মোল্লা জসিমউদ্দিন
মঙ্গলকোটে একশো আশি গ্রামে হাজারের কাছাকাছি রয়েছে পানীয় জলের জন্য সিলিন্ডার কল। মূলত গ্রামগুলির প্রধান পানীয়জলের উৎস এই সিলিন্ডার গুলি।বেশিরভাগ অকেজো থাকায় ভীষন সমস্যায় এলাকার বাসিন্দারা।ব্লক প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে বারবার জানিয়েই কল মেরামতির কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা বলে অভিযোগ। উন্নত প্রযুক্তিতে করা জার্মান কলগুলিতে জলের ধারা সরু।এইবিধ জার্মান কল একবার খারাপ হলে পুনরায় মেরামতি অসম্ভব বলে দাবি কলমিস্ত্রিদের।মঙ্গলকোটের পনেরোটি অঞ্চলের মধ্যে তিন থেকে চারটি অঞ্চলের একাংশ এলাকাবাসী জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের তিনবেলা জল সরাবরাহের সুবিধা পেতেন।বর্তমানে সেই 'টাইম কল' এর পরিষেবা একপ্রকার বন্ধ বলা যায়।মাঝীগ্রাম কেন্দ্রের দুটি পাম্প প্রায় খারাপ থাকে। অন্যদিকে সদর মঙ্গলকোটে নুতনহাটে এক কোটির কাছাকাছি অনুদানে ঝা চকচকে জলাধার প্রকল্প নির্মান অনেকদিন পুর্বে শেষ হলেও চালু হয়নি।মূলত পুরানো পাইপলাইন এর আধুনিকরণের কাজ না হওয়ায় এই বিপত্তি।কবে চালু হবে? তার কোন উত্তর মেলেনি প্রশাসন সুত্রে।টাইম কলগুলির ট্যাপ না থাকায় বেশিরভাগ সময় জল অপচয় ঘটে।তাহলে দেখা যাচ্ছে গ্রামীনস্তরের সিলিন্ডার কল আবার কোথাও জার্মাল কল গুলির ষাটভাগের বেশি অকেজো হওয়ার দরুন পানীয়জল পেতে ভীষন সমস্যায় স্থানীয়রা।অপেক্ষাকৃত মফস্বল এলাকায় তিনটি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পাম্প হাউসের মধ্যে একটিতে জলসরবরাহ বন্ধ আছে।মঙ্গলকোটের এহেন পানীয়জল সংকট মেটাতে বিশেষজ্ঞ মহলে দুধরনের প্রকল্প দ্রুত নেওয়ার দাবি উঠছে।দশ বছর পুর্বে ভূগভস্ত জলস্তর পাওয়া যেত ৫৫ থেকে ৬০ ফুটের মধ্যে।বর্তমানে সেটা ২২০ থেকে ২৩০ ফুটের নিচে কমপক্ষে দাঁড়িয়েছে। সুইটস সংস্থা মঙ্গলকোটের ভুগর্ভস্ত জলস্তর কে 'গ্রে' অর্থাৎ বিপদজনক অবস্থায় পেয়েছে।তাই নুতন করে চাষাবাদের জন্য সাবমারসেবল অনুমোদন প্রায় বন্ধ আছে মঙ্গলকোটে।বেসরকারিভাবে জানা গেছে গত দশ বছরের মঙ্গলকোটে চাষাবাদের জন্য তিনহাজারের বেশি সাবমারসেবল চালু রয়েছে।তিনটি নদী থাকা সত্বেও নিয়মিত ভুগর্ভস্ত মিস্ট পানীয়জল শোষন হচ্ছে কৃষিকাজে।সেখানে কুনুর - ব্রাক্ষ্মনী- অজয় নদীতে চেকড্যাম গড়লে পানীয়জল শোষন অনেকটাই কমবে।ইটভাঁটা, গৃহস্তকাজে পাঁচ হাজার মিনি সাবমারসেবল চলছে।সেখানে বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে - বর্ষাকালে 'আন্ডার ওয়াটার রিচার্জ সিস্টেম ' চালু করতে পারলে বর্ষার জল অনেকাংশ পুনরায় মাটির নিচে পাঠালে ভূগর্ভস্থ জলস্তর উন্নত হবে মঙ্গলকোটের বুকে।এছাড়া অজয়ের মত সারাবছর জল থাকা নদীতে জলশোধন প্রকল্প নিলে মাটির নিচে জলরাশি লুট কমবে।যেভাবে কাটোয়া পুরসভা ভাগীরথী নদীর উপর এইরুপ জলশোধন প্রকল্প নিয়ে কাটোয়া শহরবাসীর পানীয়জল সংকট মেটাতে সক্ষম হয়েছে।ঠিক সেইভাবেই অজয় কুনুর নদীর সঙ্গমস্থল নুতনহাট সংলগ্ন বড়বাজার গ্রাম এলাকায় নদী উপকূলে এই প্রকল্প যথাযথ বলে বিশেষজ্ঞ মহলে দাবি উঠেছে।'গ্রে' পর্যায় ভুক্ত মঙ্গলকোটে কোন আইনে তিনটি বেসরকারি সংস্থা নিয়মিত পানীয়জলের কারখানা করেছে, তা নিয়েও উঠেছে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। কৈচর, ইছাবটগ্রাম এবং নুতনহাটে মিনারেল ওয়াটার প্রকল্পগুলি ঘিরে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে।এখন দেখার প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় মঙ্গলকোটের ভুগর্ভস্ত জলস্তর বৃদ্ধিতে?