মঙ্গলবার, এপ্রিল ০৯, ২০১৯

অজয়ের লোচনদাস সেতুতে নজরদারি না করলে অবাধ ভোট গ্রহণ কি সম্ভব ?


  মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

পূর্ব বর্ধমানের সীমান্ত লাগোয়া মঙ্গলকোটের নুতনহাট এলাকায় লোচনদাস সেতুতে নিয়মিত পুলিশি  নজরদারি চালাবার দাবি উঠলো। সিপিএম থেকে কংগ্রেস দলের স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি বিজেপিও সরব এই দাবিতে। রাজ্য বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জি জানান - "আমরা যথাযথ জায়গায় এই বিষয়টি লিখিতভাবে জানাব।"তবে স্থানীয় মঙ্গলকোট থানার পুলিশ মাঝেমধ্যে  লোচনদাস সেতুর সামনে টোলট্যাক্সের কাছে টহলদারি ভ্যান রেখে দেয়।  অভিযোগ উঠছে, বালি কিংবা পাথর বোঝাই গাড়িগুলিতে তোলাবাজি চালানো ছাড়া আর কোন কাজ নেই স্থানীয় পুলিশের। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে পুলিশের তরফে। জানা গেছে, শুধু পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট নয়, অজয় নদের সেতুর উপর লোচনদাস সেতুটি জুড়েছে বীরভূমের নানুর কে। রাজনৈতিকগত দিক দিয়ে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট এবং বীরভূমের নানুর উভয় থানা এলাকাটি অতি উত্তেজনা প্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। শুধু তাই নয় লোচনদাস সেতুর উপর বয়ে গেছে গুরত্বপূর্ণ  ৭ নং রাজ্য সড়করুট টি। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ এর যোগাযোগকারী এই লোচনদাস সেতু। প্রত্যেহ দিন দুশোর কাছাকাছি যাত্রীবাহী বাস   যাতায়াত করে থাকে। হাজারের বেশি যানবাহন চলে এই সেতুর উপর দিয়ে। বেশিরভাগই বালি / পাথর বোঝাই গাড়ি যাতায়াতে ব্যস্ত থাকে এই সেতু    । এইসব গাড়ীর একাংশে বেআইনি অস্ত্র সহ কালো টাকা নিয়মিত লেনদেন চলে বলেও দাবি কোন কোন পক্ষের। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তরে ( আইবি)  ওয়েস্ট বেঙ্গল উইংস শাখার এক আধিকারিক জানান - "আমরাও বিষয় সম্পকে অবগত আছি, মাঝেমধ্যে সিভিলে আমাদের লোক খবরাখবর নেয় "  । জানা গেছে, বে আইনি অস্ত্র, কালো টাকা সহ গাঁজা পাচার নিয়ে  অতীতে বেশ কয়েকবার এখানে বিশেষ অভিযানও চলেছে গোয়েন্দা / পুলিশের তরফে। নির্ভরযোগ্য এক সুত্র মারফত জানা যায় - এই রুটটিতে লাল / নীল বাতি জ্বালিয়ে হর্ণ মেরে রাস্তা ফাকা করে শয়ে শয়ে আম্বুলেন্স যাতায়াত করে থাকে এই লোচনদাস সেতুর উপর দিয়ে। কিছু আম্বুলেন্সে রোগী সেজে বে আইনি অস্ত্র সহ কালো টাকার কারবার দক্ষিণবঙ্গ এর বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে চলছে। এই সড়ক টি কলকাতার দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে সাঁতরাগাছি - ডানকুনি - পালসিট - বর্ধমান শহর হয়ে নর্জা মোড় - মুরাতিপুর - নুতনহাট - ফুটিসাঁকো উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। এহেন অতি গুরত্বপূর্ণ সেতুতে বালি কারবারিতে রুখতে জেলাপ্রশাসনের তরফে  সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হলেও বর্তমানে সেটি বিকল বলে জানা গেছে। এই সেতুর টোলট্যাক্সে গাড়ী নাম্বার সহ বিল দেওয়া হয়না, দুর্নীতি চালাতে । কূপন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যা রাস্তাতেই পড়ে থাকে। যারফলে কোন কোন  গাড়িগুলি যাতায়াত করছে তার সুনিদিস্ট তথ্য প্রমাণ থাকেনা টোলট্যাক্সের কাছে ।নির্বাচনের সময় সরকারি  'অন ডিউটি' বোর্ডের গাড়ীর বহর বেড়েছে বহুগুণ। সেগুলি নিয়েও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এলাকায় । সম্প্রতি ভুয়ো বোর্ডের গাড়ী নিয়ে হইচই পড়ে যায় লোচনদাস সেতু চত্বরে। ঠিক এইরকম নানা অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু মঙ্গলকোটের নুতনহাট এলাকায় থাকা অজয় নদের উপর লোচনদাস সেতুটি। পুলিশের তোলাবাজি থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল থাকা, আবার আম্বুলেন্সে রোগী সাজিয়ে বে আইনি কারবার থেকে ভুয়ো সরকারি বোর্ড লাগানো গাড়ি। সর্বপরি টোল আদায়কারী সংস্থার বিলে গাড়ী নাম্বার রেজিস্ট্রার হয়না।     ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বে আইনি অস্ত্র কিংবা কালো টাকা আমদানি সহ সুপারি কিলারদের যাতায়াত ক্রমশ বাড়বে এই সেতুর উপর দিয়ে। এই সুবিশাল নেটওয়ার্ক কে রুখতে স্থানীয় একটি থানার পুলিশের পক্ষে তা সম্ভব নয়। আবার লোচনদাস সেতুর ওপারে পড়ছে ভিন্ন জেলার থানা। তাই দুই জেলার সীমান্তবর্তী এহেন গুরত্বপূর্ণ সেতুতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি চেয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। তাও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় রেখে।পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট এবং বীরভূমের নানুর উভয় থানা দুটি অপরাধ মূলক কাজে রাজ্যের প্রথম সারিতে আছে। বিশেষত বে আইনি অস্ত্র, গাঁজা পাচার এই দুটি থানার গত তিনবছরের মামলাগুলি পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাবে। তাছাড়া রাজনৈতিক হানাহানিতেও এগিয়ে 'সূচপুর গনহত্যা ' খ্যাত নানুর এবং আজাদ মুন্সি খুনে ঘটনাস্থল মঙ্গলকোট এলাকা। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা শুরু হোক এই লোচনদাস সেতুতে, তা চাইছে বিরোধীরা। সম্প্রতি মঙ্গলকোটের 

চাণক এলাকায় পতাকা টাঙানো নিয়ে বিজেপি কর্মীর ভাগ্নে কে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে তৃণমূল আশ্রিত সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে। লোচনদাস সেতুর উপর দিয়ে বেশ কিছু বালির গাড়িতে বালির নিচে বে আইনি অস্ত্র পূর্বস্থলী থেকে আমদানি হয় বলে বিশেষ সুত্রে দাবি। একদা পূর্বস্থলীর হামিদপুরে এক অস্ত্র মাফিয়ার দশের কাছাকাছি লরি / ডাম্পার প্রত্যেহ আসে মঙ্গলকোটের এই লোচনদাস সেতুর নিচে অজয় নদের বালি তুলতে।সেখানেই বালির ইজারাদার একাংশের মাধ্যমে অত্যাধুনিক অস্ত্রের কারবার চলে বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ।                                                                                                                                                                                                                                                                                       

রবিবার, এপ্রিল ০৭, ২০১৯

মঙ্গলকোটে চিকিৎসক পুত্র খুনের অন্তরালে ?




 মোল্লা জসিমউদ্দিন,   

শনিবার ভোরে মঙ্গলকোটের সরুলিয়ায় স্থানীয় এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য পড়ে। খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে নুতনহাট গুসকারা সড়কপথে শ্বশানকালী মোড়ে ত্রিশ মিনিট ধরে রাস্তা অবরোধ করে কয়েকশো ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে স্থানীয় থানার পুলিশ গোয়েন্দা কুকুর এনে ঘটনাস্থলে তদন্ত করে থাকে । দেহ উদ্ধারের জায়গায় নিহতের মোবাইল সহ ব্যবহারকারী সাইকেল পায় মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। এলাকাসুত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোটের জয়পুরের বাসিন্দা তথা পেশায় পশু চিকিৎসক গুরুপদ পালের বড় ছেলে কাজল পালের (২৭) ক্ষত বিক্ষত দেহ এদিন ভোরে নুতনহাট গুসকারা সড়কপথে মাঠের মধ্যে সরুলিয়ায় উদ্ধার হয়। প্রতক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,  মাথার নিম্নভাগে কাইচির আঘাতের পাশাপাশি বুকে - পিঠে ব্লেড চালাবার দাগ রয়েছে। সেইসাথে গোপনাঙ্গে আঘাত এবং মুখে দানা বিষ রয়েছে। গলাতে গামছা বাঁধা ছিল। এলাকাবাসীরা মনে করছেন, শ্বাসরোধের সাথে সাথে ব্লেড / কাইচি করা আঘাত করা হয়েছে। সেইসাথে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে দানা বিষ দেওয়া হয়েছে।পরিবার সুত্রে প্রকাশ,    গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার বিকেলে উনিয়া মেলায় সে সাইকেল করে গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, পরিচিত কেউ মোবাইলে ডেকে বাড়ী থেকে প্রায় দু কিমি দূরে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে। তাই মোবাইলে গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কল ডিটেলস সংগ্রহ করলে খুনের ষড়যন্ত্রকারীদের সন্ধান মিলতে পারে। আবার গতকাল বিকেলে  উনিয়া মেলায় কোন ঝামেলায় জড়িয়ে গিয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত। কেননা মঙ্গলকোটের প্রায় মেলাতে জুয়া খেলার পাশাপাশি অশ্লীল বুগিউগি ( লেটো)  ড্যান্সের আয়োজন করা হয়, তাও পুলিশ কে তোলা দিয়ে বলে অভিযোগ। প্রায় মেলাতে জুয়া খেলা নিয়ে ঝামেলা হয়।   এইরূপ পরিস্থিতিতে মঙ্গলকোটে স্বনামধন্য এক পশু চিকিৎসকের পুত্র খুনে নানান প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিল এলাকাজুড়ে।আবার অন্য সুত্রে জানা গেছে, বিজেপি অধ্যুষিত মঙ্গলকোটের এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক কালে গন্ডগোল ঘটেছে। সপ্তাহ কয়েক পূর্বে দলীয় পতাকা টাঙানো নিয়ে বিজেপি কর্মীর ভাগ্নে কে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে স্থানীয় তৃনমূল আশ্রিত সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে। এমনকি এই অঞ্চল থেকে শয়ে শয়ে কর্মী সমর্থকরা ব্রিগেডে নরেন্দ্র মোদীর সভাও গিয়েছিলেন।৬ টি বাস অগ্রিম বুক করেও তা বাতিল করার অভিযোগ উঠেছিল বাস ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। নিহত যুবকটি সাম্প্রতিককালে বিজেপি ঘেষা হয়েছিল বলে কেউ কেউ জানাচ্ছেন। তাই খুনের এই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগও উড়িয়ে দিচ্ছে না স্থানীয়দের একাংশ।                                                                                                                                              

শনিবার, এপ্রিল ০৬, ২০১৯

বালি লুটে বিপন্ন লোচনদাস সেতু মেরামতিতে খরচ হবে কোটি


 পারিজাত মোল্লা, 


রাজ্যের অতি ব্যস্ত রুট ৭ নং রাজ্য সড়কের উপর থাকা পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলার সংযোগকারী মঙ্গলকোটের অজয় নদের লোচনদাস সেতু ক্রমশ বিপদজনক হয়ে উঠছে।মূলত পিলার গুলি অনেকাংশে বসে গেছে। সেইসাথে সেতুর পিচের মধ্যে তৈরি হয়েছে ছোটবড় গর্ত। ভারী যানবাহন যাতায়াত করলেই মৃদু কম্পন তৈরি হয়।  সেতুর এখানে বেশকিছু প্রাণঘাতী পথদুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। এই সেতুর উপর প্রত্যেহ হাজারের কাছাকাছি যানবাহন যাতায়াত করে থাকে। মূলত দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে যাবার শর্টকার্ট সড়ক রুট এটি। ভাতাড় পূর্ত দপ্তরের অধীনে থাকা এই সেতুর পরিকাঠামো দ্রুত পূন নির্মাণের জন্য ৮৫ লক্ষ অনুদান চাওয়ার প্রস্তাবনা  গত মাসে  নবান্ন অফিসে পাঠানো হয়েছে বলে প্রশাসনিক সুত্রে  প্রকাশ। পূর্ত দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন - "দ্রুত মেরামতি না হলে এই সেতু বিপদজনক হয়ে উঠবে যানবাহন চালকদের কাছে "। এবারে প্রশ্ন উঠছে মাত্র আঠারো বছর আগে তৈরি করা প্রায় এক কিমি লম্বা এই সেতু কেন এত তাড়াতাড়ি বেহাল হয়ে পড়লো?  যার জন্য কোটির কাছাকাছি অর্থ খরচ করতে হবে!  এলাকা সুত্রে জানা গেছে, ভুমি সংস্কার দপ্তরের আইন কে তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর সেতুর পিলারের একশো মিটারের মধ্যেই জেসিপি মেশিন দিয়ে যততত্র বালি তোলা হয়েছে। এখনও  দিনের পাশাপাশি রাতের বেলায় আলো জ্বালিয়ে বালি তোলা হয় জনসম্মুখে । এরফলে অজয় নদের স্বাভাবিক গতিপথ প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটেছে। সেইসাথে বড় বড় চোরাবালি তৈরি হওয়ায় নদীর  জোয়ারভাঁটায় পিলার বারবার আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বর্ষাকালে নদীর দুরন্ত স্রোত ক্রমশ বিপদজনক করে তুলেছে অজয়ের গর্ভে থাকা লোচনদাস সেতুর পিলারগুলি কে। এই বেআইনি  বালিঘাট গুলির মূল নিয়ন্ত্রক বীরভূম জেলাপরিষদের এক পদাধিকারী বলে অভিযোগ। তাই অতীতে বাম আমলে ডাবলু আনসারী কে যেমন পুলিশ প্রশাসন সেতুর নিচে থাকা বালিঘাট নিস্ক্রিয় করতে ব্যবস্থা নেয়নি। অনুরূপভাবে বীরভূমের বাসাপাড়ার ওই প্রভাবশালী নেতার তদারকিতে থাকা অজয় নদের লোচনদাস সেতুর নিচে   বালিঘাট বন্ধে তৎপর নয় বলে অভিযোগ । তবে এজন্য রাজ্য সরকার কে কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে সেতুর মেরামতিতে। যে অর্থ বালির রাজস্ব থেকে এইখানে নূন্যতমও মেলেনা!  সেতুর নিচে বালিঘাট গুলি অবস্থানের পাশাপাশি সেতুর উপর প্রতিনিয়ত শয়ে শয়ে অত্যাধিক বালি ও মহম্মদবাজারথেকে পাথর বোঝাই গাড়িগুলি যাতায়াত করায় সেতুর এই বেহাল অবস্থা দিন কে দিন বাড়ছে। পালিতপুর মোড়ে প্রতিদিন কয়েকশো ডাম্পার, লরি, ট্রাক্টর অত্যাধিক বালি বোঝাই করে এই সেতুর উপর দিয়ে কলকাতা - রাজারহাট প্রভৃতি গন্তব্যে  যায়। সর্বপরি বীরভূমের পাঁচামি - মহম্মদবাজারে পাথরখাদান গুলি থেকে পাথর বোঝাই করে গাড়িগুলি এই সেতুর উপর দিয়ে  যাতায়াত করে থাকে। বেশিরভাগই অতিরিক্ত বোঝাই করা গাড়িগুলিতে  । বীরভূমের নানুর থানা এবং পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার পুলিশ গাড়ী গুলি  ধরপাকড় অভিযান  করলে আজ এই লোচনদাস সেতুর এই করুন পরিণতি হত না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল  । এবং রাজ্য সরকারকেও সেতু মেরামতিতে কোটি টাকার অনুদান দেওয়ার প্রস্তাবনা আসত না।মঙ্গলকোটের নুতনহাটে লোচনদাস সেতুতে ৮৫ লক্ষ খরচের প্রস্তাবনার পাশাপাশি কাটোয়ার সিঙ্গি রুটে গৌড়ডাঙ্গা সেতুটি তেও ৭৫ লক্ষ অনুদান চাওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পূর্ত দপ্তরের তরফে। কাটোয়ার এই সেতুটি কে বেআইনি বালি পাচারকারীরা 'সেফ করিডর' হিসাবে দীর্ঘদিন ব্যবহার করছে। কাটোয়া সদর থানার নজর এড়াতে বীরভূমের পাথর বোঝাই গাড়িগুলি এবং পূর্ব বর্ধমানের অজয় নদের বালি বোঝাই করা গাড়িগুলি কৈচর থেকে করুই কৈথন মোড় থেকে সিঙ্গির এই গৌড়ডাঙ্গা সেতুর উপর দিয়ে কলকাতা যাবার পুরাতন রুট (ভায়া মেমারি) ব্যবহার করছে। এরফলে অতি বিপদজনক সেতু হয়ে গেছে এটি। পূর্ত দপ্তর থেকে নোটিশ বোর্ড রয়েছে সেতুর মুখেই। কাটোয়া মহকুমার দুটি সেতু মেরামতিতে দেড় কোটির উপর অর্থ চাওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের নবান্ন অফিস থেকে। এখন প্রশ্ন পুলিশ প্রশাসন সেতুর নিচে বে আইনি বালিঘাট এবং অতিরিক্ত পণ্যবাহী গাড়ীগুলি কে ধরপাকর না চালালে সেখানে সরকারের কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ ক্রমশ বাড়বে।                                                                                                                                                                                           

শুক্রবার, এপ্রিল ০৫, ২০১৯

হাজারের কাছাকাছি আইনজীবী বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখতে সভা সারলেন


 

 মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

হাজারের কাছাকাছি আইনজীবি এবার পথে নামলেন সরাসরি বিজেপির বিরোধিতায়। শুধু কলকাতা হাইকোর্ট নয়, কলকাতা নগর ও দায়রা আদালত, ব্যাংকশ্যাল আদালত, শিয়ালদহ আদালত এবং আলিপুর আদালতে কর্মরত বেশিরভাগ আইনজীবীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে নিউ সেক্রেটারি বিল্ডিং এর এক হলঘরে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেখানে রাজ্য বার কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান তথা তৃনমূল বিধায়ক অশোক দেব, প্রাক্তন বার কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান তথা কলকাতা হাইকোর্ট এর বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল সহ অনেকেই ছিলেন। বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে আইনজীবীদের কি ভূমিকা হওয়া উচিত?  এই শীর্ষক আলোচনায় হাজারের কাছাকাছি আইনজীবী অংশগ্রহন করেন। যা বাংলার আইনজীবী বলয়ে অতীতে হয়েছে কিনা তা  সন্দেহ। ২০১৯ এর লোকসভার প্রাক্কালে আইনজীবীদের এই ধরনের মহাসমাবেশ রাজনৈতিক দিক দিয়ে খুবই গুরত্বপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা  । গত ২০ মার্চ রাজ্য বার কাউন্সিল এর নির্বাচিত ১৫ জন সদস্যদের মুখ্যমন্ত্রী ডেকে নেন জরুরি সভায়। সেখানে কলকাতা হাইকোর্ট এর দলীয় আইনী শাখা দেখবার জন্য আনসার মন্ডল সহ আরেকজন বর্ষীয়ান আইনজীবী কে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব দেন। সেইসাথে এই ১৫ জন আইনজীবীদের কে দলের কোর কমিটিতে রাখার জন্য রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকসী কে নির্দেশ দেন। তখনি মুখ্যমন্ত্রী আসন্ন লোকসভায় আইনজীবীদের প্রচারের মুখ হিসাবে জেলায় জেলায় নির্বাচনী মঞ্চে থাকবার অনুরোধ করেন। এর পরেই তৎপরতা আসে শাসক দলের আইনজীবীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতা হাইকোর্ট সহ বিভিন্ন আদালতের তৃণমূল পন্থী আইনজীবীদের সেমিনার তারই প্রাক প্রস্তুতি বলা যায়। কলকাতা হাইকোর্ট এর বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল মহাশয় বলেন - দলনেত্রীর নির্দেশে আমরা এবার দলীয় প্রার্থীদের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে নামছি।                                                                                                               

বুধবার, এপ্রিল ০৩, ২০১৯

চা করতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ , মঙ্গলকোটে আতঙ্ক

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,

            রান্নার সিলিন্ডার বাস্ট করে তিন তিনটি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেল পশ্চিম মঙ্গলকোটের চাণক অঞ্চলের বালিডাঙা গ্রামে। স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে - গতকাল বিকেল চারটে নাগাদ বালিডাঙার বাসিন্দা সুপ্রিয়া সরকার গ্যাস জ্বালিয়ে চা করার প্রস্তুতি নেয়। গ্যাস ওভেনে চায়ের জল চাপিয়ে পাশের রুম থেকে চিনি নিতে আসে। পরে রান্নাঘরে এসে দেখে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে।ঘর থেকে চিৎকার করতে করতে সে ছুটে বেরিয়ে আসে। সিলিন্ডার বাস্ট করার জন্য দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একই উঠোনের তিনটে বাড়িতে আগুন লেগে যায়। সেখানে আরও একটি সিলিন্ডার বাস্ট করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে গ্রামের লোকজন ছুটে আসে। দ্রুত ১০ টি পাম্প মেশিন দিয়ে পাশের পুকুর - ডোবা থেকে জল তুলে তারা আগুন নেভায়। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় তিনটে বাড়ির টাকা পয়সা , সোনা, কাপড়, খাদ্য সামগ্রী, বই- খাতা সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।রাতে প্রতিবেশীদের বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে ।এমনকি তারা খাবার দিয়েছে বলে  খেতে পেয়েছে।
          ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী শিখা বিশ্বাসের পরীক্ষা শুক্রবার থেকে ।তার সমস্ত বই-খাতা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তার চিন্তা কিভাবে পড়াশোনা করবে। একই চিন্তা দশম শ্রেণীর ছাত্রী সঞ্জনা বিশ্বাসের। তারও বই খাতা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ।অন্যদিকে বাড়ির অভিভাবক সুনীল বিশ্বাস, সূর্য সরকারদের চিন্তা কিভাবে ছেলে মেয়েদের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দেবে।
         এদিকে সিলিন্ডার বাস্টের খবর পেয়ে দুর্ঘটনা স্হলে ছুটে যায় চাণক অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি রমজান সেখ। সে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়।

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০১৯

পঞ্চায়েতে মার খাওয়া সিপিএম কে দেওয়াল লিখনে সৌজন্যতা দেখালো তৃণমূল



  

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

মঙ্গলকোট কেন্দ্রে ২০১১ সালের রাজ্যে পালাবদল আনা বিধানসভা ভোটে মাত্র দেড়শো ভোটে জিতেছিল সিপিএম। এরপরে ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাতেগোনা পঞ্চায়েত সমিতি সহ কিছু  গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে বিজয়ী হয়েছিল কংগ্রেস সহ সিপিএম। পরে বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য উন্নয়নে অনুপ্রাণিত হয়ে জোড়াফুল শিবিরে নাম লেখান। ২০১৪ সালে লোকসভায় নিকটবর্তী বাম প্রার্থী থেকে তৃনমূল প্রার্থী ২৪ হাজারের বেশি  ভোটে এগিয়ে ছিলেন এই মঙ্গলকোট বিধানসভা এলাকা থেকে। ২০১৬ এর নির্বাচন টা অবশ্য তৃনমূল কে তীব্র অন্তদ্বন্ধের মধ্যে  পড়তে হয়। ২০১১ এর পরাজিত প্রার্থী অপূর্ব চৌধুরী বনাম ২০১৬ এর তৃনমুল  প্রার্থী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী শিবিরে বিবাদ শুরু হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতি হয় যে, ২৪ হাজারের লিড কমে সেটা ১২ হাজারে দাড়িয়ে যায় গত বিধানসভা নির্বাচনে  । আশাতীত ভাবে বিজেপি তাদের ভোটব্যাংক দ্বিগুন করে নেয়। ওয়াকিবহাল মহল মনে করে - তৃনমূলের ক্ষমতাসীন গোস্টীর অন্তর্ঘাত ছাড়া গেরুয়া ভোটের শক্তিবৃদ্ধি সম্ভব নয়। ঠিক এই জায়গা থেকেই  আসন্ন লোকসভায় দুশ্চিন্তার কালো মেঘ তৃনমূলের অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে ।  তার উপর একদা তৃণমূলের সেকেন্ডম্যান মুকুল রায় বিজেপিতে এসে দলবদল খেলা আরও জমিয়ে দিয়েছেন। বিগত বাম জমানায় মঙ্গলকোটে আলাউদ্দিন সেখ, পূর্নিমা মাঝী, সাইফুল মুন্সি, দিলীপ ঘোষ, সেখ হাসমত প্রমুখ তৃনমুল কর্মী খুনে সর্বদা শহীদ পরিবার গুলির পাশে দেখা গেছে মুকুল রায় কে। তাই মঙ্গলকোটের শহীদ পরিবার সহ জোড়াফুলের অনেক নেতা বিশেষত ক্ষুব্ধ নেতা কর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে মুকুল বাবুর সাথে। আর এখান থেকেই ভোটব্যাংকে বিপদের অশনি সংকেত পাচ্ছে স্থানীয় তৃনমূলের নেতারা। যদিও গত পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীশুন্য হয়েছে মঙ্গলকোট। কেউ মনোনয়ন জমা তো দূর অস্ত ফর্ম পর্যন্ত তুলতে পারেনি। এমনকি রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অনুগামীদের দলীয় প্রতীক পেলেও ব্লক কিংবা মহকুমা শাসকের অফিসে মনোনয়নপত্র তুলতে পারেনি। যার জেরে তিনি সরকারি নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে পর্যন্ত দিয়েছিলেন। দপ্তরেও গোঁসা করে যাননি। এহেন মঙ্গলকোটে অবশ্য গত সপ্তাহে কৈচরে এক সভায় অনুব্রত মন্ডল ৫০ হাজারের লিড চেয়েছেন ব্লক নেতৃত্বের কাছে। যদিও নেতারা ৪০ হাজারের লিড দেবেন বলে কথা দিয়েছেন। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে বিরোধী শুন্য মঙ্গলকোটে মাত্র ৪০ হাজারের লিড কেন হবে তা নিয়েও? তাহলে কি বিরোধীশুন্য রাখার জের কি লোকসভায় কুফল পেতে পারে তৃনমূল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্লক তৃণমূল নেতা বলেন - "পুলিশ কে দিয়ে গাঁজা /অস্ত্র মামলায় জড়িয়ে যে ঘটনাগুলি গত আড়াই বছরে শতাধিক ব্যক্তির উপর চালানো হয়েছে। তাতে আমরাও দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি,  ভোট টা কোন ফুলে পড়বে  তা নিয়ে"। দিন কয়েক আগে মঙ্গলকোটের জয়পুরে এক মিস্টির দোকানে বিজেপির পতাকা টাঙানো নিয়ে বিজেপি কর্মী  দোকানদারের ভাগ্নে কে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠে তৃনমূল আশ্রিত দুস্কৃতিদের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের কাগজপত্র করেও স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায় আক্রান্ত পরিবারের কাছে। তবে নির্বাচনী সেলে অনলাইনে বিষয়টি জানানোর পর অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়। মঙ্গলকোটে  যখন এইরুপ বিজেপির প্রতি মারমুখী মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে।সেখানে আবার ওই এলাকা সহ মঙ্গলকোটের বিস্তৃত এলাকায় দেওয়াল লিখনে জোড়াফুলের পাশাপাশি কাস্তে হাতুড়ি তারার দেখা মিলছে অনবরত । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক অফিস থেকে সর্বদলীয় সভা সেরে নিগন এলাকায় সিপিএম নেতারা তৃনমূলের হাতে মার খেয়েছিল অবশ্য।       রাজনীতি কারবারিরা বলছেন - রাম কে ভয় পেয়ে বামেদের অক্সিজেন দিচ্ছে তৃনমূল। রাজ্য বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জি ওরফে বাবলু জানান - "২০১১ সালের বিধানসভায় সিপিএমের সন্ত্রাস রুখতে তৃনমূল কে যেমন বেছে নিয়েছিল রাজ্যবাসী। ঠিক তেমনি পুলিশ নির্ভর তৃনমূল কে হঠাতে এই লোকসভায় বিজেপি কে ভোট দেবেন অনেকেই "। গত  মঙ্গলবার বিকেলে মঙ্গলকোটের কৈচর এলাকায় বিজেপির সভা হয়। এখানে উল্লেখযোগ্য বক্তা না এলেও সভার ভীড় ভালোয় হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ   । বিশেষত আদিবাসীদের  কাঁধে তীরন্দাজ অবস্থান গেরুয়া বলয় কে মুখোমুখি  প্রতিরোধের  দিকে আনছে বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলকোটের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে রয়েছে আদিবাসী গ্রাম। অতীতে বামেদের দিকে ঝুঁকে থাকা এই আদিবাসীরা তৃনমূল নেতাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে বলে কেউ কেউ বলছেন। তাই রাম কে ঠেকাতে বামেদের দেওয়াল লিখনে সহযোগিতার   হাত বাড়িয়ে দিয়েছে শাসক শিবির। তবে এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তৃনমূলের ব্লক নেতারা।  যাইহোক মঙ্গলকোটে বিভিন্ন প্রান্তে জোড়াফুলের পাশাপাশি কাস্তে হাতুড়ি তারার  দেওয়াল লিখন তাও একই দেওয়ালে দেখে অনেকেই মুচকি হাসছেন। তাদের বক্তব্য এই ধরনের রাজনৈতিক সৌজন্যতা যদি গত পঞ্চায়েত ভোটে দেখাতো তাহলে অন্তত বিরোধীশুন্য হতনা এই মঙ্গলকোট।                                                                                                                                                                      

 

আত্মঘাতী যুগলের শেষ চিঠি 'আমাদের এক জায়গায় রেখো'


মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

হিন্দু না ওরা মুসলিম,  জিজ্ঞাসা করে কোন জন? ' সাম্যের গান গিয়ে বিদ্রোহী কবি   কাঁজি নজরুল ইসলাম এখনও যেন 'একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান' ফুটাতে পারলেন না সমাজের বুকে। ধর্ম ওদের বাঁচতে দিল না,  মঙ্গলকোটে একই দড়িতে গলায় দড়ি এক যুগলের। ঘটনাস্থল সেই বিদ্রোহী কবি কাঁজি নজরুল ইসলাম স্মৃতি ধন্য মঙ্গলকোট।   পূর্ব বর্ধমান জেলা মঙ্গলকোট ব্লকের নিগন অঞ্চলের বেলগ্রামের এক যুগলের আত্মহত্যা কে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে বৃহস্পতিবার সকালে । মৃত প্রেমিকের নাম লোকনাথ বৈরাগ্য  (১৮) বছর, মৃত প্রেমিকার নাম  রুপসোনা খাতুন  (১৫) বছর। দুইজনেরই বাড়ি বেলগ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল থেকে দুইজন নিখোঁজ ছিল। এই দুজনার প্রেম গত ছয় মাস ধরে চলছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।   দুটি ভিন্ন সম্প্রদায়ের হওয়ার জন্য এই ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় মানুষের অনুমান। তারা গ্রামেরই একটি কাঁদরের  ধারে আম গাছে গলায় দড়ি নিয়ে আত্মঘাতী  হয়, একই দড়িতে।তাদের মৃতদেহের কাছে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে এবং সেখানে তারা নাকি  লিখে গেছে - তারা দুজন দুই সম্প্রদায়ের হওয়ার জন্যই সমাজ তাদের এই সম্পর্ক মেনে নেবে না ।তাই তারা আত্মহত্যা করেছে বলে লিখেছে নিহত   যুগলটি । পাশাপাশি সুইসাইড নোটে তাদের শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়ে গেছে - সেটা হলো, মৃত্যুর পর তাদের সৎকার্য যেন একই জায়গায় করা হয়। অর্থাৎ তাদের সমাধি যেন পাশাপাশি করা হয়। কিংবা দাহ হলে সেটাও যেন একই শ্বশানঘাটে হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে   তদন্ত শুরু হয়েছে কিভাবে এই যুগল দুইজন মারা গেল তা নিয়ে। দেহ উদ্ধার  করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের  জন্য। সমগ্র ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে কেউ কেউ এটি কে পরিকল্পিত খুন বলেও দাবি করেছেন। আত্মহত্যার ঘটনাস্থলে ওই আমগাছ টি তে যেভাবে দেহ মাটিতে পা রাখার অবস্থায় ঝুলছিল তাতে আত্মহত্যার প্রশ্ন উঠেনা। আবার ঘটনাস্থলে উদ্ধার হওয়া হাতের লেখা একজনের লেখা। সেখানে প্রেমিক প্রেমিকার আলাদা আলাদা বয়ান থাকে কি করে?  সেজন্য নিহত যুগলের স্কুলে হাতের পুরাতন লেখা সংগ্রহের দাবিও উঠেছে প্রকৃত ঘটনা কি তা জানতে।               

কালনায় পসকো মামলায় প্রথম সাজাদান

মোল্লা  জসিমউদ্দিন ,

বৃহস্পতিবার দুপুরে কালনা মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফুল) শ্রী তপন কুমার মন্ডলের এজলাসে এক পসকো মামলায় রায়দান ঘটলো। মাত্র এক বছরের মধ্যেই এই মামলার দ্রুত রায়দান দিলেন ওই বিচারক। উল্লেখ্য, কালনা মহকুমা আদালতে সর্বপ্রথম এই পস্কো আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাদান ঘটলো। আসামি সাহেব ওরফে নবাব ধারা কে দশ বছরের কারাবাসের সাজা দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফুল) শ্রী তপন কুমার মন্ড। পসকোর ৪ নং ধারার পাশাপাশি ৩৪১ এবং ৩৭৬ আইপিসি ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছিল। গত ১৬/০২/১৮ তারিখে বিকেলে কালনার সিমলন এলাকায় বছর ষোলো এর এক যুবতী টিউশনি থেকে বাড়ী ফিরছিল। সেসময় আসামি জোরপূর্বক ওই যুবতী কে ঠাকুরপুকুর বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পর মহকুমা হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট হয়। এই মামলায় ৭ জন সাক্ষ্যদান করে। বিচারক এই মামলায় আসামি কে দশবছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। সরকারি আইনজীবী মলয় পাজা বলেন - কালনা মহকুমা আদালতে সর্বপ্রথম পসকো ধারায় শাস্তিদান ঘটলো। যদিও আসামি পক্ষের আইনজীবী গৌতম দত্ত জানিয়েছেন - মামলার রায়দানের কপি সংগ্রহ করে উচ্চ আদালতে যেতে পারে অভিযুক্তের পরিবার। কালনা মহকুমা আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফুল) তপন কুমার মন্ডল যেভাবে খুন - পস্কো মামলাগুলির দ্রুত রায়দান এবং লোক আদালতে শয়ে শয়ে মামলা ডিসপোজাল করছেন, তাতে আইনজীবী মহলে প্রশংসা উঠে আসছে।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER