সোমবার, আগস্ট ১০, ২০২০

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন  

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শিকার হয়েছেন। হাজতবাসের পাশাপাশি জুটেছে নানারকম জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা। তবে এরা কেউ দমবার পাত্র নন। দেশের সংবিধানে সংবাদমাধ্যমের ভুমিকা কে সামনে রেখে নির্ভীক সাংবাদিকতার লড়াই চালাচ্ছেন অবিরত। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বোলপুরের এক সাংবাদিকের দুটি ফৌজদারি মামলায় আগাম জামিনের ক্ষেত্রে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর পর্যবেক্ষণ রয়েছে - ' বেআইনী কাজ নিয়ে খবর করা সাংবাদিকের মৌলিক অধিকার। প্রশাসনের চোখে ভালো নাও লাগতে পারে। তবে নির্ভীক জনহিতকর সাংবাদিকতা জনগণ কে সচেতন করে '। উক্ত দুটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওই সাংবাদিকের আগাম জামিনের আবেদন গ্রহণ করে বীরভূম জেলার এসপি কে দুটি এফআইআর কপি ভালোমতো খতিয়ে দেখবার পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়েছিল আদেশনামায় - 'যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য হলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা   অভিযোগকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা উচিত। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এজলাসে আরামবাগের এক ইউটিউব নিউজ চ্যানেলের ত্রয়ী সাংবাদিক গ্রেপ্তারে স্থানীয় থানার পুলিশের অতিসক্রিয়তা নিয়ে মামলা উঠে। ভার্চুয়াল শুনানিতে আরামবাগ টিভির সম্পাদক সেখ সফিকুল ইসলাম, আলিমা বিবি এবং সুরজ আলি খানের গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে রাজ্যের ডিজিপির কাছে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এই মামলায় পর্যবেক্ষণ - ' তিনজন সাংবাদিক গ্রেপ্তারে দেশের সংবিধান কে লঙ্ঘন করা হয়েছে'।  রাজ্যের ডিজিপি কে চাওয়া রিপোর্টে সুপ্রিম কোর্টের অর্নেশ কুমার - ললিতা কুমারি মামলার রায় এক্ষেত্রে (আরামবাগ টিভি)  লঙ্ঘন হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ। এফআইআর কপি থেকে গ্রেপ্তারের আগে নোটিশ। পাশাপাশি গভীররাতে রীতিমতো ঘর ভেঙে দুজন শিশু সহ ওই তিনজন সাংবাদিক কে জোরপূর্বক গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় আরামবাগ থানার পুলিশ। যদিও ওই দুই শিশু কে আরামবাগ থানার সামনে রেখে দেয় পুলিশ। যে অভিযোগের ভিক্তিতে গ্রেপ্তার। সেই অভিযোগের ঘটনা টি তিনমাস পুরাতন। এফআইআর কপিতে অবশ্য ওই তিনমাস কেন দেরি হলো অভিযোগ নথিভুক্ত করতে তার উল্লেখ নেই। কোন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আগে নোটিশ দিতে হয়।এক্ষেত্রে সেই ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে নোটিশ দেওয়া হয়নি৷ গত ২৯ জুলাই রাত ১২ টা নাগাদ অভিযোগপত্র গৃহীত হয়। গৃহীত হওয়ার ঘন্টা খানেকের মধ্যেই আরামবাগ থানার পুলিশ বিশাল পুলিশ বাহিনী এনে রীতিমতো ঘরের প্রধান দরজা ভেঙ্গে জোরপূর্বক গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। পুলিশের এহেন অতিসক্রিয়তায় প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন এই পুলিশের অতি সক্রিয়তা?  আরামবাগ টিভির পক্ষে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানান - '     নিরপেক্ষ এবং নির্ভীক সংবাদ পরিবেশনে আরামবাগ টিভি জেলার গন্ডি ছড়িয়ে রাজ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।  করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে লকডাউনের মধ্যেই আরামবাগ থানার সামনে থেকে ৫৭ টি ক্লাব কে গড়ে ১ লক্ষ টাকার রাজ্য সরকারের চেক বিলি হয়। করোনার সময়ে যেখানে জমায়েতে বিধিনিষেধ সেখানে আরামবাগ থানা কিভাবে এই চেকবিলি কর্মসূচি নিলো? সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বেশিরভাগ ক্লাবের আবার কোন অস্তিত্ব নেই!  আরামবাগ টিভির সম্প্রচারিত খবরে এগুলি বিস্তারিত দেখানো হয়। এছাড়া অন্য সংবাদ পরিবেশনে আরামবাগ থানার পুলিশের বালির গাড়িতে তোলাবাজির ছবিও দেখায় এই ইউটিউব নিউজ চ্যানেলটি। এই ইউটিউব নিউজ চ্যানেলে লক্ষাধিক গ্রাহক  থাকায় সারারাজ্য জুড়ে হইচই পড়ে যায়। পঞ্চায়েত সমিতির এক প্রাক্তন সদস্য যার অবাধ যাতায়াত আরামবাগ থানাতে। তিনি আরামবাগ টিভির ত্রয়ী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গত ২৯ জুলাই রাত ১২ টা নাগাদ  তোলাবাজির অভিযোগ আনেন। তাও তিনমাস আগেকার ঘটনার!  অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই আরামবাগ থানার পুলিশ তিন সাংবাদিক কে গ্রেপ্তার করে অভিযোগপত্র গ্রহণের ঘন্টা খানেকের মধ্যেই! আরামবাগ মহকুমা আদালতে ধৃতদের পেশ করা হলে প্রথম দিকে পুলিশি হেফাজত পরবর্তী ক্ষেত্রে জেল হেফাজত হয় সাংবাদিকদের। কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এর মাধ্যমে আরামবাগ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তা নিয়ে মামলা দাখিল হয়। চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এজলাসে এই মামলার অনলাইন শুনানি চলে। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের বেশকিছু মামলার গ্রেপ্তারি বিষয়ক রায় দেখিয়ে আরামবাগ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করার আর্জি রাখেন মামলাকারীরা।হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এই মামলায় গ্রেপ্তারের পদ্ধতি নিয়ে রাজ্যের ডিজিপির কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন। পাশাপাশি এই তিনজন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে দেশের সংবিধান কে লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মামলার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত সপ্তাহে বোলপুরের এক সাংবাদিকের আগাম জামিনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্ভীক জনহিতকর সাংবাদিকতার গুরুত্ব উল্লেখ করে বীরভূমের এসপি কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তার উপর চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট   আরামবাগ টিভির সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে  বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করলেন রাজ্যের ডিজিপির কাছে। এতে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে - উচ্চ আদালত না থাকলে নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকুল ইসলামরা পুলিশের অতি সক্রিয়তায় জেলের চার দেওয়ালেই বছরের পর বছর পচতেন.......                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                             

বুধবার, জুলাই ০১, ২০২০

প্রাণঘাতী চিনা মাঞ্জা ব্যবহার বন্ধে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে রাজ্য কে নির্দেশ হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)  , 
 

মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি.বি. রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে চিনা মাঞ্জা নিয়ে রায়দান ঘটলো। সেখানে চিনা মাঞ্জা কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি রাজ্য কে চিনা মাঞ্জা নিয়ে ব্যাপকভাবে প্রচারের নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে অনলাইন শুনানি চলে। সেখানে শুধু চিনা মাঞ্জা নয় ঘুড়ি উড়াবার সুতো, সিন্থটিক সুতো সহ চিনা মাঞ্জার যাবতীয় সরঞ্জাম কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। গত ২৫ শে মার্চ রাজ্য সরকারের চিনা মাঞ্জা নিয়ে বিধিনিষেধের বিজ্ঞপ্তি টি ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য সরকার কে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি চিনা মাঞ্জার ব্যবহার বন্ধে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে উচ্চ আদালতের পক্ষে। উল্লেখ্য, এই মামলার আবেদনকারী আইনজীবী করুণময়ী ওরফে জয়ন্ত সামন্ত ২০১৭ সালে ২৭ ডিসেম্বর শিশুকন্যা কে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে কলকাতার এক উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জায় পথ দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন। এই ঘটনায় শিশুকন্যাটি গুরতর আহত হয়। এরপরেই ওই আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাটি দাখিল করেন। ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কলকাতার 'মা' উড়ালপুল সহ তিলজলা, প্রগতি ময়দান, তপশিয়া প্রভৃতি এলাকার উড়ালপুল গুলিতে একের পর এক পথ দুর্ঘটনা ঘটে। পাঁচের বেশি আহত হওয়ার পাশাপাশি ইকবালপুরে চিনা মাঞ্জায় একজনের প্রাণহানি ঘটে। চলতি বছরে ১৭ মে এই মৃত্যুর ঘটনাটি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলায় সংযোজন ঘট৷ আর এতেই মামলার গতি বাড়ে। কখনো মা উড়ালপুল কখনো বা ইকবালপুর। ঘটনাস্থল যাইহোক না কেন, মোটরসাইকেল আরোহীদের হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলেছে চিনা মাঞ্জার সুতোর জন্য ।  শুধু তাই নয় পাখিরাও এই মানব সভ্যতার ঘুড়ি উড়ানোর খেলায় হারাচ্ছে প্রাণ৷ ২০১৭ সালের পর থেকে চিনা মাঞ্জায় হতাহত ক্রমশ বাড়ছে। এই ঘটনা গুলি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। তবে কয়েক সপ্তাহ আগে ইমেল মারফত পুনরায় এই প্রাণঘাতী চিনা মাঞ্জা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করানো হয়। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ভিডিও কনফারেন্সে এই মামলার শুনানি চলেছিল। সেখানে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ১৯ জুনের মধ্যে রাজ্য কে চিনা মাঞ্জা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে জানতে চাওয়া হয়েছিল - চিনা মাঞ্জা নিয়ে এত কেন দুর্ঘটনা ঘটছে?  এই বিষয়ে রাজ্যের তরফে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই বিধ প্রশ্ন গুলির যথাযথ উত্তর চাওয়া হয়েছিল রাজ্যের কাছ থেকে। রাজ্যের তরফে রিপোর্টে জানানো হয়েছে - গত ২৫ শে মার্চ রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের তরফে চিনা মাঞ্জার ব্যবহারে বিধিনিষেধ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ভিডিও কনফারেন্সে এই মামলায় সবপক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে ডিভিশন বেঞ্চ চিনা মাঞ্জা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি টি ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য সরকার কে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি চিনা মাঞ্জা বন্ধ করতে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে।                                                                               

সোমবার, জুন ২৯, ২০২০

হাওড়ার শিক্ষকদের বদলীর নির্দেশে নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 
  

মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এই  রাজ্যের পাশাপাশি গোটা দেশজুড়ে শুরু হয় লকডাউন।সেখানে সমস্ত অফিস - আদালত একপ্রকার বন্ধ বলা যায়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গত ৪ জুন হাওড়া জেলায় সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত এক বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষক - অশিক্ষক কর্মচারীদের বদলীর নির্দেশ জারি করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষ এর এহেন নির্দেশ জারির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন বদলীর নির্দেশপ্রাপ্ত  চারজন শিক্ষক।মামলাকারীদের আইনজীবী এক্রামূল বারি আবেদনকারি শিক্ষকদের হয়ে মামলাটি লড়েন। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলার অনলাইন শুনানি চলে। সেখানে উভয় পক্ষের ভিডিও কনফারেন্সে  সওয়াল-জবাব  শুনে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য হাওড়ার ওই স্কুলের চার জন শিক্ষকের বদলীর নির্দেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। সেইসাথে এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষর ওই বদলীর নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেন। সাথে বকেয়া বেতন দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার আদেশনামা রয়েছে এই মামলার রায়দানে। আগামী ৩০ শে সেপ্টেম্বর পর কলকাতা হাইকোর্টের রেগুলার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলবে বলে জানা গেছে। মামলাকারীর আইনজীবী এক্রামূল বারি জানান - " করোনা ভাইরাসের দৌরাত্ম্যে সারা দেশে যখন অফিস আদালত একপ্রকার বন্ধ বলা যায়, সেখানে কিভাবে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক - অশিক্ষক কর্মচারীদের বদলীর নির্দেশ জারি করতে পারে? "। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতার হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলায় ওই শিক্ষকদের বদলীর নির্দেশ প্রত্যাহার করতে এক সপ্তাহের সময়সীমা যেমন দেওয়া হয়েছে। ঠিক তেমনি বকেয়া বেতন দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।                                                                                                    

শনিবার, জুন ২৭, ২০২০

মামলা প্রত্যাহারের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দারস্থ সব্যসাচী দত্ত

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)    

রাস্তাঘাটে প্রায়শ যানবাহন চালকদের উপর পুলিশি জুলুমবাজির অভিযোগ উঠে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তোলাবাজির অভিযোগ প্রায়শ শোনা যায়। ঠিক এহেন ক্ষেত্রে সাদা পোশাকের পুলিশের  দৌরাত্মটা বেশি লক্ষণীয়। কে ড্রাইভার, কে সিভিক আর কেই বা পুলিশ অফিসার?  তা বোঝা বড়ই দায়!  গত বৃহস্পতিবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এক মামলার রায়দানে বিচারপতি তাঁর আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন - ' ট্রাফিক জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে পুলিশের উর্দি পড়া আবশ্যিক'। তাছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশ কোন গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করতে পারবেনা। ওই মামলা সাদা পোশাকের পুলিশ যে বেআইনী কাজ করেছেন তা মামলার পর্যালোচনায় বিচারপতি জানিয়েছেন। ওই পুলিশ অফিসার কে সর্তকও করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে বিধাননগরের এই আইনজীবীর জোর পূর্বক ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া এক সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা উঠে। অনলাইন শুনানিতে উঠে আসে - বিধাননগরে সূর্যনীল দাস নামে এক আইনজীবী গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিধাননগর (পূর্ব) থানার বি.কে - বিএল পার্কে গাড়িতে থাকার সময় এক সাদা পোশাকের পুলিশ 'নো পার্কিং' বিধি না মানার অভিযোগে 'আইনজীবী' চালকের  ড্রাইভিং লাইসেন্স কেড়ে নেন। শুধু তাই নয় ওই আইনজীবীর আরও দাবি - 'সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার উর্দি তে না থেকে এহেন ট্রাফিক জরিমানা আদায় করতে পারেন না '। এই ঘটনায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সিজার লিস্টে অন্তভূক্ত পর্যন্ত হয়নি। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ভিডিও কনফারেন্সে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন -' ওই গাড়ি চালক  'নো পার্কিং' বিধি মানেননি। তাছাড়া বিধাননগর পূর্ব থানার ওসি ওই গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিরিয়ে দিয়েছেন'। উভয়পক্ষের অনলাইন সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর আদেশনামায় জানিয়েদেন - ' ওই সাদা পোশাকের পুলিশ অফিসার বেআইনী কাজ করেছেন।  ট্রাফিক জরিমানা আদায় করতে গেলে পুলিশ কে উর্দিতে থাকতে হবে'।  ওই পুলিশ অফিসার কে কলকাতা হাইকোর্ট সর্তকও করে থাকে।  


অপরদিকে কলকাতা হাইকোর্টে বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সব্যসাচী দত্ত   এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে মামলা দাখিল করেন। কলকাতা হাইকোর্ট এই বিজেপি নেতার এই মামলা গ্রহণ করেছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলাটি উঠে। সেখানে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট থানা অর্থাৎ লেকটাউন থানা কে পরিস্কারভাবে জানিয়েছে - 'পরবর্তী নির্দেশ না অবধি কোন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবেনা পুলিশ'। সেইসাথে এই মামলার কেস ডাইরি তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।উল্লেখ্য, গত ৮ জুন লেকটাউনের ব্যাঙ্গুর এলাকায় বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপির রাজ্য নেতা সব্যসাচী দত্ত এক কর্মসূচিতে গেলে হামলার শিকার হন। অভিযোগ, শাসকদলের কর্মীসমর্থকেরা সব্যসাচী দত্ত কে প্রহৃত করে থাকেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা প্রাপক বিজেপির এই নেতার উপর হামলা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে যায়। এই মামলায় শাসকদলের কর্মীসমর্থকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় লেকটাউন থানায়। কাউন্টার পুলিশ কেস ( জিআর)  ছবি দত্ত নামে এক তৃণমূল সমর্থক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সব্যসাচী দত্ত এর বিরুদ্ধে। এই মামলায় গ্রেপ্তারি আশংকা করে দ্রুত কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন সব্যসাচী দত্ত। ওই মামলাটি খারিজ করার আবেদন রাখেন কলকাতা হাইকোর্টে।গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে ভিডিও কনফারেন্সে এই মামলায় বিচারপতি তাঁর আদেশনামায়  জানিয়েদেন - ' এই মামলার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি সব্যসাচী দত্ত এর বিরুদ্ধে কোন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবেনা লেকটাউন থানার পুলিশ'। সেইসাথে এই মামলার কেস ডাইরি তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।এই মামলায় আবেদনকারী সব্যসাচী দত্ত এর পক্ষে আইনজীবী রয়েছেন রাজদীপ মজুমদার।                                                                                                                                                                                                                                            

বৃহস্পতিবার, জুন ২৫, ২০২০

কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগ নয়

মোল্লা জসিমউদ্দিন,   

বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার অনলাইন শুনানি চলে। ভিডিও কনফারেন্সে এই মামলায় বিচারপতি বিবেক চৌধুরী উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন কোন নিয়োগ করতে গেলে কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে বলে এদিন বিচারপতি তাঁর আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। ২০১৭ সালে শুন্যপদ  ১৪ হাজার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক  নিয়োগের জন্য। পরীক্ষার ফলপ্রকাশ থেকে একাডেমিক স্কোর সেইসাথে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশে ব্যাপক অসচ্ছতার অভিযোগ উঠে দফায় দফায়। কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন এজলাসে এইবিধ অভিযোগগুলি নিয়ে মামলা দাখিল হয় পরীক্ষার্থীদের তরফে। এদিন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষার্থী ভানু রায়ের পক্ষে আইনজীবী ফিরদৌস শামীম জানান - "উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ঘটেছে"। বুধবার দুপুরে অনলাইন শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরী উভয় পক্ষের ভিডিও কনফারেন্সে সওয়াল-জবাব শুনে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। সেইসাথে আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন যে - স্কুল সার্ভিস কমিশন কোন নিয়োগ করতে গেলে যেন কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি অবশ্যই নেয়।                                                                                              

শুক্রবার, মে ২৯, ২০২০

হাইকোর্ট চত্বরে তৃণমূল লিগ্যাল সেলের রক্তদান

মোল্লা জসিমউদ্দিন 

শুক্রবার দুপুরে  কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে   তৃণমূল লিগ্যাল সেলের পক্ষে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই শিবিরে শতাধিক আইনজীবী রক্তদান করেন। এই কর্মকান্ডেউপস্থিত  ছিলেন আইনজীবী তথা স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তৃণমূল লিগ্যাল সেলের চেয়ারম্যান ভাস্কর বৈশ্য প্রমুখ। ইতিপূর্বেতৃণমূল লিগ্যাল সেলের পক্ষে সবজির হাট বসানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে।                          

বৃহস্পতিবার, মে ২১, ২০২০

কাটোয়া - কালনা - দাঁইহাটে বিদায়ী চেয়ারম্যানরা হলেন প্রশাসক

শ্যামল রায়

  
কালনা কাটোয়া মহকুমার কাটোয়া, দাঁইহাট ও কালনা পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বুধবার। বৃহস্পতিবার থেকে তিনটি পৌরসভার প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন  তৃণমূলের  ৩ জন বিদায়ী চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে যে কাটোয়া পৌরসভার কুড়ি টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০ টি ওয়ার্ড তৃণমূলের এবং ১০টি ওয়ার্ড ছিল কংগ্রেসের দখলে। প্রথমে অমর রাম তৃণমূল দলে যোগদান করে চেয়ারম্যান পদে বসেন তারপর দলীয় কোন্দলের ফলে কংগ্রেসের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় অমর রাম অনাস্থা প্রস্তাব হেরে যান। চেয়ারম্যান হন কংগ্রেসের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। পাঁচ বছর পৌরবোর্ড এর মেয়াদ শেষ হতেই প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যুক্ত হলেন বিধায়ক এবং চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
এছাড়াও দাঁইহাট পৌরসভা মেয়াদ শেষ হয়েছে বুধবার। চেয়ারম্যান শিশির কুমার মন্ডল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। জানা গিয়েছে যে এই পৌরসভার ১৪ টি ওয়ার্ড সংখ্যা রয়েছে। এর মধ্যে নয়টি ওয়ার্ড পেয়েছিল সিপিএম চারটি ওয়ার্ড পেয়েছিল তৃণ মূল কংগ্রেস এবং একটি বিজেপি। সিপিএমের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বিদ্যুৎ বরণ ভক্ত। তারপর সিপিএম থেকে চার কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগদান করায় সিপিএম পরাজিত হয় এবং বোর্ড গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। শিশির কুমার মন্ডল চেয়ারম্যান হন তিনি এখন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন।
 কালনা পৌরসভার দায়িত্ব পালন করবেন বিদায়ী চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ বাগ। জানা গিয়েছে যে এই পৌরসভায় ১৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে ১২ টি ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেস পৌরবোর্ড গঠন করেছিল। পৌর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বুধবার। বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ বাগ।
তবে তিনটি পৌরসভার প্রশাসনিক দায়িত্বে চেয়ারম্যানদের দেওয়ায় বিরোধীরা নানান ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। নিয়ম বহির্ভূত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব শেষ হলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে সরকারি বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এমনটাই সাংবিধানিক নিয়ম। কিন্তু তৃণমূলের সরকার বিদায় চেয়ারম্যানদের প্রশাসনিক দায়িত্ব দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চরিতার্থ করতে চাইছে। এমনটাই বিরোধীদের অভিযোগ। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ থাকে যে লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু তিনটি পৌরসভার এই অধিকাংশ ওয়ার্ডে লিড  দিয়েছিল বিজেপি। তাই বিজেপি নেতাদের অভিযোগ তৃণমূলের সরকার যতই তাদের দলীয় লোকদের প্রশাসনিক দায়িত্ব দিক ভোট হলে বিজেপি  পৌরসভা দখল করবে বলে তাদের আশা। কিন্তু তৃণমূল নেতারা বলেছেন সরকারের উন্নয়ন দেখে মানুষ ভোট দেবে এবং তিন পৌরসভায় ক্ষমতাসীন হবে তৃণমূল কংগ্রেস।

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে চিন্তায় কালনা

শ্যামল রায়
  

ভিন্ন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা তাদের বাড়িতে ফিরে আসার সাথে সাথে চিন্তিত পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে চলছে লকডাউন। লকডাউন চলাকালীন ভিন্ন রাজ্যে থেকে যে সমস্ত শ্রমিক এখানে আসছেন তাদের পরীক্ষা করার পরে ধরা পড়ছে কোন ভাইরাসের পজেটিভ। কিন্তু অনেকেই এসে তাদের পরিবারের সাথে মেলামেশা করার পর সমস্যা আরো জটিল হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন এ থাকছেন আবার কেউ বাড়ির মধ্যেই একা থাকলেও মিলামিশা করছেন বাড়ির সকলের সাথে তাই করনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়লে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা।
কারণ কালনা কাটোয়া মহকুমা জুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ধরা পড়েছে করোনা ভাইরাস এর পজেটিভ। পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের হামিদপুর গ্রামে একজন পরিযায়ী শ্রমিকের পজেটিভ এবং মন্তেশ্বর ব্লকের স্বামী-স্ত্রীর করোনা পজেটিভ ধরা পড়ায় পুলিশ ও প্রশাসনের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই সকল পর্যায়ে শ্রমিকরা যদি বাড়িতে আসার পর এলাকার মানুষের সাথে অবাধে মেলামেশা করে বেড়ায়।  তাহলে এই রোগ আরো ভয়ঙ্কর আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা।
কারণ পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকে এখনো ভিন্ন রাজ্যে রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার পরিচয় শ্রমিক। কেউ কেউ বাড়িতে আসার পর হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যারা বাড়ি ফিরছেন তারা অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে ইতিমধ্যে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর কাছে অনেকেই অভিযোগ জানাতে বারবার যোগাযোগ করছেন। যারা বাড়ি ফিরছেন তাদের দ্রুত খবর দিতে হবে এবং পুলিশকে জানিয়ে ওই সকল পরিচয় শ্রমিককে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পরে হোম কোয়ারেন্টাইন এ পাঠাতেই হবে। না হলে অদূর ভবিষ্যৎ গননা ভাইরাসের পজেটিভ ধরা পড়লে বিপদ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের কমপক্ষে পাঁচ হাজার শ্রমিক রয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যে। হামিদপুর গ্রামে যে পরিযায়ী শ্রমিকের পজেটিভ ধরা পড়েছে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত।অন্যদিকে মন্তেশ্বর ব্লকের যে স্বামী স্ত্রীর করোনাভাইরাস পজেটিভ হয়েছে তারাও বোম্বে থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর তাদের করো না পজেটিভ ধরা পড়েছে। তাই ভিন্ন রাজ্য থেকে দ্বারা বাড়ি ফিরছেন তাদের উচিত হোম করেনন্টাইন তাই না থাকা এবং দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া।এদিন প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়ে দিয়েছেন যে যারা বাড়ি ফিরবেন তাদের দ্রুত করে ১৪ দিনের জন্য থাকতে হবে এবং দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। কেউ গোপনে আড়ালে থাকলে দ্রুত পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের খবর দিয়ে তাদের হোম করেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে দ্রুত।

আমফানে বিপর্যয় পূর্ব বর্ধমানে

সুরজ প্রসাদ
 
আমফানের তাণ্ডবে বর্ধমান শহরে বেশ কয়েকটি জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে দেওয়াল ভেঙে পড়েছে রাস্তার উপরে।গাছপালা ভেঙে পড়েছে।ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুতের পোল। বুধবার ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়।পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে ঝড়ো হওয়া।বেলা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে ঝড়ের বেগ। 

 রাতে আমপানের দাপটে জেলাজুড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে থাকে।বর্ধমান শহরের আহিরীমহল রাজস্কুলের কাছে বিজয় চতুস্পাঠীর বিশাল পাঁচিল রাস্তায় ভেঙে পড়ে। ফলে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।অন্যদিকে মন্তেস্বর বাজারে একটি অশ্বত্থ গাছের ডাল ভেঙে পড়ে দুই মহিলা সহ এক ব্যক্তি জখম হয়েছেন। আহতদের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। 
জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা অচল হয়ে পড়েছে।বর্ধমান শহরেরও বেশীরভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন। এছাড়াও জায়গায় জায়গায় প্রচুর গাছ উপরে পড়েছে । গোলাপবাগের তারাবাগে বিদ্যুতের পোল ভেঙে পড়েছে।

আমফানে মাথায় হাত ভাতারর চাষিদের

আমিরুল ইসলাম
  

আমফানের প্রভাবে ভাতারের বিস্তীর্ণ এলাকার ধান জলের তলায়। চাষিদের মাথায় হাত। আর হয়তো ধান তুলতে পারবেনা ভাতার ব্লকের চাষীরা। সরকারের সাহায্যের দিকে  তাকিয়ে সকলে।

আত্মনির্ভর ভারত - কাজি একরাম আলী

।।আত্মনির্ভর ভারত।।

কাজি একরাম আলী
  

আমাদের সঙ্গে আছে আমাদের সরকার ।
প্যাকেজ লক্ষ কোটি পার ।

সবার সব কিছুর সুরাহা হবে,
সহজ সরল সুদে ঋণ পাবে।

সবার প্রথমে শ্রমিকশ্রেণী,
নিয়ে ফেলুন ঋণ।
চাল ডাল নুন তেল সবজি,
মনোহারি ওষুধ পালা,
যা যা প্রয়োজন কিনে নিন।

মধ্যবিত্ত ঋণ নিন,
ইএমআই কিস্তি ধার,
সব মিটিয়ে ফেলুন।

উচ্চবিত্ত শিল্পপতি ব্যওসাদার,
ঋণ নিন,
আপনি জানেন, ঋণটার,
উপযুক্ত ব্যবহার, 
আপনার অভিজ্ঞতা অপার।

দেশ হবে আত্মনির্ভর,
আমাদের পাশে আমাদের সরকার ।

বুধবার, মে ২০, ২০২০

খাদ্য সামগ্রী বিলিতে সারাবাংলা রাইটার্স ফোরাম

শ্যামল রায়
 
কবি-সাহিত্যিকদের নিজস্ব সংগঠন বাংলা রাইটাস ফোরামের উদ্যোগে অসহায় সম্বলহীন গরিবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হলো।
বুধবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় কে উপেক্ষা করে দেড় শতাধিক অসহায় গরীব মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে খাদ্য সামগ্রী গ্রহণ করেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এর শুভ সূচনা করেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিজন দেবনাথ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অশোক অধিকারী ও সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কবি ও সাংবাদিক শ্যামল রায় সহ অনেকে।
নবদ্বীপ পৌরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফুল্ল নগর ভোরের খবর ভবন শ্যামল রায়ের বাড়ি থেকে অসহায় গরীবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার কাজ হয়। অসহায় গরীবদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়ে কাউন্সিলার বিজন দেবনাথ জানান যে করোনাভাইরাস এর জেরে চলছে লকডাউন। এই এলাকার অধিকাংশ পরিবারের লোকজন প্যান্ডেল শ্রমিক। ভিন রাজ্যে আটকে পড়ার কারণে এই সকল পরিবারের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। স্থানীয় সাংবাদিক শ্যামল রায় যে ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যতটুকু সমাজসেবামূলক কাজ করছে এটা নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে। কিছু মানুষ এই ধরনের কাজ করেন বলে  বহু গরিব মানুষ উপকৃত হন। চতুর্থবারের জন্য এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে জিরে হলুদ সোয়াবিন লবণ তেল সাবান ও মুড়ি প‍্যাকেট করে তুলে দেওয়া হয় ।  এলাকার মানুষ খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ভীষণ খুশি বলে জানা গিয়েছে। অর্জুন বিশ্বাস প্রাণ বল্লব দেবনাথ নিরোধ শীল রাজকুমার রায় মিঠু রায় ,কবিতা  মণ্ডল বলেন লকডাউন এরমধ্যে চরম অভাব এর মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে উপকৃত হলাম।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকা সত্বেও রক্তদান শিবির ভাতারে

আমিরুল ইসলাম
  

প্রাকৃতিক বিপর্যয় সত্বেও ভাতারে রক্তদান শিবির তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে।

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের নির্দেশে বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে আজ প্রাকৃতিক বিপর্যয় কে উপেক্ষা করে রক্তদান শিবির।
বর্তমানে কোরোনা ভাইরাসের জেরে ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে রক্তের টান দেখা দিয়েছে ।সেই রক্তের টান দেখা দিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস।

ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মনোয়ার ইসলাম জানান, সকাল থেকেই প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভাতার ব্লক জুড়ে।তার সত্বেও সেই ঝড়-বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মীরা এসেছেন আমাদের এই রক্তদান শিবিরে। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী দের কে অসংখ্য ধন্যবাদ। মোট 40 জন রক্তদাতা রক্ত দেবেন আজ ।আমাদের 100 জন কর্মী হাজির হয়েছেন রক্ত দিতে। কিন্তু লোকজনের জন্য 40 জনের বেশি রক্ত নিতে পারবেন না বর্ধমান মেডিকেল কলেজ। এই রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে বামুনারা হাইস্কুলে।
এই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত রয়েছেন ভাতার বিধানসভার বিধায়ক সুভাষ মন্ডল, ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশীষ ব্যানার্জি, ভাতার ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি মনোয়ার ইসলাম, বামুনারা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরেশ নাথ মুখার্জী।

সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় অপেক্ষা করে রক্তদান শিবির ।

আমফানে রাত জেগে তারকেশ্বরের সন্তোষপুর

সুভাষ মজুমদার
  

তারকেশ্বর সন্তোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত তরফ থেকে সমস্ত গ্রামবাসী গ্রামবাসীকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে মাটির বাড়ি এবং এডবেস্টার বাড়িতে যারা আছেন প্রত্যেক কে নিরাপদ স্থানে এবং প্রাইমারি স্কুলে আজ রাতে থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে যেভাবে আমফান ঘূর্ণিঝড় প্রকট হচ্ছে তাতে করে নিরাপদ স্থানে থাকাটা জরুরী এমনই বার্তা দিলেন পঞ্চায়েত প্রধান স্বরূপ কুমার ঘোষ ৷

পাশে আছি বার্তায় সক্রিয় গলসি ব্লক তৃণমূল সভাপতি

জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি

  
       গত ১৯ শে মে পূর্ব বর্ধমানের গলসী ১নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জাকির হোসেনের উদ্যোগে "পাশে আছি" সংস্থার পক্ষ থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রথম পর্বে  লোয়া-রামগোপালপুর অঞ্চলের ১৫০০ পরিবারের হাতে চাল, আলু, পেঁয়াজ, কুমড়ো, মুড়ি, বাঁধাকপি, মুসুরী ডাল, তেল সহ বিভিন্ন নিত্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সেখ খোকন, ব্লকের এস.সি, এস.টি ও ও.বি.সি সেলের সভাপতি বুজরুল শাহ, লোয়া- রামগোপালপুর অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য ও সদস্যারা। 
     পরে জাকির হোসেন বলেন - দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর নির্দেশে লক ডাউন শুরুর পর থেকেই আমরা বারবার দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এমনকি যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ডি.ভি.সির ক্যানেল রাস্তা ধরে হেঁটে নিজেদের গন্তব্যস্থলের দিকে যাচ্ছে আমরা তাদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি। আগামী দিনেও আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। দিদির রাজ্যে আমাদের এলাকার একজন মানুষও যাতে অভুক্ত না থাকে সেব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। তিনি এলাকাবাসীদের লকডাউন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেন।

মঙ্গলবার, মে ১৯, ২০২০

বিয়ের দিনেই করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে অনুদান

জুলফিকার আলি

  

বিল্বপদ আচার্য র একমাত্র ছেলে অরিন্দম (বাড়ি সুতাহাটা র বরদা) সহিত শ্রীকৃষ্ণ পাল র একমাত্র কন্যা জলীর শুভ বিবাহ সমস্ত আইন মেনেই সম্পন্ন হয়। অরিন্দম অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে 10001 টাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

আমফান ঝড় মোকাবিলা নিয়ে স্মারকলিপি

জুলফিকার আলি
   

সিপিঅাইএম, দেশপ্রাণ ও কাঁথি এরিয়া কমিটির উদ্যোগে ঘনীভূত সুপার সাইক্লোন অামফান দুর্যোগের সম্ভাবনা র পরিপ্রেক্ষিতে দুর্যোগ অাশ্রয় কেন্দ্র (অায়লা কেন্দ্র) সমূহ ঝোপঝাড়, অাবর্জনা,ময়লা পরিষ্কার করে ব্যবহারোপযোগী করে তোলা,করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে স্যানিটাইজ করা,ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা পরিষেবা সুনিশ্চিত করন, পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুতকরণ, সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন দেশপ্রাণ, খেজুরী-২,কাঁথি-১, রামনগর -১ ও ২ছাড়া কাঁথি-৩, খেজুরী-১,এগরা-১ও ২,ভগবানপুর -১ ও ২ ব্লক সমূহে স্কুল সমূহে অাশ্রয় কেন্দ্র খোলা, সম্ভাব্য সমস্ত দুর্গত মানুষদের উদ্ধার করা, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়তে কন্ট্রোল রুম চালু করা প্রভৃতি দাবী সমূহের ভিত্তিতে মহকুমাশাসক দপ্তরে অাজ ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। নেতৃত্ব দেন সিপিঅাইএম নেতা হরপ্রসাদ ত্রিপাঠী, মামুদ হোসেন, কানাই মুখার্জি, সঞ্জিত দাস, সুতনু মাইতি, তাপস মিশ্র, তরুণ মাইতি, সলিল বরণ মান্না, সেক সাত্তার, সেক জান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সিপিঅাইএম নেতা তথা প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর কে গ্রামপঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত সমান সক্রিয় হতে হবে। মানুষের সহযোগিতায় করোনার পাশাপাশি অামফান দুর্যোগ কেও মোকাবিলা করা যাবে বলে প্রত্যয় প্রকাশ করেন সিপিঅাইএম নেতা মামুদ হোসেন।

তারকেশ্বরে বিজেপির রক্তদান শিবির

সুভাষ মজুমদার
  
তারকেশ্বর বিজেপি পৌর মন্ডলের উদ্দ্যোগে রক্তদান শিবির।
এদিন তারকেশ্বর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বিজেপি পৌর মন্ডলের উদ্দ্যোগে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।প্রশাসনিক সহযোগিতায় লকডাউন মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রিশ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেন।মূলত লকডাউন পরিস্থিতিতে রক্তের চাহিদা মেটাতে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়।
রক্তদান শিবিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান জি এস  আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক রঞ্জিত চ্যাটার্জী তারকেশ্বর বিজেপি টাউনের কার্যকর্তা বাবুয়া সাউ, সহ অন্যান্য বিজেপির কার্যকর্তারা ৷ উল্লেখ্য যে রক্তদাতা দের হাতে মাস্ক সিনিটাইজার একটি পদ্মফুল এবং একটি করে আমচারা গাছ তুলে দেন বিজেপি নেতা বিমান ঘোষ।

কর্মদিশা প্রকল্পের সুচনায় বাঁকুড়া সভাধিপতি

সাধন মন্ডল
 
 সারা রাজ্য জুড়ে কর্ম দিশা প্রকল্পের কাজ আজ শুরু হলো বাঁকুড়া জেলাতে। বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধ রায়পুর, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, হিড়বাঁধ, প্রভৃতি ব্লকে এই প্রকল্পের কাজের সূচনা করলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী, জেলাশাসক অরুন প্রসাদ, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি, জেলা পরিষদের সহ- সভাধিপতি শুভাশিস বটব্যাল, রানিবাঁধ বিধানসভার বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি, রায়পুর বিধানসভার বিধায়ক বিরেন্দ্রনাথ টুডু সহ
 বিশিষ্টজনেরা। রায়পুরে এই প্রকল্পের সূচনা করে সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন আমাদের বাঁকুড়া জেলার 190 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটিতে আজ থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হল এর ফলে লক্ষাধিক মানুষ কাজ পাবে কোথাও ফলের বাগান তৈরি কোথাও হাপা তৈরি কোথাও পুকুর সংস্কার আবার নতুন পুকুর তৈরি করা সহ নানান কাজ করা হবে এই প্রকল্পে। মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী বলেন এই প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে কাজ করতে পারে তার জন্য আমরা সমস্ত সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেরকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি যে পরিযায়ী শ্রমিকরা যদি কাজ চান তারা যেন সসম্মানে কাজ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। প্রতিটি জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা ও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজী ব্যানার্জি রায়পুরের মটগোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের জামশোল মৌজা রায়পুর সরকারি পলিটেকনিক কলেজে আম বাগান তৈরীর কাজ এর সূচনা করেন সভাধিপতি। তিনি নিজ হাতে মাটি কেটে এই কাজের সূচনা করেন সঙ্গে ছিলেন রায়পুর বিধানসভার বিধায়ক বীরেন্দ্রনাথ টু ডু। লকডাউন এরমধ্যে মধ্যে 100 দিনের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি শ্রমজীবী মানুষেরা।

শ্রমজীবী মুসলিমদের পাশে জয় হিন্দ বাহিনী

সেখ রতন
 

চলছে রমজান মাস আর কয়েকদিন পরেই আসছে খুশির ঈদ তারি মাঝে পড়ে গেছে লকডাউন শ্রমজীবী মুসলমান ভাইদের পড়ে গেছে মাথায় হাত লকডাউন এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য সবি বন্ধ খুশির ঈদ মানাবে কিভাবে সেই সমস্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন জয় হিন্দ বাহিনীর ১নম্বর ব্লক চেয়ারম্যান শেখ হালিম বাবুর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঘার গ্রামে 650 জন মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। হালিম বাবু জানান শুধু আমাদের মুসলিম ভাই বলে নয় হিন্দু ভাইদের হাতে ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দিই শুধু আজ নয় লকডাউন শুরু থেকে আজ পর্যন্ত হালিম বাবু জানান 25 হাজার মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিই এবং তিনি এটাও বলেন লকডাউন যতদিন চলবে এরকম মানুষের পাশে আমি সব সময় থাকবো উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি রবির নন্দী,দেওয়ানদীঘি থানার ওসি  , বর্ধমান উত্তর বিধানসভার চেয়ারম্যান শেখ ডালিম, অনির্বাণ চৌধুরী, খালে খন্দকার, শেখ রহমত শেখ মাখন ,শেখ শাহরুখ,প্রমুখ ।

অনলাইন ইন্টার্নশিপ চালু করলো গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি

প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য অনলাইন ইন্টার্নশিপ চালু করল গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি
রাজকুমার দাস  

লকডাউনের অষ্টম সপ্তাহ চলছে। তার প্রভাব সব ক্ষেত্রেই পড়েছে। নিজেদের কাজকর্ম চালিয়ে যেতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজের ধরনে বেশ কিছু বদল এনেছে। বাদ যায়নি শিক্ষাক্ষেত্রও। লেখাপড়ার চর্চা নিয়মিত রাখতে সেখানে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে।

জেআইএস গোষ্ঠীর গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (‌জিএনআইটি)‌ পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপের ব্যাপারে তৎপর। তাই এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা পড়ুয়াদের জন্য সেই সুযোগ খুলে দিয়েছে। যাতায়াতে বিধিনিষেধ থাকায় অনলাইন ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করেছে জিএনআইটি।
 
জেআইএস গ্রুপের অধিকর্তা সিমরপ্রীত সিং এক প্রেস বিবৃতিতে জানান  জিএনআইটি–এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য অনলাইন ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৩৭৩ জন পড়ুয়া সেই সুযোগ পাচ্ছেন। এই কাজে ‘‌ইন্টার্নশালা’‌র সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এটি ইন্টার্নশিপ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দেশের অন্যতম সেরা একটি মঞ্চ। ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ, আইন, মিডিয়া,কলার মতো ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপের সুযোগ রয়েছে। সেখান থেকে পড়ুয়ারা অর্থ উপার্জনের সুযোগও পান। ৪০ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া সেখান থেকে ইন্টার্নশিপে যুক্ত। উপার্জনের অঙ্কও নেহাত কম নয়। মাসে ৪ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জনের সুযোগ রয়েছে। আমাদের পড়ুয়াদের মধ্যে অনেকে ক্যাপজেমিনি, আইটিসি ইনফোটেকের মতো বড় প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করছেন।’
 
গুরু নানক ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যক্ষ ড.‌ শান্তনুকুমার সেন জানান  অনলাইন ইন্টার্নশিপের সুযোগ একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এটা একটা বড়সড় সুযোগ। পড়ুয়ারা বেশ উৎসাহ পেয়েছেন। এবং তাঁদের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা দেওয়া গিয়েছে। লকডাউনে তাঁরা শেখার পাশাপাশি বাড়িতে বসে অর্থও উপার্জন করতে পারবেন। বিল্ডিং ড্রিমস ফাউন্ডেশন, ইন্ডিয়া রিডিফাইন্ড, পিএনজি হাব, চৈতন্যম ইন্সিটিটিউট অফ ডেভলপমেন্ট, হামারা পেহচান এনজিও, কনসেপ্ট রিসার্চ মিডিয়া টেক অ্যান্ড ইনফো সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেড, ননডেস্ট্রাক্টিভ টেস্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস প্রাইভেট লিমিটেড, মাদারসন অটোমোটিভ, জয় হিন্দ মোটর লিমিটেড, এলিট টেকনো গ্রুপ, অ্যাপ্টসোর্স সফ্টঅয়্যার, চ্যাম্পিয়ন ইনফোমেট্রিক্স প্রাইভেট লিমিটেড, ওয়েরোকো ইনোভেশনস অ্যান্ড সলিউশনের মতো সংস্থায় তাঁরা কাজের সুযোগ পেয়েছেন।’‌

সোমবার, মে ১৮, ২০২০

তাঁত থেকে প্রাণী বিকাশ, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে? তা জানালেন খোদ মন্ত্রী

শ্যামল রায়
  
বামফ্রন্ট আমলে ধুঁকতে থাকা তাঁতশিল্প আজ সফলতার পথে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় উদ্যোগে তাঁত শিল্পীদের উৎপাদিত শাড়ি বিদেশ সহ দেশের মধ্যে বিক্রি করে শিল্পী রাজাতে সংসার চালাতে পারেন সেই দিকে নজর দিয়েছেন। রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সোমবার সাত সকালে তার মানসিক এবং শান্তি বিকাশ কেন্দ্রের দামোদর পাড়ার প্রাঙ্গণে বসে জানালেন যে তাঁত সাধারণত দু'ধরনের। প্রথমত হস্তচালিত তাঁত এবং পাওয়ারলুম।হস্ত চালিত তাঁতের শাড়ি বিক্রয় করবার জন্য প্রথমত রাজ্যজুড়ে তাঁত হাট তৈরি করা হয়েছে।হাট গুলি হল পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম, ধাত্রীগ্রাম, নবদ্দীপ ও হাওড়ার উদয়নারায়নপুর।
এছাড়াও তাঁত শিল্পকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য তন্তুজ ও তাদের কাছ থেকে শাড়ি কিনে নিচ্ছে।
স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে বাম আমলে ১৪৭ কোটি টাকা লোকসানে চলছিল। বর্তমানে অপারেটিং সাপোটিং পাওয়ারে লভ্যাংশ দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। বাম আমলে বছরে টার্নওভার ছিল ৫৫কোটি টাকা। এই সরকারের আমলে টার্নওভার ২৫০ কোটি টাকা। শাড়ি লুঙ্গি বেড কভার হস্তচালিত তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে একাধিক ক্লাস্টার। ক্লাস্টার এর মধ্যে দিয়ে তাঁত শিল্পীরা তাদের সমস্ত রকম সরঞ্জাম পেয়ে থাকেন। পূর্ব বর্ধমানের ইতিমধ্যে সাতাশটি ক্লাস্টার তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বস্ত্র দফতরের উদ্যোগে রাজ্যে তৈরি হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা।শান্তিপুরের  ফুলিয়া তে তৈরি হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র। এই সহয়তা কেন্দ্র থেকে তাঁতিদের শাড়ি বিদেশে কিভাবে রপ্তানি করা যেতে পারে তার সমস্ত রকম উদ্যোগ এখান থেকে নেয়া হয়। তাঁতিদের শাড়ি বিক্রির সমস্ত রকম কর্মপদ্ধতি চালু হয় এই সহায়তা কেন্দ্র থেকে। তিনি আরো জানিয়েছেন যে একটা সময়ে খাদির মসলিন তাঁত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা সরকারে আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় বাংলার মসলিন তাঁত শাড়ি আজ নাম ছড়িয়েছে। কালনা মহকুমার কালনা শহরের কালিপুরে এখানকার মানুষ তাঁত বুনে কদর বাড়িয়েছে মসলিন তাঁত শাড়ির।কোচবিহারের  গঙ্গারামপুর হ্যান্ডলুম উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের তাঁত শিল্পকে বাঁচাতে তরী এই উন্নয়ন শিল্প কেন্দ্র আজ ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ করে যাচ্ছে এবং তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে এখন এই সকল তাঁতীদের কাছ থেকে তন্তুজ ও তিন বছরের জন্য তাদের উৎপাদিত শাড়ি কিনে নিচ্ছে এর ফলে তাঁতিরা তিনটে বছর নিশ্চিত থাকতে পারবেন তাদের শাড়ি বিক্রির জন্য।
তিনি আরো জানিয়েছেন যে শ্রীরামপুর গ্রামে তাঁত শ্রী  হাট আজ এলাকার মানুষের কাছে রুজি রোজগারের দিশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালনা মহকুমার  ৩০ হাজার   তাঁতি আজ মনের আনন্দে কাজ করে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি প্রাণী সম্পদ সম্পর্কে জানিয়েছেন যে রাজ্যে ডিমের উৎপাদন বাড়িয়ে ডিমের চাহিদা পূরণের কাজে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে আমাদের দপ্তর। ডিমের চাহিদা পূরণের জন্য আমরা মুরগির বাচ্চা পূরণ করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে দিয়ে বিতরণ করছি। বর্তমান ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। টার্গেট এক কোটি ছিল। যা পূরণ করা হয়েছে। দু'কোটি ডিম দরকার। বাকি আছে ৪৫ লক্ষ্।।রাজ্যজুড়ে আমরা এক কোটি মুরগির বাচ্চা বিতরণ করেছি। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ কে বাঁচাতে ইতিমধ্যে যথেষ্ট উন্নত প্রযুক্তিগতভাবে পলি ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছে।  কথায় বলা যেতে পারে প্রাণিসম্পদ সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল। বর্ধমান এবং নবদ্বীপে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও শালবনিতে প্রজনন কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। ষাঁড়ের  প্রজনন ক্ষমতাকে বাড়িয়ে কাজে লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রাণিসম্পদ পালকরা উপকৃত হচ্ছেন।

দেগঙ্গার চৌরাশী অঞ্চলে খাদ্য সামগ্রী বিলিতে তৃনমূল

ওয়াসিম বারি
  

উত্তর ২৪ পরগণা জেলার দেগঙ্গা থানার চৌরাশী অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৪০০  বেশি গরীব অসহায় পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন দেগঙ্গা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মফিদুল হক সাহাজী (মিন্টু)। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন লিয়াকত আলি (সাগর) বিশিষ্ট সমাজ সেবি নাসির হোসেন ও উপপ্রধান সহিদুল ইসলাম সকলের নিজস্ব সহযোগিতায়। উপস্থিত ছিলেন চৌরাশী অঞ্চল তৃনমূল নেতৃত্ব। দুস্থ অসহায় শ্রেণীর মানুষেরা দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কে কাছে পেয়ে অত্যন্ত খুশি এক মহিলা জানান মফিদুল সাহাজী হক তানাদের সর্বদা খেয়ালও খোঁজ রাখেন।

ধনিয়াখালিতে তাঁতিদের পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী অসীমা পাত্র

সুভাষ মজুমদার

  

লকডাউনের জেরে চরম শোচনীয় অবস্থা ধনিয়াখালীর তাঁত শিল্প।আর এই শিল্পের সাথে যুক্ত কয়েক শো পরিবার রোজগার হীন।তাই ধনিয়াখালীর তন্তুবায় দের পাশে দাঁড়ালেন মন্ত্রী তথা ধনিযাখালীর বিধায়ক অসীমা পাত্র।
ধনিয়াখালী বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে এদিন প্রায় ৬০০ তন্তুবায় দের বিতরণ করা হয় চাল,ডাল শাক সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
মন্ত্রী বলেন মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এই কর্মসূচি।ইতি মধ্যেই লকডাউন চলাকালীন ধনিয়াখালী বিধান ৩১১ টি বুথের দুস্থ্য পরিবার গুলি কে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।আগামী দিনেও যতদিন করোনা মোকাবিলায় লকডাউন জারি থাকবে ততদিন দুস্থ্য পরিবার গুলির পাশে থাকবেন এই ভাবেই।

গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের করোনা অনুদান মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে

সেখ রতন

 

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতাড় ব্লকের সকল গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের পক্ষ থেকে  মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২,৫০০ টাকার ড্রাফট পূর্ব বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি মহাশয়ার হাতে তুলে দিলেন ভাতাড় ব্লকের ভি আর পি ইউনিয়নের সভাপতি সেখ নাসিরউদ্দিন, সহ সভাপতি কৃষ্ণেন্দু সোম, সহ সম্পাদক সত্যজিৎ রায় এবং সেখ মুন্না রহমান। তাঁরা সকলেই খুশি হয়েছেন স্বল্প পারিশ্রমিক পাওয়া সত্ত্বেও তাঁরা সকলেই  মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ দিয়ে সাহায্য করতে পেরে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় ও করোনা মোকাবিলায় তাঁরা সকলেই ফিল্ডে কাজ করছেন। জেলা সভাধিপতি মহাশয়া তাঁদের এই ভূমিকায় খুবই খুশি হয়েছেন এবং গ্রামীণ সম্পদ কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

রমজানে দুস্থদের বস্ত্রবিলিতে মেমারি বিধায়িকা

সেখ সামসুদ্দিন
 
 লকডাউনের চতুর্থ পর্বে আজ মেমারি বিধানসভার বিধায়ক নার্গিস বেগমের প্রচেষ্টায় তৃতীয় ধাপে পৌরসভা সহ মেমারি বিধানসভা এলাকার সমস্ত অঞ্চল সভাপতিদের হাতে প্রকৃত গরিব ও দুঃস্থ মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী ও  বিধায়কের উদ্যোগে ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থদের জামা কাপড় প্রদান করা হয়। রমজান মাসে ঈদ উৎসবে প্রাক্কালে হাটপুকুর বিধায়ক অফিস থেকে আজ বিধানসভার ১৩টি অঞ্চলের মধ্যে আমাদপুর, দলুইবাজার ২, গন্তার ১, বাগিলা, দেবীপুর, দুর্গাপুর এই ছয় অঞ্চলের সভাপতিদের হাতে শাড়ি, ধুতি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, মেয়েদের ফ্রক, কূর্তা, ছেলেদের জামা প‍্যান্ট ইত‍্যাদি বস্ত্র সহ চাল, ময়দা, চিনি প্রভৃতি খাদ‍্য সামগ্রী তুলে দেন। বাকি অঞ্চলগুলির হাতে আগামী কাল তুলে দেওয়া হবে। মানুষের প্রতি বার্তা দেন লকডাউন মেনে চলুন, মাস্ক, স‍্যানিটাইজার গ্লাভস ইত্যাদি ব‍্যবহার করুন। এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দলুইবাজার ২ অঞ্চলের পিঙ্গুর স্পোর্টিং এন্ড কালচারাল ক্লাবের পক্ষ হতে মুখ‍্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১১,১১১ টাকার চেক বিধায়ক নার্গিস বেগমের হাতে তুলে দেন ক্লাব সভাপতি সঞ্জিত কোলে, সম্পাদক স্বপন ঘোষ, সদস‍্য অমিয় ঘোষ প্রমুখ। সভাপতি বলেন সারাবছর সামাজিক কাজ করার পাশাপাশি করোনা মোকাবেলায় মুখ‍‍্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এই টাকা প্রদান করা হল।

রবিবার, মে ১৭, ২০২০

লকডাউনের মধ্যেই নিয়মবিধি মেনে খুলছে সমুদ্রগড়ের তাঁতের হাট

শ্যামল রায়
  
রবিবার থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্ববৃহৎ তাঁতিদের জন্য তাত হাট চালু হলো। সমুদ্রগড় গণেশ চন্দ্র কর্মকার তাঁত কাপড়ের হাট চালুতে খুশি এলাকার তাঁতিরা। এই তাঁতের হাট চালুর আগের দিন শনিবার রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ নেতৃত্বে তার সমস্ত বিল্ডিং জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়েছে। হাটের অন্যতম কর্ণধার সুবীর কুমার কর্মকার জানিয়েছেন যে সপ্তাহে চার দিন হাট বসবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই তাঁতের হাটে কেনা বেচা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সমুদ্রগড় এলাকায় অধিকাংশ মানুষ তাঁত শিল্পের উপর নির্ভরশীল। সামনে পূজোর মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে তাই বাড়িতে বসে তাঁতের শাড়ি বুনন করলেও শাড়ির দাম ছিল খুব কম। তাঁতিরা কম দামে মহাজন খপ্পরে পড়ে শাড়ি বিক্রি করছিল। তাঁতের হাট চালুতে এলাকার গরিব তাঁতিরা তাদের শাড়ি বিক্রি করতে পারবে এবং সংসার চালাতে পারবেন। তবে সুবীর কুমার কর্মকার জানিয়েছেন যে লকডাউন এর কারণে বাইরে থেকে বড় বড় ব্যবসায়ী আসতে পারবেন না তবে এলাকার তাঁতিরা তাদের উৎপাদিত শাড়ি এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন বলে তিনি মনে করছেন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন যে লকডাউন এর ফলে বহু মানুষ আছেন যারা অভাবের মধ্যে পড়েছেন সেই সমস্ত তাঁতিদের সূরাহা হবে হাটে কেনাবেচা করায়। তিনি সমস্ত রকম সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।

হাইকোর্টে হুগলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার কথা জানালো রাজ্য

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু)    

আজ অর্থাৎ রবিবার থেকে হুগলিতে চালু হচ্ছে স্বাভাবিক ইন্টারনেট পরিষেবা। শনিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত জানান - 'ভদ্রেশ্বরের  তেলিনিপাড়ায় এক গন্ডগোলের জেরে শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর মহকুমা এলাকায় বিক্ষিপ্ত উত্তেজনার ঘটনা ঘটে। গুজবে যাতে অশান্তি না হয় সেজন্য হুগলি জেলা পুলিশ ও প্রশাসন গত ১২ মে থেকে ১৭ মে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখে বিজ্ঞপ্তি জারী করে। বর্তমানে ওই এলাকায় কোন অশান্তি নেই। এখন স্বাভাবিক,তাই রবিবার থেকে স্বাভাবিক হচ্ছে ইন্টারনেট পরিষেবা '। যদিও এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী শুক্রবার। উল্লেখ্য, মে মাসের ১১ তারিখে হুগলির ভদ্রেশ্বর এলাকায় তেলিনিপাড়ায় এক গোস্টি সংঘর্ষর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পরবর্তীতে বিভিন্ন সোশ্যালমিডিয়ায় নানান ভিডিও - ছবি ভাইরাল হয়ে উঠে। তাতে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর মহকুমা এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষর ঘটনা ঘটে। এতে তড়িঘড়ি জেলা পুলিশ ও প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১২ মে থেকে ১৭ মে অবধি বন্ধ রাখে ইন্টারনেট পরিষেবা।এই ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যহত হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসা থেকে অনলাইন কেনাকাটা বন্ধ হয়ে যায় একপ্রকার। তাও লকডাউনে মানুষ যেখানে গৃহবন্দি। সময় কাটাতে ইন্টারনেট অত্যন্ত জরুরি। এইবিধ নানান দাবি সামনে রেখে আইনজীবী সৌমাভ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ইমেলে চিঠি দেন। এটি জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণ করে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি আরও দুটি মামলা দাখিল হয় এই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার দাবিতে। গত শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেইসাথে রাজ্যের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মামলার গুরত্ব বুঝে শুক্রবারের পর শনিবারও  অনলাইন শুনানি চলে। সেখানে রাজ্যের পক্ষে এজি কিশোর দত্ত জানান - ' আগে গুজব সন্ত্রাস রুখতে এহেন নির্দেশিকা জারী করে ছিল জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করতে কোন অসুবিধা নেই। তাই রবিবার থেকে হুগলির ওই অংশ গুলিতে চলবে ইন্টারনেট '। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী শুক্রবার।                                                                                                                                                                 

ভারত চেতনা - হুমায়ুন কবীর

ভারত চেতনা
হুমায়ুন কবীর

 

কে না জানে শিক্ষার সাথে জ্ঞান কোথায় যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে, আর জ্ঞান বিকশিত করে  চেতনাকে। চেতনার ইতিহাস বড্ড পুরাতন আর এই ইতিহাস পুরাকালে ভারতবর্ষেরই ছিল একচেটিয়া। মানুষের ১৩৫০ গ্রাম মস্তিস্কের কোষে কোষে সঞ্চিত জ্ঞানই হল চেতনার আধার। চার হাজার বছরেরও বেশী পুরাতন ভূর্জপত্রে লেখা ঋক বেদ পৃথিবীতে অন্যতম পুরান গ্রন্থ আর তার জন্মভিটে ভারতবর্ষ, গ্রন্থ আকারে ঋক বেদ শিক্ষার শুধু নয় জ্ঞান আর চেতনার শক্তপোক্ত প্রমান। তবে শিক্ষ ছাড়া চেতনা হয় না বা শুধু মানুষেরই চেতনা আছে তাতো নয়, নইলে ফি’বছর সাইবেরিয়া থেকে গুচ্ছের হাঁস উড়ে আসতে পারতো না সাঁতরাগাছি ঝিলে, ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বড় করে ফিরেও যেতে পারত না বছরের পর বছর, এমন হাজারো উদাহরনের ছড়াছড়ি জীববিজ্ঞানের বইগুলোতে। মজার ব্যপার হল ঋক বেদেই আছে ভারতের উল্লেখ, দুশ্মন্ত আর শকুন্তলার সন্তান রাজচক্রবর্তী ভরত চেয়েছিলেন অখণ্ড ভারতে হাজারো ভাষাভাষী আর ভিন্ন ভিন্ন ঈশ্বর বিশ্বাসের ভিতের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মনুষ্যের মধ্য জাতীয় চেতনা জাগাতে, ভৌগলিক বা রাজনৈতিক বাঁধনে নয়, জ্ঞানের উন্মেষ ঘটিয়ে। অভিজ্ঞতা জ্ঞান আর চেতনার বিকাশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলেও আধুনিক মানুষের গুহা ছেড়ে দুপায়ে হেঁটে বেরিয়ে আসা নয় নয় করে হয়ে গেল ষাট সত্তর হাজার বছর, চেতনা তখনও ছিল, আজও আছে তবে আমাদের ভারতবর্ষে এটি বহু প্রাচীন হলেও চেতনার জাগরন পরবর্তীকালে সেভাবে হয়নি, আমাদের সামনে দিয়ে হামাগুড়ি মেরে বেরিয়ে আসা য়্যুরোপ-আমেরিকা ড্যাং ড্যাং করে অনেকখানি এগিয়ে গেছে চেতনার হাইওয়েতে আর আমরা বহু পুরাতন তামাদি হয়ে যাওয়া চেতনা নিয়ে দিন দুপুরে মিথ্যাচারন করছি গলি-ঘুঁজিতে।   
আরও একটু এগিয়ে এলে তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চানক্যকে পেয়ে যাই খ্রিষ্ট পূর্বের শ’তিনেক বছর আগে, মৌর্য বংশের চন্দ্রগুপ্ত-বিন্দুসারদের নীতি আর চেতনার অথেন্টিক গুরু চেতনার সুগন্ধ আজও ছড়িয়ে থাকেন অন্তরজালে, কুলকুচি করার মত অবলীলাক্রমে পঙক্তি পঙক্তিতে নীতির মাধ্যমে চেতনা ছড়িয়ে আসছেন এতগুলো বছর, খুব প্রাসঙ্গিক চিরকালীন এক চিন্তক। চানক্য নীতিতে ম ম করত তখনকার রাজনীতি আর অর্থনীতি। তাঁর নীতিই ছিল তখনকার রাজা রাজড়াদের পথনির্দেশিকা আর বর্তমানের মারপ্যাঁচের যুগের রেফারেল উপদেশ।  
পৃথিবী জুড়ে সাড়া ফেলে দেওয়া চেতনার কথা যদি ভারতবর্ষের বাইরে গিয়ে ভাবি, যদি উঁকি মারি পশ্চিমে, খ্রিষ্টপূর্বে ইহুদিদের রমরমা বাজার, এমনই এক ইহুদি মা মেরীর কোল আলোকিত করে যীশু জন্মালেন বেথলেহেমের পশুখোঁয়াড়ে, খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার শুরুর বছর চারেক আগে। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তি যীশুর বানীর ছত্রে ছত্রে চেতনার উন্মেষ, ছড়িয়ে পড়ল ভালোবাসার কথা, ক্ষমা আর শান্তির বার্তা। ভক্ত হয়ে গেল বহু ইহুদি। ভগবান আসলে কেমন, তাঁকে কেমন করে ডাকব তাই নিয়ে ইহুদিদের সঙ্গে গোল বাধল, ইহুদিরা মানল না ওঁর চেতনার বাণী, বিরুদ্ধাচারনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হয় ইহুদি কতৃপক্ষকে, রোমান সম্রাট পন্টিয়াস পাইলেটর হুকুমে ক্রুশ বিদ্ধ হলেন যীশু কিন্তু মৃত্যু হল কোথায়? চমকপ্রদভাবে জেগে উঠলেন প্রভু হয়ে, তাঁর চেতনা বিকশিত হল পৃথিবী জুড়ে। পৃথিবীতে আজও এক তৃতীয়াংশ মানুষ যীশুর সেই জাগিয়ে যাওয়া চেতনার আনুগামী।  
ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষভাগে জন্মালেন আর এক মহাপুরুষ, মধ্যপ্রাচ্যের বেদুঈনদের অরাজকাতার মাঝে আবু আল কাশিম মুহাম্মদ ইবন আদব্দুল্লাহ ইবন হাশিম আকা মুহাম্মদ। আল্লাহ্‌র দূত পয়গম্বর মুহাম্মদ একাত্ববাদ আর বাস্তববোধ সম্বল করে বিচার বিবেচনাবোধ তরঙ্গের মত বইয়ে দিলেন সমাজে, মহান আল্লাহ্‌র বানী সুরাতে সুরাতে ভরে দিলেন মানুষের মধ্যে চেতনা জাগাতে, মক্কার মাটিতে জন্ম নিল নতুন ধর্ম ইসলাম। মূর্তি পুজার বিরোধী এই পয়গম্বর প্রতিরোধের মুখে পড়লেন এমনকি তাঁর নিজস্ব কুরাইশ বংশের মধ্যেও। মক্কা ছেড়ে পাড়ি দিলেন মদিনায়, হিজরার পর বছর পাঁচেকের রক্তক্ষয়ী লড়াই লড়তে হল মুহাম্মদকে, জিতলেন মুহাম্মদ। বছর আটেক পরে ফিরে এলেন মক্কায় প্রায় বাধাহীন অসম  যুদ্ধের মাধ্যমে, মুক্তি দিলেন বন্দীদের, ক্ষমা করে দিলেন তাঁর বিরধীদের, নতুন এক চেতনার জন্ম হল মক্কার মাটিতে। হু হু করে ছড়িয়ে পড়ল ইসলাম, বহু মানুষ হয়ে উঠলেন ইসলাম আর মুহাম্মদের আনুগামী।  
যদি ফিরে তাকাই ভারতের ইতিহাসের দিকে, অষ্টম শতাব্দী শুরুর দিকে আরব থেকে মোহাম্মাদ বিন কাশিম দখল করলেন সিন্ধু আর মুলতান, তারপর মাহমুদ গজনি, মুহম্মদ ঘোরি হয়ে দাস বংশ, খিলজি বংশ আর তুঘলক বংশ পেরিয়ে ভারত দেখল লোদি বংশ। ভারতে শুরু হল মুসালমান শাসকদের একছত্র জয়জয়কার। যুদ্ধ আর জয় করে নেওয়া একের পর এক ভূখণ্ড, শক্তির আস্ফালনের সঙ্গে জয়ের নেশা, শাসকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেলেও মধ্যযুগ হল অবিশ্বাস,বাহাদুরি আর হানাহানির কাল। হৃদয়ের বা মনের জয় নয় ভূখণ্ডের দখলদারির সাথে সাথে আস্ত মানুষ আর সম্পদের জয়, শৌর্য- বীর্যের ঝঙ্কার তাই মানবিক চেতনার অভাবের অভিযোগ তোলাই যায় এই সময়টাতে।
দক্ষিণ ভারতে চোল, চালুক্য, হয়শল, বাহমানি সুলতানি আমল, দাক্ষিনাত্যের আরও সুলতান এবং নিজামদের শাসনে মানব চেতনার সঙ্গে সঙ্গে চেতনার অবক্ষয়ের উদাহরনও রয়েছে ভুরি ভুরি।   
ষোড়শ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে মোঘল সাম্রাজ্যের শুরু। শাসন, উন্নয়ন, শিল্পকলার মিশেল এই অধ্যায়ে চেতনার বিকাশ নিশ্চয়ই ঘটেছে তবে মধ্যযুগীয় মাপ মত। মাঝের পনেরটা বছর শের শাহ সুরী জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগিয়েছেন তাঁর মত করে। আকবর থেকে শাজাহানের সময় পর্যন্ত নানান সামাজিক উদারতা, দূরদর্শিতা, শিল্পকলার বিকাশের জুগেও মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটে। ঔরঙ্গজেব দক্ষ প্রশাসক হিসাবে সাফল্য পেয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করলেও তাঁর নিয়ত নিয়ে সন্দেহ ছিলই। ভিন্ন ধর্মের প্রতি তাঁর অসহিষ্ণুতা, সন্দেহবাতিক চরিত্র আর মানবিকতার অভাব মোঘল সাম্রাজ্যকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে দেয় অনেকখানি। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত টিমটিম করে টিকে থাকলেও শেষ মোঘল সম্রাট অভিমানী বাহাদুর শাহ জাফরের হাত থেকে ইংরেজরা ক্ষমতা দখল করে নেয় সিপাহী বিদ্রোহের বছর ১৮৫৭ সালেই, এর পরেই পুরোদমে ভারতবর্ষে শুরু হয়ে গেল পুরদস্তুর ইংরেজ শাসন। রেঙ্গুনে ইংরেজদের জেলে কবি এবং শেষ মোঘল সম্রাট বাহদুর শাহ জাফর  মৃত্যু বরন করলেন ১৮৬২ সালে, ‘না ম্যায় কিসিকা আঁখ কা নুর হুঁ, না কিসিকা দিল কা করার হুঁ’। ভারতের মাটিতে অবসান হল মুসলমান শাসনের কিন্তু মুসলমানরা মিশে গেল আমজনতার সাথে, হাজার বছরেরও বেশী মিলে মিশে থাকতে থাকতে ভারতবর্ষই হয়ে গেল তাদের দেশ।      
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ ছিল শঠতা আর বিশ্বাসঘাতকতার চূড়ান্ত এক নিদর্শন। দেখতে দেখতে একশ বছরের মধ্যে পুরো ভারতবর্ষ দখল করে নিল ব্রিটিশ শাসকরা, কঠোর শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গে দমন পীড়ন ছিল নিত্যাকার দিনলিপি তবে ইংরেজ শাসকদের মধ্যেও চেতনার বিচ্ছুরন দেখেছে ভারতবাসী। 
পরাধীন ভারতে বহু ঘটনার মধ্যে অনেক ঘটনাই উল্লেখ করার মত, তাঁর মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশক, জন্ম নিলেন রবীন্দ্রানাথ ঠাকুর, নরেন্দ্রানাথ দত্ত এবং মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধী। ভারতে চেতনার উন্মেষ ঘটাতে আলাদা আলাদা কাজের মধ্য দিয়ে এঁদের প্রভাব আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।  
সালটা ১৮৬১, জন্ম নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ভারতবাসী পেয়ে গেল এক অসামান্য কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার-সুরকার, আধ্যাত্মিক চিন্তক, দার্শনিক এবং সৃষ্টিশীল এক মহাপুরুষ। তাঁর লেখার বারে বারে উঠে এসেছে ভালোবাসা, প্রেম, আবেগ, আনুভতি, বিরহ, ব্যথা-বেদনা, সমস্ত আঙ্গিকে সব রকম মানুষের ভাবাবেগের কথা সহজ ভাবে – জটিল চরিত্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে, পরতে পরতে বিচ্ছুরিত হয়েছে নানা রঙের জীবনকথা। পরাধীন ভারতে জন্মেছেন রবীন্দ্রনাথ আবার মৃত্যুও এসেছে পরাধীন ভারতেই, স্বাধীনতার আন্দোলনে সরাসরি জড়িয়ে পড়েননি তবে মোহনদাস গাঁধীর বন্ধু লিখেছেন ‘বনিকের মানদণ্ড দেখা দিল, পোহালে শর্বরী, রাজদণ্ড রূপে’ কিংবা জালিওয়ানাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদ জানালেন নাইট উপাধি ত্যাগ করে। এমন ভুরি ভুরি উদাহরন তাঁর কর্মকাণ্ড আর লিখনিতে প্রকাশ পেয়েছে বারে বারে, ভালোবাসার মাধ্যমে জয় আর ক্ষমাই ছিল কবির চেতনার মূলমন্ত্র,তাই তিনি ‘প্রশ্ন’ করতে পারেন ‘ভগবান, তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে দয়াহীন সংসারে- তারা বলে গেল ‘ক্ষমা করো সবে’, বলে গেল ‘ভালবাসো- অন্তর হতে বিদ্বেষবিষ নাশো...।  কবির চেতনার বহিপ্রকাশ শুধু তাঁর সৃষ্টির পাতায় লেখা রয়েছে তাই নয়  তিনি মানুষের চেতনায় সেই যে প্রভাব বিস্তার করলেন আজও একইভাবে রয়ে গেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্মের মধ্যে।  
ভারত মহাপুরুষদের জন্য উর্বর মাটি, ১৮৬৩ সালে জন্ম নিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। প্রখর বুদ্ধির ছাত্র নরেন্দ্রনাথ পড়াশুনার পাঠ চুকানোর পর পুরোদমে শ্রী রামকৃষ্ণের সংস্পর্শে এলেন হিন্দু ধর্ম আর আধ্যাত্মিক শিক্ষার আনুশীলনে। ভগবানের খোঁজ সেই শুরু, শেষটায় উপলব্ধি ‘বহুরূপে সম্মুখে তোমার, ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। গুরুকে ছাপিয়ে বিশ্বের দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন তরুন এই সন্ন্যাসী, জীবে প্রেমই ঈশ্বরের সাধনা, পৃথিবীতে সব ধর্মই সত্য আর সবার উপরে মানুষ সত্য। বিশ্বভাতৃত্বে বিশ্বাসী চিন্তাশীল এই দার্শনিক সন্ন্যাসী ছিলেন ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক আবার পশ্চিমী দর্শনের এক আদর্শ ছাত্র। ১৮৯৩ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর শিকাগোতে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে তাবৎ বিশ্বকে চমকে দিলেন তাঁর আধ্যাত্মিক চিন্তা ভাবনায়, দর্শনে আর অন্য ধর্মের প্রতি সম বিশ্বাসে। রামকৃষ্ণ মিশনের এই প্রতিষ্ঠাতা ন্যুইয়র্কে বেদান্ত সমাজ গড়ে তুলেন আত্মচেতনা আর আত্মশুদ্ধির জন্য। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় তরুন এই সন্ন্যাসীর মৃত্যু পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিল তবে যে মানব চেতনার ভাবধারা ছড়িয়ে গিয়েছেন বিশ্বজুড়ে তা আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক এবং অনুকরণীয়।   
হালফিলের জ্ঞান আর চেতনা যদি খুঁজি তারও ঘাটতি নেই ভারতবর্ষের মাটিতে,  ১৮৬৯ সালে ২রা অক্টোবর জন্ম নিলেন মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধী, এলোমেলো ভাবে কেটে গেল শৈশব-কৈশোর, লন্ডনে পাড়ি দিয়ে আইনি ডিগ্রি নিয়ে ফিরে এলেন ভারতবর্ষে, উকিল হিসাবে কাজ নেই। বন্ধুর পরামর্শে পাড়ি দিলেন দক্ষিন আফ্রিকা। ট্রেন সফরে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেটেও ঘাড় ধাক্কা খেয়ে বাইরে বেরুতে হল গায়ের চামড়া কালো বলে। শুরু হল এক নতুন ধরনের চেতনার, সত্যের ক্ষমতা যাচাইয়ের আন্দোলন সত্যাগ্রহ। ডারবানের কাছে ফোয়েনিক্স ফার্ম গড়লেন শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস সত্যাগ্রহের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে। পরবর্তী কালে তলস্তয় ফার্ম থেকে সত্যাগ্রহের মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তুললেন বিভিন্ন অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে, জেল খাটলেন এসব করতে গিয়ে। বছর কুড়ি দক্ষিন আফ্রিকায় কাটিয়ে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এর নেতা গোপাল কৃষ্ণ গোখলের আমন্ত্রনে ফিরে এলেন দেশে, ঝাঁপিয়ে পড়লেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে।  বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে হিংস-অহিংস লড়াইয়ের পর ভারতছাড় আন্দোলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এল কাঙ্খিত স্বাধীনতা, নতুন এক চেতনার উন্মেষ ঘটল স্বাধীন ভারতে। ধর্মোন্মাদ শক্তির হাতে গাঁধীর মৃত্যু বরনের মধ্যে দিয়ে অদ্ভুত এক শূন্যতা তৈরী হলেও সামলে নিল ভারতবর্ষ শুধু মানবিক চেতনা আর গাঁধীজির শিখিয়ে যাওয়া অহিংসার শিক্ষায়।
স্বাধীনতা পেয়ে আমরা ভারতবাসী আনন্দে ঊর্ধ্ববাহু হলাম, গর্বে বুক ফুলে ওঠে যখন শুনি ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম, আমরা রয়েছি সেই সূর্যের দেশে’। নাৎসি জামানায় জার্মান শব্দটাই যেমন তাতিয়ে দিত হের হিটলারের সমর্থকদের, তেমনি ভারতীয় শব্দটাই ভাষা, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত ভারতবাসীর উপলব্ধিতে ছিল জাতীয়তাবাদের দ্যোতক। ধনী-দরিদ্র, ছোটবড় সব দেশ আর জাতি নিজেদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হবে, গর্ববোধ করবে এ আর নতুন কি? একসময় ব্রিটিশরা বলত তাদের অধিকৃত এলাকায় সূর্য অস্ত যায় না, এতটাই ছিল তার বিস্তৃতি। এখনটা যেমন দাপট দেখায় আমেরিকা, তারা আজ অহঙ্কারের শিখরে, মুখনিঃসৃত কথাই শেষ কথা, পৃথিবীর বাকিদের জন্য ফরমান। 
সদ্য স্বাধীন দ্বিখণ্ডিত ভারত নয়, টুকরো টুকরো দীর্ণ ভারতে (বিভিন্ন প্রিন্সলে স্টেটের দৌলতে) সামাজিক অবস্থান, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো, পরিষেবা, মিলিটারি ক্ষমতা ইত্যাদি হাজারো নেই এর লম্বা ফিরিস্তি আর তা নিয়ে গর্ব করার মত কিছুই ছিল না তবুও জাতীয়তাবাদে ঘাটতি ছিল না কোন ভারতীয়র। কোন ভারতীয়র ছিল না সুইস ব্যাঙ্কে জমানো টাকা বা দেশে বিদেশে গোপন সম্পদের পাহাড়, ছিল সুগভীর আত্মোপলব্ধি আর গর্ববোধ ছিল জাতিকে নিয়ে, দেশ ছিল শুধু তার বহিঃপ্রকাশ। 
ব্রিটিশের ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিসির ফলে খণ্ডিত ভারত সাম্প্রদায়িক বিষবাস্পে জর্জরিত হয়ে এসেছে বরাবর আর আজকের ভারতও চরম উগ্রপন্থার শিকার। সেই কোন মুদ্দত থেকে আমরা হেঁকে চলেছি ‘ভারত মানবতার আর এক নাম’, তার মেলা কারনও ছিল। বিভেদ কিছু ছিলই তবে আজকের মত জাতের নামে চোরাস্রোত বইত না রন্ধ্রে রন্ধ্রে, ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থসিদ্ধির নামে পরিকল্পনা মাফিক বিষ গাছ বপন করাও নয়। সাদাসিদে কিংবা অশিক্ষিত-অর্ধ শিক্ষিত, শিক্ষিত সব মানুষের মনে সন্দেহ আর অবিশ্বাসের বিষ নিশ্চিতভাবেই আর্সেনিকের বিষের চাইতেও মারাত্মক এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে বাধ্য। যে ভারতকে আমরা চিনি স্বামী বিবেকানন্দের জীবন আর লেখার ছত্রে ছত্রে যেখানে ব্রাহ্মন থেকে চণ্ডাল, আপামর ভারতবাসী তাঁর ভাই, বিভিন্ন জাত আর পেশার মানুষ তাঁর স্বপ্নের ভারতের ধমনীতে বয়ে চলা রক্তস্রোত। ব্রিটিশের অধীন ভৌগলিক ভূমিখন্ড ভারতের মুক্তির চাইতে তাঁর কাছে বেশী জরুরী ছিল জাতির অভ্যন্তরে ঘুনপোকার মত ভিতর থেকে ক্ষয় করে চলা জাতপাতের লড়াই তাই অভিশাপ দেওয়ার মত করে সাবধান করে দিয়ে গেছেন আত্মম্ভরি উচ্চবর্ণের মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর পরামর্শ দিয়ে। রবীন্দ্রনাথের গলাতেও সেই সুর মিলে গেছে, ‘মৃত্যুমাঝে হবে তবে চিতাভস্মে সবার সমান’। 
বিশ্বায়নের যুগে চেতনার লোপ না পেলেও বিস্তর ক্ষয় ক্ষতির প্রমাদ গুনছে চেতনার তাড়নায় রাতের ঘুম হারাম করা ভারতবাসী। সামাজিক মূল্যবোধের অধঃপতন থাবা বসিয়েছে আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনাতেও। সংস্কৃতির অবক্ষয় এগিয়ে চলার পথে অবশ্যম্ভাবী কিন্তু চলমান ক’বছরে চেতনার সামগ্রিক পতন এককথায় বিস্ময়কর। যেখানে পারিবারিক শ্রদ্ধা-ভালবাসার জায়গায় টান পড়েছে অন্তরজালের যুগে সেখানে জাতিসত্ত্বার ঐতিহ্যের ঝাণ্ডা ধরার চওড়া কাঁধ কোথায়? আজকের বস্তুতান্ত্রিক স্বার্থবাদের যুগে অহম এক বিশাল সমস্যা। প্রকৃত জাতীয়তাবাদ তাই দূরবীন লাগিয়ে খুঁজতে হয়। 
আধুনিককালে ভারতের যে চেতনার মিউটেশন বা পরিব্যপ্তি ঘটেছে তা কি অতীতের বহুযুগ ধরে বহমান চেতনার শর্টকাট রুট? আমরা কি আবার মধ্যযুগে ফিরে যেতে চাই রেট্রোগেশিভ ইভোলিউশনের মাধ্যমে? আমরা কি কোনদিন অবসর মত বসে ভেবে দেখব না যে ধর্ম নিয়ে আমরা মাতোয়ারা সেই ধর্ম জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের কোন কাজে আসে? ধর্ম বাদ দিয়ে কি মানুষ বেঁচে নেই? বেঁচে থাকতে পারে না? মেকি জাতীয়তাবাদ আর ধর্মের জিগির তুলে হানাহানি কাটাকাটি ঘরে ঘরে, লুটপাট, ধর্ষণ, যুদ্ধের জয়-পরাজয়? ব্রিটিশের পলিশি সামান্য পরিবর্তন করে ‘পোলারাইজ অ্যান্ড রুল’? আমি জাতীয়তাবাদী, আমার কাছে যাহা পুরান তাই বিজ্ঞান, আমার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হও, হয় আমার পেছনে দাঁড়াও নয়তো উল্টো দিকে দাঁড়াও, গনতন্ত্র আর সংখ্যার গলার জোরে তোমাকে দেগে দিই দেশদ্রোহী বলে, আমার একটা শত্রু চাই এই মুহূর্তে, কাল্পনিক হলেও চলবে নইলে আর জয় আসবে কার বিরুদ্ধে? জয়ের আস্ফালনের মধ্যে দিয়ে বাকি সমস্ত চেতনা, প্রয়োজনীয়তা, উন্নয়ন, এগিয়ে যাওয়া এসবই আমার কড়া ডোজের জাতীয়তাবাদের কাছে তুচ্ছ, আমাদের মধ্যে আর কোন ইস্যু নেই, নেই কোন লক্ষ্য। 
এই একবিংশ শতাব্দীর দু’দশক শেষের মুখে আমদের চেতনাও কেমন যেন অবশ হয়ে আসছে, বার বার চোখ কচলে নিজের চোখে দেখা অনাচার, দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি সব ঢোক গিলে কেমন যেন মেনে নিই, প্রতিবাদ তো নয়ই বরং অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত আর অহংকারী সেই সব কেষ্টবিষ্টুদের পিছনে ভিড় বাড়াই, হাঁটতে হাঁটতে গলা চিরে আকাশের দিকে হাত ছুঁড়ে আস্ফালন করি, সমর্থন জোগাই আমাদের সেই অসাড় চেতনাকে মেরে ফেলে। 
বিপ্রতীপ আশা, ভারতের চেতনার উন্মেষ ঘটবে ঠোক্কর খেতে খেতে, আবার একটা রাঙা সূর্য উঠবে গাঢ় নীল আকাশে, জন্ম হবে কোন এক মহামানবের, মন চাইবে, ‘দেবতা এদেশে মানুষ হয়েছে জানি, মানুষকে দেখি গনদেবতার বেশে’। 
   Last year this article was published in the 'Desh' Patrika on 17.05.2019 as the cover story.

বিঃ দ্র - গত বছর আজকের দিনে  দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত এই কপি । সময়ের সাথে আজও এই লেখাটি সমসাময়িক      

শনিবার, মে ১৬, ২০২০

কলকাতার বিভিন্ন ফুটপাতে টিফিন নিয়ে ঘুরছে বিপ্লব

গোপাল দেবনাথ

  

মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান বিপ্লব দে নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে প্রতিদিন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের হাতে সন্ধ্যায় তুলে দিচ্ছে টিফিন তার সাথে সাথে ভবঘুরে, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দুধ ফেরিওয়ালা, ফুটপাতবাসী, মৃৎশিল্পী, প্রত্যেকের হাতেই সন্ধ্যায় টিফিন এর ব্যবস্থা করেছে বিপ্লব  তিনি এটাও জানান - মানুষের  জন্য কাজ করা তার হবি, বছরের প্রতিটা সময় বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে থেকে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে বহু কাজ করেন তিনি তাই এই লকডাউন এর দিনেও ঘরে বসে না থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছেন তিনি এবং তার সাধ্যমতো যতদিন পারবে তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন  আর তার এই কাজকে সমর্থন জানিয়  উপস্থিত ছিলেন শ্রীমতি শুপ্তি পান্ডে মহাশয়া

কলকাতার বিভিন্ন ফুটপাতে টিফিন নিয়ে ঘুরছে বিপ্লব

গোপাল দেবনাথ

  

মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান বিপ্লব দে নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে প্রতিদিন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারদের হাতে সন্ধ্যায় তুলে দিচ্ছে টিফিন তার সাথে সাথে ভবঘুরে, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দুধ ফেরিওয়ালা, ফুটপাতবাসী, মৃৎশিল্পী, প্রত্যেকের হাতেই সন্ধ্যায় টিফিন এর ব্যবস্থা করেছে বিপ্লব  তিনি এটাও জানান - মানুষের  জন্য কাজ করা তার হবি, বছরের প্রতিটা সময় বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে থেকে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে বহু কাজ করেন তিনি তাই এই লকডাউন এর দিনেও ঘরে বসে না থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে রাস্তায় নেমে গেছেন তিনি এবং তার সাধ্যমতো যতদিন পারবে তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন  আর তার এই কাজকে সমর্থন জানিয়  উপস্থিত ছিলেন শ্রীমতি শুপ্তি পান্ডে মহাশয়া

ক্ষুধার্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের খাওয়ালেন নবদ্বীপের পুরোহিত

শ্যামল রায়
  
লকডাউন চলাকালীন নবদ্বীপে বিভিন্ন সংস্থার থেকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজ

লকডাউন চলছে। কেউ কেউ ভিন্ন দেশ থেকে বাড়ি ফিরছেন আবার কেউ কেউ এলাকার গরীব মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন।
শনিবার নবদ্বীপ শহরের জাহান্নবি পাড়ায় সামাজিক সংগঠনের তরফ থেকে এলাকার গরিব মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে সবজি বাজার করা হয়। বিনামূল্যে সবজি পেয়ে এলাকার গরিব মানুষ ভীষণ খুশি বলে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে অন্ধপ্রদেশ থেকে কুড়িজন পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফেরার পথে নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতু রেল গেটের কাছে এই সকল ক্ষুদার্থ শ্রমিকদের জন্য এগিয়ে আসেন নবদ্বীপের একজন বিশিষ্ট পুরোহিত মানিক লাল ভট্টাচার্য। তিনি বাসে থাকা শ্রমিকদের জন্য জল এবং বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার পরিবেশন করেন। ক্ষুধার্ত শ্রমিকরা খাবার খেয়ে ভীষণ খুশি আনন্দিত বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে নবদ্বীপ পৌরসভার  ১৯ নম্বর  তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে এলাকার গরীব মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর এবং নবদ্বীপ পৌরসভার চেয়ারম্যান সহ অনেকে। লকডাউন চলাকালীন খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশি এলাকার গরিব মানুষ। তবে অনেকেই বলছেন লাগাতারভাবে লকডাউন চললে আগামী দিন তারা কিভাবে বেঁচে থাকবেন এই  প্রশ্নেহতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন শহরের দিন আনা দিন খাওয়া কর্মহীন অসংগঠিত শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ।

প্রখর রোদে সিক্ত শ্রমিকদের রানাঘাটে পাঠালো শালবনীর পঞ্চায়েত সমিতি

প্রচন্ড দাবদাহে হাঁটতে থাকা শ্রমিকদের শালবনীতে আটকে মেডিকেল ও গাড়ির ব্যবস্থা করে পাঠানো হলো। তাদের বাড়ি নদীয়া জেলার রানাঘাটে
গতকাল শালবনী ব্লকের ফাৰ্মরোড প্রচন্ড রোদের মধ্যে মাথায় ব্যাগ বোচকা নিয়ে  হাঁটতে দেখে তাদের আটকান শালবনির পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্দীপ সিংহ ও সভাপতি মিনু কোয়ারি , তাদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন তারা খড়্গপুর থেকে হাঁটছেন ও নদীয়া জেলার রানাঘাট যাবে , সন্দীপ বাবু তাদের অপেক্ষা করতে বলে সেক ইমরানের কে বলে একটা গাড়ি ব্যবস্থা করে শালবনি হাসপাতালে পাঠান সেখানে কাঞ্চন ডাঙরের সহযোগিতা করে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা করান, সকলে সুস্থ থাকায় সন্দীপ বাবু তাদের শালবনি হাইস্কুলে থাকার ও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন , গতকাল শালবনীতে ওনারা থাকেন এবং আজকে তাদের রানাঘাট ফিরে যাওয়ার সরকারি অনুমোদন ও গাড়ির ব্যবস্থা করে সেই সাতজন শ্রমিক ভাইদের আজ রানাঘাটে পাঠানো হলো ۔۔ সন্দীপ সিংহের কথায়  সুমন সরকার ও অন্যান্য দলীয় কর্মীরা সেই শ্রমিকদের সহযোগিতা করেন

বিভিন্ন দাবিতে সরব দেশপ্রাণ ব্লকের সিটু নেতৃত্ব

জুলফিকার আলি
  

সিঅাইটিইউ, দেশপ্রাণ ব্লক কমিটির ডাকে জেলা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে অাজ বসন্তিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও দুরমুঠ উপস্বাস্হ্য কেন্দ্রের সামনে সমস্ত সরকারী হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, উপস্বাস্হ্য কেন্দ্র, নার্সিং হোমে করোনা মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স,স্বাস্থ্য কর্মীদের পিপিই,মাস্ক সহ চিকিৎসা সুরক্ষা প্রদান ও ৫০ লক্ষ টাকার বীমার অাওতাভূক্ত করা সহ ৮ দফা দাবীর ভিত্তিতে নিরব বিক্ষোভ কর্মসূচী রূপায়িত হয়। উভয় কর্মসূচী তে সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে নেতৃত্ব দেন সিঅাইটিইউ নেতা মামুদ হোসেন, সুতনু মাইতি, সঞ্জিত দাস, তাপস মিশ্র, তরুণ মাইতি, জহর লাল দাস,দিলীপ চন্দ, বাপ্পা খুঁটিয়া,নন্দন খুঁটিয়া,শক্তিপদ পণ্ডা,মানিক গারু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সিঅাইটিইউ নেতা মামুদ হোসেন বলেন করোনা মোকাবিলায় সার্বজনীন টেস্টিং,সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ, জনস্বাস্থ্য সচেতনতা সুনিশ্চিত করন, গরীব মানুষজনকে বিনা মূল্যে রেশন, খাদ্যসামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান প্রভৃতি দাবী সমূহের ভিত্তিতে অাজ কের মত অাগামীদিনে লকডাউন বিধি মেনে লাগাতার অান্দোলন সংগঠিত করা হবে।

একগুচ্ছ জনস্বার্থ দাবি নিয়ে বিক্ষোভে সিটু

জুলফিকার আলি
  

পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনা ব্যয়ে শ্রমিক ট্রেনের অায়োজন করে রাজ্য সরকার ও রেল দপ্তর কে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ, কর্মহীন দের প্রয়োজনীয় অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা, প্রচেষ্টা প্রকল্পের অাওতায় সবাই কে অন্তর্ভুক্ত করা, ঘরের ছেলে মেয়ে দের ঘরে ফেরাও সহ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী দের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদান ও বীমার পরিমাণ বৃদ্ধি করা,বিদ্যুৎ বিল মকুব করা প্রভৃতি দাবী সমূহের ভিত্তিতে অাজ দেশপ্রাণ, কাঁথি -১,কাঁথি-৩, হেঁড়িয়া, খেজুরী,রামনগর, বালিসাই, পটাশপুর, মুগবেড়িয়া, ভগবানপুর, এগরা,বালিঘাই প্রভৃতি ব্লকে বিক্ষোভ, ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দেশপ্রাণ ব্লকে নেতৃত্ব দেন সিঅাইটিইউ নেতা মামুদ হোসেন, সুতনু মাইতি, তাপস মিশ্র, তরুণ মাইতি, ইউনুস উদ্দিন, গৌতম দাস,পৃথ্বীরাজ শীট,জহর দাস,দিলীপ চন্দ,সেক সফিউল অালি, প্রবীর বেরা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। কাঁথি-১ ব্লকের কর্মসূচি তে নেতৃত্ব দেন সিঅাইটিইউ জেলা নেতা হরপ্রসাদ ত্রিপাঠী,মামুদ হোসেন  কানাই মুখার্জি, অতুল্য সুন্দর উকিল, জয়দেব, পণ্ডা, তেহরান হোসেন,প্রনব করণ,নন্দন রাউত,সলিলবরণ মান্না,সেক সাত্তার,বাসুদেব রাউল,বিদ্যুৎ পাত্র,প্রভাকর হাজরা,অনন্ত দাস,সেক জান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। কাঁথি-৩ব্লকের কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন সিঅাইটিইউ নেতা কালীপদ শীট, হিমাংশু পণ্ডা, রাজনারায়ণ দাস, অশোক পণ্ডা, খাজা অাবুল অালি,অনন্ত পণ্ডা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সিঅাইটিইউ নেতা মামুদ হোসেন বলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা দেশের সম্পদ সৃষ্টির কারিগর। অথচ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে শ্রমিকরা অাজ উপেক্ষিত । কর্মহীন দের নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান করার জায়গায় পুঁজিপতিদের অর্থনৈতিক প্যাকেজ দিতে ব্যস্ত।সর্বস্তরের মানুষকে জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গণঅান্দোলন গড়ে তোলা র অাহ্বান জানান মামুদ হোসেন।

পাঁচশো কিমি পাঁয়ে হেটে বাড়ী ফিরলেন পটাসপুরের শ্রমিকেরা

জুলফিকার আলি
  
দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন সেই লকডাউন থাকার কারনে এদিন শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর দু'নম্বর ব্লকে ভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা  শ্রমিক বাড়ি ফিরলেই পায়ে হেঁটে প্রায় ৫০০কিলোমিটার পথ। তাদের কে তার পরিবারও গ্রামের মানুষ ঘরের মধ্যে ঢুকতে না দিয়ে প্রশাসনিক দিক থেকে ১৪দিনের হোম করেন্টিন থাকার ব্যবস্থা করল বাল্যগোবিন্দপুর বালিকা বিদ্যালয় মধ্যে।

করোনা মোকাবিলায় আর্থিক অনুদানে কালনার প্রাথমিক শিক্ষকরা

শ্যামল রায়

  

 ;   শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির তরফে বর্ধমান জেলা সংগঠনের তরফে ৭৯ হাজার টাকার একটি চেক মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হয়েছে ।প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের শিক্ষকরা কালনা মহকুমাশাসক দপ্তরে এসে মহকুমাশাসক সুমন সৌরভ মোহান্তির হাতে চেকটি  তুলে দেন।সংগঠনের তরফে অভিজিৎ কুণ্ডু  জানান - "প্রাথমিক পর্যায় আজ এটুকু দেওয়া হল. আগামী দিনে অধিক টাকার চেক তুলে দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য"।

শুক্রবার, মে ১৫, ২০২০

মঙ্গলকোটে ত্রাণ দেবেন সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী?


কবিরুল ইসলাম 


কাটোয়া মহকুমাশাসক অফিসের মাধ্যমে মঙ্গলকোটে অসহায়দের  পাশে দাঁড়াতে  ত্রাণ পেলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী    ।       

ঈদে দোকানপাট খুলতে হবেনা, স্মারকলিপিতে ইমামরা

সুরজ প্রসাদ 

ঈদের কারণে দোকান না খোলার আবেদন  করল বেঙ্গল ইমাম’স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।  শুক্রবার এই মর্মে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। তিনি আবেদন করেছেন, ঈদের কারণে দোকান পাঠ খোলার কোন প্রয়োজন নেই, তারা চান মানুষের স্বার্থে এই লকডাউন এই মাসের শেষ পর্যন্ত।

তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কোওপারেটিভ ব্যাংকের খাদ্য সামগ্রী বিলি

জুলফিকার আলি  

মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মহাশয়ের সহযোগিতায় ,তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কোঃ অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র মাইতি মহাশয় ও ভাইস চেয়ারম্যান  মেঘনাদ পাল মহাশয় ও secretary ম কৌশিক কুলভী মহাশয় উদ্যেগে তমলুক সাব ডিভিসান ,হলদিয়া সাব ডিভিসান,ঘাটাল সাব ডিভিসনে দুঃস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কোঃ অপারেটিভ ব্যাঙ্ক,আজ নন্দকুমার বিধানসভা অন্তর্গত বরগোদা গোদার সমবায় সমিতিতে প্রায় 600 মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে সভাধিপতি দেবব্রত দাস মহাশয় ও তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কোঃ অপারেটিভ ব্যাঙ্ক চেয়ারম্যান  গোপাল চন্দ্র মাইতি মহাশয়

করোনা পরীক্ষা করা নিয়ে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে হইচই

উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর ভৎসর্না: কাঠগড়ায় কল্যাণীর উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক 


আগ বাড়িয়ে করোনা টেস্ট করতে চেয়ে কাঠগড়ায় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শংকর কুমার ঘোষ। আইসি‌এম‌আরের অধিকর্তার কাছে উপাচার্য চিঠি দিয়েছেন বলেও জানা যায়। করোনা আক্রান্তের নমুনা সংগ্রহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস‌এন‌বোস‌ ইনোভেশন সেন্টারে পরীক্ষা চালাতে চান বলে জানিয়েছেন। আর এতেই বেড়েছে বিপত্তি। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাপান-উতোর অব্যাহত। করোনার মতো একটা মারাত্মক ও মারণ রোগের ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক স্তরে যে ধরনের আলোচনার দরকার ছিল তা তিনি করেননি।

 কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্ৰহণের জন্য যে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল বা কোর্টের মতো বিধিবদ্ধ কমিটি রয়েছে সেখানে আলোচনা ব্যতীত অগণতান্ত্রিকভাবে নিজের মর্জি মতো এধরনের একটি বড়ো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একাই উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ। এমনকি রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরকেও অবজ্ঞা করে মুখ্যমন্ত্রী ও আইসিএমআর-এর কাছে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছেন তিনি। এতেই বিতর্কের সূত্রপাত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অবজ্ঞা করেন এবং উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ যখন তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য আধিকারিকদেরকে হুমকি দিয়ে বলেন তিনি মনে করলে সবার চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে পারেন। কথায় কথায় ভয় দেখান। সম্প্রতি রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়কে ছুটিতে পাঠিয়ে বির্তক তৈরি করে উচ্চশিক্ষা দফতরের কড়া আদেশ মেনে নিয়ে রেজিস্ট্রারকে দায়িত্বে ফিরিয়ে আনতে বাদ্য হয়েছেন উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ।

 কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষকদের অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁর পাগলামীর জন্য। আপদকালীন মুহূর্তে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন, তারা বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। কেননা তাদের এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেই চলবে আক্রান্তের নমুনা নিয়ে করোনা পরীক্ষা। 

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সন্নিকটে রয়েছে আন্তর্জাতিক গেস্ট হাউস এবং ক্যান্টিন। স্বাভাবিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চলা অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষকদের অনেকেই ক্যান্টিনে যান। এ নিয়ে সকলের মধ্যে একটা সংশয় দেখা দিয়েছে। কল্যাণী জেএনএম মেডিকেল কলেজে করোনা আক্রান্তকারীদের যারা চিকিৎসা করছেন, সেই সব নার্স ও ডাক্তারদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গেষ্ট হাউসে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন তারা রীতিমত বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই গেস্ট হাউসের কাছেই রয়েছে একটি এটিএম। সেখানে আতঙ্কে মানুষের যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়েছে। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব, প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্স ব্যতীত, পর্যাপ্ত পিপি‌ই ছাড়া সংক্রামক ব্যাধি পরীক্ষা করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। 

কল্যাণী জনবহুল এলাকা। এই সংক্রামক ব্যাধি যদি একবার ছড়িয়ে পড়ে তা চরম মাত্রা নিতে পারে এই এলাকায়। অগণতান্ত্রিকভাবে উপাচার্য নিজের মর্জি মতো এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে রাজ্য সরকার যথেষ্ট সমস্যায় হয়তো পড়তে হবে আগামীতে। উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায় উপাচার্যদের সঙ্গে এক কনফারেন্সে মিলিত হলে এনিয়ে শংকর ঘোষকে তিনি  ভৎসর্না করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সমস্ত প্রক্রিয়াটি করোনা টেস্ট বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। 

সমস্ত ঘটনা জানিয়ে ওয়েবকুপার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট এই গুরুতর ঘটনাটি উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নজরে আনেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবদ্ধ কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে, রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমোদন ব্যতীত টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ ছাড়া, প্রয়োজনীয় ইকুইটমেন্টহীন অবস্থায় অননুমোদিত কোভিড ১৯ টেষ্ট নিয়ে লিখিত আকারে প্রতিবাদ জানায়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় ইকুইটমেন্ট দিয়ে যেভাবে সাহায্য করছে সেভাবেই সাহায্য করার প্রস্তাব দেন। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধি তাদের আশ্বস্ত করে জানান, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে উপাচার্যের এনিয়ে কনফারেন্সে কথা হয়েছে। উপাচার্যদের সঙ্গে এক কনফারেন্সে শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গের উত্থাপন করে শঙ্কর ঘোষকে রীতিমত ভৎসর্না করেন এবং উপাচার্যকে পঠন পাঠনে মনোযোগ দিতে বলেন।

কল্যাণীতে বেশ কয়েকটি উচ্চমানের চিকিৎসা কেন্দ্র এবং মেডিকেল কলেজ রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন নিজেদের যন্ত্রপাতি দিয়েই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারাও এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পরীক্ষা করতে চাননি। জাতীয় স্তরের চিকিৎসা কেন্দ্র এইমস বর্তমানে কল্যাণীতে অবস্থিত। তারাও কাজকর্ম শুরু করেছে। এছাড়াও বেশ কিছু সরকারি গেস্ট হাউস‌ও রয়েছে। যেগুলি জনবহুল এলাকা থেকে একটু দূরে। সেখানেও চিকিৎসকদের রাখার ব্যবস্থা করা যেত। খবরে প্রকাশ, কল্যাণী কার্নিভালে যেখানে করোনার চিকিৎসা হচ্ছে, তার পাশের হোটেলেই চিকিৎসকদের থাকার কথা হয়েছিল। 

এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে শংকর ঘোষ
করোনা টেস্ট বিষয়ে লেখেন, 'কল্যাণী ইউনিভার্সিটি ইজ রেডি এন্ড ওয়েটিং ফর অ্যাপ্রুভাল'। সংবাদ মাধ্যমেও এ নিয়ে নিউজ কভার করা হয়েছে। করোনা টেস্ট করতে প্রস্তুত কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক শুরু হবার পর উপাচার্য জানাচ্ছেন, জেলা প্রশাসনের প্রস্তাবে‌ সাই দিতেই বিশ্ববিদ্যালয় এই উদ্যোগ নিয়েছিল। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের নজরে আসার জন্য‌ই উপাচার্য এই ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তাঁকে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, শিক্ষক,  আধিকারিক ও শিক্ষা কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল উপাচার্যকে। বিগত দুই বছর তিনি ইসি মিটিং করছেন না। নিজের ইচ্ছে মতোই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। অগণতান্ত্রিক উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছিল সমস্ত অধ্যাপক ও আধিকারিকরা। 

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় এনআইআরএফ র‌্যাঙ্কিং ৪৬ থেকে এই কয় বছরে নেমে এসেছে এখন ১০০ ছুইছুই অবস্থান। র‌্যাঙ্কিং-এর চরম অবনমন ঘটেছে উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষের আমলেই। সামনের ডিসেম্বরেই শঙ্কর কুমার ঘোষের কার্যবিধির সময়সীমা শেষ হচ্ছে। রাজ্য সরকারের নজরে আসতে চাইছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবকুপার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক নন্দকুমার ঘোষ ও সুজয় কুমার মণ্ডল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু বিধি আছে, সেই বিধি অনুসারে যে সকল কমিটি আছে, যেমন ইসি, কোর্ট, কাউন্সিল সেখানে আলোচনা না করেই এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্য। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত। পাবলিক ইন্টারেস্টের দিক থেকে দেখলে এটি আত্মঘাতী একটি সিদ্ধান্ত। এই প্রচেষ্টা চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয় আছে।

উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ বহু বেআইনি নিয়োগ করেছেন সে নিয়েও চরম মতদ্বৈধতা দেখা দিয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরমহলে। 

উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষ দুর্নীতি গ্রস্ত পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক বিমলেন্দু বিশ্বাস ও বিজেপির ঘনিষ্ঠ শিক্ষক অলোক ঘোষকে সঙ্গে নিয়েই একটার পর একটা দূর্নীতি করেই চলেছেন। উচ্চশিক্ষা দফতর তদন্ত কমিটি করে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে উপাচার্য শঙ্কর কুমার ঘোষকে সচেতন করেছেন এবার তার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেন সেটাই দেখার।

OLD POSTED

আরামবাগ টিভির তিন সাংবাদিক গ্রেপ্তারের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের

মোল্লা জসিমউদ্দিন   সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে সেখ সফিকূল ইসলাম প্রত্যেকেই নির্ভীক সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পুলিশের অতি সক্রিয়তার শি...

KATWA SUB-DIVISONAL PRESS CORNER