বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০১৯

পেপার কাটিং শেয়ার করার জের, নুসরত অনুগামীদের হামলায় তটস্থ শিক্ষক সাংবাদিক

ফেসবুকে তৃণমূল প্রার্থী নুসরতের পুজো দেওয়ার পেপার কাটিং পোষ্ট করে হেনস্থার শিকার শিক্ষক আলি আকবর

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: বিগত কয়েকদিন আগে বসিরহাট লোকসভা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নুসরাত জাহান মন্দিরে পুজো দিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়। বর্তমান পত্রিকা এই খবরটি প্রকাশ করেন।
এই পেপার এর কিছু অংশ নিয়ে স্কুল শিক্ষক আলি আকবর জনপ্রিয় সোশাল  মিডিয়া ফেসবুকে শেয়ার করেন। আর সেই কারণে
বসিরহাট এলাকার কিছু সমাজবিরোধী ও দুস্কৃতিকারীরা বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংবাদিক আলি আকবরের বাক স্বাধীনতাকে কেড়ে নিতে মানসিক নির্যাতন চালালেন আজ তার স্কুলে।
আলি আকবর বাবু বলেন,বর্তমান পত্রিকার নুসরতের পুজা দেওয়ার পেপার কাটিং পোস্ট করায়, স্থানীয় তৃনমূল নেতারা ১০-১৫ জন আমার স্কুলে এসে হুমকি দিয়ে গেছে এবং পুজো দেওয়ার ভিডিও ও এই পোস্ট জোর করে ডিলিট করতে বাধ্য করেছে। এরা একেবারে হন্যে হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন মতামত প্রকাশের কোন সুযোগ আর থাকছেনা।

আগে আমরা স্টেজ করে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছি কিছু হয়নি।
এখন সামান্য ফেসবুকে পোস্ট করলেই সরাসরি এসে হুমকি দিচ্ছে, অপমান করছে।
সরকারের সমালোচনা করা যাব না, সরকার বিরোধী কোন মন্তব্য করা যাবে না।
রাজ্যের পরিস্থিতি ১০ বছরের আগের বিহারের থেকেও খারাপ এরাই প্রমান
এভাবে মানসিক আক্রমণ করে কোন ব্যক্তির ব্যক্তি স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা  কেড়ে নেওয়া যায় না। আমি কি বলবো তা গুন্ডা এবং সমাজবিরোধীরা আজকে ঠিক করে দিতে চাইছে এ যেন মরিয়া হন্যে কুকুরের ন্যায়।এদের প্রতি আমার একরাশ ঘৃণা।
তৃণমূল সরকারের আমলে তাহলে কি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা হারাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ তা নিয়ে গুঞ্জন সোশ্যাল মিডিয়া।

ভাতার চষে বেড়ালেন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস

মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
সুদিন  মন্ডল ,

বুধবার সকালে  রাজ্যের যুব কল্যাণ মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী ডঃ মমতাজ সংঘমিতার সমর্থনে পূর্ব ভাতারের বিভিন্ন গ্রামের মোড়ে রোড শো করেন। প্রার্থী ছাড়াও এদিনের পথ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা,ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মন্ডল, প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরা,মান গোবিন্দ অধিকারী প্রমুখরা।  ভাতার ফায়ার ব্রিগেড এলাকা থেকে এই রোড শো শুরু হয়ে বেলডাঙ্গা, বালসি ডাঙ্গা, কুবাজপুর,খেরুর, মুরারীপুর, নাসিগ্রাম, বড় বেলুন হয়ে ভাতার পার্টি অফিসে এক পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়। কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক এদিনের প্রচার পর্বে  উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।  ভাতার বিধানসভা এলাকা টি শাসক দলের দুই শিবিরের মতবিরোধের পাশাপাশি সিপিএম - বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী রয়েছে। সীমান্তবর্তী মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম বিধানসভা এলাকায় যেখানে বিরোধী দলগুলি দেওয়াল লিখন, মিটিং মিছিল নুন্যতম করতে পারেনি। সেখানে ভাতারের মুরাতিপুর, বামশোর, কালুত্তক প্রভৃতি এলাকাগুলি কাস্তে হাতুড়ি তারায় ভরে গেছে। আবার আমারুণ, সাহেবগঞ্জ এলাকায় পদ্মফুলে ছয়লাপ। এই কেন্দ্রে জাঁদরেল বিরোধী প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন সুন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। যিনি ভারতীয় সাংসদ রাজনীতিতে প্রবীণ। তাই তৃনমূল এই কেন্দ্রে প্রচারপর্ব তে খামতি রাখতে চাইছেনা। তারই বার্তা হিসাবে আজকের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের রোড শো বলে অভিমত জেলা রাজনৈতিক মহলে৷                                         

বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০১৯

ফসলে ক্ষতি কতটা, তা দেখতে ভাতারে কৃষি উপদেষ্টা




মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
সুদিন  মন্ডল ,

মঙ্গলবার  সকালে মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষি আধিকারিক দের সঙ্গে নিয়ে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতগ্রস্ত ভাতার ব্লকের এর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।সাথে ছিলেন পূর্ব বর্ধমান  জেলা কৃষি  আধিকারিক জগ্ননাথ চ্যাটার্জি, সুপ্রিয় ঘটক,গৌতম ভৌমিক প্রমুখরা। ভাতারের স্বর্ণচালিতা সমবায়,কাশিপুর সমবায় সমিতি, বনপাশ সোসাইটি, গ্রামডিহী সমবায়, বামুনারা সমবায় সহ নানান সমবায় সমিতির কর্মকর্তা ও ক্ষতিগ্রস্ত  চাষীদের সাথে কথা বলেন  তিনি। প্রদীপ বাবু বলেন - ভাতার ব্লকের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গুলি বিশেষভাবে নিরীক্ষণ করলাম।কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় বর্তমান সরকার কৃষি শস্য বীমার যে বিশেষ ব্যবস্থা করেছে যার পুরো প্রিমিয়াম তাই রাজ্য সরকার দেয়। সেই শস্য বীমার মাধ্যমে কৃষকরা যাতে ক্ষতিপূরণ পেতে পারে তারই  প্রশাসনিক  কর্ম প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে,যাতে তিনদিনের মধ্যে বীমা কোম্পানির অফিসে আবেদন  করা যায়, সে ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও  জানান, সোমবার দেওয়ানদিঘির জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন ভোটের কারণে কৃষি সংক্রান্ত এই প্রক্রিয়া কোনভাবেই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না, সরকার কৃষকদের পাশে অতীতেও ছিল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সাহেবগঞ্জ এক নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চায়না অধিকারী,বনপাস গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপ্তি মন্ডল প্রমুখরা প্রদীপ বাবু কে জানিয়েছেন ওই সমস্ত এলাকাগুলিতে প্রায় একশো ভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে।স্থানীয় কৃষি দপ্তর থেকে রিপোর্ট অনুযায়ী কাজ হবে বলে জানা গেছে।  উল্লেখ্য গত রবিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে তীব্র শিলাবৃষ্টি হয়। কাটোয়া, কালনা, সদর বর্ধমান  মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় মাঝারিমাপের শিলা টানা ঘন্টা খানেক হয়ে থাকে। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ভাতার এবং মঙ্গলকোট ব্লক এলাকায়। প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে  বোরো ধান এবং তিল চাষ হয়েছে। শুধু তাই নয় পেঁয়াজ, আম সহ সবজি চাষে ক্ষতি এনেছে গত রবিবারের টানা শিলাবৃষ্টি। পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষি বলয়ে থাকা ভাতার ব্লকে মঙ্গলবার সকালে দিকে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তবে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি আজকের এই প্রশাসনিক সফর ঘিরে। জেলা বিজেপি নেতা চন্দ্রনাথ মুখার্জি বলেন - "আগামী ২৯ এপ্রিল এইসব এলাকায় লোকসভা ভোট রয়েছে, ভাতারে বেকায়দায় রয়েছে শাসকদল। তাই পূর্ব বর্ধমানের অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্লক না ঘুরে ভাতারেই এলেন কৃষি উপদেষ্টা। যাতে কৃষক দরদী সরকারের সহানুভূতি পাওয়া যায় "।                                                       

মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০১৯

রক্তদান শিবির আয়োজনে মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

   

 মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

সোমবার সারাদিন ধরে মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হল।রক্ত দিলেন এই হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা। বিএমওএইচ থেকে আশাকর্মী, প্রত্যেকেই দিলেন রক্ত। একফোঁটা রক্ত একজনের জীবন বাঁচাতে পারে। এই উপলব্ধি থেকেই এই মহতি উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন বিএমওএইচ ডঃ প্রণয় ঘোষ।   আজ  সকাল থেকে শুরু হয় শিবিরটি।   ৮০ জন রক্তদাতা আজকের রক্তদান করেন।এখানে হসপিটাল এর বিভিন্ন আধিকারিকরা রক্ত দেন। পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামের আশা কর্মীরা আসেন এই রক্তদান শিবিরে রক্ত দিতে। এই রক্ত কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে  তুলে দেওয়া হয়। প্রায়শই এই গ্রীষ্মের সময়ে রক্ত সংকট দেখা দেয়।সর্বপরি ভোটের সময় রাজনৈতিক হানাহানিতে হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার জন্য রক্তের প্রয়োজন পরে। সেই জায়গায় এহেন উদ্যোগ সাধুবাদ যোগ্য বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।               

প্রধানমন্ত্রী কে দুস্ট বাচ্ছার সাথে তুলনা তৃণমূল সুপ্রিমোর




মোল্লা জসিমউদ্দিন ,

বাংলায় লোকসভা নির্বাচন জমে উঠেছে, অন্তত নির্বাচনী প্রচারে। দুই ফুলের ( জোড়াফুল, পদ্মফুল)  নেতানেত্রীদের ভাষণে সরগরম বঙ্গ রাজনীতির বলয়। মোদি বনাম মমতা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নানান কৌতুক রঙ্গ তৈরিও হয়েছে ভোটের মুখে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে অর্থাৎ তৃতীয় দফার ভোটের চব্বিশ ঘন্টার আগে পূর্ব বর্ধমানের নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূল নেত্রী তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য পেশের মাঝেই নরেন্দ্র মোদী কে গালে থাপ্পড় মারার হুশিয়ারি দেন, তবে অত্যন্ত কায়দায় তাঁর এহেন হুশিয়ারি। পূর্বস্থলীর জামালপুরে নির্বাচনী প্রচারে মমতা  মঞ্চের সামনে মা বোনেদের উদ্দেশ্য বলেন - দুস্ট বাচ্ছারা বেশি দুস্টুমি করলে আপনারা কি করেন?  গালে কি যেন হাতে করে দেন, যাতে বাচ্ছারা চুপ হয়ে যায়। হ্যা আপনারা যেদিন ভোট দিতে যাবেন, সেদিন ইভিএমে জোড়াফুল টিপে বিজেপি কে থাপ্পড় দেবেন। মোদী চুপচাপ হয়ে যাবেন।সোমবার দুপুর একটা নাগাদ পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর জামালপুর এলাকায় দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার সারলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মঞ্চে মূল বক্তা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, এই আসনের লোকসভার প্রার্থী সুনীল মন্ডল সহ বেশ কয়েকজন জেলার বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে । গ্রামীন বর্ধমানের কৃষি বলয়ে থাকা পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভার এই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মূলত উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন।জেলাতেই সর্বপ্রথম মাটি মেলা পরবর্তীতে মাটি উৎসব করে এই রাজ্যসরকার। চাষীরা ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণের অনুদান পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান - দীর্ঘদিনের ভাগীরথী নদের উপর সেতু নির্মাণ দাবি পূরণ হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই এগারোশো কোটি বরাদ্দকৃত হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের  কালনা এবং নদীয়ার শান্তিপুর এলাকার যোগাযোগকারী সেতু হিসাবে পরিচিত হতে চলেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদা থেকে হুগলি জেলা হয়ে মঙ্গলকোটের নুতনহাটের উপর দিয়ে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার ফোরলেন রাস্তা হচ্ছে। সেইসাথে দক্ষিণবঙ্গের দামোদর - ভাগীরথী নদ নদীগুলির উপত্যকায় বন্যা রোধে স্থায়ী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এই সরকার। এইবিধ নানান উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরার পাশাপাশি বিজেপি সর্বপরি প্রধানমন্ত্রী কে তীব্র রাজনৈতিক আক্রমণ করেন তৃনমূল নেত্রী। তিনি বলেন - গত পাঁচ বছরে মোদী শুধুই বিদেশ ঘুরেছে, নুতন করে কর্মসংস্থান তো হয়নি। উলটে বেকারত্ব বেড়েছে সারাদেশ জুড়ে । দু একজন কে দিয়ে রাজ্যে সামন্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছে বলে  অভিযোগ তুলেন মুখ্যমন্ত্রী।  রাজ্যের সাথে আলোচনা না করে হুটহাট করে অফিসারদের বদলী করে দেওয়া হচ্ছে নির্বাচনের সময় । কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তো গত ২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনেও ছিল। সেবার তো দুর্দান্ত ফল করেছিল তৃণমূল। এবারেও ফল আরও ভালো হবে বলে আশাবাদী মমতা। সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় তিনটি প্রচারসভা সারেন মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ১ টায় পূর্বস্থলীর জামালপুর, দুপুর ২ টোয় দেওয়ানদিঘী এবং ৩ টেয় সেহেরাবাজার। এই তিনটি বিধানসভা এলাকাতে সিপিএম সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী এবং শাসকদলের অন্তদ্বন্ধ এলাকা হিসাবে পরিচিত। জামালপুর এলাকাটি পড়ছে পূর্বস্থলী উত্তর বিধানসভার মধ্যে। যেটি সিপিএম গত বিধানসভায় জিতেছে। এছাড়া বর্ধমান উত্তর ( দেওয়ানদিঘী) , রায়না (সেহেরাবাজার)  বিধানসভা এলাকাগুলিতে সিপিএম অন্যতম বিরোধী দল হিসাবে পরিচিত। তবে বাম ছেড়ে রাম শিবিরে নাম লিখিয়েছেন অনেকেই। সম্প্রতি    বর্ধমান পুর চেয়ারম্যান পদে একদা থাকা সিপিএমের দাপুটে নেতা হাজার খানেক কর্মী সমর্থকদের নিয়ে দল বদল করেছেন। এছাড়া    বালি, পঞ্চায়েতে দুর্নীতি নিয়ে শাসকদলের খুনোখুনি পর্যন্ত হয়েছে। নিহতদের তালিকায় পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারী রয়েছে। তাই একাধারে সিপিএমের ভোটব্যাংক বিজেপির অনুকূলে যাওয়া রুখতে এবং দলীয় বিবাদ আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের অধীনে এই তিনটি বিধানসভা এলাকা বেছে নিলেন বলে রাজনৈতিক ওয়াকিবহালমহল মনে করছে।                                                                                                                                                

অনুব্রত মন্ডলের সাথে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর বিবাদের অন্তরালে?


মোল্লা জসিমউদ্দিন,

অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেস্ট মোড়ল এই নামটি শুধু রাজ্য রাজনীতিতে নয় জাতীয় রাজনীতিতেও বহু আলোচিত। রাজনৈতিক ময়দানে তিনি 'পিঞ্চ হিটার' বক্তা হিসাবে পরিচিত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে শুধু বীরভূম - পূর্ব বর্ধমান জেলা নয়, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী প্রচারে মঞ্চে 'হায়ার' করে নিয়ে গেছে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূলের এই নেতা শুধু বীরভূম জেলার দলীয় সভাপতি নন, সেইসাথে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম - কাটোয়া - মঙ্গলকোটের দলীয় পর্যবেক্ষকও বটে। একদা কাটোয়ার কং বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টপাধ্যায়ের সাথে সাপেনেউলে সম্পক ছিল অনুব্রতর। সেই রবীন্দ্রনাথ চট্টপাধ্যায় ববর্তমানে শাসকদলে নাম লিখিয়েছেন। আবার কেতুগ্রাম বিধায়ক সেখ শাহনওয়াজের সাথেও সম্পর্ক ভালো ছিল না একদা অনুব্রতর। কেননা বীরভূম জেলাজুড়ে দাপট দেখালেও নানুরে কেস্ট দাওয়াই 'ফেল'!  সৌজন্যে কেতুগ্রাম বিধায়ক সেখ শাহনয়াজের ভাই কাজল সেখ। বর্তমানে অবশ্য কেতুগ্রাম বিধায়ক ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠেছেন অনুব্রতের কাছে। সিউড়ির প্রাক্তন বিধায়ক স্বপনক্রান্তি ঘোষের সাথে সম্পর্ক ভালো নয় অনুব্রত বাবুর। তবে রাজনৈতিক জীবন থেকে সন্ন্যাস নিয়েছেন স্বপন বাবু। একদা অধ্যাপক তথা বিধায়ক আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় অনুব্রত বিপক্ষ শিবিরে বিচরণ করতেন। বর্তমানে তিনি কৃষিমন্ত্রী হয়ে অনুব্রত বাবুর ঘনিষ্ঠমহলে প্রবেশ করেছেন। এত কিছুর মাঝে ব্যতিক্রমী মঙ্গলকোট বিধায়ক তথা রাজ্যের তিনটি দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী মহাশয়।২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের  আগে বীরভূমে পুলিশি সন্ত্রাস এবং শাসকদলের সন্ত্রাস নিয়ে অনুব্রত মন্ডলের কাছে 'ত্রাস' হয়েছিলেন রাজ্য জমিয়ত উলেমা হিন্দের নেতা মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। মাখড়া সহ ইলামবাজারের বিভিন্ন অংশে শাসক বিরোধী সংগঠন গড়ে আলোচিত নাম হয়ে উঠেছিলেন সিদ্দিকুল্লাহ। সেইথেকে অনুব্রত বনাম সিদ্দিকুল্লাহের ঠান্ডা লড়াই  শুরু। গত  বিধানসভা নির্বাচনে একশো আসনে প্রার্থী দাঁড় করাবার ঘোষণায় সিদ্দিকুল্লাহ কে নবান্নে মমতার কাছাকাছি আনে বলে মত রাজনীতি কারবারিদের। অনুব্রতর মন্ডলের আগাম ঘোষণা সত্বেও তৃনমূল নেত্রী মমতা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে মঙ্গলকোটে দলীয় প্রতীক দেন। প্রসঙ্গত ২০১১ এর পরাজিত তৃনমূল প্রার্থী অপূর্ব চৌধুরীই ছিলেন অনুব্রতর ২০১৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষিত প্রার্থী। কেস্টর অনুরোধ থাকা সত্বেও নাছোড়বান্দা সিদ্দিকুল্লাহ মঙ্গলকোটের রাজনৈতিক বলয়ে নেমে পড়েন। আর এতেই রাজনীতিতে সম্মুখসমরে এসে পড়ে কেস্ট বনাম সিদ্দিকুল্লাহ। ২০১৪ সালের লোকসভায় ২৪ হাজারের বেশি লিড থাকা সত্বেও সিদ্দিকুল্লাহ জেতে ১২ হাজার ভোটে। যে দলীয় অন্তর্ঘাতে ২০১১ সালে বিধানসভায় অপূর্ব চৌধুরী হেরেছিলেন মাত্র ১২৭ ভোটে। অনুরুপ দলীয় অন্তর্ঘাতে সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জেতার ব্যবধান কমলো ১২ হাজারের বেশি!  এহেন দলের স্থানীয় নেতাদের অবস্থানে স্বতন্ত্র বলয় গড়ার চেস্টা চালালেন সিদ্দিকুল্লাহ৷ কেস্টর সাথে সাপেনেউলে সম্পক থাকা তৎকালীন বোলপুর সাংসদ  অনুপম হাঁজরা কে নিয়ে বড় বড় সভা করতে লাগলেন। অপরদিকে রাজনীতিতে নিস্ব হওয়া ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী কে স্থানীয় থানার 'নাগরিক কমিটির ' সম্পাদক এবং ব্লক প্রশাসনের আইসিডিএস নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়।সেইসাথে পুলিশি নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়। যদিও পুলিশের তরফে জানানো হয় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার জেরে মঙ্গলকোটে বেশকিছু নেতা কে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছে। তবে উক্ত মামলা গুলির এফআইআর, চার্জশিট, ফাইনাল রিপোর্ট সহ সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখলে বোঝা যাবে পুলিশ কায়দা করে কেমন ভাবে সাজিয়েছে মামলা গুলি?  এইরুপ দাবি বিরোধী দলগুলির৷২০১৬ সালে বিধানসভার নির্বাচনের পর আড়াই বছরের মধ্যে মঙ্গলকোটের রাজনীতিতে ক্রমশ কোনঠাসা হয়েছেন সিদ্দিকুল্লাহ। রাজ্যের মন্ত্রী বলে নয়, নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে ঘুরাফেরা বন্ধ করে দেয় স্থানীয় ক্ষমতাসীন লবি। পঞ্চায়েত থেকে ব্লক অফিস, থানা থেকে দলীয় অফিস সবজায়গায় 'নো এন্ট্রি' সিদ্দিকুল্লাহের। কালো পতাকা দেখেছেন, কখনো অশ্রাব্য গালি শুনেছেন, আবার ঝাটা জুতোও দেখেছেন দলেরই একাংশের সৌজন্যে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ থাকা সত্বেও কোন মনোনয়ন পত্র তুলতে পারেনি বিধায়ক শিবির। কুড়ির কাছাকাছি অনুগামী গাঁজার মামলা খেয়েছে বলে অভিযোগ। বিধায়কের একদা অফিস বেশ কয়েকবার সশস্ত্র হামলাও হয়েছে। অভিযোগ অনুব্রত অনুগামীরা স্থানীয় পুলিশের সাথে সেটিং ফিটিংস করে সব ব্যবস্থা করেছিল। যদিও পুলিশ ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন লবি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশসুপার অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছে সিদ্দিকুল্লাহর জমিয়ত উলেমা হিন্দের জেলা নেতারা। এখনো দুই শিবিরের দুই মুখ অনুব্রত মন্ডল এবং সিদ্দিকুল্লাহের মতভেদ কমেনি। উল্টে বেড়েছে বহুগুণ। লোকসভা নির্বাচনে সমগ্র বীরভূম জেলা সহ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা এলাকায় কোন প্রচারের মঞ্চে সিদ্দিকুল্লাহ কে তৃনমূলের মঞ্চে পাওয়া যায়নি। গতকাল অর্থাৎ ২০ এপ্রিল কাটোয়াতেও তৃনমূলের নাম্বার টু খ্যাত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলেও সেখানে দেখা যায়নি সিদ্দিকুল্লাহ কে। এমনকি সিদ্দিকুল্লাহ এর নির্বাচনী ক্ষেত্র মঙ্গলকোটেও প্রচারে ব্রাত সিদ্দিকুল্লাহ। অর্থাৎ কেস্টর গড়ে অচ্ছুৎ হয়েই রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বঙ্গ জমিয়ত উলেমা হিন্দের সর্বময় কর্তা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী।                                                                                                                                                                                                                                                                                        

মঙ্গলকোটে এসইউসি বিজেপির থেকেও এগিয়ে



মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

রাজনৈতিক শক্তি বিন্যাসে মঙ্গলকোটে চতুর্থস্থানে রয়েছে বিজেপি। যদিও এই পরিসংখ্যান টি বিগত ভোট গুলির নির্বাচনী ফলাফলের ভিক্তিতে। ২০১৮ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই বিধানসভা এলাকাটি বিরোধীশুন্য হয়েছিল অবশ্য । মঙ্গলকোটের রাজনৈতিক বলয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে তৃনমূল, দ্বিতীয় তে সিপিএম, তৃতীয়তে কংগ্রেস এবং চতুর্থ স্থানে বিজেপি দলটি৷ নিন্দুকেরা বলেন - বিজেপির থেকে এসইউসির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশি দেখা যায় মঙ্গলকোটের বুকে। নিয়মিত প্রচার চালায় এসইউসি দলের নেতা কর্মীরা।    ২০১১ সালে বিধানসভার পূর্বে অতি বামদুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল এই মঙ্গলকোট। নিখিলানন্দ সরের মত  সিপিএম সাংসদ,   অঞ্জন মুখার্জির মত আরএসপির নেতা গড়েছে এই মঙ্গলকোট। সেইসাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তৃণমূল গড়া সাংসদ সেই অজিত পাঁজার পৈতৃক ভূমি হল এই  মঙ্গলকোট । বামেদের এতই প্রভাব ছিল  মঙ্গলকোটে যে, ২০১১ সালে রাজ্যজুড়ে পরিবর্তনের সুনামি আছড়ে পড়লেও মঙ্গলকোট আসন টি পেয়েছিল সিপিএম। এমনকি ২০১৪ সালের লোকসভায় ২৪ হাজারে পিছিয়ে ছিল এবং ২০১৬ এর বিধানসভায় মাত্র ১২ হাজারে পিছিয়ে ছিল সিপিএম। তাই মঙ্গলকোটে পদ্মফুল কাস্তে হাতুড়ি তারায় নড়বড়ে হয়েছে । জাতীয় কংগ্রেস ২০১৩ এর পঞ্চায়েত ভোটের আগে পর্যন্ত যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল এখানে । বিশেষত মঙ্গলকোটের কৈচর ২, শিমুলিয়া ২, ঝিলু ২, ভাল্যগ্রাম, মাঝীগ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন ছিল তারা। তাই মঙ্গলকোটের মাটিতে তৃনমূল  বিরোধী হিসাবে সিপিএম কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে বিজেপির তুলনায় । সেখানে মঙ্গলকোটের নিগন, কৈচর ১, পালিগ্রাম, চাণক এলাকার হাতেগোনা কয়েকটি গ্রামে বিজেপির কর্মী সমর্থক রয়েছে। তাও প্রকাশ্যে না, মিটিং মিছিল তে দশ কুড়িজনের লোক বের হয় বিজেপির তরফে। সেভাবে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিজেপি কে গনমুখি আন্দ্রোলনে দেখা যায়নি মঙ্গলকোটের বুকে  । আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মঙ্গলকোটের ১৮০ টি গ্রামের মধ্যে ২ থেকে ৩ টি গ্রামে বেশকিছু বাড়ীতে দেওয়াল লিখন করতে পেরেছে বিজেপি। এই আসনের প্রার্থী অধ্যাপক রামপ্রসাদ দাস ( বোলপুর আসন)  ইতিমধ্যেই মঙ্গলকোটে দশের বেশিবার এসেছেন। কৈচর হাটতলায় সভাতে গোটা পঞ্চাশ লোক হয়েছিল। আবার পদযাত্রায় চার থেকে পাঁচজন হচ্ছে। সেখানে সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম বহুগুণ এগিয়ে রয়েছেন । স্থানীয় বিজেপি নেতারা অবশ্য প্রতিস্টান বিরোধী হাওয়ায় বিশ্বাসী, কোন রাজনৈতিক  ধারাবাহিকতায় সক্রিয়  না হয়েই! এমনকি মঙ্গলকোটে সিংহভাগ বুথে নির্বাচনী এজেন্ট খুঁজে পাচ্ছেনা বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে প্রায় বুথে এজেন্ট ঠিকঠাক করে ফেলেছে সিপিএম। মঙ্গলকোটে কৃষির ক্ষতিপূরণ নিয়ে কিংবা স্থানীয় থানার মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলিতে উচ্চবাচ্য করেনি বিজেপি। তাই শাসকদল  বিরোধী ভোটব্যাংক বিজেপির অনুকূলে যাওয়া অনিশ্চিত। আবার 'সংখ্যালঘু' ব্লক হিসাবে ঘোষিত মঙ্গলকোটে বিজেপির সংখ্যালঘু মুখ নেতা কর্মী  নেই বললেই চলে । উল্টে ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল অবধি বিধায়ক থাকা শাহজাহান চৌধুরী বিধায়ক তহবিলে সংখ্যালঘু উন্নয়নে যেমন ভূমিকা নিয়েছেন। ঠিক তেমনি এমএসডিপি অনুদানে কোটি টাকার শোলাহাব দুর্নীতি নিয়ে বিধানসভায় বারবার সরব হয়েছেন। আবার মুখ্যমন্ত্রী কে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি। তাই বিজেপির সারাবছর নিস্ক্রিয়তা যেমন মঙ্গলকোটে প্রভাব পড়বে, অপরদিকে সিপিএমের যথাযথ শাসকদল বিরোধী হিসাবে কার্যকলাপ লোকসভায় প্রভাব ফেলবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।                                                                                                        

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER