মোল্লা জসিমউদ্দিন
আজ বিকেলে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে 'মিনি নবান্ন ' বসতে চলেছে।তাতে মুখ্যমন্ত্রী একঝাক মন্ত্রীপরিষদ সহ রাজ্যের পুলিশ - প্রশাসনের কর্তাদের আনছেন জেলার উন্নয়ন পরখ করতে।গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রধান এজেন্ডা হল উন্নয়নকাজ - সরকারী পরিষেবা প্রদান বিষয়গুলি।তাই এগুলি কে সামনে রেখেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই প্রথম জেলার সদরে না করে 'জঙ্গলমহল' খ্যাত আউশগ্রাম কে বেছে নেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক সভা করবার জন্য।ইতিমধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা 'নির্মল জেলা' র শিরোপা আদায় করেছে।তবে সেটি খাতাকলমে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বাস্তবিক ক্ষেত্রে বাড়ী বাড়ী শৌচালয় যেমন হয়নি, ঠিক তেমনি ব্যস্ততম সড়কমোড় গুলিতে সূলভমূল্যে শৌচাগার গড়ে উঠেনি।নোংরা আবর্জনা সংগ্রহ করতে স্থানীয় পঞ্চায়েত গুলিতে গাড়ীর পরিষেবা চালু পর্যন্ত হয়নি।উল্টে নির্মল ব্লক মঙ্গলকোটে নূতনহাটের লোচনদাস সেতুর নীচে বর্জ নিষ্কাসন প্রকল্পের ঘরে এলাকার মানুষজন 'গোয়ালঘর ' বানিয়েছেন। সর্বোপরি নির্মলতা আনতে গেলে যে জলের প্রয়োজন, সেই জলের উৎস হিসাবে অধিকাংশ সরকারী টিউবওয়েল গুলি কয়েকবছর ধরে বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।মেরামতির কোন উদ্যোগ নেই ব্লক প্রশাসনের।প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কিংবা বাংলা আবাস যোজনায় ঘর বিলিতে চরম দুর্নীতি ঘটছে সারা জেলায়।সেখানে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা স্থানীয় গ্রামের শাসকদলের নেতাদের না দিলে পাচ্ছেনা অনেকেই।উপভোক্তাদের বড় অংশ পঞ্চায়েতের অনলাইন কর্মীদের দ্বারা ভুয়ো জায়গায় অন্যের ঘর, কিংবা একই ঘর নানান ভাবে ফটো করে দুর্নীতি চলছে। বিশেষত মঙ্গলকোটে দোতলা তিনতলা বাড়ীর মালিকরা এই প্রকল্পের টাকা লুট করছেন বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছে।বিধায়ক কিংবা সাংসদ তহবিলের অনুদান জেলার উন্নয়নে অনেকাংশ নির্ভরশীল। সেখানে শাসকদলের গোষ্ঠী বিবাদের জন্য বোলপুর সাংসদ অনুপম হাঁজরার সাংসদ তহবিলের অনুদান মঙ্গলকোট, আউশগ্রামে খরচ হচ্ছেনা।এস্টেমেট করে অনুদান দেওয়ার পরেও অনুদান ফিরে গেছে।যে ব্লকে মুখ্যমন্ত্রী আজ প্রশাসনিক সভা করছেন। সেটিও পড়ছে বোলপুর সাংসদের অধীনস্ত বিধানসভা হিসাবে।এখানে অনুব্রত বনাম অনুপমের দ্বন্ধে বন্ধ সাংসদ তহবিলের উন্নয়নকাজ। এমনকি রাজ্যের মন্ত্রী হয়েও সিদ্দিকুল্লাহ তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্র মঙ্গলকোটে বিধায়ক তহবিলের কাজ করতে পারছেন না।স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক, থানা, এমনকি কোন পঞ্চায়েতেও উন্নয়ন মূলক সভায় ডাক পাননা।বিধায়ক তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত অনুদানে ব্লক হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের ঘর নির্মাণ করতে হয় পূর্ত বিভাগ কে দিয়ে।সাধারণত পঞ্চায়েত সমিতি করে থাকে।পূর্ব বর্ধমান জেলায় উন্নয়নকাজে স্থানীয় বিধায়ক - সাংসদদের 'বয়কট' চলছে আউশগ্রাম মঙ্গলকোটের মত ব্লক গুলিতে।তাই মুখ্যমন্ত্রী আজ প্রশাসনিক সভায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে উন্নয়ন - সরকারী পরিষেবা প্রদানে এহেন গোষ্ঠী বিবাদ নিরসনে কি ভূমিকা নেন, তার দিকে তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল।