বুধবার, এপ্রিল ২৫, ২০১৮

গত বিধানসভা নির্বাচনের জবাব এই পঞ্চায়েতে হাতেনাতে পেলেন সিদ্দিকুল্লাহ


মোল্লা জসিমউদ্দিন



 চলতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে সর্বত্রই।বিরোধীদল গুলি তো বটেই শাসকদলের অনেকেই এই সন্ত্রস্ত পরিবেশের মধ্যে মনোনয়ন পেশ করতে পারেনি।সবথেকে উল্লেখ্যযোগ্য দিক হল রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর ৩৪ জন অনুগামীর মনোনয়ন মঙ্গলকোটে দিতে না পারা।যেখানে দলের সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলকোটের আসনরফায় দলীয় প্রতীক দিয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ কে, সেখানে কোন বাঁধায় মনোনয়ন পেশে ব্যর্থ বিধায়কের অনুগামীরা?  এই প্রশ্ন রাজ্যরাজনীতি মহলে ক্রমশ দানা বাঁধছে।শুধু পঞ্চায়েত ভোটে 'রাজনৈতিক সন্ন্যাস'  দেওয়া নয়।গত বিধানসভা ভোট পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনায় কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে সিদ্দিকুল্লাহ কে।নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে কোন উন্নয়নকাজ করতে পারেননি বলা যায়, যে দু একটি করেছেন সেগুলিও বন্ধ বলা যায়।এমনকি বিধায়ক তহবিলের অনুদান ফিরে যাওয়ার নজির রয়েছে এই কেন্দ্রে।সিদ্দিকুল্লাহ রাজ্যের মন্ত্রী হলেও মঙ্গলকোটে বরাবরই ব্রাত,  বয়কটও বলা যায়।বিরোধী দলের বিধায়ক হয়েও বাম নেতা শাহজাহান চৌধুরী ২০১১ থেকে ২০১৬ অবধি যে সহযোগিতা স্থানীয় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক প্রশাসন, থানার কাছে পেয়েছিলেন, তার সিকিভাগ কপালে জোটেনি সিদ্দিকুল্লাহের!  তৃনমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে কোন উন্নয়নকাজে বিধায়ক কে রাখেনি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। দলের নেতারা কালো পতাকা দেখিয়েছে, মহিলাদের দিয়ে ঝাঁটা - জুতো দেখিয়ে গালিগালাজ খাওয়ানোর ব্যবস্থা রেখেছে।এমনকি গ্রন্থাগার দপ্তরের মন্ত্রী হয়েও নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে জেলা গ্রন্থাগার মেলা করতে পারেননি তিনি।অথচ মঙ্গলকোটে জুয়া খেলা সহ অশ্লীল লেটো মেলা প্রায় সময় হয়ে থাকে।কেন এহেন আচরণ দলেরই বিধায়ক তথা রাজ্যের তিনটি দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর প্রতি?  এখানে এই কেন্দ্রের দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মন্ডলের সাথে কোন বিবাদের জন্য নয়, এটা সেই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই সিদ্দিকুল্লাহ কে নখদন্তহীন বাঘ বানাবার প্রয়াস চলছে।দলে থেকেও দলের লোক নয়, আবার মন্ত্রী হয়েও কোন ক্ষমতা নাই এর মত।শয়ে শয়ে বিধায়ক অনুগামীদের গাঁজা - অস্ত্র সহ বিভিন্ন মামলায় যখন ফাঁসানো হচ্ছে।তখন কিছু করতে পারছেন না পুলিশের এই কর্মকান্ডের প্রতি, আবার পদিমপুরে বিধায়ক অফিসে দলের বিপক্ষ শিবিরের বাহিনী যখন বোমাবাজি করে মারধোর চালিয়েছে বেশ কয়েকবার। সেখানেও বড় অসহায় সিদ্দিকুল্লাহ।এমনকি গত ৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলকোটের আটঘড়ায় দলের মহিলাদের ঝাঁটা জুতো দেখলেন।সেখানে জেলা পুলিশ প্রশাসন তো বটেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চুপচাপ। কেন এই নীরবতা সিদ্দিকুল্লাহের প্রতি?  একজন বিধায়ক হিসাবে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় যাওয়া টা কি অপরাধ?  যেখানে একজন মন্ত্রী রাজ্যের যেকোন এলাকায় যেতে পারেন! এই বিমাতৃসুলভ আচরণের অন্তরালে কি?  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃনমূলের এক দাপুটে নেতা জানান - "দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকেই আমাদের বলা হয়েছে সিদ্দিকুল্লাহ কে কোনভাবেই গুরত্ব না দিতে" কেন এই অলিখিত  নির্দেশ জানতে চাইলে তখন ওই নেতা বলেন - ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় আমাদের নেত্রী সিপিএম - কংগ্রেসের জোট অপেক্ষা সিদ্দিকুল্লাহের  ১০০ আসনে প্রার্থী দাঁড় করানো বিষয়টি নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলেন।মূলত সংখ্যালঘু ভোট কিছুটা মাইনাস হয়ে গেলে, অনেকজায়গায় বিরোধী জোট জয়লাভ করত।তাই নবান্ন তে সিদ্দিকুল্লাহ কে ডেকে দুটি আসন এবং মন্ত্রিত্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নেত্রী। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই দুটি সমঝোতা মেনে নিলেও সিদ্দিকুল্লাহের ব্লাকমেলিং অন্তরে মানতে পারেননি দলনেত্রী।তাই মঙ্গলকোট কেন্দ্রে ২০১১ এর বিধানসভা ভোটে তৃনমূল প্রার্থী অল্পভোটে হেরে গেলেও ২০১৬ তে সিদ্দিকুল্লাহ কে ভোটের টিকিট দেন মমতা।অনুব্রত মন্ডলের ঘনিষ্ঠ অপূর্ব চৌধুরী কে টিকিট না দিলেও, তার হাতে যাতে মঙ্গলকোটের যাবতীয় রাশ থাকে সেজন্য দলনেত্রীর সবুজ সংকেত বরাবরই ছিল।পুলিশ - প্রশাসন তাই প্রথম থেকেই বিধায়ক তথা মন্ত্রী কে গুরত্ব না দিয়ে 'জামাই আদরে' রাখত ২০১১ সালের পরাজিত বিধানসভা নির্বাচনের তৃনমূল প্রার্থী তথা ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী কে।পুলিশের দেওয়া সর্বক্ষণের দুজন নিরাপত্তারক্ষী,  ব্লকে আইসিডিএসের নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান,  থানার নাগরিক কমিটির সম্পাদক তারই নির্দেশন মাত্র।তৃনমূলের অন্দরে ক্ষমতালোভী হিসাবে পরিচিত সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর কদর প্রথম থেকেই লোকদেখানো ছিল।২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ১০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কর্মসূচী ২০১৮ এর পঞ্চায়েত ভোটে ৩৪ আসনে গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিট তৃনমূলের সিদ্দিকুল্লাহের প্রতি 'আই ওয়াস' করানো ছাড়া কিছুই নয়।যদি সিদ্দিকুল্লাহের প্রতি শীর্ষ নেতৃত্ব সহৃদয় থাকতো, তাহলে মঙ্গলকোটের পঞ্চায়েত আসনে দেখা যেত সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর অনুগামীদের কে 

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER