মোল্লা জসিমউদ্দিন,
বহু চর্চিত মহানগরের নির্মম সড়ক দুর্ঘটনা হিসাবে ইতিমধ্যেই শেক্সপিয়ার সরণির জাগুয়ার কান্ডে কুখ্যাতি মিলেছে। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার ব্যাংকশাল আদালতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে পেশ করা হয় জাগুয়ার মামলায় অভিযুক্ত রাগীব পারভেজ কে ।পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিচারক ধৃতের ৯ সেপ্টেম্বর অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই মামলায় ইতিপূর্বে ব্যাংকশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম পর্যায়ে ধৃত আরসালান পারভেজ এবং মহম্মদ হামজা কে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। পাঁচ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে, পাসপোর্ট জমা রাখার পাশাপাশি তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের কাছে সাপ্তাহিক হাজিরার শর্তগুলি রয়েছে আদেশনামায় । পরে পুলিশি তদন্তে প্রকাশ হয় জাগুয়ার গাড়ীর 'আসল' চালক আরসালান পারভেজ নয় রাগীব পারভেজ। গ্রেপ্তারের পর রাগীব পারভেজের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।প্রথম পর্যায়ে বিখ্যাত রেস্তোরাঁ আরসালান গ্রুপের মালিকের ছেলে আরসালান পারভেজ এবং মালিকের শালা মহম্মদ হামজা কে শেক্সপিয়ার সরণির পুলিশ গ্রেপ্তার করে থাকে। দুই সপ্তাহ পূর্বে কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণি এলাকায় গভীর রাতে ফুটপাতে হাঁটতে থাকা দুই বাংলাদেশী কে পিষে দেয় আরসালান গ্রুপের রেস্তোরাঁ মালিক এর ছেলে। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল আরসালান পারভেজ একাই মদ্যপ অবস্থায় এই নারকীয় সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে ধৃত আরসালান পারভেজের কোন আঘাত বিশেষত মুখমন্ডলে না থাকায় পুলিশের খটকা লাগে। এই মামলার তদন্তকারীরা ফরেন্সিক তদন্ত, মোবাইল ফোন ডিটেল পরীক্ষা করে জানতে পারেন গাড়িটির আসল চালক ছিল ধৃতের দাদা রাগীব পারভেজ। এই তথ্য উঠে আসতেই মহম্মদ হামজা তার অভিযুক্ত ভাগ্নে কে দুবাই পাঠিয়ে দেয় । অভিযুক্ত কে মদতদানের জন্য পুলিশ মহম্মদ হামজাকেও ধরে। এরপরে কলকাতার বেনিয়াপুকুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাগীব পারভেজ কে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তারপর ব্যাংকশাল আদালতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর এজলাসে তিনজন কে পেশ করা হলে, বিচারক আরসালান পারভেজ এবং মহম্মদ হামজা কে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন এবং মূল অভিযুক্ত রাগীব পারভেজ কে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন । পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার পুনরায় পেশ করা হয় রাগীব পারভেজ কে। বিচারক আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ ঘাতক গাড়ির ফরেন্সিক রিপোর্ট, দুবাইয়ের মেডিকেল রিপোর্ট সহ বেনিয়াপুকুর নার্সিংহোমের রিপোর্ট,বিভিন্ন সড়কমোড়ের সিসিটিভির ফুটেজ এমনকি ধৃতের বাড়ির সামনে সেদিনকার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে বলে প্রকাশ।