মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
'কাটমানি' এবং 'দিদি কে বলো' কর্মসূচিতে যখন সারা রাজ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে। ঠিক সেইরকম পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোটেও পর্দাফাঁস হল আরেক দুর্নীতির। দু - এক লাখের দুর্নীতি নয় আবার, বাইশ লাখ অনুদানে বিদ্যালয়ের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন দেখা গেছে। চলতি সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন কাটোয়া মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। সাথে ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। যখন সরজমিন তদন্ত করছেন স্বয়ং মহকুমাশাসক, তখন চরম অস্বস্তিতে দেখা যায় পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীদের। 'কেন মহকুমাশাসক কে ফোন করা হল'? সেই প্রশ্নও করতে দেখা যায় সমিতির পদাধিকারীদের। কাটোয়া মহকুমাশাসক অবশ্য, এই প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার যথাযথ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সাথে ইঞ্জিনিয়ারদের ওই ইমারতিদ্রবের গুনগত মান পরীক্ষার নির্দেশ দেন। যা নিয়ে সরগরম মঙ্গলকোট। অভিযোগ উঠছে, অভিযোগকারী প্রধানশিক্ষক কে বিভিন্নভাবে শাসানো হচ্ছে। যদিও রাজ্যসরকারের 'শিক্ষকরত্ন' প্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক প্রশান্ত পাল প্রকাশ্যে কিছুই বলতে চাননি। এলাকা সুত্রে প্রকাশ, মঙ্গলকোটের পালিশগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে সম্প্রতি বাইশ লাখ অনুদানে বেশকিছু অতিরিক্ত ঘর নির্মাণের বরাত পেয়েছেন এক ঠিকেদার। অভিভাবকদের বড় অংশের দাবি, ইমারতি দ্রব গুলি অত্যন্ত নিম্নমানের। ইট থেকে সিমেন্ট। বালি থেকে পাথর - রড।সবকিছুর গুনগত মান খুবই খারাপ। তার উপর বিল্ডিংয়ের ভিত গড়তে যে পিলার গুলি করা হয়েছে। সেখানে রড খুব কম দেওয়া হয়েছে। মাঝখানে আবার গোটা ইট ভরা হয়েছে। সেইসাথে পিলারের রিং বাঁধা হয়নি। মাটির নিচে পিলারের জন্য গর্তও সেভাবে গড়া হয়নি। এইরূপ বিভিন্ন অভিযোগ পড়ুয়াদের অবিভাবকরা প্রধান শিক্ষক কে জানিয়েছিলেন। সেইমত প্রধানশিক্ষক প্রশান্ত পাল বিষয়টি কাটোয়া মহকুমাশাসক সৌমেন পালের দৃষ্টিআকর্ষণ করান।বিষয়টি জানার সাথেসাথেই বিডিও - ইঞ্জিনিয়ার - পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে হানা দেন মহকুমাশাসক। সবকিছু দেখে ইঞ্জিনিয়ার কে টেন্ডারের শর্ত গুলির সাথে ইমারতি দ্রবের আনুপাতিক হিসাব এবং গুনগত মান পরীক্ষার নির্দেশ দেন। মহকুমাশাসক জানান - "কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে, রিপোর্ট দিতে বলেছি ব্লক প্রশাসন কে "। শুধু মঙ্গলকোটের পালিশগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ঘর নির্মাণে দুর্নীতি নয়, বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ সাধারণ বিষয় মঙ্গলকোটের কাজে। মঙ্গলকোট ব্লক অফিসে নথিভুক্ত এক ঠিকেদার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে জানান -" আমাদের কে প্রকল্পের আর্থিক অনুদানের দশ থেকে পনেরো শতাংকস অর্থ দিতে হয়। তবেই কাজের বরাত মিলে। যতই সরকারি প্রকল্পে ই-টেন্টার বলা হোক না কেন, শাসকদলের নেতাদের সাথে কথা বলে কাজের 'রেট' আগাম জানিয়ে দিতে হয় "।