বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১১, ২০১৯

অনুব্রতের খাসতালুকে একই পদে দশ বছরে বেশি কাটাচ্ছেন এপিও

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী একই জায়গায় একই পদে কোন আধিকারিক তিন বছরের বেশি সময়কাল থাকতে পারবেন না। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের এই বিধি কার্যকর করতে অনেক আগেই সিংহভাগ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের মহকুমা বদলী করে ফেলেছে রাজ্য সরকার । দু একজন রয়ে গেছেন এখনো। ঠিক এইরকম দুই আধিকারিক দশ বছরের বেশি সময়কাল ধরে আছেন মঙ্গলকোট ব্লক প্রশাসনের মধ্যে। একজন ব্লক প্রশাসনের এপিও র‍্যাংকের আধিকারিক, অপরজন গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যনির্বাহী আধিকারিক। এই দুজন কে নিয়ে বিরোধীরা বিশেষত বিজেপির জেলা নেতৃত্ব সরব হয়েছেন। এমনকি নির্বাচন কমিশনের অনলাইন সেলে অভিযোগ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে 'বিরোধীশুন্য' হওয়া মঙ্গলকোটে আসন্ন লোকসভায় কতটা অবাধ ভোট হবে? সে নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বহু চর্চিত এই মঙ্গলকোটে ব্লক অফিসে এপিও পদমর্যাদার আধিকারিক সুশান্ত প্রামাণিক রয়েছেন দশ বছরের বেশি সময়কাল ধরে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ওই আধিকারিকের দশ বছরের বেশি সময়কালের মধ্যে দুটি করে লোকসভা,বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটপর্ব হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তিন নাম্বার পদমর্যাদা যুক্ত গুরত্বপূর্ণ এই আধিকারিক সেই বাম আমল থেকেই রয়ে গেছেন মঙ্গলকোটের বুকে । একশো দিনের প্রকল্প থেকে সদর মঙ্গলকোট এবং ঝিলু ২ নং পঞ্চায়েতে গ্রাম প্রধান হীন থাকার সময় বছর খানেক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক আধিকারিক হিসাবে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি বারবার । বিশেষত এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সেসময় কয়েক কোটি অনুদানের টেণ্ডার গুলিতে সিন্ডিকেট চালানো নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা যায় এই আধিকারিক কে ঘিরে । গোতিস্টা, কাশেমনগর, ভাল্ল্যগ্রাম প্রভৃতি এলাকায় একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল এলাকা। এমনকি গোতিস্টা পঞ্চায়েতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীদের পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা মারা নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তৎকালীন বিডিও সুশান্ত মন্ডল প্রহৃত হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীদের কাছে । জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও হয়েছিল তখন। এইবিধ গন্ডগোলে তখন ব্লক প্রশাসনের এপিও দপ্তর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসনেরই একাংশ । অনেকেই এপিও সুশান্ত প্রামাণিক কে 'খাতাকলমে' উন্নয়নের কান্ডারী হিসাবে বিদ্রুপ করে থাকেন।তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে অভিযুক্তের পক্ষে ।বিজেপির রাজ্য নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জি জানালেন - "কিভাবে একই পদে দশবছর কাটাচ্ছেন এই আধিকারিক, সেটায় আশ্চর্যের! " রহস্যময় এই বিষয় টি নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের গোচরে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। শুধু মঙ্গলকোট ব্লক অফিসের এপিও সুশান্ত প্রামাণিক নন অনুরুপভাবে মঙ্গলকোটের গোতিস্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যনির্বাহী প্রশাসনিক আধিকারিক রেশমি দত্ত রয়েছেন দশ বছরের কাছাকাছি। তাও ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও! জানা যায়, তাঁর স্বামী বিগত বাম জমানায় দাপুটে সিপিএম নেতা ছিলেন। এখনও জোনাল নেতা হিসাবে রয়েছেন। গোতিস্টা পঞ্চায়েতে কাজকর্ম নিয়ে বিশেষত টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে বরাবরই এই আধিকারিকের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে থাকে ঠিকেদারদের একাংশ। আসন্ন লোকসভায় মঙ্গলকোটের মত রাজনৈতিক উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় ব্লক প্রশাসনের দুই গুরত্বপূর্ণ আধিকারিক দশ বছরের বেশি সময়কাল ধরে থাকাটায় ভোট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে নানান প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তিন বছরের বেশি সময়কাল থাকা বিধির কার্যকারিতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন দেখা দিল মঙ্গলকোটের বুকে। এখন দেখার রাজ্য প্রশাসন এই আধিকারিকদের পদ থেকে বদলী করে কিনা তা নিয়ে।উল্লেখ্য  মঙ্গলকোট এলাকাটি অনুব্রত মন্ডলের  খাসতালুক হিসাবে পরিচিত।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER