সেখ জাহির আব্বাস
মারণ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী মাস্ক আবিষ্কার স্কুল পড়ুয়া দিগন্তিকার, বিজ্ঞানী মহলে আলোড়ন।। নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ করে মাস্ক নিয়ে যখন চলছে কালোবাজারি। ঠিক সেই সময় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী অভিনব এক মাস্ক বানিয়ে ফেলল পূর্ব বর্ধমানের মেমারী বিদ্যাসাগরস্মৃতি বিদ্যামন্দির – শাখা ২ এর একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া দিগন্তিকা বোস। ইতিমধ্যেই তাঁর এই মাস্ক ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক কোভিড-১৯ সলিউশন চ্যালেঞ্জ এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অপরদিকে ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বশাসিত সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেশন ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীরা কিভাবে দিগন্তিকার এই মাস্ক কাজ করছে তা খতিয়ে দেখা শুরু করছে। দিগন্তিকা এর পোশাকি নাম দিয়েছে 'Pure air provider and virus destroyer mask'। উল্লেখ্য, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে পরপর নতুন উদ্ভাবনের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার জয় করেছে দিগন্তিকা। এই বছরেই দিগন্তিকা তৈরী করে দুর্ঘটনারোধে চালককে নিয়ন্ত্রণ করার যন্ত্র।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,এর আগে দিগন্তিকা যে সমস্ত আবিষ্কার তথা নতুন উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সেগুলি হল – ১) সুন্দরবনে জীবিকার তাগিদে যাঁরা জঙ্গলে যান, তাঁদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ চশমা, যা ব্যবহারে মাথা বা ঘাড় না ঘুরিয়েই পিছন দিকও দেখা যায়। ২) ডাষ্ট কালেক্টিং এটাচমেন্ট ফর ড্রিল মেশিন। এটি যেকোন হ্যান্ড ড্রিল মেশিনের সামনে সহজে যুক্ত করে ড্রিল বা ফুটো করলে কোন ধুলো উড়বেনা। ধুলো একটি চেম্বারে জমা হবে। আর এজন্য কোন অতিরিক্ত বিদ্যুত খরচও হবেনা। ড্রিল মেশিন এর কম্পন থেকেই শক্তি গ্ৰহণ করে এই কাজ করতে সক্ষম। ৩) স্মার্ট সার্ভিক্যাল কলার - বারনৌলির সূত্র কাজে লাগিয়ে বিশেষ কারিগরি পদ্ধতিতে তৈরি কলার সার্ভিক্যাল স্পন্ডিলাইটিস রোগী পড়লে তাঁর প্রচণ্ড ঘাম বা অস্বস্তি হবে না। বস্তুত, এই সমস্ত আবিষ্কারের পর চলতি সময়ে করোনা নিয়ে গোটা বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক আর মৃত্যু মিছিলের মাঝেই দিগন্তিকা এই বিশেষ মাস্ক তৈরী করায় রীতিমত হৈ চৈ শুরু হয়ে গেছে। এই মাস্কের জন্য খরচ পড়বে মাত্র ২০০ টাকা।
নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বঙ্গকন্যার নয়া আবিষ্কার, গবেষণায় নতুন দিক খুলে দেবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীমহল। জানা গেছে,এই বিশেষ ধরনের মাস্ক, যা পরে প্রশ্বাস নিলে ধূলিকণা ও ভাইরাস মুক্ত বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করবে। অপরদিকে নভেল করোনা পজেটিভ কোনো ব্যক্তি পরলে তাঁর ত্যাগ করা নিঃশ্বাস ,হাঁচি , কাশি থেকে নির্গত ড্রপলেট এর মধ্যে থাকা করোনা ভাইরাস বা অন্য কোন ভাইরাসকে প্রতিনিয়ত নষ্ট করে দেবার ক্ষমতা রয়েছে এই মাস্কের। ফলে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে যাবে। এই মাস্কের দুটি অংশ। প্রথম অংশে রয়েছে দুটি একমুখী ভাল্ব এবং দ্বিতীয় অংশে রয়েছে দুটি আধার। প্রথমে প্রশ্বাস গ্ৰহণের বাতাস থেকে ধূলিকণা, জলকণাকে আটকে দেয় ও ভাইরাসের লিপিড প্রোটিনকে ধ্বংস করে বিশুদ্ধ বাতাস একমুখী ভাল্বের মধ্যে দিয়ে মাস্কের ভিতর দিয়ে ফুসফুসে যায়। আবার নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময় অন্য একটি একমুখী ভাল্বের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আর একটি আধারের ভিতরে প্রবেশ করে।ফলে ঐ আধারের মধ্যে বিশেষ প্রযুক্তি সাহায্য মাত্র কয়েক সেকেন্ডে ভাইরাসের লিপিড প্রোটিনের স্তরটি ভেঙে দেয়।তখন ভাইরাসটি নষ্ট হয়ে গিয়ে আর সংক্রমণ ঘটানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই, নভেল করোনা পজেটিভ ব্যক্তি এই মাস্ক পরলে তার থেকে নির্গত ড্রপলেটে আর ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকবে না। তবে দিগন্তিকার বাবা সুদীপ্তবাবু জানিয়েছেন, যেহেতু এটি এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে।তাই এখন দিগন্তিকার এই আবিষ্কার সম্পর্কে প্রকাশ্যে বেশি কিছু জানতে জানাতে চাই না