শুক্রবার, এপ্রিল ০৬, ২০১৮

সিদ্দিকুল্লাহ কে কি তৃনমূল 'নখদন্তহীন' বাঘ বানালো?

মোল্লা জসিমউদ্দিন

গত সোমবার থেকে দক্ষিনবঙ্গের ১৩ টি জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র তোলা শুরু হয়েছে।সেইসাথে এই জেলাগুলির অধিকাংশ আসনে দলীয় প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তালিকা প্রকাশ ঘিরে বেড়েছে দলীয় সংঘর্ষ।এরেই মাঝে মঙ্গলকোটের রাজনীতিতে বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতি অনুগামীদের দফায় দফায় মারপিট ঘটে চলেছে।তাও মঙ্গলকোট থানার এককিমি চৌহদ্দির মধ্যে! মূলত দলীয় প্রতীক কাদের দিকে আছে, সেই বিষয়টি নিয়ে এহেন সংঘাতময় পরিস্থিতি। ইতিমধ্যে এই বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মন্ডল সম্প্রতি দুবার মঙ্গলকোটের সভায় পরিস্কার করে দিয়ে গেছেন এই কেন্দ্রের পঞ্চায়েত নির্বাচনের যাবতীয় রাশ ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর হাতে তুলে দিয়েছেন।অর্থাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী নির্বাচন করবেন ব্লক সভাপতি।ইতিমধ্যে তারা মঙ্গলকোট ব্লক অফিস থেকে মনোনয়নপত্র তুলছেন। অন্য কেউ যাতে তুলতে না পারে সেজন্য দুপুর থেকে বিকেল অবধি ব্লক অফিস সংলগ্ন কৃষাণ মান্ডি বাজার,পদিমপুর বাইপাস এলাকাগুলিতে কয়েকশ মোটরবাইক বাহিনী রয়েছে নজরদারিতে।বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস অপেক্ষা দলীয় বিধায়ক শিবিরের লোকেদের গতিবিধির উপর একটু বেশি নজর এই বাহিনীর।গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাহ তাঁর অনুগামীদের বলে আসছেন - পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃনমূলের প্রার্থী ঠিক হবে আমার হাতেই।এহেন আশ্বাস একজন বিধায়ক তো বটেই রাজ্যের তিনটি দপ্তরের মন্ত্রীর কাছে পাওয়ায় ব্লকের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই শুরু করে দেয় বিধায়ক অনুগামীরা।একের পর এক গাঁজা - অস্ত্র সহ নানান মিথ্যা মামলায় ফেসেও বিশ্বাস রেখেছিল তারা যে, পঞ্চায়েতে এবার আমরা কর্তৃত্ব করব।শুধু সময়ের অপেক্ষা।মন্ত্রীর পাশাপাশি একজন মুসলিম ধর্মগুরু হওয়াতে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি বিশ্বাস ছিল বহুগুণ। মঙ্গলকোটের বিভিন্ন সভায় সিদ্দিকুল্লাহ বাম জমানায় সিঙ্গুর নন্দীগ্রামে একসাথে মমতার সাথে আন্দ্রোলনের পেক্ষাপটের কথা তুলে ধরতেন এবং বলতেন "আমি তৃনমূলে আসেনি, মমতা আমায় নবান্নতে ডেকে দলে এনেছে"।এই বিধ নানান কথায় উজ্জীবিত বিধায়ক শিবির এবার বলছে অন্য কথা।হাতেগোনা দু একজন বাদে অনুগামীদের বড় অংশ চাইছেন তাদের একদা প্রিয় বিধায়ক মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিক।কারণ যে পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রতীক আনবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন, তার বর্তমান কোন ভিক্তি নেই।বিপক্ষ শিবির ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র তুলে ফেলেছে।সেখানে বিধায়কের সংগ্রামে সাথী হতে গিয়ে শতাধিক কর্মী সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জেলে পচতে হচ্ছে।সেইসাথে ব্লক সভাপতির লোকেদের সামনে জরিমানা দেওয়ার পাশাপাশি মারধোর খেতে হচ্ছে।মঙ্গলকোট থানায় ডেকে পুলিশি সন্ত্রাস তো জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে।একজন মন্ত্রী হয়েও আটঘড়া মোড়ে দলের একাংশের ষড়যন্ত্রে মহিলাদের ঝাঁটা জুতো হাতে অশ্রাব গালিগালাজ শুনতে হয়েছে।সেখানে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন নীরব থেকেছে।এমনকি মুখ্যমন্ত্রী গত ২০ মার্চ মঙ্গলকোট লাগোয়া আউশগ্রামে প্রশাসনিক সভায় এসেও চুপ থেকেছেন।তাই যেখানে মন্ত্রী হয়েও সিদ্দিকুল্লাহ সাহেব 'বিচার' পাননি, সেখানে মন্ত্রীর অনুগামী হয়েও বিপদ আরও বাড়বে বলে মনে করছে বিধায়ক শিবির।তাই শেষ ভরসা হিসাবে পঞ্চায়েত টিকিট সম্বল ছিল মঙ্গলকোটের বিধায়ক অনুগামীদের।আর হাতে মাত্র পাঁচদিন মনোনয়নপত্র তুলা এবং জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে।গত মাসে চার থেকে পাঁচবার পূর্ব বর্ধমান সার্কিট হাউসে অনুগামী নেতাদের কাছ হতে ভোটে লড়বার জন্য কাগজপত্র জমাও নিয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ।বিগত সাতদিন ধরে মঙ্গলকোটের অনেক নেতা কলকাতায় বিধায়কের সাথে ঘুরছেন। কখনও সুব্রত বকসী আবার কখনও অরুপ বিশ্বাসের সাথে কথা চলছে বলে অনুগামীদের বুঝিয়েছেন তিনি।কার্যক্ষেত্রে কোন সুফল না মেলায় তারা আশাহত। তাদের আশংকা ভোট পর্ব মিটলেই পরিকল্পিত খুনের শিকার হতে হবে বিপক্ষ শিবিরের কাছে।গ্রামছাড়া, মিথ্যা পুলিশ কেস, বয়কট প্রভৃতি বিষয়গুলি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।তাই অনুগামীরা চাইছেন - সিদ্দিকুল্লাহ সাহেব ইস্তফা দিন মন্ত্রীসভা থেকে, কেননা মন্ত্রী হয়েও তিনি কোন সুবিচার আনতে পারেননি মঙ্গলকোটের বুকে।জমিয়ত উলেমা হিন্দের দক্ষ সংগঠক হিসাবে পুরানো মেজাজে ফিরুন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ।এই আশা রাখছেন অনেকেই।কেননা তারা মনে করছেন - তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জমিয়ত নেতা কে গত বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবহার করে এখন নখদন্তহীন বাঘ বানিয়ে দিয়েছে অতীতের সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে।পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রতীক না দেওয়াটাই অন্যতম উদাহরণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER