আমিরুল ইসলাম
বৃহস্পতিবার, মে ২১, ২০২০
আমফানে মাথায় হাত ভাতারর চাষিদের
আত্মনির্ভর ভারত - কাজি একরাম আলী
।।আত্মনির্ভর ভারত।।
কাজি একরাম আলী
আমাদের সঙ্গে আছে আমাদের সরকার ।
প্যাকেজ লক্ষ কোটি পার ।
সবার সব কিছুর সুরাহা হবে,
সহজ সরল সুদে ঋণ পাবে।
সবার প্রথমে শ্রমিকশ্রেণী,
নিয়ে ফেলুন ঋণ।
চাল ডাল নুন তেল সবজি,
মনোহারি ওষুধ পালা,
যা যা প্রয়োজন কিনে নিন।
মধ্যবিত্ত ঋণ নিন,
ইএমআই কিস্তি ধার,
সব মিটিয়ে ফেলুন।
উচ্চবিত্ত শিল্পপতি ব্যওসাদার,
ঋণ নিন,
আপনি জানেন, ঋণটার,
উপযুক্ত ব্যবহার,
আপনার অভিজ্ঞতা অপার।
দেশ হবে আত্মনির্ভর,
আমাদের পাশে আমাদের সরকার ।
বুধবার, মে ২০, ২০২০
খাদ্য সামগ্রী বিলিতে সারাবাংলা রাইটার্স ফোরাম
শ্যামল রায়
কবি-সাহিত্যিকদের নিজস্ব সংগঠন বাংলা রাইটাস ফোরামের উদ্যোগে অসহায় সম্বলহীন গরিবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হলো।
বুধবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় কে উপেক্ষা করে দেড় শতাধিক অসহায় গরীব মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এর শুভ সূচনা করেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিজন দেবনাথ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অশোক অধিকারী ও সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কবি ও সাংবাদিক শ্যামল রায় সহ অনেকে।
নবদ্বীপ পৌরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফুল্ল নগর ভোরের খবর ভবন শ্যামল রায়ের বাড়ি থেকে অসহায় গরীবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার কাজ হয়। অসহায় গরীবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়ে কাউন্সিলার বিজন দেবনাথ জানান যে করোনাভাইরাস এর জেরে চলছে লকডাউন। এই এলাকার অধিকাংশ পরিবারের লোকজন প্যান্ডেল শ্রমিক। ভিন রাজ্যে আটকে পড়ার কারণে এই সকল পরিবারের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। স্থানীয় সাংবাদিক শ্যামল রায় যে ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যতটুকু সমাজসেবামূলক কাজ করছে এটা নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে। কিছু মানুষ এই ধরনের কাজ করেন বলে বহু গরিব মানুষ উপকৃত হন। চতুর্থবারের জন্য এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে জিরে হলুদ সোয়াবিন লবণ তেল সাবান ও মুড়ি প্যাকেট করে তুলে দেওয়া হয় । এলাকার মানুষ খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ভীষণ খুশি বলে জানা গিয়েছে। অর্জুন বিশ্বাস প্রাণ বল্লব দেবনাথ নিরোধ শীল রাজকুমার রায় মিঠু রায় ,কবিতা মণ্ডল বলেন লকডাউন এরমধ্যে চরম অভাব এর মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে উপকৃত হলাম।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকা সত্বেও রক্তদান শিবির ভাতারে
আমিরুল ইসলাম
প্রাকৃতিক বিপর্যয় সত্বেও ভাতারে রক্তদান শিবির তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশে বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আজ প্রাকৃতিক বিপর্যয় কে উপেক্ষা করে রক্তদান শিবির।
বর্তমানে কোরোনা ভাইরাসের জেরে ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে রক্তের টান দেখা দিয়েছে ।সেই রক্তের টান দেখা দিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস।
ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মনোয়ার ইসলাম জানান, সকাল থেকেই প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভাতার ব্লক জুড়ে।তার সত্বেও সেই ঝড়-বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মীরা এসেছেন আমাদের এই রক্তদান শিবিরে। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী দের কে অসংখ্য ধন্যবাদ। মোট 40 জন রক্তদাতা রক্ত দেবেন আজ ।আমাদের 100 জন কর্মী হাজির হয়েছেন রক্ত দিতে। কিন্তু লোকজনের জন্য 40 জনের বেশি রক্ত নিতে পারবেন না বর্ধমান মেডিকেল কলেজ। এই রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে বামুনারা হাইস্কুলে।
এই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত রয়েছেন ভাতার বিধানসভার বিধায়ক সুভাষ মন্ডল, ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশীষ ব্যানার্জি, ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মনোয়ার ইসলাম, বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরেশ নাথ মুখার্জী।
সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় অপেক্ষা করে রক্তদান শিবির ।
আমফানে রাত জেগে তারকেশ্বরের সন্তোষপুর
সুভাষ মজুমদার
পাশে আছি বার্তায় সক্রিয় গলসি ব্লক তৃণমূল সভাপতি
জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
গত ১৯ শে মে পূর্ব বর্ধমানের গলসী ১নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জাকির হোসেনের উদ্যোগে "পাশে আছি" সংস্থার পক্ষ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রথম পর্বে লোয়া-রামগোপালপুর অঞ্চলের ১৫০০ পরিবারের হাতে চাল, আলু, পেঁয়াজ, কুমড়ো, মুড়ি, বাঁধাকপি, মুসুরী ডাল, তেল সহ বিভিন্ন নিত্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সেখ খোকন, ব্লকের এস.সি, এস.টি ও ও.বি.সি সেলের সভাপতি বুজরুল শাহ, লোয়া- রামগোপালপুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য ও সদস্যারা।
পরে জাকির হোসেন বলেন - দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর নির্দেশে লক ডাউন শুরুর পর থেকেই আমরা বারবার দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এমনকি যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ডি.ভি.সির ক্যানেল রাস্তা ধরে হেঁটে নিজেদের গন্তব্যস্থলের দিকে যাচ্ছে আমরা তাদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। আগামী দিনেও আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। দিদির রাজ্যে আমাদের এলাকার একজন মানুষও যাতে অভুক্ত না থাকে সেব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। তিনি এলাকাবাসীদের লকডাউন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেন।
মঙ্গলবার, মে ১৯, ২০২০
বিয়ের দিনেই করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান
জুলফিকার আলি
আমফান ঝড় মোকাবিলা নিয়ে স্মারকলিপি
জুলফিকার আলি
তারকেশ্বরে বিজেপির রক্তদান শিবির
সুভাষ মজুমদার
তারকেশ্বর বিজেপি পৌর মন্ডলের উদ্দ্যোগে রক্তদান শিবির।
এদিন তারকেশ্বর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বিজেপি পৌর মন্ডলের উদ্দ্যোগে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।প্রশাসনিক সহযোগিতায় লকডাউন মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রিশ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেন।মূলত লকডাউন পরিস্থিতিতে রক্তের চাহিদা মেটাতে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।
রক্তদান শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান জি এস আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক রঞ্জিত চ্যাটার্জী তারকেশ্বর বিজেপি টাউনের কার্যকর্তা বাবুয়া সাউ, সহ অন্যান্য বিজেপির কার্যকর্তারা ৷ উল্লেখ্য যে রক্তদাতা দের হাতে মাস্ক সিনিটাইজার একটি পদ্মফুল এবং একটি করে আমচারা গাছ তুলে দেন বিজেপি নেতা বিমান ঘোষ।
কর্মদিশা প্রকল্পের সুচনায় বাঁকুড়া সভাধিপতি
সাধন মন্ডল
সারা রাজ্য জুড়ে কর্ম দিশা প্রকল্পের কাজ আজ শুরু হলো বাঁকুড়া জেলাতে। বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধ রায়পুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, হিড়বাঁধ, প্রভৃতি ব্লকে এই প্রকল্পের কাজের সূচনা করলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী, জেলাশাসক অরুন প্রসাদ, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি, জেলা পরিষদের সহ- সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল, রানিবাঁধ বিধানসভার বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি, রায়পুর বিধানসভার বিধায়ক বিরেন্দ্রনাথ টুডু সহ
বিশিষ্টজনেরা। রায়পুরে এই প্রকল্পের সূচনা করে সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন আমাদের বাঁকুড়া জেলার 190 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটিতে আজ থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হল এর ফলে লক্ষাধিক মানুষ কাজ পাবে কোথাও ফলের বাগান তৈরি কোথাও হাপা তৈরি কোথাও পুকুর সংস্কার আবার নতুন পুকুর তৈরি করা সহ নানান কাজ করা হবে এই প্রকল্পে। মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী বলেন এই প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে কাজ করতে পারে তার জন্য আমরা সমস্ত সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেরকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি যে পরিযায়ী শ্রমিকরা যদি কাজ চান তারা যেন সসম্মানে কাজ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। প্রতিটি জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা ও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি রায়পুরের মটগোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামশোল মৌজা রায়পুর সরকারি পলিটেকনিক কলেজে আম বাগান তৈরীর কাজ এর সূচনা করেন সভাধিপতি। তিনি নিজ হাতে মাটি কেটে এই কাজের সূচনা করেন সঙ্গে ছিলেন রায়পুর বিধানসভার বিধায়ক বীরেন্দ্রনাথ টু ডু। লকডাউন এরমধ্যে মধ্যে 100 দিনের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি শ্রমজীবী মানুষেরা।
শ্রমজীবী মুসলিমদের পাশে জয় হিন্দ বাহিনী
সেখ রতন
অনলাইন ইন্টার্নশিপ চালু করলো গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য অনলাইন ইন্টার্নশিপ চালু করল গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
রাজকুমার দাস
লকডাউনের অষ্টম সপ্তাহ চলছে। তার প্রভাব সব ক্ষেত্রেই পড়েছে। নিজেদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজের ধরনে বেশ কিছু বদল এনেছে। বাদ যায়নি শিক্ষাক্ষেত্রও। লেখাপড়ার চর্চা নিয়মিত রাখতে সেখানে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে।
জেআইএস গোষ্ঠীর গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (জিএনআইটি) পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপের ব্যাপারে তৎপর। তাই এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা পড়ুয়াদের জন্য সেই সুযোগ খুলে দিয়েছে। যাতায়াতে বিধিনিষেধ থাকায় অনলাইন ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করেছে জিএনআইটি।
জেআইএস গ্রুপের অধিকর্তা সিমরপ্রীত সিং এক প্রেস বিবৃতিতে জানান জিএনআইটি–এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য অনলাইন ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৩৭৩ জন পড়ুয়া সেই সুযোগ পাচ্ছেন। এই কাজে ‘ইন্টার্নশালা’র সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এটি ইন্টার্নশিপ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দেশের অন্যতম সেরা একটি মঞ্চ। ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ, আইন, মিডিয়া,কলার মতো ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপের সুযোগ রয়েছে। সেখান থেকে পড়ুয়ারা অর্থ উপার্জনের সুযোগও পান। ৪০ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া সেখান থেকে ইন্টার্নশিপে যুক্ত। উপার্জনের অঙ্কও নেহাত কম নয়। মাসে ৪ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। আমাদের পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে ক্যাপজেমিনি, আইটিসি ইনফোটেকের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করছেন।’
গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ড. শান্তনুকুমার সেন জানান অনলাইন ইন্টার্নশিপের সুযোগ একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটা একটা বড়সড় সুযোগ। পড়ুয়ারা বেশ উৎসাহ পেয়েছেন। এবং তাঁদের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া গিয়েছে। লকডাউনে তাঁরা শেখার পাশাপাশি বাড়িতে বসে অর্থও উপার্জন করতে পারবেন। বিল্ডিং ড্রিমস ফাউন্ডেশন, ইন্ডিয়া রিডিফাইন্ড, পিএনজি হাব, চৈতন্যম ইন্সিটিটিউট অফ ডেভলপমেন্ট, হামারা পেহচান এনজিও, কনসেপ্ট রিসার্চ মিডিয়া টেক অ্যান্ড ইনফো সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড, ননডেস্ট্রাক্টিভ টেস্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস প্রাইভেট লিমিটেড, মাদারসন অটোমোটিভ, জয় হিন্দ মোটর লিমিটেড, এলিট টেকনো গ্রুপ, অ্যাপ্টসোর্স সফ্টঅয়্যার, চ্যাম্পিয়ন ইনফোমেট্রিক্স প্রাইভেট লিমিটেড, ওয়েরোকো ইনোভেশনস অ্যান্ড সলিউশনের মতো সংস্থায় তাঁরা কাজের সুযোগ পেয়েছেন।’
সোমবার, মে ১৮, ২০২০
তাঁত থেকে প্রাণী বিকাশ, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে? তা জানালেন খোদ মন্ত্রী
শ্যামল রায়
বামফ্রন্ট আমলে ধুঁকতে থাকা তাঁতশিল্প আজ সফলতার পথে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় উদ্যোগে তাঁত শিল্পীদের উৎপাদিত শাড়ি বিদেশ সহ দেশের মধ্যে বিক্রি করে শিল্পী রাজাতে সংসার চালাতে পারেন সেই দিকে নজর দিয়েছেন। রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সোমবার সাত সকালে তার মানসিক এবং শান্তি বিকাশ কেন্দ্রের দামোদর পাড়ার প্রাঙ্গণে বসে জানালেন যে তাঁত সাধারণত দু'ধরনের। প্রথমত হস্তচালিত তাঁত এবং পাওয়ারলুম।হস্ত চালিত তাঁতের শাড়ি বিক্রয় করবার জন্য প্রথমত রাজ্যজুড়ে তাঁত হাট তৈরি করা হয়েছে।হাট গুলি হল পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম, ধাত্রীগ্রাম, নবদ্দীপ ও হাওড়ার উদয়নারায়নপুর।
এছাড়াও তাঁত শিল্পকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য তন্তুজ ও তাদের কাছ থেকে শাড়ি কিনে নিচ্ছে।
স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে বাম আমলে ১৪৭ কোটি টাকা লোকসানে চলছিল। বর্তমানে অপারেটিং সাপোটিং পাওয়ারে লভ্যাংশ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। বাম আমলে বছরে টার্নওভার ছিল ৫৫কোটি টাকা। এই সরকারের আমলে টার্নওভার ২৫০ কোটি টাকা। শাড়ি লুঙ্গি বেড কভার হস্তচালিত তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে একাধিক ক্লাস্টার। ক্লাস্টার এর মধ্যে দিয়ে তাঁত শিল্পীরা তাদের সমস্ত রকম সরঞ্জাম পেয়ে থাকেন। পূর্ব বর্ধমানের ইতিমধ্যে সাতাশটি ক্লাস্টার তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বস্ত্র দফতরের উদ্যোগে রাজ্যে তৈরি হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা।শান্তিপুরের ফুলিয়া তে তৈরি হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র। এই সহয়তা কেন্দ্র থেকে তাঁতিদের শাড়ি বিদেশে কিভাবে রপ্তানি করা যেতে পারে তার সমস্ত রকম উদ্যোগ এখান থেকে নেয়া হয়। তাঁতিদের শাড়ি বিক্রির সমস্ত রকম কর্মপদ্ধতি চালু হয় এই সহায়তা কেন্দ্র থেকে। তিনি আরো জানিয়েছেন যে একটা সময়ে খাদির মসলিন তাঁত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা সরকারে আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বাংলার মসলিন তাঁত শাড়ি আজ নাম ছড়িয়েছে। কালনা মহকুমার কালনা শহরের কালিপুরে এখানকার মানুষ তাঁত বুনে কদর বাড়িয়েছে মসলিন তাঁত শাড়ির।কোচবিহারের গঙ্গারামপুর হ্যান্ডলুম উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে তরী এই উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র আজ ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ করে যাচ্ছে এবং তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে এখন এই সকল তাঁতীদের কাছ থেকে তন্তুজ ও তিন বছরের জন্য তাদের উৎপাদিত শাড়ি কিনে নিচ্ছে এর ফলে তাঁতিরা তিনটে বছর নিশ্চিত থাকতে পারবেন তাদের শাড়ি বিক্রির জন্য।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে শ্রীরামপুর গ্রামে তাঁত শ্রী হাট আজ এলাকার মানুষের কাছে রুজি রোজগারের দিশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালনা মহকুমার ৩০ হাজার তাঁতি আজ মনের আনন্দে কাজ করে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি প্রাণী সম্পদ সম্পর্কে জানিয়েছেন যে রাজ্যে ডিমের উৎপাদন বাড়িয়ে ডিমের চাহিদা পূরণের কাজে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে আমাদের দপ্তর। ডিমের চাহিদা পূরণের জন্য আমরা মুরগির বাচ্চা পূরণ করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে দিয়ে বিতরণ করছি। বর্তমান ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। টার্গেট এক কোটি ছিল। যা পূরণ করা হয়েছে। দু'কোটি ডিম দরকার। বাকি আছে ৪৫ লক্ষ্।।রাজ্যজুড়ে আমরা এক কোটি মুরগির বাচ্চা বিতরণ করেছি। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ কে বাঁচাতে ইতিমধ্যে যথেষ্ট উন্নত প্রযুক্তিগতভাবে পলি ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছে। কথায় বলা যেতে পারে প্রাণিসম্পদ সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল। বর্ধমান এবং নবদ্বীপে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও শালবনিতে প্রজনন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। ষাঁড়ের প্রজনন ক্ষমতাকে বাড়িয়ে কাজে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রাণিসম্পদ পালকরা উপকৃত হচ্ছেন।
দেগঙ্গার চৌরাশী অঞ্চলে খাদ্য সামগ্রী বিলিতে তৃনমূল
ওয়াসিম বারি
ধনিয়াখালিতে তাঁতিদের পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী অসীমা পাত্র
সুভাষ মজুমদার
লকডাউনের জেরে চরম শোচনীয় অবস্থা ধনিয়াখালীর তাঁত শিল্প।আর এই শিল্পের সাথে যুক্ত কয়েক শো পরিবার রোজগার হীন।তাই ধনিয়াখালীর তন্তুবায় দের পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী তথা ধনিযাখালীর বিধায়ক অসীমা পাত্র।
ধনিয়াখালী বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে এদিন প্রায় ৬০০ তন্তুবায় দের বিতরণ করা হয় চাল,ডাল শাক সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
মন্ত্রী বলেন মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এই কর্মসূচি।ইতি মধ্যেই লকডাউন চলাকালীন ধনিয়াখালী বিধান ৩১১ টি বুথের দুস্থ্য পরিবার গুলি কে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।আগামী দিনেও যতদিন করোনা মোকাবিলায় লকডাউন জারি থাকবে ততদিন দুস্থ্য পরিবার গুলির পাশে থাকবেন এই ভাবেই।
গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের করোনা অনুদান মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে
সেখ রতন
রমজানে দুস্থদের বস্ত্রবিলিতে মেমারি বিধায়িকা
সেখ সামসুদ্দিন
রবিবার, মে ১৭, ২০২০
লকডাউনের মধ্যেই নিয়মবিধি মেনে খুলছে সমুদ্রগড়ের তাঁতের হাট
শ্যামল রায়
রবিবার থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্ববৃহৎ তাঁতিদের জন্য তাত হাট চালু হলো। সমুদ্রগড় গণেশ চন্দ্র কর্মকার তাঁত কাপড়ের হাট চালুতে খুশি এলাকার তাঁতিরা। এই তাঁতের হাট চালুর আগের দিন শনিবার রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ নেতৃত্বে তার সমস্ত বিল্ডিং জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়েছে। হাটের অন্যতম কর্ণধার সুবীর কুমার কর্মকার জানিয়েছেন যে সপ্তাহে চার দিন হাট বসবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই তাঁতের হাটে কেনা বেচা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সমুদ্রগড় এলাকায় অধিকাংশ মানুষ তাঁত শিল্পের উপর নির্ভরশীল। সামনে পূজোর মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে তাই বাড়িতে বসে তাঁতের শাড়ি বুনন করলেও শাড়ির দাম ছিল খুব কম। তাঁতিরা কম দামে মহাজন খপ্পরে পড়ে শাড়ি বিক্রি করছিল। তাঁতের হাট চালুতে এলাকার গরিব তাঁতিরা তাদের শাড়ি বিক্রি করতে পারবে এবং সংসার চালাতে পারবেন। তবে সুবীর কুমার কর্মকার জানিয়েছেন যে লকডাউন এর কারণে বাইরে থেকে বড় বড় ব্যবসায়ী আসতে পারবেন না তবে এলাকার তাঁতিরা তাদের উৎপাদিত শাড়ি এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন বলে তিনি মনে করছেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে লকডাউন এর ফলে বহু মানুষ আছেন যারা অভাবের মধ্যে পড়েছেন সেই সমস্ত তাঁতিদের সূরাহা হবে হাটে কেনাবেচা করায়। তিনি সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
হাইকোর্টে হুগলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার কথা জানালো রাজ্য
মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)
আজ অর্থাৎ রবিবার থেকে হুগলিতে চালু হচ্ছে স্বাভাবিক ইন্টারনেট পরিষেবা। শনিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত জানান - 'ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়ায় এক গন্ডগোলের জেরে শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর মহকুমা এলাকায় বিক্ষিপ্ত উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। গুজবে যাতে অশান্তি না হয় সেজন্য হুগলি জেলা পুলিশ ও প্রশাসন গত ১২ মে থেকে ১৭ মে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখে বিজ্ঞপ্তি জারী করে। বর্তমানে ওই এলাকায় কোন অশান্তি নেই। এখন স্বাভাবিক,তাই রবিবার থেকে স্বাভাবিক হচ্ছে ইন্টারনেট পরিষেবা '। যদিও এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী শুক্রবার। উল্লেখ্য, মে মাসের ১১ তারিখে হুগলির ভদ্রেশ্বর এলাকায় তেলিনিপাড়ায় এক গোস্টি সংঘর্ষর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পরবর্তীতে বিভিন্ন সোশ্যালমিডিয়ায় নানান ভিডিও - ছবি ভাইরাল হয়ে উঠে। তাতে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর মহকুমা এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষর ঘটনা ঘটে। এতে তড়িঘড়ি জেলা পুলিশ ও প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১২ মে থেকে ১৭ মে অবধি বন্ধ রাখে ইন্টারনেট পরিষেবা।এই ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যহত হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা থেকে অনলাইন কেনাকাটা বন্ধ হয়ে যায় একপ্রকার। তাও লকডাউনে মানুষ যেখানে গৃহবন্দি। সময় কাটাতে ইন্টারনেট অত্যন্ত জরুরি। এইবিধ নানান দাবি সামনে রেখে আইনজীবী সৌমাভ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ইমেলে চিঠি দেন। এটি জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণ করে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি আরও দুটি মামলা দাখিল হয় এই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার দাবিতে। গত শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেইসাথে রাজ্যের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলার গুরত্ব বুঝে শুক্রবারের পর শনিবারও অনলাইন শুনানি চলে। সেখানে রাজ্যের পক্ষে এজি কিশোর দত্ত জানান - ' আগে গুজব সন্ত্রাস রুখতে এহেন নির্দেশিকা জারী করে ছিল জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করতে কোন অসুবিধা নেই। তাই রবিবার থেকে হুগলির ওই অংশ গুলিতে চলবে ইন্টারনেট '। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী শুক্রবার।
ভারত চেতনা - হুমায়ুন কবীর
ভারত চেতনা
হুমায়ুন কবীর
কে না জানে শিক্ষার সাথে জ্ঞান কোথায় যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে, আর জ্ঞান বিকশিত করে চেতনাকে। চেতনার ইতিহাস বড্ড পুরাতন আর এই ইতিহাস পুরাকালে ভারতবর্ষেরই ছিল একচেটিয়া। মানুষের ১৩৫০ গ্রাম মস্তিস্কের কোষে কোষে সঞ্চিত জ্ঞানই হল চেতনার আধার। চার হাজার বছরেরও বেশী পুরাতন ভূর্জপত্রে লেখা ঋক বেদ পৃথিবীতে অন্যতম পুরান গ্রন্থ আর তার জন্মভিটে ভারতবর্ষ, গ্রন্থ আকারে ঋক বেদ শিক্ষার শুধু নয় জ্ঞান আর চেতনার শক্তপোক্ত প্রমান। তবে শিক্ষ ছাড়া চেতনা হয় না বা শুধু মানুষেরই চেতনা আছে তাতো নয়, নইলে ফি’বছর সাইবেরিয়া থেকে গুচ্ছের হাঁস উড়ে আসতে পারতো না সাঁতরাগাছি ঝিলে, ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বড় করে ফিরেও যেতে পারত না বছরের পর বছর, এমন হাজারো উদাহরনের ছড়াছড়ি জীববিজ্ঞানের বইগুলোতে। মজার ব্যপার হল ঋক বেদেই আছে ভারতের উল্লেখ, দুশ্মন্ত আর শকুন্তলার সন্তান রাজচক্রবর্তী ভরত চেয়েছিলেন অখণ্ড ভারতে হাজারো ভাষাভাষী আর ভিন্ন ভিন্ন ঈশ্বর বিশ্বাসের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মনুষ্যের মধ্য জাতীয় চেতনা জাগাতে, ভৌগলিক বা রাজনৈতিক বাঁধনে নয়, জ্ঞানের উন্মেষ ঘটিয়ে। অভিজ্ঞতা জ্ঞান আর চেতনার বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও আধুনিক মানুষের গুহা ছেড়ে দুপায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসা নয় নয় করে হয়ে গেল ষাট সত্তর হাজার বছর, চেতনা তখনও ছিল, আজও আছে তবে আমাদের ভারতবর্ষে এটি বহু প্রাচীন হলেও চেতনার জাগরন পরবর্তীকালে সেভাবে হয়নি, আমাদের সামনে দিয়ে হামাগুড়ি মেরে বেরিয়ে আসা য়্যুরোপ-আমেরিকা ড্যাং ড্যাং করে অনেকখানি এগিয়ে গেছে চেতনার হাইওয়েতে আর আমরা বহু পুরাতন তামাদি হয়ে যাওয়া চেতনা নিয়ে দিন দুপুরে মিথ্যাচারন করছি গলি-ঘুঁজিতে।
আরও একটু এগিয়ে এলে তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চানক্যকে পেয়ে যাই খ্রিষ্ট পূর্বের শ’তিনেক বছর আগে, মৌর্য বংশের চন্দ্রগুপ্ত-বিন্দুসারদের নীতি আর চেতনার অথেন্টিক গুরু চেতনার সুগন্ধ আজও ছড়িয়ে থাকেন অন্তরজালে, কুলকুচি করার মত অবলীলাক্রমে পঙক্তি পঙক্তিতে নীতির মাধ্যমে চেতনা ছড়িয়ে আসছেন এতগুলো বছর, খুব প্রাসঙ্গিক চিরকালীন এক চিন্তক। চানক্য নীতিতে ম ম করত তখনকার রাজনীতি আর অর্থনীতি। তাঁর নীতিই ছিল তখনকার রাজা রাজড়াদের পথনির্দেশিকা আর বর্তমানের মারপ্যাঁচের যুগের রেফারেল উপদেশ।
পৃথিবী জুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া চেতনার কথা যদি ভারতবর্ষের বাইরে গিয়ে ভাবি, যদি উঁকি মারি পশ্চিমে, খ্রিষ্টপূর্বে ইহুদিদের রমরমা বাজার, এমনই এক ইহুদি মা মেরীর কোল আলোকিত করে যীশু জন্মালেন বেথলেহেমের পশুখোঁয়াড়ে, খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার শুরুর বছর চারেক আগে। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তি যীশুর বানীর ছত্রে ছত্রে চেতনার উন্মেষ, ছড়িয়ে পড়ল ভালোবাসার কথা, ক্ষমা আর শান্তির বার্তা। ভক্ত হয়ে গেল বহু ইহুদি। ভগবান আসলে কেমন, তাঁকে কেমন করে ডাকব তাই নিয়ে ইহুদিদের সঙ্গে গোল বাধল, ইহুদিরা মানল না ওঁর চেতনার বাণী, বিরুদ্ধাচারনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হয় ইহুদি কতৃপক্ষকে, রোমান সম্রাট পন্টিয়াস পাইলেটর হুকুমে ক্রুশ বিদ্ধ হলেন যীশু কিন্তু মৃত্যু হল কোথায়? চমকপ্রদভাবে জেগে উঠলেন প্রভু হয়ে, তাঁর চেতনা বিকশিত হল পৃথিবী জুড়ে। পৃথিবীতে আজও এক তৃতীয়াংশ মানুষ যীশুর সেই জাগিয়ে যাওয়া চেতনার আনুগামী।
ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষভাগে জন্মালেন আর এক মহাপুরুষ, মধ্যপ্রাচ্যের বেদুঈনদের অরাজকাতার মাঝে আবু আল কাশিম মুহাম্মদ ইবন আদব্দুল্লাহ ইবন হাশিম আকা মুহাম্মদ। আল্লাহ্র দূত পয়গম্বর মুহাম্মদ একাত্ববাদ আর বাস্তববোধ সম্বল করে বিচার বিবেচনাবোধ তরঙ্গের মত বইয়ে দিলেন সমাজে, মহান আল্লাহ্র বানী সুরাতে সুরাতে ভরে দিলেন মানুষের মধ্যে চেতনা জাগাতে, মক্কার মাটিতে জন্ম নিল নতুন ধর্ম ইসলাম। মূর্তি পুজার বিরোধী এই পয়গম্বর প্রতিরোধের মুখে পড়লেন এমনকি তাঁর নিজস্ব কুরাইশ বংশের মধ্যেও। মক্কা ছেড়ে পাড়ি দিলেন মদিনায়, হিজরার পর বছর পাঁচেকের রক্তক্ষয়ী লড়াই লড়তে হল মুহাম্মদকে, জিতলেন মুহাম্মদ। বছর আটেক পরে ফিরে এলেন মক্কায় প্রায় বাধাহীন অসম যুদ্ধের মাধ্যমে, মুক্তি দিলেন বন্দীদের, ক্ষমা করে দিলেন তাঁর বিরধীদের, নতুন এক চেতনার জন্ম হল মক্কার মাটিতে। হু হু করে ছড়িয়ে পড়ল ইসলাম, বহু মানুষ হয়ে উঠলেন ইসলাম আর মুহাম্মদের আনুগামী।
যদি ফিরে তাকাই ভারতের ইতিহাসের দিকে, অষ্টম শতাব্দী শুরুর দিকে আরব থেকে মোহাম্মাদ বিন কাশিম দখল করলেন সিন্ধু আর মুলতান, তারপর মাহমুদ গজনি, মুহম্মদ ঘোরি হয়ে দাস বংশ, খিলজি বংশ আর তুঘলক বংশ পেরিয়ে ভারত দেখল লোদি বংশ। ভারতে শুরু হল মুসালমান শাসকদের একছত্র জয়জয়কার। যুদ্ধ আর জয় করে নেওয়া একের পর এক ভূখণ্ড, শক্তির আস্ফালনের সঙ্গে জয়ের নেশা, শাসকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেলেও মধ্যযুগ হল অবিশ্বাস,বাহাদুরি আর হানাহানির কাল। হৃদয়ের বা মনের জয় নয় ভূখণ্ডের দখলদারির সাথে সাথে আস্ত মানুষ আর সম্পদের জয়, শৌর্য- বীর্যের ঝঙ্কার তাই মানবিক চেতনার অভাবের অভিযোগ তোলাই যায় এই সময়টাতে।
দক্ষিণ ভারতে চোল, চালুক্য, হয়শল, বাহমানি সুলতানি আমল, দাক্ষিনাত্যের আরও সুলতান এবং নিজামদের শাসনে মানব চেতনার সঙ্গে সঙ্গে চেতনার অবক্ষয়ের উদাহরনও রয়েছে ভুরি ভুরি।
ষোড়শ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে মোঘল সাম্রাজ্যের শুরু। শাসন, উন্নয়ন, শিল্পকলার মিশেল এই অধ্যায়ে চেতনার বিকাশ নিশ্চয়ই ঘটেছে তবে মধ্যযুগীয় মাপ মত। মাঝের পনেরটা বছর শের শাহ সুরী জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগিয়েছেন তাঁর মত করে। আকবর থেকে শাজাহানের সময় পর্যন্ত নানান সামাজিক উদারতা, দূরদর্শিতা, শিল্পকলার বিকাশের জুগেও মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটে। ঔরঙ্গজেব দক্ষ প্রশাসক হিসাবে সাফল্য পেয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করলেও তাঁর নিয়ত নিয়ে সন্দেহ ছিলই। ভিন্ন ধর্মের প্রতি তাঁর অসহিষ্ণুতা, সন্দেহবাতিক চরিত্র আর মানবিকতার অভাব মোঘল সাম্রাজ্যকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে দেয় অনেকখানি। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত টিমটিম করে টিকে থাকলেও শেষ মোঘল সম্রাট অভিমানী বাহাদুর শাহ জাফরের হাত থেকে ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করে নেয় সিপাহী বিদ্রোহের বছর ১৮৫৭ সালেই, এর পরেই পুরোদমে ভারতবর্ষে শুরু হয়ে গেল পুরদস্তুর ইংরেজ শাসন। রেঙ্গুনে ইংরেজদের জেলে কবি এবং শেষ মোঘল সম্রাট বাহদুর শাহ জাফর মৃত্যু বরন করলেন ১৮৬২ সালে, ‘না ম্যায় কিসিকা আঁখ কা নুর হুঁ, না কিসিকা দিল কা করার হুঁ’। ভারতের মাটিতে অবসান হল মুসলমান শাসনের কিন্তু মুসলমানরা মিশে গেল আমজনতার সাথে, হাজার বছরেরও বেশী মিলে মিশে থাকতে থাকতে ভারতবর্ষই হয়ে গেল তাদের দেশ।
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ ছিল শঠতা আর বিশ্বাসঘাতকতার চূড়ান্ত এক নিদর্শন। দেখতে দেখতে একশ বছরের মধ্যে পুরো ভারতবর্ষ দখল করে নিল ব্রিটিশ শাসকরা, কঠোর শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে দমন পীড়ন ছিল নিত্যাকার দিনলিপি তবে ইংরেজ শাসকদের মধ্যেও চেতনার বিচ্ছুরন দেখেছে ভারতবাসী।
পরাধীন ভারতে বহু ঘটনার মধ্যে অনেক ঘটনাই উল্লেখ করার মত, তাঁর মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশক, জন্ম নিলেন রবীন্দ্রানাথ ঠাকুর, নরেন্দ্রানাথ দত্ত এবং মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধী। ভারতে চেতনার উন্মেষ ঘটাতে আলাদা আলাদা কাজের মধ্য দিয়ে এঁদের প্রভাব আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
সালটা ১৮৬১, জন্ম নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভারতবাসী পেয়ে গেল এক অসামান্য কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার-সুরকার, আধ্যাত্মিক চিন্তক, দার্শনিক এবং সৃষ্টিশীল এক মহাপুরুষ। তাঁর লেখার বারে বারে উঠে এসেছে ভালোবাসা, প্রেম, আবেগ, আনুভতি, বিরহ, ব্যথা-বেদনা, সমস্ত আঙ্গিকে সব রকম মানুষের ভাবাবেগের কথা সহজ ভাবে – জটিল চরিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে, পরতে পরতে বিচ্ছুরিত হয়েছে নানা রঙের জীবনকথা। পরাধীন ভারতে জন্মেছেন রবীন্দ্রনাথ আবার মৃত্যুও এসেছে পরাধীন ভারতেই, স্বাধীনতার আন্দোলনে সরাসরি জড়িয়ে পড়েননি তবে মোহনদাস গাঁধীর বন্ধু লিখেছেন ‘বনিকের মানদণ্ড দেখা দিল, পোহালে শর্বরী, রাজদণ্ড রূপে’ কিংবা জালিওয়ানাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদ জানালেন নাইট উপাধি ত্যাগ করে। এমন ভুরি ভুরি উদাহরন তাঁর কর্মকাণ্ড আর লিখনিতে প্রকাশ পেয়েছে বারে বারে, ভালোবাসার মাধ্যমে জয় আর ক্ষমাই ছিল কবির চেতনার মূলমন্ত্র,তাই তিনি ‘প্রশ্ন’ করতে পারেন ‘ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে দয়াহীন সংসারে- তারা বলে গেল ‘ক্ষমা করো সবে’, বলে গেল ‘ভালবাসো- অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো...। কবির চেতনার বহিপ্রকাশ শুধু তাঁর সৃষ্টির পাতায় লেখা রয়েছে তাই নয় তিনি মানুষের চেতনায় সেই যে প্রভাব বিস্তার করলেন আজও একইভাবে রয়ে গেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্মের মধ্যে।
ভারত মহাপুরুষদের জন্য উর্বর মাটি, ১৮৬৩ সালে জন্ম নিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। প্রখর বুদ্ধির ছাত্র নরেন্দ্রনাথ পড়াশুনার পাঠ চুকানোর পর পুরোদমে শ্রী রামকৃষ্ণের সংস্পর্শে এলেন হিন্দু ধর্ম আর আধ্যাত্মিক শিক্ষার আনুশীলনে। ভগবানের খোঁজ সেই শুরু, শেষটায় উপলব্ধি ‘বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। গুরুকে ছাপিয়ে বিশ্বের দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন তরুন এই সন্ন্যাসী, জীবে প্রেমই ঈশ্বরের সাধনা, পৃথিবীতে সব ধর্মই সত্য আর সবার উপরে মানুষ সত্য। বিশ্বভাতৃত্বে বিশ্বাসী চিন্তাশীল এই দার্শনিক সন্ন্যাসী ছিলেন ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক আবার পশ্চিমী দর্শনের এক আদর্শ ছাত্র। ১৮৯৩ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর শিকাগোতে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে তাবৎ বিশ্বকে চমকে দিলেন তাঁর আধ্যাত্মিক চিন্তা ভাবনায়, দর্শনে আর অন্য ধর্মের প্রতি সম বিশ্বাসে। রামকৃষ্ণ মিশনের এই প্রতিষ্ঠাতা ন্যুইয়র্কে বেদান্ত সমাজ গড়ে তুলেন আত্মচেতনা আর আত্মশুদ্ধির জন্য। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় তরুন এই সন্ন্যাসীর মৃত্যু পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিল তবে যে মানব চেতনার ভাবধারা ছড়িয়ে গিয়েছেন বিশ্বজুড়ে তা আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক এবং অনুকরণীয়।
হালফিলের জ্ঞান আর চেতনা যদি খুঁজি তারও ঘাটতি নেই ভারতবর্ষের মাটিতে, ১৮৬৯ সালে ২রা অক্টোবর জন্ম নিলেন মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধী, এলোমেলো ভাবে কেটে গেল শৈশব-কৈশোর, লন্ডনে পাড়ি দিয়ে আইনি ডিগ্রি নিয়ে ফিরে এলেন ভারতবর্ষে, উকিল হিসাবে কাজ নেই। বন্ধুর পরামর্শে পাড়ি দিলেন দক্ষিন আফ্রিকা। ট্রেন সফরে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেটেও ঘাড় ধাক্কা খেয়ে বাইরে বেরুতে হল গায়ের চামড়া কালো বলে। শুরু হল এক নতুন ধরনের চেতনার, সত্যের ক্ষমতা যাচাইয়ের আন্দোলন সত্যাগ্রহ। ডারবানের কাছে ফোয়েনিক্স ফার্ম গড়লেন শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস সত্যাগ্রহের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে। পরবর্তী কালে তলস্তয় ফার্ম থেকে সত্যাগ্রহের মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তুললেন বিভিন্ন অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে, জেল খাটলেন এসব করতে গিয়ে। বছর কুড়ি দক্ষিন আফ্রিকায় কাটিয়ে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এর নেতা গোপাল কৃষ্ণ গোখলের আমন্ত্রনে ফিরে এলেন দেশে, ঝাঁপিয়ে পড়লেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে হিংস-অহিংস লড়াইয়ের পর ভারতছাড় আন্দোলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এল কাঙ্খিত স্বাধীনতা, নতুন এক চেতনার উন্মেষ ঘটল স্বাধীন ভারতে। ধর্মোন্মাদ শক্তির হাতে গাঁধীর মৃত্যু বরনের মধ্যে দিয়ে অদ্ভুত এক শূন্যতা তৈরী হলেও সামলে নিল ভারতবর্ষ শুধু মানবিক চেতনা আর গাঁধীজির শিখিয়ে যাওয়া অহিংসার শিক্ষায়।
স্বাধীনতা পেয়ে আমরা ভারতবাসী আনন্দে ঊর্ধ্ববাহু হলাম, গর্বে বুক ফুলে ওঠে যখন শুনি ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম, আমরা রয়েছি সেই সূর্যের দেশে’। নাৎসি জামানায় জার্মান শব্দটাই যেমন তাতিয়ে দিত হের হিটলারের সমর্থকদের, তেমনি ভারতীয় শব্দটাই ভাষা, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত ভারতবাসীর উপলব্ধিতে ছিল জাতীয়তাবাদের দ্যোতক। ধনী-দরিদ্র, ছোটবড় সব দেশ আর জাতি নিজেদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হবে, গর্ববোধ করবে এ আর নতুন কি? একসময় ব্রিটিশরা বলত তাদের অধিকৃত এলাকায় সূর্য অস্ত যায় না, এতটাই ছিল তার বিস্তৃতি। এখনটা যেমন দাপট দেখায় আমেরিকা, তারা আজ অহঙ্কারের শিখরে, মুখনিঃসৃত কথাই শেষ কথা, পৃথিবীর বাকিদের জন্য ফরমান।
সদ্য স্বাধীন দ্বিখণ্ডিত ভারত নয়, টুকরো টুকরো দীর্ণ ভারতে (বিভিন্ন প্রিন্সলে স্টেটের দৌলতে) সামাজিক অবস্থান, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, পরিষেবা, মিলিটারি ক্ষমতা ইত্যাদি হাজারো নেই এর লম্বা ফিরিস্তি আর তা নিয়ে গর্ব করার মত কিছুই ছিল না তবুও জাতীয়তাবাদে ঘাটতি ছিল না কোন ভারতীয়র। কোন ভারতীয়র ছিল না সুইস ব্যাঙ্কে জমানো টাকা বা দেশে বিদেশে গোপন সম্পদের পাহাড়, ছিল সুগভীর আত্মোপলব্ধি আর গর্ববোধ ছিল জাতিকে নিয়ে, দেশ ছিল শুধু তার বহিঃপ্রকাশ।
ব্রিটিশের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসির ফলে খণ্ডিত ভারত সাম্প্রদায়িক বিষবাস্পে জর্জরিত হয়ে এসেছে বরাবর আর আজকের ভারতও চরম উগ্রপন্থার শিকার। সেই কোন মুদ্দত থেকে আমরা হেঁকে চলেছি ‘ভারত মানবতার আর এক নাম’, তার মেলা কারনও ছিল। বিভেদ কিছু ছিলই তবে আজকের মত জাতের নামে চোরাস্রোত বইত না রন্ধ্রে রন্ধ্রে, ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থসিদ্ধির নামে পরিকল্পনা মাফিক বিষ গাছ বপন করাও নয়। সাদাসিদে কিংবা অশিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত, শিক্ষিত সব মানুষের মনে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের বিষ নিশ্চিতভাবেই আর্সেনিকের বিষের চাইতেও মারাত্মক এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে বাধ্য। যে ভারতকে আমরা চিনি স্বামী বিবেকানন্দের জীবন আর লেখার ছত্রে ছত্রে যেখানে ব্রাহ্মন থেকে চণ্ডাল, আপামর ভারতবাসী তাঁর ভাই, বিভিন্ন জাত আর পেশার মানুষ তাঁর স্বপ্নের ভারতের ধমনীতে বয়ে চলা রক্তস্রোত। ব্রিটিশের অধীন ভৌগলিক ভূমিখন্ড ভারতের মুক্তির চাইতে তাঁর কাছে বেশী জরুরী ছিল জাতির অভ্যন্তরে ঘুনপোকার মত ভিতর থেকে ক্ষয় করে চলা জাতপাতের লড়াই তাই অভিশাপ দেওয়ার মত করে সাবধান করে দিয়ে গেছেন আত্মম্ভরি উচ্চবর্ণের মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর পরামর্শ দিয়ে। রবীন্দ্রনাথের গলাতেও সেই সুর মিলে গেছে, ‘মৃত্যুমাঝে হবে তবে চিতাভস্মে সবার সমান’।
বিশ্বায়নের যুগে চেতনার লোপ না পেলেও বিস্তর ক্ষয় ক্ষতির প্রমাদ গুনছে চেতনার তাড়নায় রাতের ঘুম হারাম করা ভারতবাসী। সামাজিক মূল্যবোধের অধঃপতন থাবা বসিয়েছে আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনাতেও। সংস্কৃতির অবক্ষয় এগিয়ে চলার পথে অবশ্যম্ভাবী কিন্তু চলমান ক’বছরে চেতনার সামগ্রিক পতন এককথায় বিস্ময়কর। যেখানে পারিবারিক শ্রদ্ধা-ভালবাসার জায়গায় টান পড়েছে অন্তরজালের যুগে সেখানে জাতিসত্ত্বার ঐতিহ্যের ঝাণ্ডা ধরার চওড়া কাঁধ কোথায়? আজকের বস্তুতান্ত্রিক স্বার্থবাদের যুগে অহম এক বিশাল সমস্যা। প্রকৃত জাতীয়তাবাদ তাই দূরবীন লাগিয়ে খুঁজতে হয়।
আধুনিককালে ভারতের যে চেতনার মিউটেশন বা পরিব্যপ্তি ঘটেছে তা কি অতীতের বহুযুগ ধরে বহমান চেতনার শর্টকাট রুট? আমরা কি আবার মধ্যযুগে ফিরে যেতে চাই রেট্রোগেশিভ ইভোলিউশনের মাধ্যমে? আমরা কি কোনদিন অবসর মত বসে ভেবে দেখব না যে ধর্ম নিয়ে আমরা মাতোয়ারা সেই ধর্ম জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের কোন কাজে আসে? ধর্ম বাদ দিয়ে কি মানুষ বেঁচে নেই? বেঁচে থাকতে পারে না? মেকি জাতীয়তাবাদ আর ধর্মের জিগির তুলে হানাহানি কাটাকাটি ঘরে ঘরে, লুটপাট, ধর্ষণ, যুদ্ধের জয়-পরাজয়? ব্রিটিশের পলিশি সামান্য পরিবর্তন করে ‘পোলারাইজ অ্যান্ড রুল’? আমি জাতীয়তাবাদী, আমার কাছে যাহা পুরান তাই বিজ্ঞান, আমার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হও, হয় আমার পেছনে দাঁড়াও নয়তো উল্টো দিকে দাঁড়াও, গনতন্ত্র আর সংখ্যার গলার জোরে তোমাকে দেগে দিই দেশদ্রোহী বলে, আমার একটা শত্রু চাই এই মুহূর্তে, কাল্পনিক হলেও চলবে নইলে আর জয় আসবে কার বিরুদ্ধে? জয়ের আস্ফালনের মধ্যে দিয়ে বাকি সমস্ত চেতনা, প্রয়োজনীয়তা, উন্নয়ন, এগিয়ে যাওয়া এসবই আমার কড়া ডোজের জাতীয়তাবাদের কাছে তুচ্ছ, আমাদের মধ্যে আর কোন ইস্যু নেই, নেই কোন লক্ষ্য।
এই একবিংশ শতাব্দীর দু’দশক শেষের মুখে আমদের চেতনাও কেমন যেন অবশ হয়ে আসছে, বার বার চোখ কচলে নিজের চোখে দেখা অনাচার, দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি সব ঢোক গিলে কেমন যেন মেনে নিই, প্রতিবাদ তো নয়ই বরং অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত আর অহংকারী সেই সব কেষ্টবিষ্টুদের পিছনে ভিড় বাড়াই, হাঁটতে হাঁটতে গলা চিরে আকাশের দিকে হাত ছুঁড়ে আস্ফালন করি, সমর্থন জোগাই আমাদের সেই অসাড় চেতনাকে মেরে ফেলে।
বিপ্রতীপ আশা, ভারতের চেতনার উন্মেষ ঘটবে ঠোক্কর খেতে খেতে, আবার একটা রাঙা সূর্য উঠবে গাঢ় নীল আকাশে, জন্ম হবে কোন এক মহামানবের, মন চাইবে, ‘দেবতা এদেশে মানুষ হয়েছে জানি, মানুষকে দেখি গনদেবতার বেশে’।
Last year this article was published in the 'Desh' Patrika on 17.05.2019 as the cover story.
বিঃ দ্র - গত বছর আজকের দিনে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত এই কপি । সময়ের সাথে আজও এই লেখাটি সমসাময়িক
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)
OLD POSTED
আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER
-
বাকুঁড়ার কোতলপুর ব্লক তৃনমূল কমিটির পরিচালনায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদসভা হয়।উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শ্যামল সাতঁরা, সাংসদ সৌমিত্র খান, জেলা স...