মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
জমে থাকা পাহাড় সমান মামলার চাপ কমাতে সুপ্রিম কোর্ট 'জাতীয় লোক আদালত' পরিষেবা চালু করে থাকে। আগে মাসিক পর্যায়ে বিশিষ্ট স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ দের নিয়ে আদালতের বিচারকেরা আইনজীবীদের মাধ্যমে মামলার দ্রুত নিস্পত্তি করতেন। এখন সেটা ত্রৈমাসিক হিসাবে প্রতিটি আদালতের এজলাসে বসে জাতীয় লোক আদালত। কাটোয়া এবং কালনা মহকুমা আদালতে গতকাল বসেছিল এই বিচার বিভাগের জনস্বার্থ প্রয়াসটি। কালনা মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ( ফুল) শ্রী তপন কুমার মন্ডল মাত্র ২৪ ঘন্টাতেই ৭৩ টি মামলার নিস্পত্তি সারলেন।অপরদিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্রাক) শ্রী রাজেশ চক্রবর্তী ১৭ টি মামলার নিস্পত্তি ঘটালেন। সেইসাথে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা উঠে এলো বিভিন্ন মামলার বিশেষত ব্যাংক / অনুমোদিত ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলির অনাদায়ী বন্ধকী লোন থেকে। কালনা মহকুমা আদালতে 'আইনী পরিষেবা কেন্দ্র' এর মহকুমা সম্পাদক রঞ্জিত মজুমদার বলেন - " জাতীয় লোক আদালতে মূলত ব্যাংক, বিদ্যুত, টাইটেল স্যুট, নন জিআর কেস গুলি দ্রুত নিস্পত্তি করা হয়।" জানা গেছে যেসব গ্রাহকেরা ব্যাংক অথবা ঋণ দেওয়া সংস্থা থেকে জমি /জায়গা /সোনা প্রভৃতি দেখিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন। অথচ দীর্ঘদিন পরিশোধ করছেন না কিংবা সূদ দিতে পারছেন না। তাদের কে সাধ্যমতো আর্থিক পরিমাণ কমিয়ে সেইসব ঋণ গুলি ডিসপোজাল করা হয় জাতীয় লোক আদালতের মাধ্যমে। এছাড়া মহকুমার বিভিন্ন থানায় জুয়া, ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে অর্থ্যাৎ নন জিআর (থানায় জামিন মেলে) কেসগুলি নিস্পত্তি করা হয় এখানে। সিভিল আদালতে টাইটেল স্যুট মামলাগুলি বাদী ও বিবাদী পক্ষের উভয় সম্মতিতে মামলার নিস্পত্তি করেন জাতীয় লোক আদালতে বিচারকেরা।কালনা মহকুমা আদালতের এডিজে (ফুল) শ্রী তপন কুমার মন্ডল যেভাবে মাত্র একদিনে ৭৩ টি মামলার নিস্পত্তি সারলেন। তাতে আইনজীবীদের বড় অংশ তাঁর এহেন অবস্থানে খুব খুশি। কলকাতা হাইকোর্টে বর্ষীয়ান আইনজীবী আনসার মন্ডল মহাশয় বলেন - সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় লোক আদালতের মাধ্যমে যে লক্ষমাত্রা নিয়ে মামলার পাহাড় কমাতে উদ্যোগী, তাতে কালনা মহকুমা আদালতের রায়দানে অবস্থান সেই লক্ষমাত্রা কে গতিশীল রাখলো বলা যায়।