মানস দাস, মালদা
হঠাৎ করে দেখলে মনে সন্দেহ দেখা দিতেই পারে রাস্তা নাকি খাল? তবে বাস্তবে এমন খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়েই প্রাণ হাতে নিয়ে নিত্যদিনের যাতায়াত মালদার হবিবপুর ব্লকের কয়েক হাজার বাসিন্দার। পিচের চাদর উঠে গিয়ে রাস্তার কঙ্কালসার চেহারাটা বেরিয়ে পরেছিল প্রায় বছরখানেক আগেই। সেই মৃতপ্রায় রাস্তার ওপর দিয়েই চলে সবরকম যানবাহন । রক্ষণাবক্ষেণ ও সংস্কারের অভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক এখন মরণফাঁদ । মালদা থেকে হবিবপুর পর্যন্ত প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দীর্ঘ রাজ্য সড়কটি জেলা সদর ইংলিশবাজারের সঙ্গে হবিবপুর ও বামনগোলা ব্লকের একমাত্র যোগাযোগকারী রাস্তা । এমনকি পার্শ্ববর্তী জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের সঙ্গেও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এই রাজ্য সড়ক । স্কুল-কলেজ-অফিসযাত্রী ছাড়াও ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের যাতায়াত এই রাস্তায়। এমনকি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ব্লক হওয়ায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর যাতায়াতের জন্যও ব্যবহৃত হয় রাস্তাটি। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক এখন আতঙ্কের কারণ এলাকার মানুষের কাছে । বিশেষত আইহো থেকে বুলবুলচণ্ডী পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তার হাল এতটাই শোচনীয় যে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধের মুখে। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এর আগে বহুবার বিক্ষোভ ও অবরোধ হলেও সমস্যা যে তিমিরে ছিল সে তিমিরেই রয়ে গেছে । সম্প্রতি এই রাস্তায় বেড়ে চলা পথ দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন শিশু ও মহিলা সমেত বেশকিছু মানুষ । এমনকি বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে যাওয়ার পথে ঘটেছে রোগীমৃত্যুর ঘটনাও। যানবাহন বিকল হওয়ায় যানযট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, প্রশাসনিক গদাইলস্করী চালেই স্তব্ধ হয়ে আছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। ব্লক প্রশাসন বারবার আশ্বাস দিলেও কাজ হয়নি কিছুই। বেহাল রাস্তা মেরামতের বিষয়ে হবিবপুর ব্লকের বিডিও রেণুকা খাতুনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি গোটা ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন জেলা পিডব্লিউডি দপ্তরকে। একইসঙ্গে রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য জবরদখলকারীদের অনড় মনোভাব এবং পর্যাপ্ত জমি চিহ্নিত করার সমস্যার কথা বলেন তিনি। ওই সমস্যা মিটে গেলে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করতে অসুবিধা হবে না বলে দাবি করেন তিনি। যদিও সেই সমস্যা না মেটা অবধি গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্য সড়কের মেরামতি হবে কি না, তার সদুত্তর মেলেনি।