জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
বিশেষজ্ঞদের মতে এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাসের মোকাবেলার জন্য প্রয়োজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে ২৪ শে মার্চ গোটা রাজ্যে ঘোষিত হলো লকডাউন। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব বন্ধ। পুলিশ সক্রিয় হলো। আইন অমান্যকারীদের কঠোর হাতে দমন করা শুরু হলো।কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ পুলিশি হেনস্থার শিকার হলেও অধিকাংশ মানুষ পুলিশের ভূমিকাকে স্বাগত জানাল। কিন্তু তারপরই কোনো এক অজানা কারণে পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়তেই গোটা রাজ্য জুড়ে একশ্রেণির মানুষ লকডাউন ভাঙার খেলায় মেতে উঠল। শহরগুলোর চিত্র টিভির পর্দায় নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। একদল তথাকথিত সচেতন মানুষের অজ্ঞতার পরিচয় পেয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠল।
গ্রামগুলোও পেছিয়ে থাকলনা। বিভিন্ন ক্লাবে, আটচালায় বা চায়ের দোকানে নিয়মিত ভিড় বাড়ছে। কোনো কোনো স্হান থেকে মদের ভাটি চালুরও খবর পাওয়া যাচ্ছে।পুলিশের ডাণ্ডার ভয় না থাকায় অপ্রয়োজনে বাইকে তিন জন করে চেপে অযথা আড্ডা মারতে বের হচ্ছে। মুখে থাকছেনা মাস্ক। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে কাজ করতে যাওয়া রাজমিস্ত্রিরা ব্যবহার করছেনা মাস্ক। যত্রতত্র থুতু ফেলছে। ফলে গ্রাম বাংলাতেও ধীরে ধীরে একটা অজানা আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক পুলিশ আধিকারিক বললেন - মানুষের জীবন রক্ষার জন্য নিজেদের জীবন বিপন্ন করে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্হ্য কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছে। আর পরিবারের কথা না ভেবে আমরা পুলিশ কর্মীরা রয়েছি রাস্তায়।অথচ একদল মানুষ আইন ভাঙার খেলায় মেতে উঠেছে। তারা বুঝতে চাইছেনা আমাদের রাজ্যে করোনা একবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। অনুরোধে যখন কাজ হচ্ছেনা তখন এদের জন্য প্রয়োজন কড়াকড়ি।তার আক্ষেপ গোটা বিশ্বের পরিস্থিতি দেখে মানুষ আর কবে সচেতন হবে !
একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জয়প্রকাশ বাবু বললেন -গণতান্রিক দেশে পুলিশি রাজ কাম্য না হলেও এই সময় পুলিশকে যদি ডাণ্ডা ব্যবহারের অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া হয় তাহলে মমতা ব্যানার্জ্জীর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের রাজ্যেও করোনা অতিমারির রূপ ধারণ করবে। একই সুর শোনা যাচ্ছে বহু মানুষের কণ্ঠে। তাদের বক্তব্য - পুলিশ যতই চেষ্টা করুক ডাণ্ডা ব্যবহার না করলে কোনো লাভ হবেনা।বড় বিপদ ঘটার আগে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত পুলিশকে আবার কড়াকড়ি করার নির্দেশ দেওয়া।