মোল্লা জসিমউদ্দিন
রাজ্যে পালাবদলের সপ্তম বর্ষপূর্তিতেও পুর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট এলাকা আগুনের গোলার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে।হিংস্বার বিরাম নেই এখানে।খুন রাহাজানি প্রতিনিয়ত লেগেই আছে।রোজকার বোমাবাজি জলভাত যেন মঙ্গলকোটবাসির কাছে। সম্প্রতি মঙ্গলকোটের বকুলিয়ায় বোমায় হত প্রশান্ত ধীবরে ঘটনা, সেই ট্রাডিশনের অংশ মাত্র।বামজমানা পরবর্তীতে মঙ্গলকোটের আজাদ মুন্সি সহ দশের বেশি রাজনৈতিক খুন হয়েছে।অতীতে সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর মত বহর দেখা যায় তৃণমূল শিবিরেও।কেন পরিবর্তন হয়নি এই রাহাজানিমুলক পরিস্থিতির? বারুদের স্তুপের উপর কেনই বা দাঁড়িয়ে মঙ্গলকোট? ২০১১ সালের পুর্বে অর্থাৎ ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল অবধি মঙ্গলকোটের রাশ ছিল সিপিএম নেতা ডাবলু আনসারীর হাতে।একাধারে বেনামে অজয় নদের দশ থেকে বারোটি বালিঘাটের কারবারি, থানার বকলমে 'ডাকমাস্টার' ডাবলু শুধু মঙ্গলকোট নয় সীমান্তবর্তী নানুর, কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম,ভাতার প্রভৃতি এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী পাঠাবার ওস্তাদ ছিলেন সেসময়। অভিযোগ পুলিশের কালিপুজোর যাত্রা থেকে খেলাধুলারর টুর্নামেন্ট আয়োজন। সবই দেখত ডাবলু।তাই বিপুল বেআইনী অস্ত্র সমৃদ্ধ বাহিনীর প্রতি পুলিশ নিষ্ক্রিয়তা দেখাতো বলে বিরোধী শিবিরে দাবি উঠত।রাজ্যের পালাবদলের পর ডাবলু বাবলু আনসারী মঙ্গলকোটের রাজনীতিতে বিদায় হলেও, তাদের সশস্ত্র বাহিনীর সিংহভাগ চলে আসে তৃনমূলের দখলে।এই বাহিনী পোষবার এবং পুলিশের একাংশ কে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবার আয়ের মূল উৎস হচ্ছে অজয় নদীর বেআইনী বালিঘাট গুলি।কোগ্রামের মত বালিঘাটে প্রতিদিন আয় যেখানে সর্বনিম্ন কয়েক লক্ষ টাকা।এই বিপুল আয়ের ভাগাভাগি নিয়ে চলে শাসক শিবিরের অন্তদ্বন্ধ।যার পরিণতি গোলাগুলি, বোমাবাজি। পুলিশের একাংশের মদতে বেপরোয়া হয়ে উঠে শাসক দলের মদতপুস্ট বালিমাফিয়ারা।একে অপরের দখল বেদখল অভিযানে মজুত থাকে অবৈধ অস্ত্রভাণ্ডার। অজয়ের বত্রিশ কিমি নদীপথে থাকা এপারে ওপারে মিলিয়ে পঞ্চাশের বেশি বালিঘাটে পুর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলাপুলিশ একযোগে অভিযান চালালে বিপুল বেআইনী অস্ত্র মিলতে পারে।অজয়ের উপকূলে থাকা লাখুরিয়া কল্যানপুর কোগ্রাম বকুলিয়া প্রভৃতি গ্রাম গুলি বারুদের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে আছে।তাই বকুলিয়ার প্রশান্ত ধীবর মারা যায় মজুত বোমা থেকে।মঙ্গলকোটের রাজনীতিতে অজয়ের বালিঘাট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তা পঞ্চায়েত সমিতির কিছু কর্মকর্তা,বেশ কিছু গ্রামপ্রধান - উপপ্রধানের সরাসরি বালিখাদ চালানো নিয়ে প্রশ্ন উঠে।থানায় এইরুপ নেতাদের অহরহ যাতায়াত দেখে স্থানীয়রা অনেকেই আতংকিত থাকে।পুলিশের নানান অনুষ্ঠানে এদের ঝলমলে উপস্থিতি দেখা যায়।স্থানীয়রা অনেকেই এদের দৌরাত্ম্যতে ভয়ে সিটিয়ে থাকে।বারুদের স্তুপের উপর কেমন দাঁড়িয়ে আছে মঙ্গলকোট, তা পুলিশের দেওয়া সর্বক্ষণ নিরাপত্তারক্ষী পাওয়া ব্লক তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তা রাখার মেয়াদকাল বাড়ানো বিষয়টি সেই বারুদের স্তুপকে জানান দেয় বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।