্থিতি ছিল যে, থানার ওসি কে সরাসরি তৃনমূল নেত্রী ফোন করে কার কোনটা পঞ্চায়েত থাকবে তা জানিয়ে দেন! নিজস্ব সংগঠনের জন্য বাম আমলের মত তৃনমূল আমলেও আত্মগোপন করে থাকতেন নানুরের কাজল সেখ। লোকসভায় বিজেপির বাড়বাড়ন্তে মুসলিমদের কদর বেড়েছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে নানুরের কাজল সেখ কে ডেকে নেন অনুব্রত মন্ডল, তাও দলনেত্রীর নির্দেশে।তাই বলা যায়, বিজেপির বাড়বাড়ন্তে মুক্ত আকাশ পেল নানুরের কাজল সেখ।